বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ কবিতার ব্যাখ্যা কবিতার অর্থসহ -suggestionbd.top

বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ কবিতার ব্যাখ্যা

বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ কবিতার ব্যাখ্যা এই পোস্টে বিলেশন করে দেওয়া আছে। এই কবিতাটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত লিখেছেন। এই কবিতার মাধ্যমে কবি দেশ প্রেম, দেশের প্রতি ভালোবাসা ইত্যাদি ফুটিয়ে তুলেছেন। কবিতাটি অনেক জটিল ভাষায় লেখা হয়েছে। যার কারণে অনেকে কবিতার ব্যাখ্যা গুলো বুঝতে পারে না। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা সিলেবাসের সবচেয়ে বড় ও কঠিন কবিতা ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ। এই কবিতা থেকে সৃজনশীল প্রশ্ন ও বহুনির্বাচনি প্রশ্ন করা হয়। তাছাড়া কবিতার ব্যাখ্যা টি বিশ্লেষণ করতে বলা হয়।

অনেকে এই কবিতার ব্যাখ্যা না জানায় গুগলে অনুসন্ধা করে। এই পোস্টে আপনাদের জন্য কবিতাটির বাংলা অর্থ সহ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এই পোস্ট থেকে সহজ ভাষা বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ কবিতার ব্যাখ্যা জানতে পারবেন। আপনাদের জন্য বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ কবিতা এখানে উপস্থাপন করা আছে। তো যারা যারা কবিয়ার ব্যাখ্যা গুলো পড়তে চাচ্ছেন তারা আজকের এই পোস্ট টি সম্পূর্ণ পড়ুন এবং আমাদের সাথে শেষ পর্যন্ত থাকুন। তো চলুন আজকের পোস্ট টি শুরু করা যাক।

বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ কবিতার মূল কথা ও কবি পরিচিতি

মাইকেল মধুসূদন দত্ত ১৮২৪ খ্রিস্টাব্দের ২৫এ জানুয়ারি যশোর জেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম রাজনারায়ণ দত্ত এবং তার মাতার নাম জাহ্নবী দেবী। মধুসূদন ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার হিন্দু কলেজের সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন। মায়ের তত্ত্বাবধানে গ্রামেই তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন হয়। ১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দে খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করে তিনি পিতৃপ্রদত্ত নামের শুরুতে ‘মাইকেল’ নাম যোগ করেন। মধুসূদন বুৎপন্ন ছিলেন বহু ভাষার। ইংরেজি ও সংস্কৃতিসহ ফরাসি, জার্মান ও ইতালীয় ভাষাতেও তিনি দক্ষতা অর্জন করেছিলেন।

বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ কবিতার ব্যাখ্যা

অনেকে বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ কবিতার ব্যাখ্যা জানতে চাচ্ছেন। এই অংশে আপনাদের সাথে কবিতার ব্যাখ্যা গুলো শেয়ার করা হয়েছে। নিচে থেকে কবিতাটির ব্যাখ্যা দেখেনিন।

বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ কবিতার মূল ভাব হচ্ছে দেশের প্রতি ভালোবাসা, স্বদেশ প্রেম  এই কবিতাটিতে মেঘনাদেরর স্বদেশ প্রেমই প্রকাশ পেয়েছে।
এই কবিতাটি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ’মেঘনাদবধ কাব্য’ নামক মহাকাব্যের ‘বধো’ নামক ষষ্ঠ সর্গ থেকে নেয়া হয়েছে। এ-কবিতায় মাতৃভূমির প্রতি রাবনের জ্যেষ্ঠ পুত্র মেঘনাদের অকৃত্রিম ভালোবাসা এবং রাবণের ছোট ভাই বিভীষণের বিশ্বাসঘাতকতা ও দেশদ্রোহিতার বিরুদ্ধে সুগভীর ঘৃণা প্রকাশিত হয়েছে । *পররাজ্যলোভী রামচন্দ্র ও লক্ষ্মণ রাজা রাবণের স্বর্ণলঙ্কা আক্রমণ করে । কর্মদোষ, ভাগ্যদোষ আর দেবতাদের বিরুপ মনোভাবের কারণে রাবন দিশেহারা হয়ে পড়েন। তিনি শতত্রুদের দৈব কৌশলের কাছে বারবার হেরে যেতে থাকেন । ছোটভাই বীর কুম্ভকর্ণ এবং প্রাণাধিক পুত্র বীরবাহু যুদ্ধে নিহত হবরি পর রাজা রাবণ মারাত্মকভাবে হতাশ হয়ে পড়েন।

