বর্ষা প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর- PDF Collect

বর্ষা প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

বর্ষা প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর সংগ্রহ করতে আজকের পোস্ট টি সম্পূর্ণ পড়ুন। এইচ এস সি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি প্রবন্ধ হচ্ছে বর্ষা। এটি প্রমথ চৌধুরী লিখছেন। এই গল্পের কিছু সৃজনশীল প্রশ্ন রয়েছে। অনেকে এই সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর জানতে চায়। এজন্য এগুলো খুঁজাখুঁজি করে। নিচের দিকে বর্ষা প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর গুলো পিডিএফ ফাইলে দিয়েছি। তাই আপনারা প্রশ্নের উত্তর গুলো পিডিএফ সংগ্রহ করতে পারবেন। তাহলে চলুন আজকের পোস্ট টি সম্পূর্ণ পড়ুন এবং বর্ষা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন গুলো সংগ্রহ করুন।

বর্ষা প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

নিচের অংশে বর্ষা প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর গুলো দেওয়া আছে। এই প্রশ্নের উত্তর আপনারা নিজে নিজে সমাধান করার চেষ্টা করবেন। এজন্য প্রথমে আপনাদের পাঠ্য বইয়ের বর্ষা প্রবন্ধন টি পড়ে নিবেন। তো যাদের যাদের বর্ষা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর প্রয়োজন তারা নিচে থেকে দেখেনিন।

সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : “এইখানে ছিল প্রমত্তা নদী । বর্ষার এই নদীর জলে বৃষ্টির ফৌটা পড়ে এক অদ্ভুত সুরের জন্ম দিত। আজ এখানে খরা । কতকাল বৃষ্টির শব্দ শুনি না। জলের ফোঁটা পাতার উপর পড়ায় পাতার যে শিহরণ তা দেখে মন ভরে যেত। ঝড়ো বৃষ্টির দাপটে গাছগুলো যেন দাঁড়িয়ে থাকা ভুলে গিয়ে দৌড়ে বেড়াতে চাইত ।” এভাবেই কাশেম মাঝি তার নাতনিকে বর্ষার গল্প শোনাচ্ছেন । কেন এমন হলো তা কাশেম মাঝি জানেন না। শুধু শুনেছেন পৃথিবীর মানুষ প্রকৃতিকে নিয়ে যা খুশি তাই করছে। আর এই কারণে প্রকৃতি আজ এমন বিরূপ। তাহলে কি পৃথিবী থেকে বর্ষা বিদায় নেবে? মানুষ আর বর্ষার রিমঝিম শব্দে উদাস হবে না! এই সব ভাবতে ভাবতে কাশেম মাঝির দুচোখ জলে ভরে উঠে ।

ক. প্রমথ চৌধুরী বর্ধার আকাশকে কিসের সাথে তুলনা করেছেন?
খ. বর্ষার বাতাসকে “খামখেয়ালি’ বলা হয়েছে কেন?
গ. অনুচ্ছেদের প্রথমাংশে কাশেম মাঝির অনুভূতিতে “বর্ষা” প্রবন্ধের যে দিকটি ফুটে উঠেছে তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ.অনুচ্ছেদটি “বর্ষা” প্রবন্ধের সমগ্র আবহকে ধারণ করতে পেরেছে কি? তোমার মতের পক্ষে যুক্তি দাও।

