আশা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর পিডিএফ- এস এস সি

আশা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

এখানে আশা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর দেওয়া আছে। সারাদিন কঠোর পরিশ্রম করে যারা একটি দিনের খাবারও জোটাতে পারে না তারাও জীবনের পথে চলতে গিয়ে থেমে যায়, হতাশ হয় না। তাদের কোনাে সংকীর্ণতা নেই। কোনাে দীনতা বা সংশয়ে তাদের জীবন ক্লিষ্ট নয়। কবি এমন মানুষের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে চান। তার এ চাওয়ায় দরিদ্রশ্রেণির মানুষের জীবনবােধের প্রতি কবির সমবেদনা, শ্রদ্ধা, ভালােবাসা প্রকাশ পায়। কারণ এমন দুঃখ-দারিদ্র্যের মধ্যে তারা একে অন্যের প্রতি গভীর অনুরাগী, মানবিক এবং সহানুভূতিশীল।

আশা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

এই কবিতার কত গুলো সৃজনশীল প্রশ্ন আছে। তবে সব গুলো আপনাদের পড়তে হবে না। যেগুলো গুরুত্বপূর্ণ শুধু সেই সৃজনশীল প্রশ্ন গুলো পড়ার চেষ্টা করবেন। মূল বইয়ে এই প্রশ্ন দেওয়া নেই। এখানে বিভিন্ন বোর্ডের আসা সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর সহ দেওয়া আছে।

পৈতৃক সম্পত্তির বৈভবে মানুষ আলস্য জীবন-যাপনে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। সমাজ-সংসারের প্রতি হয়ে ওঠে উদাসীন। ফলে সাধ্যের চেয়ে আকাঙ্ক্ষা বেশি থাকে এবং অশান্তি বিরাজ করে। পক্ষান্তরে গরিব মানুষ দিনে এনে দিনে খেয়েও অল্পতে তুষ্ট থেকে সাংসারিক শান্তি খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করে।

ক. নির্ভাবনায় মানুষেরা কেমন বেড়ার ঘরে ঘুমিয়ে থাকে?
খ. কবি কোন জগতের কান্না-হাসির অন্তরালে হারাতে চান? বুঝিয়ে লেখ।
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘আশা’ কবিতার সাদৃশ্য ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘অল্পতে তুষ্ট থাকলে প্রকৃত সুখ পাওয়া যায়’ উদ্দীপক ও ‘আশা’ কবিতার আলােকে যুক্তিটি বিশ্লেষণ কর।

উত্তরঃ 

ক উত্তরঃ নির্ভাবনায় মানুষেরা জীর্ণ বেড়ার ঘরে ঘুমিয়ে থাকে।

খ উত্তরঃ প্রতিবেশীর আঁধার ঘরে আলাে জ্বালতে কবি চিন্তাবিহীন জগতে কান্না-হাসির অন্তরালে হারাতে চান।

‘আশা’ কবিতায় কবি মানুষের জীবনের ক্রমবর্ধমান জটিলতাকে তুলে ধরতে চেয়েছেন। তিনি সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে যাওয়ার প্রত্যাশা করেছেন। দিনমজুর, শ্রমজীবী মানুষেরা যা রােজগার করে তা দিয়ে কোনাে রকমে খেয়ে-পরে বেঁচে থাকে।

তারা সমাজে অবহেলিত, নিগৃহীত হলেও তাদের এ নিয়ে কোনাে আক্ষেপ নেই। তারা সম্পদ বাড়ানাের চিন্তায় ঘুম হারাম করে না, সােনা-রুপার পাহাড়ও বানাতে চায় না। এসব ভাবনা থেকে দূরে থাকে বলে তারা ভালাে থাকে এবং সুখে দিন কাটায়। তাই কবি এসব মানুষের মাঝে হারিয়ে যেতে চান। তাদের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার অন্তরালে নিজেকে লুকাতে চান।

