জীবন সঙ্গীত কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর-PDF

জীবন সঙ্গীত কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

জীবন সঙ্গীত কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর এই পোস্টে দেওয়া আছে। জীবন-সঙ্গীত’ কবিতায় কবি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় মানবজীবনের প্রকৃত অর্থ ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান দান করেছেন। তিনি কবিতায় আমাদের জীবনের কর্তব্য সম্পর্কে সজাগ ও সচেতন করে অনুবাদ তুলতে চেয়েছেন। আমাদের জীবনের নানা স্বপ্ন, প্রেম-ভালােবাসা, পরিবার গঠন, সংসারের নানা যন্ত্রণায় কাতরতা, হতাশা-নিরাশায় ভােগা, জীবনবিমুখ হয়ে ওঠা ইত্যাদি সম্পর্কে তার মতামত তুলে ধরেছেন। আর তা থেকে পরিত্রাণের জন্য মহাজ্ঞানীদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে, আপন কর্তব্য, যথাযথভাবে পালন করে জীবন সার্থক করে গড়ে তুলতে বলেছেন। কারণ মানব-জন্ম অত্যন্ত মূল্যবান।

জীবন সঙ্গীত কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

এখানে জীবন সঙ্গীত কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন গুলো দেওয়া হয়েছে। এই প্রশ্ন অনুশীলনের মাধ্যমে বিভিন্ন বোর্ড প্রশ্ন সম্পর্কে ধারনা লাভ করতে পারবেন। নিচে সৃজনশীল প্রশ্ন গুলো দেওয়া আছে দেখেনিন।

সৃজনশীল ১ঃ 

মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। মানবজীবন নাতিদীর্ঘ। মানুষ স্বীয় কর্মের জন্য সাফল্য-ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। ভোগ, লোভ-লালসার চিন্তায় মানুষ ব্যর্থতা অর্জন করে। পক্ষান্তরে ত্যাগ, ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার মাধ্যমে মানুষ সফলতা অর্জন করে।

ক. ‘ধ্বজা’ শব্দের অর্থ কী?
খ. ‘আয়ু যেন শৈবালের নীর’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. ‘জীবন-সঙ্গীত’ কবিতায় কবি ব্যর্থতার যে বর্ণনা দিয়েছেন উদ্দীপকেরে আলোকে ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “সাফল্য অর্জনে চাই, ত্যাগ, ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা”- উদ্দীপক ও ‘জীবন-সঙ্গীত’ কবিতা অবলম্বনে উক্তিটি বিশ্লেষণ করো।

সৃজনশীল ২ঃ 

রবার্ট ব্রুস পর পর ছয়বার যুদ্ধে পরাজিত হয়ে এক সময়ে হতাশ হয়ে বনে চলে যান। সেখানে দেখেন একটা মাকড়সা জাল বুনতে গিয়ে বারবার ব্যর্থ হচ্ছে। অবশেষে সে সপ্তমবারে সফল হয়। এ ঘটনা রবার্ট ব্রুসের মনে উৎসাহ জাগায়। তিনি বুঝতে পারেন জীবনে সাফল্য ও ব্যর্থতা অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। তাই তিনি আবার পূর্ণ উদ্যমে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে বিজয়ী হন।
ক. কবি কোন দৃশ্য ভুলতে নিষেধ করেছেন?
খ. কীভাবে ‘ভবের’ উন্নতি করা যায়?
গ. পরাজয়ের গ্লানি রবার্ট ব্রুসের মাঝে যে প্রভাব বিস্তার করে সেটি ‘জীবন-সঙ্গীত’ কবিতার সাথে যেভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ তা তুলে ধরো।
ঘ. ‘হতাশা নয় বরং সহিষ্ণুতা ও ধৈর্যই মানুষের জীবনে চরম সাফল্য বয়ে আনে।’- উদ্দীপক ও ‘জীবন-সঙ্গীত’ কবিতা অবলম্বনে উক্তিটি বিশে−ষণ করো।
সৃজনশীল ৩ঃ 

