পোস্টার কবিতা-আবুল হোসেন। বাংলা ১ম পত্র এস এস সি

পোস্টার কবিতা

এই সভ্যতা গড়ে উঠেছে শ্রমজীবী ও মেহনতি মানুষের পরিশ্রমের কারণে। যেখানে লক্ষ হাত একত্রিত হয় সেখানেই শক্তি দৃঢ়তর হয়; সেখানেই সৃষ্টির নতুন পথ হয় রচিত। যে মানুষ দুঃস্বপ্নে মধ্যেও দিনরাত কাজ করে, যারা শত বাধাকে উপেক্ষা করে মা ও মাটির টানে দেশের হিতার্থে নিয়োজিত, যারা অর্ধাহার-অনাহারেও দেশত্যাগ করে অন্যত্র চিরদিনের মতো চলে যায় না তারাই প্রকৃত দেশপ্রেমিক। সেই শ্রমজীবী, মেহনতি সাধারণ মানুষের কাতারে মিশে গেলেই জীবনের প্রকৃত আনন্দ পাওয়া সম্ভব। কবি মনে করেন, এটাই জীবনমুক্তির মৌল সত্য। নিচে থেকে পোস্টার কবিতা টি পড়ুন।

পোস্টার কবিতা

এই কবিতাটি আবুল হোসেন লিখেছেন। এটি নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ১ম পত্রের একটি কবিতা। নিচের অংশে পোস্টার কবিতা সম্পূর্ণ দেওয়া হয়েছে। আপনারা চাইলে কবিতা টি পিডিএফ সংগ্রহ করতে পারবেন। নিচে থেকে কবিতা টি পড়ুন অথবা সংগ্রহ করেনিন।

পোস্টার
আবুল হোসেন

জেনেছি সত্য বহু দিন মনে মনে
মুক্তির পথ মিশে গেছে জনগণে,

যখানে লক্ষ লোকের রুক্ষ হাত
সৃষ্টির মাঝে নিয়োজিত দিনরাত,

যেখানে মানুষ দৈনন্দিন কাজে
প্রাণপাত করে দুঃস্বপ্নের মাঝে,

মাটিতে শিকড় গেড়ে যারা বেঁচে আছে,
আধমরা হয়ে পাষাণের রসে বাঁচে,

সেই জনতার দীপ্ত মিছিল ধরে
নবযুগ আসে রক্ত দিনের ভোরে।

পোস্টার কবিতার শব্দার্থ

এখানে পোস্টার কবিতার শব্দার্থ গুলো দেওয়া হয়েছে। এই কবিতার কিছু অর্থ আপনারা বুঝতে পারেননি। এই শব্দ গুলো একটু জটিল। নিচে জটিল শব্দ গুলো ব্যাখ্যা সহ এর সঠিক অর্থ টি দেওয়া হয়েছে।

জেনেছি সত্য …. গেছে জনগণে – ‘জেনেছি সত্য’ হলো এক ধরণের বিশ্বাস যেটি বহুদিন ধরে মনের মাঝে কবি বহন করে চলেছেন। আর সে বিশ্বাসটি হলো মানুষের মুক্তির পথ জনগণের মাঝেই মিশে আছে। ‘জনগণ’ বলতে সাধারণ খেটে খাওয়া, শ্রমিক ও মেহনতি মানুষকে বোঝানো হয়েছে। সেই জনগণের ভেতর থেকেই মুক্তির সোপান বেরিয়ে আসবে।
আধমরা হয়ে পাষাণের বসে বাঁচে – সমাজের খেটে খাওয়া মানুষ, যাদের কর্মযজ্ঞেই এই পৃথিবী এত সুন্দর সেই মানুষেরা সমাজে দু’বেলা খেতে পায় না, তাদের জীবনে কোনো রস নেই, বৈচিত্র্য নেই, যেন পাষাণের মতো বা পাথরের মতো নিরস তাদের জীবন।
সেই জনতার দীপ্ত … রক্ত দিনের ডোরে – খেটে খাওয়া মানুষ, জনতা নিজেদের ভাগ্যকে নিজেদের হাতে বদলানোর জন্য একদিন সোচ্চার হয়ে ওঠে, বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে, রাজপথে নেমে আসে, মিছিল করে-এভাবে এক বৈপ্লবিক অবস্থার সৃষ্টি করে তখনই নতুন যুগের সৃষ্টি হয়; সকল অত্যাচার নির্যাতন দূর হয়।