এ-সময় রাজা রাবণের বড় ছেলে বীর মেঘনাদ পিতার কাছ থেকে সেনাপতির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। বাসবত্রাস, লঙ্কার বীর যোদ্ধা মেঘনাদ যুদ্ধে জয়লাভ নিশ্চিত করতে পূজার করার সিদ্ধন্ত নেন । তিনি নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে ইষ্টদেবতা অগ্নিদেবের পূজায় নিমগ্ন হন । এসময় মায়াদেবীর আশির্বাদ নিয়ে রাবণের ছোট ভাই বিভীষণের সহায়তায় লক্ষ্মণ শত শত প্রহরীরর চোখ ফাঁকি দিয়ে যজ্ঞাগারের মূল দরোজায় পৌঁছে যায় । মেঘনাদকে হত্যার জন্য লঙ্কার শত্রু লক্ষ্মণকে পথ দেখিয়ে নিয়ে আসে গৃহশত্রু বিভীষণ । পিতৃব্য বিভীষণকে দেখে মেঘনাদের বুঝতে বাকি থাকে না বিভীষণই পথ দেখিয়ে লক্ষ্মণকে এখানে নিয়ে এসছে । বিভীষণকে লক্ষ্যকরে দেশপ্রেমিক নিরস্ত্র মেঘনাদ যে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে সে নাটকীয় ভাষাই ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কাবাংশে সংকলিত হয়েছে।

বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ কবিতার কবিতার অর্থসহ ব্যাখ্যা

এখানে আপনাদের জন্য কবিতার প্রত্যেকটির লাইন আলাদা আলাদা ভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এখানে সম্পূর্ণ কবিতাটি আপনাদের জন্য অর্থ সহকারে  ব্যাখ্যা করে দেওয়া আছে। নিচে থেকে কবিতার ব্যাখ্যা গুলো পড়ুন।

এতক্ষণে-অরিন্দম কহিলা বিষাদে-
জানিনু কেমনে আসি লক্ষ্মণ পশিল
রক্ষঃপুরে! হায়, তাত, উচিত কি তব
এ কাজ, নিকষা সতী তোমার জননী,

ব্যাখ্যা: এখানে অরিন্দম বলতে মেঘনাদকে বোঝানো হয়েছে। লক্ষ্মণকে নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে উপস্থিত হতে দেখে মেঘনাদ বিস্মিত ও মর্মাহত। তার চাচার এহেন কাজ করা কি উচিত হয়েছে? নিকষা সতী যার মা, তার পক্ষে এমন কাজ করা অনুচিত ।

সহোদর রক্ষঃশ্রেষ্ঠ? শূলিশম্ভুনিভ
কুম্ভকর্ণ? ভ্রাতৃপুত্র বাসববিজয়ী!
নিজগৃহপথ, তাত, দেখাও তস্করে?
চণ্ডালে বসাও আনি রাজার আলয়ে?

ব্যাখ্যা: তাছাড়া যেখানে আছে রাবণের ভ্রাতা (ভাই) কুম্ভকর্ণ, যে কিনা শূলপাণি মহাদেবের মতো। আর যেখানে তার ভাইয়ের পুত্র স্বয়ং মেঘনাদ দেবতাদের রাজা ইন্দ্রকে জয় করেছে। মেঘনাদের মনে প্রশ্ন জাগে-এত কিছুর পরেও শত্রুকে পথ চিনিয়ে নিজের গৃহে নিয়ে এলে? চোরকে প্রশ্রয় দিলে? চণ্ডালের মত নিম্নশ্রেণির কাউকে রাজকক্ষে স্থান দিলে?