ফুলবাড়ি গ্রামের তমাল ও তার কলেজপড়ুয়া বন্ধুরা মিলে ‘বন্ধু’ নামে এক ক্লাব প্রতিষ্ঠা করে। এলাকায় বিভিন্ন উৎসবে বিনােদনমূলক অনুষ্ঠান, খেলাধুলার আয়ােজন করার পাশাপাশি বিভিন্ন ময়লা পুকুর পরিষ্কার করা, জঙ্গল সাফ করা, কিংবা ভাঙা রাস্তা সংস্কার করা এসব কাজেই তাদের সময় চলে যায়। কেউ কেউ তাদের অসংযমী, ভবঘুরে বলে গালি দেয়। কিন্তু প্রকৃত অর্থে দেশ ও জাতির উন্নয়নে এ রকম মানুষরাই অগ্রণী ভূমিকা পালন করে ।

ক. ‘জীবন-সঙ্গীত’ কবিতা কোন কবিতার ভাবানুবাদ?
খ. ‘এ জীবন নিশার স্বপন’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘জীবন-সঙ্গীত’ কবিতার সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপকের তমাল ও তার বন্ধুদের দৃষ্টিভঙ্গি ‘জীবন-সঙ্গীত কবিতায় সার্থকভাবে ফুটে উঠেছে”- বিশ্লেষণ করো

জীবন সঙ্গীত কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

উপরের দেওয়া সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর সবার জানা নেই। তাই তাদের জন্য এখানে জীবন সঙ্গীত কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর গুলো দিয়ে দিয়েছি। তো যাদের প্রশ্নের উত্তর প্রয়োজন তারা নিচে থেকে সংগ্রহ করে নিবেন।

উত্তর ১ঃ 

ক. ‘ধ্বজা’ শব্দের অর্থ পতাকা বা নিশান।

খ. ‘আয়ু যেন শৈবালের নীর’ বলতে বোঝানো হয়েছে, আয়ু শৈবালের শিশিরের মতোই ক্ষণস্থায়ী।সময় কারো জন্য অপেক্ষা করে না। এই সময়ের স্রোতে মানুষের আয়ুও দ্রুতই ফুরিয়ে যায়। শৈবালের ওপর জমে থাকা শিশিরের চিহ্নের স্থায়িত্ব খুবই সামান্য। মানুষের জীবনও তাই। মানুষের জীবনের এই ক্ষণস্থায়িত্ব বোঝাতেই কবি আয়ুকে শৈবালের শিশিরের সাথে তুলনা করেছেন।

গ. ‘জীবন-সঙ্গীত’ কবিতায় ব্যর্থতার জন্য জীবনের ও সময়ের মূল্য না বোঝাকে দায়ী করা হয়েছে, যা আলোচ্য উদ্দীপকেও প্রকাশিত হয়েছে।

‘জীবন-সঙ্গীত’ কবিতার কবি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, আমাদের জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। তাই জীবনে যতটুকু সময় আমরা পেয়ে থাকি তার সদ্ব্যবহার করতে হবে। তা না করে অকারণে বৈরাগ্যের কারণে দুঃখটা কেবল বাড়বে এবং জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য পূরণ হবে না।

উদ্দীপকে বলা হয়েছে, মানুষ নিজেই তার ভাগ্যের নির্ধারক। মানুষের কর্মফলই মানুষের পরিণতি ঠিক করে দেয়। মানবজীবন অনন্তকালের নয়। তাই সময়ের সর্বোত্তম ব্যবহার না করলে ব্যর্থতার বৃত্তে আমরা আটকা পড়ব। ‘জীবন-সঙ্গীত’ কবিতায়ও মানবজীবনে ব্যর্থতার কারণ হিসেবে সমধর্মী মতামত প্রকাশিত হয়েছে।

ঘ. ‘জীবন-সঙ্গীত’ কবিতায় জীবনে সফল হওয়ার জন্য যে সাধনার কথা বলা হয়েছে তা উদ্দীপকেও লক্ষ করো যায়।

