শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর পিডিএফ সংগ্রহ

শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর অনেক শিক্ষার্থী অনুশীলন করতে চায়। এই প্রবন্ধটি মােতাহের হােসেন চৌধুরীর ‘সংস্কৃতি কথা” গ্রন্থের মনুষ্যত্ব’ শীর্ষক প্রবন্ধের  একটি অংশ। প্রবন্ধটি দ্বারা লেখক শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব এর বিকাশ ঘটিয়েছেন। অনেক পরীক্ষার জন্য এই অধ্যায়ের সৃজনশীল ও বহুনির্বাচনি প্রশ্ন গুলো গুরুত্বপূর্ণ। এই পোস্টে আপনাদের কে শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব প্রবন্ধ থেকে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সৃজনশীল প্রশ্ন দেওয়া আছে।

আপনারা এই সৃজনশীল প্রশ্ন গুলো পরীক্ষার প্রিপারেশন এর জন্য পড়তে পারবেন। সৃজনশীল প্রশ্নের পাশাপাশি এদের উত্তর গুলো নিচের দিকে দেওয়া আছে। তো তার জন্য আজকের পোস্ট টি সম্পূর্ণ পড়ুন এবং আমাদের সাথে শেষ পর্যন্ত থাকুন। তো আপনাদের যাদের যাদের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর গুলো প্রয়োজন তারা নিচে থেকে দেখেনিন।

শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব mcq

শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব সৃজনশীল

এখানে শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব সৃজনশীল প্রবন্ধের কয়েকটি সৃজনশীল দেওয়া আছে। যেগুলো খুবই  গুরুত্বপূর্ণ  সেগুলো থেকে এই পোস্টে শেয়ার করা হয়েছে। তো আপনি যদি সৃজনশীল প্রশ্ন গুলো খুঁজে থাকেন তাহলে নিচে থেকে সৃজনশীল প্রশ্ন গুলো দেখেনিন।

সৃজনশীল ০১: শাওন সাহেব বিশ্ববিদ্যালয় পড়া শেষে বাবার ব্যবসা দেখাশুনা করছেন। তিনি ব্যবসায় অধিক মুনাফা অর্জনের জন্য শ্রমিকের বেতন ও বোনাসের কিছু অংশ কমিয়ে দেন। তিনি এখন প্রচুর অর্থ ও বিত্তের মালিক। তার বন্ধু হাফিজ সাহেব বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বড় চাকরি করেন। তিনি শ্রম ও অর্থ দিয়ে তাঁর গ্রামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। সেখানে তিনি শিক্ষার্থীদের নাচ, গান, আবৃত্তি ও নাটকসহ নানা সাংস্কৃতিক বিষয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন। মাঝে মাঝে তিনি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দুর্যোগপূর্ণ স্থানে নিয়ে যান।

ক. লোভের ফলে মানুষের কিসের মৃত্যু ঘটে?
খ. শিক্ষার অপ্রয়োজনের দিকটিকে লেখক শ্রেষ্ঠ দিক বলেছেন কেন?
গ. উদ্দীপকের শাওন সাহেবের মধ্যে শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের কোন দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপকের হাফিজ সাহেবের চেতনায় ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের আসল উদ্দেশ্য ফুটে উঠেছে”- উক্তিটির মূল্যায়ন কর ।

সৃজনশীল ০২:  ১ জুলাই , ২০১৬ ঢাকার গুলশানের হলি আর্টিজেন বেকারি এন্ড রেস্টুরেন্টে একদল শিক্ষিত বিপথগামী যুবক নৃশংস হামলা চালিয়ে দেশিশসহ ২২ জন মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এটি এদেশের ইতিহাসের একটি জঘন্যতম হত্যার ঘটনা

ক. শিক্ষার শ্রেষ্ঠ দিক কোনটি?
খ. অর্থ সাধনাই জীবন সাধনা নয়। ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত যুবকদের মধ্যে শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে বর্ণিত শিক্ষার কোন দিকটি অনুপস্থিত? বর্ণনা কর।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ঘটনা শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধ লেখকের প্রত্যাশার বিপরীত।” মূল্যায়ন কর।

শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

অনেক শিক্ষার্থীরা সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর গুলো লিখতে পারবে না। তো তাদের জন্য এখানে উক্ত সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর নিচে দেওয়া আছে। আপনার উত্তর গুলো সংগ্রহ করার প্রয়োজন হলে নিচের অংশ থেকে উত্তর দেখেনিন।