কিন্তু নাহি গঞ্জি তোমা, গুরু জন তুমি
পিতৃতুল্য। ছাড় দ্বার, যাব অস্ত্রাগারে,
পাঠাইব রামানুজে শমন-ভবনে,
লঙ্কার কলঙ্ক আজি ভঞ্জিব আহবে।

ব্যাখ্যা: কিন্তু যাই হোক, গুরুজনের প্রতি তার গভীর শ্রদ্ধাবোধ। কারণ বিভীষণ পিতৃতুল্য। মেঘনাদ অস্ত্রাগারে গিয়ে যুদ্ধের সাজ গ্রহণ করে আসবে বলে তাকে দ্বার ছাড়তে অনুরোধ জানায়। কারণ সে লক্ষ্মণকে উপযুক্ত শাস্তি দিতে চায়। তার সাথে যুদ্ধ করে তাকে পরাজিত করে লঙ্কার সমস্ত কলঙ্ক-কালিমা মুছে দিতে চায়।

উত্তরিলা বিভীষণ, ‘বৃথা এ সাধনা,
ধীমান্। রাঘবদাস আমি; কী প্রকারে
তাঁহার বিপক্ষ কাজ করিব, রক্ষিতে
অনুরোধ?’ উত্তরিলা কাতরে রাবণি;-
‘হে পিতৃব্য, তব বাক্যে ইচ্ছি মরিবারে!
রাঘবের দাস তুমি? কেমনে ও মুখে
আনিলে এ কথা, তাত, কহ তা দাসেরে!’

ব্যাখ্যা: মেঘনাদের কথা ও অনুরোধ শুনে বিভীষণ উত্তর দিল, ‘তোমার এসব চেষ্টা বৃথা।’ তোমার সাধনা ব্যর্থতা ছাড়া আর কিছু নয়। কারণ, মেঘনাদের অনুরোধ রক্ষা করতে গিয়ে বিভীষণ লক্ষ্মণের বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ করতে পারেনা। তখন রাবণি (রাবণের পুত্র মেঘনাদ) কাতর সুরে বলল – হে পিতৃব্য, তোমার কথা শুনে আমার মরে যেতে ইচ্ছে করছে। রঘুবংশের শ্রেষ্ঠ যে সন্তান, তুমি তার দাস? একথা তুমি মুখে আনলে কী করে?

স্থাপিলা বিধুরে বিধি স্থাণুর ললাটে;
পড়ি কি ভূতলে শশী যান গড়াগড়ি
ধূলায়? হে রক্ষোরথি, ভুলিলে কেমনে
কে তুমি? জনম তব কোন মহাকূলে?

ব্যাখ্যা: বিধাতা চাঁদকে আকাশে নিশ্চল করে স্থাপন করেছেন তাই বলে চাঁদ কি ধুলায় গড়াগড়ি যায়? তাহলে তুমি কী করে এমন হলে, তুমি রক্ষকুলের বীর হয়ে কী করে নিজের পরিচয় ভুলে গেলে? তুমি কি ভাবতে পারো না কোন মহাকূলে তোমার জন্ম?

কে বা সে অধম রাম? স্বচ্ছ সরোবরে
করে কেলি রাজহংস পঙ্কজ-কাননে;
যায় কি সে কভু, প্রভু, পঙ্কিল সলিলে,
শৈবালদলের ধাম? মৃগেন্দ্র কেশরী,
কবে, হে বীরকেশরী, সম্ভাষে শৃগালে
মিত্রভাবে? অজ্ঞ দাস, বিজ্ঞতম তুমি,
অবিদিত নহে কিছু তোমার চরণে।

ব্যাখ্যা: আর কে সে অধম রাম তা কি তুমি জান না? রাঁজহাস কি কখনো কাদা, ময়লা, ঘোলা জলে যায়, সাঁতার কাটে? সে তো স্বচ্ছজলে সরোবরে জলকেলি করে বেড়ায়। সে তো বদ্ধ জলাশয়ে ঘোরাঘুরি করে না। পশুরাজ সিংহকে কি কখনও দেখেছ শিয়ালের সাথে সখ্য গড়ে তুলতে কিংবা সম্মানে তার কাছে মাথা নত করতে? আমি জ্ঞানহীন মূর্খ, তোমার আজ্ঞাবহ, কিন্তু তুমি তো সর্বজ্ঞানে মহাজ্ঞানী, গুণী। তোমার তো কিছুই অজানা নয়।

ক্ষুদ্রমতি নর, শূর, লক্ষ্মণ, নহিলে
অস্ত্রহীন যোধে কি
ক্ষুদ্রমতি নর, শূর, লক্ষ্মণ, নহিলে
অস্ত্রহীন যোধে কি সে সম্বোধে সংগ্রামে?
কহ, মহারথী, এ কি মহারথীপ্রথা?
নাহি শিশু লঙ্কাপুরে, শুনি না হাসিবে
এ কথা! ছাড়হ পথ; আসিব ফিরিয়া
এখনি! দেখিব আজি, কোন্ দেববলে,
বিমুখে সমরে মোরে সৌমিত্রি কুমতি!