‘জীবন-সঙ্গীত’ কবিতার কবি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, মানবজীবন নিছক স্বপ্নমাত্র নয়। বরং জীবন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। জীবনে সবার উচিত নিজ নিজ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা। আর এক্ষেত্রে বরণীয় মানুষদের দেখানো পথ অনুসরণ করতে হবে। তাহলেই জীবনে সফল হওয়া যাবে।

উদ্দীপকে বর্ণিত হয়েছে জীবনকে সার্থক করার মূলমন্ত্র। মানুষের কর্মফলই মানুষকে সফল করে। আবার আপন কর্মের কারণেই মানুষ ব্যর্থতার স্বাদ নিতে বাধ্য হয়। তাই জীবনকে প্রকৃত অর্থে সুন্দর করার জন্য ভোগের পথ বর্জন করে ত্যাগের পথ অনুসরণ করা প্রয়োজন। ‘জীবন-সঙ্গীত’ কবিতায়ও একই আহবান জানানো হয়েছে।

মানবজীবন যেন এক যুদ্ধক্ষেত্র। এখানে সফল হওয়ার জন্য চাই নিরন্তর সংগ্রাম। সে সংগ্রামে হাল ছেড়ে দিলে চলবে না। বরং ধৈর্য ও সহিষ্ণুতাকে সম্বল করে সব প্রতিবন্ধকতাকে মোকাবেলা করতে হবে। উদ্দীপক এবং ‘জীবন-সঙ্গীত’ কবিতা উভয় ক্ষেত্রেই এ বিষয়টির অবতারণা করা হয়েছে। পৃথিবীতে যারা আপন কর্মগুণে স্মরণীয়, বরণীয় হয়ে আছেন তাঁরা কেউই স্বার্থসিদ্ধিতে তৎপর ছিলেন না। বরং পরের কল্যাণে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। জীবনে সফলতা লাভের জন্য সেসব মহামানবের পদাঙ্ক অনুসরণের কথা বলা হয়েছে। উদ্দীপকেও ত্যাগের পথে জীবনকে পরিচালিত করার কথা বলা হয়েছে। উদ্দীপক ও ‘জীবন-সঙ্গীত’ কবিতার আহবানে সাড়া দিয়ে আমরা সার্থক জীবন লাভ করতে পারব।

উত্তর ২ঃ

ক. কবি বাহ্যদৃশ্য ভুলতে নিষেধ করেছেন।

খ . সংসারে নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করলেই ভবের উন্নতি হবে।

‘জীবন-সঙ্গীত’ কবিতায় জীবনের মর্ম উপলব্ধি করার আহবান জানিয়েছেন কবি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। সংসারজীবনকে তিনি গুরুত্ব দিতে বলেছেন। তাঁর মতে, ভবের বা পৃথিবীর উন্নতির জন্য সংসারজীবনের কাজগুলো ভালোভাবে করতে হবে। সবাই যদি নিজের কাজ যথার্থভাবে করে তবেই জগতের উন্নতি হবে।

গ. পরাজয়ের গ্লানি রবার্ট ব্রুসের মাঝে যে প্রভাব বিস্তার করে সেটি ‘জীবন-সঙ্গীত’ কবিতায় উল্লিখিত দুঃখবাদী চেতনার স্বরূপকেই তুলে ধরে।

‘জীবন-সঙ্গীত’ কবিতার কবি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় বলতে চেয়েছেন, এ জীবনের মূল্য অনেক। জীবনটা কেবল নিশার স্বপন নয়। তাই মিথ্যা সুখের কল্পনা করে দুঃখ বাড়িয়ে কোনো লাভ নেই। হতাশায় ভোগা মানুষদের বৈরাগ্য ভাব ত্যাগ করে প্রাণচঞ্চল হওয়ার আহবান জানানো হয়েছে কবিতায়।