বর্ষা প্রবন্ধ বিশ্লেষণ

এমন দিনে কী লিখতে মন যায়?
আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি যে, যে দিকে যতদূর দৃষ্টি যায় সমগ্র আকাশ বর্ষায় ভরে গিয়েছে। মাথার উপর থেকে অবিরাম অবিরল অবিচ্ছিন্ন বৃষ্টির ধারা পড়ছে। সে ধারা এত সূক্ষ্ম নয় যে চোখ এড়িয়ে যায়, অথচ এত স্থূল নয় যে তা চোখ জুড়ে থাকে। আর কানে আসছে তার একটানা আওয়াজ; সে আওয়াজ কখনো মনে হয় নদীর কুলুধ্বনি, কখনো মনে হয় তা পাতার মর্মর। আসলে তা একসঙ্গে ও দুই-ই; কেননা আজকের দিনে জলের স্বর ও বাতাসের স্বর দুই মিলে-মিশে এক সুর হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এমন দিনে মানুষ যে অন্যমনস্ক হয় তার কারণ তার সকল মন তার চোখ আর কানে এসে ভর করে। আমাদের এই চোখ-পোড়ানো আলোর দেশে বর্ষার আকাশ আমাদের চোখে কী যে অপূর্ব স্নিগ্ধ প্রলেপ মাখিয়ে দেয় তা বাঙালি মাত্রেই জানে। আজকের আকাশ দেখে মনে হয়, ছায়ার রঙের কোনো পাখির পালক দিয়ে বর্ষা তাকে আগাগোড়া মুড়িয়ে দিয়েছে, তাই তার স্পর্শ আমাদের চোখের কাছে এত নরম, এত মোলায়েম।

তার পর চেয়ে দেখি গাছপালা মাঠঘাট সবারই ভিতর যেন একটা নতুন প্রাণের হিল্লোল বয়ে যাচ্ছে। সে প্রাণের আনন্দে নারকেল গাছগুলো সব দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দুলছে, আর তাদের মাথার ঝাকড়া চুল কখনো-বা এলিয়ে পড়ছে, কখনো-বা জড়িয়ে যাচ্ছে। আর পাতার চাপে যেসব গাছের ডাল দেখা যায় না, সেসব গাছের পাতার দল এ ওর গায়ে ঢলে পড়ছে, পরস্পর কোলাকুলি করছে; কখনো-বা বাতাসের স্পর্শে বেঁকে-চুরে এমন আকার ধারণ করছে। যে, দেখলে মনে হয় বৃক্ষলতা সব পত্রপুটে ফটিকজল পান করছে। আর এই খামখেয়ালি বাতাস নিজের খুশিমতো একবার পাঁচ মিনিটের জন্য লতা-পাতাকে নাচিয়ে দিয়ে বৃষ্টির ধারাকে ছড়িয়ে দিয়ে আবার থেমে যাচ্ছে।

গৃহ প্রবন্ধের mcq প্রশ্ন উত্তর পিডিএফ সংগ্রহ

তারপর আবার সে ফিরে এসে যা ক্ষণকালের জন্য স্থির ছিল তাকে ছুঁয়ে দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে, সে যেন জানে যে তার স্পর্শে যা-কিছু জীবন্ত অথচ শান্ত সে সবই প্রথমে কেঁপে উঠবে, তার পর ব্যতিব্যস্ত হবে, তারপর মাথা নাড়বে, তারপর হাত-পা ছুড়বে; আর জলের গায়ে ফুটবে পুলক। বৃষ্টির সঙ্গে বৃক্ষপল্লবের সঙ্গে সমীরণের এই লুকোচুরি খেলা আমি চোখ ভরে দেখছি আর কান পেতে পেতে শুনছি। মনের ভিতর আমার এখন আর কোনো ভাবনাচিন্তা নেই, আছে শুধু এমন-একটা অনুভূতি যার কোনো স্পষ্ট রূপ নেই, কোনো নির্দিষ্ট নাম নেই।
মনের এমন বিক্ষিপ্ত অবস্থায় কী লেখা যায়? যদি যায় তো সে কবিতা, প্রবন্ধ নয়।

আনন্দে-বিষাদে মেশানো ঐ অনামিক অনুভূতির জমির ওপর অনেক ছোটোখাটো ভাব মুহূর্তের জন্য ফুটে উঠছে, আবার মুহূর্তেই তা মিলিয়ে যাচ্ছে। এই বর্ষার দিনে কত গানের সুর আমার কানের কাছে গুনগুন করছে, কত কবিতার শ্লোক, কখনো পুরোপুরি কখনো আধখানা হয়ে আমার মনের ভিতর ঘুরে বেড়াচ্ছে। আজকে আমি ইংরেজি ভুলে গিয়েছি। যেসব কবিতা যেসব গান আজ আমার মনে পড়ছে সেসবই হয় সংস্কৃত, নয় বাংলা, নয় হিন্দি।