গ উত্তরঃ

নিজের যা আছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকার দিক দিয়ে উদ্দীপকের সঙ্গে ‘আশা’ কবিতার সাদৃশ্য বিদ্যমান। অনেক অর্থ-বিত্তের মধ্যে কোনাে সুখ নেই। অল্পে তুষ্ট থাকার মধ্যেই সুখ। অনেকেই অন্যের দুঃখ দুর করার জন্য নিজে কষ্ট স্বীকার করেন, তারাই প্রকৃত সুখী।

আবার অঢেল ধনসম্পদ না থাকলেও অল্প আয়ের মানুষ নিজেদের যা আছে তা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকে। উদ্দীপকে অঢেল বিত্ত-বৈভব মানুষকে অলস করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। অর্থসম্পদ মানুষকে অলস করে বলে তারা জীবনের প্রকৃত অর্থ খুঁজে পায় না, সুখের সন্ধানও পায় না।অন্যদিকে যারা কঠোর পরিশ্রম করে জীবিকা অর্জন করে, দিন এনে দিন খায় তারা মনের দিক থেকে অনেক বেশি সুখী। কেননা তাদের অঢেল সম্পদের দুশ্চিন্তা নেই, কিছু হারানাের ভয় নেই। আশা’ কবিতায়ও কবি এ বিষয়টি বর্ণনা করেছেন।

কবি বলেছেন যে, সম্পদের পাহাড় গড়া মানুষেরা সুখের চিন্তায় ঘুমাতে পারেন না, আর বিত্তের পেছনে না ছােটা মানুষ অবলীলায় সুখী-সুন্দর জীবনযাপন করে। তারা নির্বিঘ্নে ঘুমায়।

ঘ উত্তরঃ

অল্পতে তুষ্ট থাকলে প্রকৃত সুখ পাওয়া যায়’- উদ্দীপক ও ‘আশা’ কবিতার আলােকে যুক্তিটি নিচে বিশ্লেষণ করা হলাে : পরিশ্রমের মাঝেই জীবনের সার্থকতা। মিথ্যা সুখের কল্পনা করে কাজ না করলে জীবন ব্যর্থ হয়ে যায়। কারণ জীবনের সঙ্গে।

সংগতিহীন স্বপ্ন-কল্পনা মানুষের সাফল্যের অন্তরায় হিসেবে কাজ করে। উদ্দীপকে সুখের উৎস সম্পর্কে বলা হয়েছে। ধনীর সন্তানেরা বিত্ত-বৈভবে নিমগ্ন থাকে, তাই সংসারে তাদের কোনাে মন থাকে না। এই অতিপ্রাপ্তিই জীবনের প্রকৃত অর্থ থেকে তাদের বিচ্ছিন্ন রাখে। তারা কেবল আকাঙ্ক্ষার পেছনে ছােটে— সুখের খোজ তারা জানে ।

অন্যদিকে অল্প আয়ের মানুষেরা সামান্য আয়েই তুষ্ট। কারণ তাদের জীবনের আকাঙ্ক্ষা অনন্ত নয়। তারা অল্পকিছু নিয়ে ভালাে থাকতে চায় অন্যের ঘরে আলাে জ্বালে। আশা কবিতায়ও কবি এই সত্যকে উন্মােচিত করেছেন। গতানুগতিকভাবে অর্থসম্পদ নিয়ে সখী হওয়ার চেষ্টায় যে অন্তঃসারশূন্যতা তা তিনি তুলে ধরেছেন।

বিত্ত-বৈভবের চিন্তা ও দুর্ভাবনায় সুখী হওয়ার পরিবর্তে মানুষ। দুঃখকে ডেকে আনছে। যার ফলে কমে যাচ্ছে তার আয়ু। অন্যদিকে সারা দিন যারা হাড় ভাঙা খাটুনি খাটে, তারা বিছানায় গা এলিয়ে দিলে পরম নিশ্চিন্তে নিদ্রা যায়। কারণ তাদের জীবনে চাওয়া-পাওয়া খুব ক্ষুদ্র, তাদের হারানাের কিছুই নেই।সুখ একটি আপেক্ষিক বিষয় হলেও প্রকৃত সুখ মানবজীবনের কিছু মৌলিক বিষয়ে নিহিত। এর একটি হলাে আত্মতুষ্টি, নিজের যা আছে তাই নিয়ে ভালাে থাকা। বেশি কিছু চাইলে চাওয়ার শেষ আর কখনাে হয় না। আর যারা অল্পতে তুষ্ট তাদের চাহিদা সীমিত এবং এতেই তারা নিজেদের সুখ মনে করে।