উদ্দীপকে বর্ণিত রবার্ট ব্রুস ছয়বার যুদ্ধ করে প্রতিবারই পরাজিত হন। এক সময়ে হতাশা তাঁকে ঘিরে ধরে। মনের দুঃখে তিনি বনে চলে যান। পরাজিত হওয়ার গ্লানি থেকেই তিনি এ কাজটি করেন। কিন্তু নিরাশ না হয়ে সাফল্য লাভের জন্য বারবার চেষ্টা করাই মানবজীবনের লক্ষ্য হওয়া উচিত। ‘জীবন-সঙ্গীত’ কবিতায় সেই তাগিদই দেওয়া হয়েছে। পরাজিত রবার্ট ব্রুসের মতো যারা হতাশায় ভোগে তেমন মানুষদের প্রতিই আশার বাণী শুনিয়েছেন জীবন-সঙ্গীত কবিতার কবি।

 ঘ. পরাজয়ে ভেঙে না পড়ে ধৈর্যের সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করলেই সফল হওয়া যায়। উদ্দীপক ও ‘জীবন-সঙ্গীত’ কবিতায় আমরা এ বিষয়েরই প্রমাণ পাই।

‘জীবন-সঙ্গীত’ কবিতায় কবি বলেছেন, হতাশাগ্রস্ত মানুষ জন্মটাকে বৃথা ও জীবনকে রাতের স্বপ্ন মনে করে। অথচ মানবজীবন অত্যন্ত মূল্যবান। নিজের ও জগতের উন্নতি করাই মানবজীবনের লক্ষ্য। তাই এই জীবনসংসারে মানুষকে সাহসী বীরের মতো এগিয়ে যেতে হয়। বৈরাগ্য নয় বরং সংসারজীবনের সকল দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে জীবনকে অর্থবহ করতে হয়। মহামানবেরা যেমন জীবনে অক্লান্ত পরিশ্রম করে জগতে বরণীয় হয়েছেন আমাদের সেই পথ ধরেই এগিয়ে যেতে হবে।

আলোচ্য উদ্দীপকে রবার্ট ব্রুস ছয়-ছয়বার যুদ্ধে পরাজিত হয়ে হতাশ হয়ে বনে চলে যান। তিনি সেখানে দেখতে পান একটি মাকড়সা তার বাসা তৈরি করতে গিয়ে বারবার ব্যর্থ হয়ে সপ্তমবারে সফল হয়। তিনি এ ঘটনা থেকে উৎসাহ পেলেন। তিনি ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার শিক্ষা পেলেন। পরবর্তী সময়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে তিনি যুদ্ধে জয়ী হলেন।

কাজেই আলোচ্য উদ্দীপক ও ‘জীবন-সঙ্গীত’ কবিতা পর্যালোচনা করলে আমরা পাই, জীবনে ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার কোনো বিকল্প নেই। কারণ জয়-পরাজয়, সাফল্য-ব্যর্থতা খুব কাছাকাছি অবস্থান করে। পরাজিত হলে হতাশ হয়ে বসে থাকলে কোনো লাভ নেই। বরং চেষ্টা ও ধৈর্যের মধ্য দিয়েই সফলতাকে ছিনিয়ে আনতে হয়। পৃথিবীর সকল মানবের ক্ষেত্রেই এ কথা প্রযোজ্য। যুগে যুগে মহামানবেরা এ পথে চলেই মহিমন্বিত হয়েছেন।

উত্তর ৩ঃ

ক. জীবন-সঙ্গীত কবিতা ‘A Psalm of Life’ কবিতার ভাবানুবাদ।

খ. ‘এ জীবন নিশার স্বপন বলতে’ কবি জীবনকে রাতের স্বপ্নের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি এখানে বােঝাতে চেয়েছেন যে, জীবন স্বপ্নের মতাে অসার বা মিথ্যা নয়।