ব্যাখ্যা: ছোট মনের হীন মানসিকতাসম্পন্ন লক্ষ্মণ। তা না হলে সে কীভাবে আমাকে অস্ত্রহীন অবস্থায় যুদ্ধ করতে বলে? হে মহারথী, তুমিই বলো, নিরস্ত্রের সাথে যুদ্ধ করা কি কোন বীরের আচরণ? এমন কথা শুনে একজন শিশুও খুঁজে পাওয়া যাবে না লঙ্কাপুর, যারা না হাসবে। তাই আমাকে যেতে দাও, আমি এখনি ফিরে আসব। আর লক্ষ্মণকে শায়েস্তা করব।

দেব-দৈত্য-নর-রণে, স্বচক্ষে দেখেছ,
রক্ষ:শ্রেষ্ঠ, পরাক্রম দাসের! কী দেখি
ডরিবে এ দাস হেন দূর্বল মানবে?

ব্যাখ্যা: হে বীর, দেব দৈত্যদের সাথে আমার যুদ্ধ তো তুমি স্বচক্ষে দেখেছ। সেখানে আমার পরাক্রম (বীরত্ব) তুমি জানো। তাহলে এই দুর্বল মানবকে (লক্ষ্মণ) দেখে আমি কেন ভয় পাবো?

নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে প্রগলভে পশিল
দম্ভী; আজ্ঞা কর দাসে, শাস্তি নরাধমে।
তব জন্মপুরে, তাত, পদার্পণ করে
বনবাসী! হে বিধাত:, নন্দন-কাননে
ভ্রমে দুরাচার দৈত্য? প্রফুল্ল কমলে
কীটবাস? কহ তাত, সহিব কেমনে?
হেন অপমান আমি,- ভ্রাতৃ-পুত্র তব?
তুমিও, হে রক্ষোমণি, সহিছ কেমনে?’

ব্যাখ্যা: নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে নির্ভীকচিত্তে যে অহংকার লক্ষ্মণ করছে, তুমি আমাকে অনুমতি করো, সেই নরাধমকে উপযুক্ত শাস্তি দান করি। হে প্রভু, এই শ্রীমতি মনোরম বাগানে ভুল করে কেন এই দুরাচার দানবকে নিয়ে এলে। এ কি অপূর্ব সুন্দর বিকশিত ফুলের মধ্যে কীটের মতো নয়? বলো কী করে তা আমি মেনে নিব? তোমারই ভাইয়ের পুত্র হয়ে কী করে সহ্য করব আমি এই অপমান? আর রক্ষোকুলের বীর হয়ে তুমিও তা কীভাবে সহ্য করছো?

মহামন্ত্র-বলে যথা নম্রশির: ফণী,
মলিনবদন লাজে, উত্তরিলা রথী
রাবণ-অনুজ, লক্ষি রাবণ-আত্মজে;
‘নহি দোষী আমি, বৎস; বৃথা ভর্ৎস মোরে
তুমি! নিজ কর্ম-দোষে, হায়, মজাইলা
এ কনক-লঙ্কা রাজা, মজিলা আপনি!’

ব্যাখ্যা: মহামন্ত্র বলে ফণা তোলা সাপ যেমন মাথা নত করে, তুমিও তাহলে তেমনি করে মাথা নত করছো? তখন মলিনমুখে রথী (বিভীষণ) উত্তর দিল, ‘এসবের জন্য আমি দায়ী নই। আমাকে অযথাই দোষারোপ করছ বাছা। বৃথাই তুমি আমাকে তিরস্কার করছ। তোমার নিজের কর্ম-দোষেই তুমি আজ এমন বিপদগ্রস্থ। তোমার এ অবস্থার জন্য তুমিই দায়ী।’

বিরত সতত পাপে দেবকুল;
এবে পাপপূর্ণ লঙ্কাপূরী;
প্রলয়ে যেমতি বসুধা
ডুবিছে লঙ্কা এ কালসলিলে!
রাঘবের পদাশ্রয়ে রক্ষার্থে আশ্রয়ী
তেঁই আমি। পরদোষে কে চাহে মজিতে?”

ব্যাখ্যা: মনে রেখো, দেবতারা সদা পাপ থেকে দূরে থাকেন। লঙ্কাপুরী এখন পাপে পূর্ণ। ঝড়-ঝঞ্ঝায় পৃথিবীর মত ডুবতে বসেছে লঙ্কাপুরী। তাই আমি রঘুবংশের রামচন্দ্রের পদতলে আশ্রয় নিয়েছি। তাছাড়া অন্যের দোষ মাথায় নিয়ে কে বিপদে পড়তে চায়?

রুষিলা বাসবত্রাস! গম্ভীরে যেমতি
নিশীথে অম্বরে মন্দ্রে জীমূতেন্দ্র কোপি
কহিলা বীরেন্দ্র বলী, ‘ধর্মপথগামী,
হে রাক্ষসরাজানুজ, বিখ্যাত জগতে
তুমি;- কোন ধর্ম মতে, কহ দাসে, শুনি,
জ্ঞাতিত্ব, ভ্রাতৃত্ব, জাতি,- এ সকলে দিলা
জলাঞ্জলি?

ব্যাখ্যা: মেঘনাদ (বাসবত্রাস) ক্ষুব্ধ হলো। সেই ক্ষোভ গভীর রাতে স্তব্ধ পরিবেশ ভেঙে আকাশে হওয়া মেঘের গর্জনের মতো। বীর (মেঘনাদ) তখন আক্রোশে বিভীষণকে বলল – তুমি জগত বিখ্যাত, কোন ধর্মানুসারে এমন কথা বলছ? কোন ধর্মমতে আত্মীয়তা, জাতিত্ব, ভ্রাতৃত্ব সবকিছু জলাঞ্জলি দিলে?

শাস্ত্রে বলে, গুণবান্ যদি
পরজন, গুণহীন স্বজন, তথাপি
নির্গুণ স্বজন শ্রেয়: পর: পর: সদা!
এ শিক্ষা, হে রক্ষোবর, কোথায় শিখিলে?
কিন্তু বৃথা গঞ্জি তোমা! হেন সহবাসে,
হে পিতৃব্য, বর্বরতা কেন না শিখিবে?
গতি যার নীচ সহ, নীচ সে দুর্মতি।”

ব্যাখ্যা: এজন্য শাস্ত্রে বলে গুণবান হলেও পর কখনো আপন হয় না। গুণহীন, মূর্খ হলেও আপনজন আপনই থাকে। তাই গুণবান পরজন থেকে গুণহীন স্বজন উত্তম। এমন শিক্ষা তুমি কোত্থেকে পেলে? অবশ্য আমি অযথাই তোমাকে তিরস্কার করছি। যাদের সাথে থাকো, তাদের থেকে হীনতা, বর্বরতা কেন শিখবে না? চিন্তা যার অসৎ, হীন যাদর মানসিকতা, সে তো নিচের দিকেই ধাবিত হবে।

বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ কবিতা

আপনারা এখানে থেকে বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ সম্পূর্ণ কবিতা  পড়তে পারবেন। তাছাড়া আপনারা চাইলে এই কবিতাটি সংগ্রহ করেনিতে পারবেন। এজন্য একটি পিডিএফ ফাইল দেওয়া আছে। এই পিডিএফ ফাইল থেকে কবিতাটি খুব সহজে পড়তে পারবেন এবং আপনাদের প্রয়োজনে সংগ্রহ করেনিতে পারবেন। নিচে একটি লিঙ্ক দেখতে পারবেন। নিচের দেওয়া এই লিঙ্কে ক্লিক করে আপনারা কবিয়াত্র পিদিএফ সংগ্রহ করতে পারবেন।

পিডিএফ সংগ্রহ করুন 

শেষ কথা

আজকেরমতো এখানেই শেষ। আশা করছি আপনারা কবিতা ও কবিতার ব্যাখ্যা গুলো বুঝতে পেরেছেন   আশা করছি এই পোস্ট টি আপনাদের অনেক ভাললেগেছে। এই পোস্ট টি ভালোলেগে থাকলে শেয়ার করতে পারেন। আশা করছি এই পোস্ট থেকে বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ কবিতার ব্যাখ্যা জানতে পেরেছেন। এই রকম আরও ভালো ভালো পোস্ট পেতে আমাদের সাথেই থাকবেন।  ভালোথাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আমাদের সাথে শেষ পর্যন্ত থাকার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

See More:

সোনার তরী কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর Pdf collect

অভাগীর স্বর্গ গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর Pdf collect

অভাগীর স্বর্গ গল্পের mcq, বহুনির্বাচনি প্রশ্ন উত্তর – Pdf