আশা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর পিডিএফ

এখানে আশা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর পিডিএফ দেওয়া আছে। তাই যারা সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর পিডিএফ সংগ্রহ করতে চান, নিচে থেকে পিডিএফ সংগ্রহ করে রাখবেন।

স্তবক ১: সবারে বাসিব ভালাে, করিব না আত্মপর ভেদ।
সংসারে গড়িব এক নতুন সমাজ।
মানুষের মাঝে কভু রবে না বিচ্ছেদ
সর্বত্র মৈত্রীর ভাব করিবে বিরাজ।

স্তবক ২: ধনী বলছে আরও ধন দাও,
ভিখারি বলছে আরও ভিক্ষা দাও,
পেটুক বলছে আরও খাবার দাও।
শুধু দাও আর দাও।

ক. সারা দিনের পরিশ্রমেও কী খুঁজে পায় না?
খ. নির্ভাবনায় মানুষের ঘুমিয়ে থাকা বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
গ. উদ্দীপকে স্তবক ১-এর ভাবার্থ ‘আশা’ কবিতার যে দিকটি ইঙ্গিত করে তা বর্ণনা কর।
ঘ. উদ্দীপকে স্তবক ২-এর বক্তব্য আশা’ কবিতার কবির প্রত্যাশার বিপরীত সত্তারই প্রকাশ”- মন্তব্যটির যৌক্তিকতা যাচাই কর।

উত্তরঃ

ক উত্তরঃ সারা দিনের পরিশ্রমেও একটি দিনের আহার্য-সঞয় খুঁজে পায় না।

খ উত্তরঃ নির্ভাবনায় মানুষের ঘুমিয়ে থাকা বলতে কবি বিত্ত-বৈভব অর্জনের দুর্ভাবনাহীন, লােভ-লালসাহীন সুখী জীবনকে বুঝিয়েছেন।

সাধারণত যেসব বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে মানুষ নিজেদের সুখী বলে দাবি করে, ‘আশা’ কবিতার কবি তা করেন না। কবির মতে তারা প্রকৃত সুখী মানুষ নয় । কারণ তারা যেভাবে সুখী হতে চায়, তা যথার্থ উপায় নয়। তারা নির্ভাবনায় ঘুমাতে পারে না। কবির মতে সংসারে যারা সােনা-রুপার পাহাড় জমানাের ভাবনায় নিঘুম না থেকে অল্পে তুষ্ট থাকে তারাই প্রকৃত সুখী। কারণ তারা ভাঙা বেড়ার ঘরেও নির্ভাবনায় ঘুমিয়ে যেতে পারে। নির্ভাবনায় ঘুমিয়ে থাকা বলতে কবি এ বিষয়টিই বুঝিয়েছেন।

গ উত্তরঃ

উদ্দীপকে স্তবক ১-এর ভাবার্থ ‘আশা’ কবিতার পরােপকারী মনােভাবের দিকটিকে ইঙ্গিত করে। পরােপকার একটি মহৎ গুণ। পরােপকারী মনােভাব মানুষকে মহৎ করে। মানুষ যখন মানবকল্যাণে আত্মনিয়ােগ করে তখন তার জীবন সার্থকতা লাভ করে।

আমাদের সমাজে অনেকেই আছেন যারা নিঃস্বার্থ, পরােপকারী মহৎ মানুষ ।। উদ্দীপকের স্তবক ১-এর কবিতাংশে নিজের স্বার্থ তথা লাভের চিন্তা না করে অন্যের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করার কথা বলা হয়েছে। কবি এখানে সবার সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে নিতে চেয়েছেন।সবাই মিত্র ভেবে ভালােবেসে সংসারে এক নতুন সমাজ প্রতিষ্ঠায় তিনি তৎপর হয়েছেন।