সাধারণভাবে মানুষ রাতে ঘুমিয়ে যে স্বপ্ন দেখে তাতে কোনাে সত্য থাকে না। তাই রাতের স্বপ্নের মতাে জীবনকে মিথ্যাজালে আবদ্ধ করে হতাশায় জড়িয়ে রাখা উচিত নয়। অথচ হতাশাবাদী মানুষের কাছে জীবন রাতের স্বপ্নের মতাে মিথ্যা ও অসার মনে হয়। বস্তুত জীবন নিছক কোনাে স্বপ্ন নয়, জীবনে করণীয় বহু কাজ আছে। কোনাে অবস্থাতেই হতাশ না হয়ে সবারই উচিত নিজ নিজ কর্তব্যকর্ম পালন করা । কারণ আমাদের জীবন শৈবালের শিশির বিন্দুর মতােই ক্ষণস্থায়ী। তাই সাহসী যােদ্ধার মতাে সংগ্রাম করে জীবনকে সার্থক করে তুলতে হবে।

গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘জীবন-সঙ্গীত’ কবিতার সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি হলাে মানুষের কল্যাণ ও উন্নতি সাধনের জন্য কাজ করা ।

জীবনকে অর্থহীন মনে করা উচিত নয়। কারণ মানুষের জীবন অনেক সম্ভাবনাময় । যত্ন করলে জীবনকে অর্থপূর্ণ করে গড়ে তােলা যায় । সমাজের মানুষের জন্য কল্যাণকর কাজ করে পৃথিবীকে নতুনভাবে গড়ে তােলা যায়। আর তার মধ্য দিয়েই জীবন অর্থপূর্ণ হয়ে ওঠে। মহামানবেরা কল্যাণকর কাজ করেই জগতে স্মরণীয় হয়ে আছেন।

‘জীবন-সঙ্গীত’ কবিতায় পৃথিবীর কল্যাণের জন্য কাজ করার এ বিষয়টি চিত্রিত হয়েছে। জগতে মহান ব্যক্তিরা মানবকল্যাণ সাধনের জন্য অবিরাম কাজ করে গেছেন। তাঁরা সাহসী সৈনিকের মতাে সংসারের সব ঘাত-প্রতিঘাত মােকাবিলা করেছেন। তাঁদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার কারণেই পৃথিবী বহুদূর এগিয়ে গেছে। উদ্দীপকের তমাল এবং তার বন্ধুদের কার্যক্রমও মানবকল্যাণের পর্যায়ভুক্ত। তারা এলাকার উন্নতির জন্য কাজ করে। তাদের এ কাজ অনেকের কাছে অপছন্দনীয় হলেও প্রকৃতপক্ষে তাদের মতাে মানুষেরাই সমাজ পরিবর্তনের অগ্রপথিক। তারা দেশের কল্যাণে নিজেদের নিয়ােজিত করেছেন ।

ঘ. “উদ্দীপকের তমাল ও তার বন্ধুদের দৃষ্টিভঙ্গি ‘জীবন-সঙ্গীত’ কবিতায় সার্থকভাবে ফুটে উঠেছে।”- মন্তব্যটি যথার্থ ।

মানবজীবন ক্ষণস্থায়ী। এ ক্ষণস্থায়ী জীবনকে সার্থক করে গড়ে তােলার জন্য কাজ করতে হয় । জীবন তাে মূল্যহীন নয়, বরং প্রতিটি মুহূর্ত অত্যন্ত মূল্যবান। মহৎ মানুষেরা এ সত্য উপলব্ধি করেই পৃথিবীর মঙ্গলের জন্য অবিরাম কাজ করে গেছেন। তাঁদের ত্যাগ স্বীকারের কারণেই পৃথিবী আজ এত সুষমাময়।

‘জীবন-সঙ্গীত’ কবিতায় কবি ক্ষণস্থায়ী মানবজীবনকে সার্থক করে তােলার কথা বলেছেন। কবি এখানে জীবনকে হতাশায় না জড়িয়ে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে বলেছেন। মহাজ্ঞানী ও মহান ব্যক্তিরা জীবনকে কেবল নিশার স্বপ্ন ভাবেননি। তারা জীবনকে মহামূল্য ও অর্থময় ভেবেছেন। তারা কর্মের মাধ্যমে জীবনকে ভরিয়ে তুলেছেন। মানবকল্যাণের জন্য কাজ করার মধ্য দিয়েই তাঁদের জীবন সার্থক হয়ে উঠেছে। উদ্দীপকের তমাল ও তার বন্ধুদের দৃষ্টিভঙ্গি জীবন-সঙ্গীত কবিতায় প্রতিফলিত মহৎ ব্যক্তিদের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।