মেঘৈমেদুরষরং বনভূবশ্যামাস্তমালদ্ৰমৈঃ

গীতগোবিন্দের এই প্রথম চরণ যে বাঙালি একবার শুনেছে চিরজীবন সে আর তা ভুলতে পারবে না। আকাশে ঘনঘটা হলেই তার কানে ও-চরণ আপনা হতেই বাজতে থাকবে। সেইসঙ্গে মনে পড়ে যাবে মনের কত পুরনো কথা, কত লুকানো ব্যথা। আমি ভাবছি মানুষ ভাষায় তার মনের কথা কত অল্প ব্যক্ত করে, আর কত বেশি অব্যক্ত রয়ে যায়। ভাষায় মনোভাব ব্যক্ত করবার জন্যই যারা এ পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেছেন তাঁরাও, অর্থাৎ কবির দলও, আমার বিশ্বাস, তাদের মনকে অর্ধেক প্রকাশ করেছেন, অর্ধেক গোপন রেখেছেন। আজকের দিনে রবীন্দ্রনাথের একটি পুরনো গানের প্রথম ছত্রটি ঘুরে-ফিরে ক্রমান্বয়ে আমার কানে আসছে – “এমন দিনে তারে বলা যায়। এমন দিনে যা বলা যায় তা হয়ত রবীন্দ্রনাথও আজ পর্যন্ত বলেন নি, শেক্সপিয়রও বলেন নি।

বলেন যে নি, সে ভালোই করেছেন। কবি যা ব্যক্ত করেন তার ভিতর যদি এই অব্যক্তের ইঙ্গিত না থাকে তা হলে তাঁর কবিতার ভিতর কোনো mystery থাকে না, আর যে কথার ভিতর mystery নেই, তা কবিতা নয় – পদ্য হতে পারে। সে যাই হোক, আজ আমার কানে শুধু রবীন্দ্রনাথের গানের সুর লেগে নেই, সেইসঙ্গে তিনি বর্ষার যে অসংখ্য ছবি এঁকেছেন সেইসব চিত্র বায়োস্কোপের ছবির মতো আমার চোখের সুমুখ দিয়ে একটির পর আর-একটি চলে যাচ্ছে। ভালো কথা – এটা কখনো ভেবে দেখেছেন যে, বাংলার বর্ষা রবীন্দ্রনাথ আবিষ্কার করেছেন, ও-ঋতুর রূপ-রস-গন্ধ-স্পর্শে রবীন্দ্রনাথের ভারতী ভরপুর, তার ভীমমূর্তি আর তার কান্তমূর্তি, দুইই তাঁর চোখে ধরা পড়েছে, দুইই তাঁর ভাষায় সমান সাকার হয়ে উঠেছে। এ বিষয়ে সেকালের একটা কবিতা আছে যা একাই একশো-

রজনী শাঙন ঘন ঘন দেয়া গরজন।
রিমিঝিমি শবদে বরিষে।
পালঙ্কে শয়ান রঙ্গে বিগলিত চীর অঙ্গে
নিন্দ যাই মনের হরিষে॥

শেষ কথা

আজকেরমতো এখানেই শেষ। আশা করছি এই পোস্ট টি আপনাদের অনেক ভাললেগেছে। এই পোস্ট টি ভালোলেগে থাকলে শেয়ার করতে পারেন। আশা করছি এই পোস্ট থেকে বর্ষা প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর সংগ্রহ করতে পেরেছেন। এই রকম আরও ভালো ভালো পোস্ট পেতে আমাদের সাথেই থাকবেন। ভালোথাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আমাদের সাথে শেষ পর্যন্ত থাকার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

See More:

কারবালা প্রান্তর সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর- এইচ এস সি বাংলা ১ম পত্র

আত্মচরিত সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা ১ম পত্র