উত্তর ১ঃ

ক। জ্ঞান লোভের ফলে মানুষের আত্মার মৃত্যু ঘটে।

খ। শিক্ষার অপ্রয়োজনের দিকই শ্রেষ্ঠ দিক। কারণ এই দিক মানুষের মনকে বিকশিত করে, মনুষ্যত্ব অর্জনে সহায়তা করে। শিক্ষার দুটি দিক—একটি প্রয়োজনের, অন্যটি অপ্রয়োজনের। দ্বিতীয় দিকটি মানুষের মনের দুয়ার উন্মোচিত করে তাকে শেখায় কীভাবে জীবনকে উপভোগ করতে হয়। শুধু তাই নয়, এর মাধ্যমেই মানুষ অনুভূতি ও কল্পনার রস আস্বাদন করতে পারে। তার সুপ্ত মন শিক্ষার স্পর্শ পেয়ে আর দশজন সাধারণ থেকে পৃথক হয়ে ওঠে। এসব কারণে শিক্ষার অপ্রয়োজনের দিকটিই শ্রেষ্ঠ।

গ। উদ্দীপকের শাওন সাহেবের মধ্যে শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের জীবসত্তার দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে।

শিক্ষা হচ্ছে জীবসত্তা থেকে মানবসত্তায় উত্তরণের উপায়। প্রকৃত শিক্ষা মানুষের মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটায়। মানুষকে জীবসত্তা থেকে মানবসত্তায় উন্নীত করে। মনুষ্যত্বসম্পন্ন মানুষ ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র ও দেশের হিত সাধনে নিরলস কাজ করেন।

উদ্দীপকে শিক্ষার দুটি প্রধান দিকের ইঙ্গিত করা হয়েছে। এখানে জীবসত্তার পূজারি অর্থলোভী শাওন এবং তার বন্ধু হাফিজের মানবসত্তার অধিকারী। জীবসত্তার কারণে শাওন শ্রমিকের বেতন ও বোনাসের কিছু অংশ কমিয়ে দিয়ে বেশি আয় করার চেষ্টা করেছেন, যা অন্যায় ও অমানবিক। শাওন শিক্ষিত হলেও প্রকৃত শিক্ষায় সে শিক্ষিত নয়। সে মনুষ্যত্বহীন এবং অর্থের নিগড়ে বন্দি। তাঁর মধ্যে ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের অর্থলোভী মানসিকতা ও জীবসত্তাকে টিকিয়ে রাখার গভীর মনোযোগের দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে। কারণ সে শিক্ষার মূল উদ্দেশ্যের বাইরে গিয়ে তার স্বার্থ হাসিল করতে চেয়েছে।

ঘ। “উদ্দীপকের হাফিজ সাহেবের চেতনায় ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের আসল উদ্দেশ্য ফুটে উঠেছে”- মন্তব্যটি যথার্থ।

শিক্ষা মানুষের সার্বিক উন্নতি সাধন করে। প্রকৃত শিক্ষা মানুষের বুদ্ধির উৎকর্ষ সাধন করে আত্মার মুক্তিদান করে। শিক্ষা মানুষকে আত্মপ্রকাশের সুযোগ দানের মাধ্যমে মনুষ্যত্বলোকের সঙ্গে পরিচিত করে তোলে। তাতে মানুষ অর্থচিন্তার নিগড় থেকে মুক্তি লাভ করে মানবসত্তায় উপনীত হয়। উদ্দীপকের হাফিজ সাহেব অর্থচিন্তার নিগড় থেকে মুক্ত হয়ে মানবসত্তায় উপনীত হয়েছেন।

ফলে তিনি তাঁর বন্ধু শাওনের মতো অর্থের পেছনে না ছুটে মানবকল্যাণে কাজ করেছেন। তাঁর শ্রম ও অর্থ দিয়ে গ্রামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন। সেই স্কুলে তিনি শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করেন এবং তাদের মানবিক হতে দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় নিয়ে যান। তাঁর এই কল্যাণচিন্তা ও মানবতাবোধ ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের মূল উদ্দেশ্যের সঙ্গে একসূত্রে গাঁথা। কারণ আলোচ্য প্রবন্ধে মনুষ্যত্ব অর্জনের যে দিকের কথা লেখক আলোচনা করেছেন, উদ্দীপকের হাফিজ সাহেবের কর্মকাণ্ড সেই মানবিক দিকের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।

উদ্দীপকে শিক্ষার দুটি দিক তথা জীবসত্তা ও মানবসত্তার কথা ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এই দুটি দিকের একটির প্রতিনিধি শাওন সাহেব এবং অন্যটির প্রতিনিধি হাফিজ সাহেব। হাফিজ সাহেবের স্বভাব-বৈশিষ্ট্য ও কর্মকাণ্ডে শিক্ষার প্রকৃত দিক তথা মানবসত্তার বা মনুষ্যত্বের দিকটি প্রকাশ পেয়েছে। শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের লেখকও এই দিকটি বিকাশ ঘটানোর আহ্বান জানিয়েছেন। এদিক থেকে বলা যায় প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

উত্তর ২ঃ

 ক। শিক্ষার শ্রেষ্ঠ দিক অপ্রয়ােজনের দিক ।

খ। সাধনাই জীবন সাধনা নয়। কারণ বেঁচে থাকার জন্য অর্থের প্রয়ােজন থাকলেও শুধু অর্থের পেছনে দৌড়ানাে মানবজীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য নয়। মানুষকে মনুষ্যত্বও অর্জন করতে হয়। জন্য অর্থ উপার্জন অপরিহার্য। তবে শুধু অর্থ উপার্জনের পেছনে ছুটলে জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য আড়ালেই থেকে যায় । কারণ যারা কেবল অর্থচিন্তা দ্বারা তাড়িত তারা মনুষ্যত্বলােকের স্বাদ অনুভব করতে পারে না। জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য অনুধাবন করতে হলে অর্থচিন্তার নিগড় থেকে মুক্ত হয়ে মনুষ্যত্বলােকে পৌছানাের চেষ্টা করতে হবে।

গ।  উদ্দীপকে উল্লিখিত যুবকদের মধ্যে শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে বর্ণিত শিক্ষার অপ্রয়ােজনের দিকটি অনুপস্থিত।

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জনকেই প্রকৃত শিক্ষা বলা যায় না। শিক্ষার মাধ্যমে মনুষ্যত্ব অর্জিত না হলে সেই শিক্ষার কোনাে মূল্য থাকে না। তাই শিক্ষা অর্জনের সঙ্গে মনুষ্যত্ব অর্জনের দিকটিতেও গুরুত্ব দিতে হবে।

শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে লেখক বলেছেন যে, শিক্ষার আসল কাজ হলাে মূল্যবোেধ সৃষ্টি, জ্ঞান দান নয়। অথচ প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থায় মানুষ শিক্ষা অর্জন করলেও তার ভেতরে মূল্যবােধ সৃষ্টি হচ্ছে না। কেবল অর্থচিন্তার নিগড়ে বন্দি হয়ে পড়ছে বলে শিক্ষার অপ্রয়ােজনের দিকটি অর্জিত হচ্ছে না। উদ্দীপকের যুবকরাও মনুষ্যত্ববােধ অর্জন করেনি। তারা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু সেই শিক্ষা তাদের মনুষ্যত্ববােধ জাগ্রত করতে পারছে না। আর তাই নৃশংস হামলা চালিয়ে তারা মানুষকে। নির্মমভাবে হত্যা করতেও পিছপা হচ্ছে না।

ঘ। “উদ্দীপকে উল্লিখিত ঘটনা শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধ লেখকের প্রত্যাশার বিপরীত।”- মন্তব্যটি যথার্থ ।

থেকে মানবসত্তায় উত্তরণের মাধ্যম বা পথ হলাে শিক্ষা। শিক্ষার আলােতে হৃদয় আলােকিত হয়, মানুষ অর্জন করে মনুষ্যত্ব। আর প্রকৃত শিক্ষার অভাবে মনুষ্যত্ব অর্জনের কাজটি অসমাপ্তই থেকে যায়। ফলে শিক্ষিত হয়েও মানুষ মনুষ্যত্বের অভাবে। অন্ধকারেই থেকে যায় ।

যুবকরা শিক্ষিত হয়েও মনুষ্যত্ব বিবর্জিত। এ কারণে নৃশংস হত্যাকাণ্ডে তাদের হাত কাঁপেনি। তাদের জন্য শিক্ষা ও মনষ্যতে’ প্রবন্ধের লেখকের প্রত্যাশিত প্রকৃত শিক্ষাই কাম্য ছিল; যে শিক্ষা তাদের ভেতরে মনুষ্যত্ববােধকে জাগিয়ে তুলতে পারত । লেখক বলেছেন, মানুষের জীবন হলাে একটি দোতলা ঘর । জীবসত্তা হলাে সেই ঘরের নিচতলা আর মানবসত্তা বা মনুষ্যত্ব হলাে সেই ল। এই জীবসত্তা থেকে মানবসত্তার ঘরে পৌছানাের মই হলাে শিক্ষা। শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য হলাে মূল্যবােধ সৃষ্টি, যা উদ্দীপকের যুবকদের মধ্যে সৃষ্টি হয়নি।