উদ্দীপকের তমাল এবং তার বন্ধুরা সত্যিকার অর্থেই কল্যাণকামী এবং মানবতার নিরলস কর্মী। তারা দেশের কল্যাণে নিজেদের নিয়ােজিত করেছে। এরাই একদিন সমগ্র পৃথিবীকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। ‘জীবন-সঙ্গীত’ কবিতায় এভাবেই বরণীয় হওয়ার কথা বলা হয়েছে। এ দিক থেকে উদ্দীপকের তমাল ও তার বন্ধুদের দৃষ্টিভঙ্গি ‘জীবন-সঙ্গীত কবিতায় সার্থকভাবে ফুটে উঠেছে।

জীবন সঙ্গীত কবিতার বইয়ের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

চেষ্টা যত্ন অনুরাগ মনের বান্ধব।
আলস্য তাদের কাছে রণে পরাভব৷
ভক্তিমতে কুশলগণে আয় আয় ডাকে।
পরিশ্রম প্রতিজ্ঞার সঙ্গে সঙ্গে থাকে।
চেষ্টায় সুসিদ্ধ করে জীবনের আশা।
যতনে হৃদয়েতে সমুদয় বাসা।

ক. কবি আয়ুকে কিসের সঙ্গে তুলনা করেছেন?
খ. কবি কী বলে জীবকে কাঁদতে নিষেধ করেছেন? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকটি ‘জীবন-সঙ্গীত’ কবিতার সঙ্গে কোন দিক থেকে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “সাহসী যােদ্ধার মতাে সংগ্রাম করে টিকে থাকার চেতনার দিক থেকে উদ্দীপক ও কবিতার মূলভাব এক ও অভিন্ন।”প্রমাণ কর ।

উত্তরঃ 

ক. উত্তরঃ কবি আয়ুকে শৈবালের নীরের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

খ. উত্তরঃ পৃথিবীতে কে কার এ কথা বলে কবি জীবকে কাঁদতে নিষেধ করেছেন। জীবন-সঙ্গীত কবিতায় কবি মানবজীবনের নানা দিকের বর্ণনা করেছেন। মানবজীবন কোনাে স্বপ্ন কিংবা হতাশায় মােড়ানাে নয়।

জীবন অত্যন্ত মূল্যবান, তাকে যত্ন করে উপভােগ করতে হয়। জগতে মানুষকে নানা প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে টিকে থাকতে। হয়। সংসারকে যুদ্ধক্ষেত্র মনে করে যে সংগ্রাম করে সেই পরিণামে সাফল্য লাভ করে। তাই স্ত্রী-পুত্র-কন্যা, পরিবার-পরিজন কেউ কারও নয়- এমন ধারণা করা বা ভাবা ঠিক নয়। কারণ প্রত্যেকেরই পরস্পরের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য আছে।

গ.

উত্তরঃ উদ্দীপকটি ‘জীবন-সঙ্গীত কবিতার সঙ্গে পরিশ্রমের মাধ্যমে সাফল্য অর্জনের দিক থেকে সাদৃশ্যপূর্ণ। সাফল্যের কাছে পৌঁছতে হলে পথের নানা সমস্যা-সংকট অতিক্রম করতে হয়। ব্যর্থ মনােরথে কেউ জীবনে উন্নতি করতে পারে না।

উদ্দীপকে আলস্য পরিহার করে সফলতা অর্জনের জন্য যথাযথ চেষ্টা করার কথা বলা হয়েছে। মানবকল্যাণ সাধনের জন্য সদিচ্ছা ও কঠোর পরিশ্রম একান্ত জরুরি। কারণ প্রকৃত মানুষের স্বভাবের অপরিহার্য অঙ্গই হচ্ছে সততা ও পরিশ্রম।

উদ্দীপকের এ বিষয়টি ‘জীবন-সঙ্গীত কবিতার সঙ্গে জীবনের সমস্ত হতাশা-জড়তা দূর করে পরিশ্রমের মাধ্যমে সফলতা লাভের দিকটিকে নির্দেশ করে। এ কবিতায় কবি ক্ষণস্থায়ী জীবনকে সার্থক করে তুলতে মানুষকে সাহসী যােদ্ধার মতাে সংগ্রাম করে বেঁচে থাকতে বলেছেন। এভাবে উদ্দীপকটি জীবন-সঙ্গীত কবিতার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।

ঘ.