উদ্দীপকের কবির এই ভাবটি ‘আশা’ কবিতায় প্রতিফলিত কবির প্রকৃত সুখ প্রত্যাশার ভাবনার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। কবিও এখানে মানুষে মানুষে ভেদাভেদহীন, পরস্পরের প্রতি গভীর ভালােবাসা ও বন্ধনের সমাজ গড়ে তুলতে চেয়েছেন। সেখানে মানুষ বিত্ত-বৈভবের আশায় না থেকে অল্পে তুষ্ট থাকবে এবং পরস্পরকে ভালােবাসার মাধ্যমে প্রকৃত সুখের সন্ধান করবে।

ঘ উত্তরঃ

“উদ্দীপকে স্তবক ২-এর বক্তব্য ‘আশা’ কবিতার কবির প্রত্যাশার বিপরীত সত্তারই প্রকাশ”- মন্তব্যটি যথার্থ।

মানুষের জীবনে প্রাপ্তির চেয়ে প্রত্যাশা বেশি। জগৎ সংসারে যে যত পায় সে তত চায়। এই প্রত্যাশার অন্ত নেই। অতিরিক্ত সুখের প্রত্যাশা কখনই জীবনে সুখ বয়ে আনে না। যে কেবল বিত্তসুখের সন্ধান করে সে প্রকৃত সুখী নয়।। উদ্দীপকে স্তবক ২-এর মানুষের অন্তহীন প্রত্যাশার দিকটি তুলে ধরা হয়েছে।

এখানে প্রত্যেক শ্রেণি-পেশার মানুষ যে প্রাপ্তি অপেক্ষা বেশি প্রত্যাশা করে সেই দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে। এখানে যে সত্তার প্রকাশ ঘটেছে তা আশা’ কবিতায় কবির প্রত্যাশার বিপরীত। কারণ কবি অল্পে তুষ্ট থেকে নির্ভাবনায় ঘুমিয়ে যে সুখ অনুভব করার কথা বলেছেন, উদ্দীপকে স্তবক ২-এর মূলভাব তার সঙ্গে বৈসাদৃশ্যপূর্ণ।

কবির মতে জীবনে সুখী হতে চাইলে বিত্ত-বৈভব অর্জনের লােভ ত্যাগ করে মানুষকে ভালােবেসে মনুষ্যত্ব অর্জন। করতে হবে এবং অল্পে তুষ্ট থাকতে হবে। স্তবক ২-এ এই বিষয়টির প্রতিফলন ঘটেনি। ‘আশা’ কবিতায় কবি তাদেরই প্রকৃত সুখী মানুষ বলেছেন, যারা জীর্ণ বেড়ার ঘরেও রাতে নির্ভাবনায় ঘুমিয়ে যেতে পারে।

প্রকৃত সুখী মানুষের মধ্যে সােনা-রুপার পাহাড় গড়ার প্রবণতা থাকে না। কিন্তু উদ্দীপকে স্তবক ২-এ সেই প্রবণতা বিদ্যমান। এ কারণেই প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটিকে যথার্থ বলা যায়

আশা কবিতার সৃজনশীল

এই অংশে অতিরিক্ত কিছু সৃজনশীল প্রশ্ন দেওয়া আছে। এগুলো আপনারা বাড়ির কাজ হিসেবে করবেন। কবিতা টি পড়ে এই সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর নিজে নিজে করার চেষ্টা করবেন। নিচে থেকে আশা কবিতার সৃজনশীল দেখুন।

মাদার তেরেসা আশৈশব স্বপ্ন দেখেন মানব সেবার। এক সময় যোগ দেন খ্রিস্টান মিশনারি সংঘে। মানুষকে আরো কাছে থেকে সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে সন্ন্যাসব্রত গ্রহণ করেন। প্রতিষ্ঠা করেন মিশনারিজ অব চ্যারিটি। তাঁর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে আরও অনেকেই এগিয়ে আসেন এ মহান কাজে। এক সময় এ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি লাভ করেন নোবেল পুরস্কার। সারা জীবনের তাঁর সবটুকু উপার্জনই বিলিয়ে দেন মানবের কল্যাণে।

ক. কোথায় মানুষেরা নির্ভাবনায় ঘুমিয়ে থাকে?
খ. বিত্ত-সুখের ভাবনাহীন মানুষেরা সংশয়হীন কেন?
গ. মাদার তেরেসার মানসিকতা ‘আশা’ কবিতার কোন দিকটিকে তুলে ধরেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “মাদার তেরেসার দর্শনই যেন ‘আশা’ কবিতার ভাববস্তু” – যুক্তিসহ প্রমাণ কর।

উত্তরঃ

ক. উত্তরঃ  মানুষেরা জীর্ণ বেড়ার ঘরে নির্ভাবনায় ঘুমিয়ে থাকে।

খ. উত্তরঃ বিত্ত-সুখের ভাবনাহীন মানুষেরা আত্মকেন্দ্রিক নয় এবং দুরাশার গ্লানিতে ভোগে না বলেই তারা সংশয়হীন। অর্থবিত্তের সুখ প্রকৃত সুখ নয়। প্রকৃত সুখের জন্য জীবনকে দুর্ভাবনামুক্ত করতে হয়। আর এজন্য প্রয়োজন অল্পে তুষ্ট থাকা এবং সোনা-রুপায় পাহাড় গড়ার মানসিকতা পরিহার করা। মানুষ আত্মকেন্দ্রিক হয়ে অন্যের সঙ্গে ব্যবধান তৈরি করে। এতে মানুষের প্রকৃত সুখ নষ্ট হয়, সংশয় সন্দেহ তৈরি হয়। আর সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ তা থেকে দূরে থাকে। তারা পরস্পরকে ভালোবাসে। এ কারণেই তাদের জীবন ক্লিষ্ট নয়। দরিদ্র হলেও তারা বিত্তের পিছনে ছোটে না।

গ.উত্তরঃ

মাদার তেরেসার মানসিকতা ‘আশা’ কবিতার মানবপ্রেম বা মানুষকে ভালোবাসতে পারার মাঝে জীবনের মহত্ত্ব নিহিত থাকার বিষয়টির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। আত্মস্বার্থমগ্ন হয়ে নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকা প্রকৃত মানুষের কাজ নয়। নিজের সুখ-সমৃদ্ধির জন্যই মানুষের এ পৃথিবীতে আগমন ঘটেনি। পরের কল্যাণের নিমিত্তেই মানবজীবন। আর সেই জীবনই সার্থক, যে জীবন মানবকল্যাণের সুমহান ব্রতে নিয়োজিত।

তারা পৃথিবীর হিংস্রতা, হানাহানি ও বিদ্বেষের মধ্যেও মানুষকে ভালোবাসেন, মানুষের সেবায় নিজেদের উৎসর্গ করেন। উদ্দীপকে মাদার কতেরেসার মানবসেবার কথা বলা হয়েছে। মাদার তেরেসা ছিলেন একজন অসাধারণ মানবসেবী। যেখানে রোগ, শোক, দুঃখ-দারিদ্র্য, প্রাকৃতিক দুর্যোগের নির্মমতা সেখানে মাদার তেরেসা তাঁর সেবার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি জীবনে যত পুরস্কার পেয়েছেন তার সমস্ত অর্থই খরচ করেছেন মানবসেবার কাজে।

তিনি দেশ, ধর্ম, জাতির পার্থক্য না করে সেবাকাজে মানুষকেই বড় করে দেখেছেন। মানুষকে ভালোবেসে তিনি মানুষের হৃদয় জয় করেছেন। তিনি নিজেও দুনিয়ার মানুষের ভালোবাসার পাত্রী হয়ে উঠেছেন। ‘আশা’ কবিতায় মানুষের কল্যাণে আত্মনিয়োগ এবং মানুষকে ভালোবাসার যে দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে তার সঙ্গে উদ্দীপকটি সাদৃশ্যপূর্ণ। ‘আশা’ কবিতায় বলা হয়েছে কিছু মানুষ দুঃখ-কষ্টের মধ্যেও একে অন্যকে ভালোবাসে, মিথ্যা অহংকার করে না। বিত্তবৈভব অর্জনের জন্য দুর্ভাবনায় আয়ু কমায় না। তারা প্রতিবেশীর আঁধার ঘরে আলো জ্বালায়।