লেখক মল্যবােধসম্পন্ন মানুষ প্রত্যাশা করেছেন, যা প্রকৃত শিক্ষার মাধ্যমেই অর্জন করা সম্ভব। আর উদ্দীপকের যুবকরা শিক্ষিত সকত শিক্ষায় শিক্ষিত নয়। তাদের শিক্ষায় মনুষ্যত্বের জাগরণ ঘটেনি। এ কারণে প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটিকে যথার্থ বলা যায়।

শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর  পিডিএফ

প্রকৃত শিক্ষার উদ্দেশ্য ও সার্থকতা-এর আলােকে প্রণীত কিন্তু কথা হচ্ছে, শিক্ষা কি শুধু চাকুরীর জন্যই করতে হবে? শিক্ষার কি আর কোন সার্থকতা নাই? আমার মনে হয়, শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষকে এই সুন্দর ভুবনে কল্যাণ, প্রেম ও সৌন্দর্য্যপুষ্ট জীবন যাপনে শক্তিমান ও নানা দৃষ্টিক্ষম করে তােলা। মানুষ বিশ্ব-প্রভুর। সৃষ্টি-ভূষণ। তাই তার জীবনে চাই সুরুচি, সৌন্দর্য, সম্পদ, প্রেম, শক্তি ও স্রষ্টাকে উপলব্ধি করবার প্রকৃষ্ট জ্ঞান।

যে-মানুষের জীবনে এ সমস্তের যেকোনাে একটির অভাব ঘটেছে সে মানুষ নামের অযােগ্য। আর যে শিক্ষা মানুষকে এ সমস্ত দিতে পারছে না সে শিক্ষা নিরর্থক। এতেই বুঝতে পারা যাবে, মানুষ-মাত্রকেই শিক্ষা লাভ করতে হবে- এমন শিক্ষা যাতে করে সে পূর্ণাঙ্গ ব্যক্তিত্ব অর্জনে সক্ষম হতে পারে । যে-জাতি এ-কথা ভুলে গিয়ে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে নিজেদের নিশ্চেষ্টতা, দৈন্য ও ভণ্ডামীকে লুকিয়ে রাখে ও রাখতে চেষ্টা করে, সে জাতির মুক্তি অসম্ভব।

 ক. চিন্তার স্বাধীনতা, বুদ্ধির স্বাধীনতা, আত্মপ্রকাশের স্বাধীনতা যেখানে নেই সেখানে কী নেই?
খ. ক্ষুৎপিপাসায় তৃপ্তির প্রয়ােজন বুঝিয়ে লেখ ।
গ. উদ্দীপকটি ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের কোন বিষয়টি তুলে ধরেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “প্রকৃত শিক্ষা সম্বন্ধে উদ্দীপক এবং শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধ উভয় লেখকের দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবােধ সমান্তরাল।” মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার কর ।

উত্তরঃ

ক । চিন্তার স্বাধীনতা, বুদ্ধির স্বাধীনতা, আত্মপ্রকাশের স্বাধীনতা যেখানে নেই সেখানে মুক্তি নেই।

খ।   ক্ষুৎপিপাসায় কাতর মানুষটিকে তৃপ্ত রাখতে না পারলে আত্মার অমৃত উপলব্ধি করা যায় না বলেই ক্ষুৎপিপাসার তৃপ্তির প্রয়ােজন। চিন্তার স্বাধীনতা, বুদ্ধির স্বাধীনতা, আত্মপ্রকাশের স্বাধীনতা যেখানে নেই সেখানে মুক্তি অসম্ভব। মানুষের অন্নবস্ত্রের সমস্যা সমাধানের | চেষ্টা করতে হবে এই মুক্তির দিকে লক্ষ্য রেখে। তাই ক্ষুৎপিপাসায় কাতর মানুষটিকে তৃপ্ত রাখতে না পারলে আত্মার উপলব্ধি করা যায় না বলেই ক্ষুৎপিপাসায় তৃপ্তির প্রয়ােজন।

গ।  উদ্দীপকটি শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে প্রকাশিত শিক্ষার আসল উদ্দেশ্য তুলে ধরেছে।