পোস্টার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন

এখানে অনুশীলনীর সৃজনশীল প্রশ্ন শেয়ার করা হয়েছে। এই কবিত থেকে একটি সৃজনশীল তৈরি করা হয়েছে, যা বইয়ের অনুশীলনীতে পেয়ে যাবেন। যারা সৃজনশীল প্রশ্ন পড়তে চান, নিক্সচে থেকে পড়ে নিন।

তিমির রাত্রি মাতৃমন্ত্রী যান্ত্রীরা সাবধন !
যুগ-যুগান্ত সঞ্চিত ব্যথা ঘোচিয়াছে অভিযান !
ফেনাইয়া ওঠে বঞ্চিত বুকে পুঞ্জিত অভিমান,
ইহাদের পথে নিতে হবে সাথে, দিতে হবে অধিকার।

ক.   কারা দিনরাত সৃষ্টির মাঝে নিয়োজিত ?
খ.   কারা আধমরা হয়ে বেঁচে আছে ? বুঝিয়ে লেখ।
গ.   উদ্দীপকে ‘পোস্টার’ কবিতার কোন দিক প্রতিফলিত হয়েছে।
ঘ.   উদ্দীপক ‘পোস্টার’ কবিতার মূলভাব পরিপূর্ণভাবে ধারণ করেনি – মূল্যায়ন কর।

পোস্টার কবিতার কবি পরিচিতি

আবুল হোসেন ১৫ই আগষ্ট ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে খুলনা জেলার ফকিরহাট থানার আড়–ডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা এস.এম. ইসমাইল হোসেন। আবুল হোসেন কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে অর্থনীতি বিষয়ে বি.এ. সম্মান ও এম.এ. ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি বাংলাদেশ সরকারের যুগ্মসচিব পদ থেকে অবসর গ্রহণ করে ঢাকায় বসবাস করছেন। তাঁর কবিতায় দেশের প্রতি গভীর মমত্ববোধের স্বচ্ছন্দ প্রকাশ ঘটেছে। চিত্রময়তা ও শব্দের প্রয়োগকুশলতা তাঁর কবিতাকে বিশিষ্টতা দান করেছে। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ হচ্ছে : নববসন্ত, বিরস সংলাপ, হাওয়া তোমার কী দুঃসাহস, দুঃস্বপ্ন থেকে দুঃস্বপ্ন ইত্যাদি। ইকবালের কবিতা, বিভিন্ন ভাষার কবিতা, অন্য ক্ষেতের ফসল ইত্যাদি তাঁর অনুবাদ কাব্যগ্রন্থ। আবুল হোসেন বাংলা একাডেমী পুরস্কার, একুশে পদক, পদাবলী পুরস্কারসহ প্রচুর পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন

শেষ কথা

আশা করছি এই পোস্ট থেকে পোস্টার কবিতা পিডিএফ সংগ্রহ করতে পেরেছেন। এই রকম আরও ভালো ভালো পোস্ট পেতে আমার সাথেই থাকবেন। এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সকল শ্রেণির শিক্ষাসংক্রান্ত তথ্য শেয়ার করা হয়।  আমার সাথে শেষ পর্যন্ত থাকার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভালোথাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

আরও দেখুনঃ

আমি কোনো আগন্তুক নই জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর- পিডিএফ

আমি কোনো আগন্তুক নই-আহসান হাবীব। বাংলা কবিতা

বৃষ্টি কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর পিডিএফ- এস এস সি

আশা কবিতার জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর পিডিএফ। এস এস সি