ঘ. উত্তরঃ

.মাদার তেরেসার দর্শনই যেন ‘আশা’ কবিতার ভাববস্তু” – মন্তব্যটি যথার্থ। মহামানবদের জীবন আদর্শ এবং মহত্ত্ব আমাদের অনুপ্রাণিত করে। অসহায় মানুষের সেবা ও মুক্তির জন্য কাজ করাই মানুওেষর ধর্ম। এ ধরনের কাজের মাধ্যমেই মানুষ আত্মতৃপ্তি লাভ করে। এর মধ্য দিয়েই সমাজের কল্যাণ সাধিত হয়। মাদার তেরেসা চিরস্মরণীয় একজন মানবসেবী। তাঁর সেবামূলক কাজ কোনো একটি দেশ বা সমাজের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না।

বিশ্বব্যাপী ছিল তাঁর মানবসেবার কার্যক্রম। তাঁর জন্মস্থান সুদূর আলবেনিয়ায় হলেও তিনি ভারত ও বিভিন্ন দেশের মানুষের দুঃখ-দুর্দশায় বিচলিত হয়েছিলেন। এ কারণে তিনি ভারতবর্ষে গরিব ও অসুস্থ মানুষের জন্য বিভিন্ন সেবা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। মানবসেবার মহান ব্রত নিয়ে তিনি দুঃখী মানুষের কাছে এগিয়ে গেছেন। উদ্দীপকের এই বিষয়টির সঙ্গে ‘আশা’ কবিতায় প্রতিফলিত মানবসেবার বিষয়টি সাদৃশ্যপূর্ণ।

সেখানে দারিদ্র্যক্লিষ্ট মানুষ পরস্পরকে ভালোবাসে। একে অন্যের ভাই পরিচয়ে পাশে দাঁড়ায়। কবিও মনুষ্যত্বের অধিকারী এসব মানুষের সান্নিধ্য পেতে চেয়েছেন। ‘আশা’ কবিতায় বিত্ত-বৈভব অর্জনের লোভ ত্যাগ করে মানুষকে ভালোবেসে মনুষ্যত্বসম্পন্ন মানুষ হওয়ার কথা বলা হয়েছে। সেখানে অসহায় অনাহারী মানুষের দুর্ভাবনাহীন জীবনের সঙ্গে কবি নিজেকে সম্পৃক্ত করতে চেয়ে তাদের প্রতি গভীর ভালোবাসার কথাই ব্যক্ত করেছেন।

উদ্দীপকের মাদার তেরেসাও মানবসেবা এবং মানুষের প্রতি গভীর ভালোবাসার কথা বলেছেন। তিনি আজীবন মানবকল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। এসব দিক বিচারের তাই বলা যায় যে, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

শেষ কথা

আশা করছি এই পোস্ট থেকে আশা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর পিডিএফ সংগ্রহ করতে পেরেছেন। এই রকম আরও ভালো ভালো পোস্ট পেতে আমার সাথেই থাকবেন। এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সকল শ্রেণির শিক্ষাসংক্রান্ত তথ্য শেয়ার করা হয়।  আমার সাথে শেষ পর্যন্ত থাকার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভালোথাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

আরও দেখুনঃ

আশা কবিতা সিকান্দার আবু জাফর পিডিএফ- এস এস সি

আমার দেশ কবিতা- সুফিয়া কামাল। বাংলা ১ম পত্র নবম-দশম শ্রেণি

একটি কাফি কবিতা-বিষ্ণু দে বাংলা ১ম পত্র এস এস সি- পিডিএফ

PDF-পল্লিজননী কবিতার জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর 

পল্লিজননী কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর পিডিএফ

পল্লিজননী কবিতা-জসীম উদ্‌দীন। বাংলা ১ম পত্র PDF