মানুষের জীবনে মৌলিক চাহিদা মেটানােই সর্বশেষ কথা নয়। অন্ন-বস্ত্রের যেমন প্রয়ােজন রয়েছে তেমনই প্রকৃত শিক্ষারও প্রয়ােজন রয়েছে। মনুষ্যত্ব অর্জন করতে না পারলে অগাধ সম্পদের মালিক হলেও প্রকৃত সুখ পাওয়া যায় না।

উদ্দীপকে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত অর্থাৎ মনুষ্যত্ব অর্জনের প্রতি গুরুত্ব আরােপ করা হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষকে এই সুন্দর ভুবনে কল্যাণ, প্রেম ও সৌন্দর্যপুষ্ট জীবনযাপনে শক্তিমান করে তােলা। শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের প্রাবন্ধিকের মতে শিক্ষার আসল কাজ হচ্ছে মানুষকে মনুষ্যত্বলােকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া।

জীবনকে কীভাবে উপভােগ করতে হয়, কীভাবে মানবিক গুণাবলির অধিকারী হতে হয় তা জানা যায় শিক্ষার অপ্রয়ােজনীয় দিকটির মাধ্যমে । অন্নপ্রাচুর্যের চেয়ে মুক্তিকে এখানে বড় করে দেখানাে হয়েছে। তাই বলা যায় যে, প্রবন্ধের এই দিকটিই উদ্দীপকটি তুলে ধরেছে।

ঘ। “প্রকৃত শিক্ষা সম্বন্ধে উদ্দীপক এবং শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধ উভয় লেখকের দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবােধ সমান্তরাল।”- মন্তব্যটি যথার্থ।

প্রকৃত শিক্ষার মাধ্যমে মনুষ্যত্ব লাভ করা যায় যা মানবজীবনের সর্বাপেক্ষা প্রয়ােজনীয় বস্তু । শিক্ষার লক্ষ্য সম্বন্ধে সচেতন থাকলে সহজেই কাঙ্ক্ষিত বস্তুর দেখা পাওয়া সম্ভব হয়। তাই মানুষের মতাে মানুষ হতে হলে, মানবীয় গুণাবলির অধিকারী হতে হলে অবশ্যই প্রকৃত শিক্ষা লাভ করতে হবে ।

উদ্দীপকে শিক্ষার আসল উদ্দেশ্য সম্পর্কে আলােকপাত করা হয়েছে। এখানে লেখক বলেছেন শুধু চাকরির জন্যই শিক্ষা লাভ করা উচিত নয়। এতে শিক্ষার কোনাে সার্থকতা থাকে না। শিক্ষার উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষকে এই সুন্দর ভুবনে কল্যাণ, প্রেম ও সৌন্দর্যপুষ্ট জীবনযাপনে শক্তিমান ও দৃষ্টিক্ষম করে তােলা।

লেখকের এই দৃষ্টিভঙ্গি শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের লেখকের চেতনা ও দৃষ্টিভঙ্গির সমান্তরাল। কেননা আলােচ্য প্রবন্ধে লেখক এই বিষয় নিয়ে আলােচনা করেছেন। ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক বলেছেন শিক্ষাই আমাদের মানবতার ঘরে নিয়ে যেতে পারে। অর্থ-চিন্তার নিগড়ে বন্দি থাকলে কখনই প্রকৃত শিক্ষা লাভ করা যায় না।

প্রাবন্ধিকের মতে অন্ন-বস্ত্রের প্রাচুর্যের চেয়ে মুক্তি বড়। আর এই মুক্তি এনে দিতে পারে যথার্থ শিক্ষা। শিক্ষা লাভের মাধ্যমে মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটে। শিক্ষার আসল কাজ হচ্ছে মূল্যবােধ সৃষ্টি করা। প্রাবন্ধিকের এই চেতনা উদ্দীপকের লেখকের চেতনার সঙ্গে মিলে যায়। সুতরাং বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

শেষ কথা

আজকের মত এখানেই শেষ। আশা করছি এই পোস্ট থেকে শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর সংগ্রহ করতে পেরেছেন। এই পোস্ট টি ভালোলেগে থাকলে শেয়ার করতে পারেন।  এই রকম আরও ভালো ভালো পোস্ট পেতে আমাদের সাথেই থাকবেন। নিচে আপনাদের জন্য শিক্ষামূলক কিছু পোস্ট দেওয়া আছে দেখেনিতে পারেন। ভালোথাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আমাদের সাথে শেষ পর্যন্ত থাকার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।