উত্তরঃ “সাহসী যােদ্ধার মতাে সংগ্রাম করে টিকে থাকার চেতনার দিক থেকে উদ্দীপক ও কবিতার মূলভাব এক ও অভিন্ন।”- মন্তব্যটি যথার্থ।

পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে হলে সাফল্যের জন্য দুঃখ-যন্ত্রণা, অলসতা দূর করে জগতের কল্যাণকর কাজে সবাইকে আত্মনিয়ােগ করা। একান্ত জরুরি। উদ্দীপকে আলস্য দূর করে মানবজীবনের মূল উদ্দেশ্য সাধনের কথা বলা হয়েছে। চেষ্টা ও যত্ন দিয়ে মানুষ তার জীবনকে সর্বাঙ্গীণ সুন্দর করে গড়ে তুলতে পারে।

জীবনের মহৎ উদ্দেশ্যগুলাে বাস্তবায়নের জন্য যদি কেউ আপন কর্মে তৎপর হয় তা হলে তার জীবন কল্যাণকর ও সাফল্যমণ্ডিত হয়ে ওঠে। উদ্দীপকের এই ভাব ‘জীবন-সঙ্গীত কবিতার মূলভাবের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। সেখানে পৃথিবীকে স্বপ্ন বা মায়ার জগৎ না ভেবে, মিথ্যা সুখের কল্পনা না করে, আলস্য দূর করে নিজের চেষ্টায় সাফল্য অর্জনের আহ্বান করা হয়েছে।

জীবন-সঙ্গীত কবিতায় কবি মানবজীবনের নানা স্বপ্ন-কল্পনা, আশা-নিরাশা, সংসারের যন্ত্রণাকাতরতা, জীবনবিমুখতা ইত্যাদি বিষয় উপেক্ষা করে আত্মবিশ্বাস নিয়ে কল্যাণকর কাজে আত্মনিয়ােগ করার আহ্বান জানিয়েছেন। মানবজীবন অত্যন্ত মূল্যবান, তা একবার শেষ হয়ে গেলে আর ফিরে পাওয়া যায় না।

উদ্দীপকের মূলভাবেও এ দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে। এখানেও জীবনকে কর্মময় ও মুখর করে তুলতে বলা হয়েছে, যা সাহসী যােদ্ধার মতাে চেতনা ছাড়া সম্ভব নয়। তাই বলা যায় যে, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

শেষ কথা

আমাদের সাথে শেষ পর্যন্ত থাকার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি এই পোস্ট টি আপনাদের অনেক ভাললেগেছে। এই পোস্ট টি ভালোলেগে থাকলে শেয়ার করতে পারেন। আশা করছি এই পোস্ট থেকে জীবন সঙ্গীত কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর জানতে পেরেছেন। এই রকম আরও ভালো ভালো পোস্ট পেতে আমাদের সাথেই থাকবেন।  আজকের মতো এখানেই শেষ। ভালোথাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

আরও দেখুনঃ

কপোতাক্ষ নদ কবিতার জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর পিডিএফ

কপোতাক্ষ নদ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর পিডিএফ

বঙ্গবাণী কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর Pdf File সংগ্রহ

কপোতাক্ষ নদ কবিতা- মাইকেল মধুসূদন দত্ত বাংলা পদ্য

কপোতাক্ষ নদ কবিতার বহুনির্বাচনী প্রশ্ন ও উত্তর-পিডিএফ

বঙ্গবাণী কবিতার জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর