বাংলাদেশের বিভিন্ন নৃগোষ্ঠী- অষ্টম শ্রেণি একাদশ অধ্যায়।

বাংলাদেশের বিভিন্ন নৃগোষ্ঠী

বাংলাদেশে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ বাস করে। এছাড়া এই দেশে অনেক উপজাতি আছে, যাদের নিজস্ব ধর্ম, বর্ণ ও গোত্র রয়েছে।  এরা নিজ নিজ  ভাষায় কথা বলে। এদের অনুষ্ঠান গুলো ধর্ম অনুসারে পালন করে থাকে। এই উপজাতি বা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী পোশাক-আশাকও ব্যাতিক্রমি। বাংলাদেশের এই ভূখণ্ডে আদিকাল থেকে মূলত বাঙালি নৃগোষ্ঠীর বৃহৎ পরিসরে বসবাস বিদ্যমান ছিল। তবে বাঙালি নৃগোষ্ঠীর উদ্ভবের আগে এই বাংলা অঞ্চলে বিভিন্ন নরগোষ্ঠীর বসবাস ছিল। এই বাংলা অঞ্চলে আর্যদের আগমনের পূর্বে অনার্য বা আর্যপূর্ব জনগোষ্ঠীর বসবাস ছিল। আর্যপূর্ব জনগোষ্ঠীগুলো যেমন – নেগ্রিটো, অস্ট্রিক, দ্রাবিড়, মঙ্গোলীয় নরগোষ্ঠী। এই পোস্টে বাংলাদেশের বিভিন্ন নৃগোষ্ঠী ও উপজাতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

বাংলাদেশের আদিবাসী ও ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জাতি সমূহের তালিকা

বাংলাদেশে ২০ টির বেশি উপজাতি আছে। এদের আবার অনেক জনসংখ্যা রয়েছে। বাংলাদেশে বিভিন্ন জেলায় এরা বসবাস করে। বাংলাদেশের প্রথম আদিবাসী হলো এই অস্ট্রালয়েড বা অস্ট্রিক নরগোষ্ঠীর মানুষেরা। বর্তমানে বাংলাদেশের সাঁওতাল, কোল, ভিল, ভূমিজ, মুন্ডা, বাঁশফোড়, মালপাহাড়ি, পুলিন্দ, শবর ইত্যাদি নৃগোষ্ঠীর পূর্বপুরুষ হলো এই অস্ট্রিক নরগোষ্ঠী। অর্থাৎ এরাই অস্ট্রিক নরগোষ্ঠীভুক্ত এই বাংলা অঞ্চলের প্রাচীনতম আদিবাসী।

  • চাকমা (৪ লক্ষ ৪৪ হাজার ৭৪৮ জন)
  • মারমা (২ লক্ষ ২ হাজার ৯৭৪ জন)
  • সাঁওতাল (১ লক্ষ ৪৭ হাজার ১১২ জন)
  • ত্রিপুরা (১ লক্ষ ৩৩ হাজার ৭৯৮ জন)
  • গারো (৮৪ হাজার ৫৬৫ জন)
  • ওঁরাও (৮০ হাজার ৩৮৬ জন)
  • তঞ্চ্যঙ্গা (৪৪ হাজার ২৫৪ জন)
  • ম্রো (৩৯ হাজার ৪ জন)
  • বম (১২ হাজার ৪২৪ জন)
  • পাংখো (দুই হাজার ২৭৪ জন)
  • চাক (দুই হাজার ৮৩৫ জন)
  • খেয়াং (তিন হাজার ৮৯৯ জন)
  • খুমি (তিন হাজার ৩৬৯ জন)
  • লুসাই (৯৫৯ জন)
  • কোচ (১৬ হাজার ৯০৩ জন)
  • ডালু (৮০৬ জন)
  • কুকি (৩৪৭ জন)
  • রাখাইন (১৩ হাজার ২৫৪ জন)
  • মণিপুরী (২৪ হাজার৬৯৫ জন)
  • হাজং (৯ হাজার ১৬২ জন)
  • খাসিয়া বা খাসি (১১ হাজার ৬৯৭ জন)
  • মং (২৬৩ জন)
  • বর্মন (৫৩ হাজার ৭৯২ জন)
  • পাহাড়ি পাহাড়ি (পাঁচ হাজার ৯০৮ জন)
  • মালপাহাড়ি (দুই হাজার ৮৪০ জন)
  • মুন্ডা (৩৮ হাজার ২১২ জন)
  • ভূমিজ
  • কোল (২ হাজার ৮৪৩ জন)[৪]
  • কন্দ
  • পাঙন মুসলিম
  • লাওরা মুসলিম
  • মুরং (২০,০০০-২৫,০০০ জন)
  • রাজবংশী
  • পাত্র,(৩০০০ জন)
  • গণ্ড
  • বাগদী

বাংলাদেশের বিভিন্ন নৃগোষ্ঠী

সাধারণভাবে ভৌগোলিক অবস্থানভেদে বাংলাদেশে দুই ধরনের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষ আছেন-পাহাড়ি ও সমতলবাসী । এদের একটি অংশ বসবাস করে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাংশে তথা পার্বত্য চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলায় । এসব জেলায় বসবাসকারী নৃ-গোষ্ঠীগুলো হলো- চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, ম্রো, তঞ্চঙ্গ্যা, বম, পাংখুয়া, চাক, খ্যাং, খুমি এবং লুসাই । নৃতাত্ত্বিক বিচারে এরা মঙ্গোলীয় নৃ-গোষ্ঠীর মানুষ । এরা পাহাড়ি নামেও পরিচিত।

বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাংশেও মঙ্গোলীয় নৃগোষ্ঠীর বাস রয়েছে। এদের মধ্যে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের গারো, হাজং, কোচ এবং বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে খাসি ও মণিপুরি প্রভৃতি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নাম উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও কক্সবাজার, পটুয়াখালি ও বরগুনা জেলায় বাস করে মঙ্গোলীয় নৃগোষ্ঠীভূক্ত রাখাইনরা ।

বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাংশের দিনাজপুর, রংপুর, রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা প্রভৃতি এলাকায় বসবাস করে সাঁওতাল, ওরাঁও, মাহালি মুন্ডা, মাল পাহাড়ি, মালো ইত্যাদি নৃ-গোষ্ঠী । এরা মূলতঃ সমতলবাসী হিসেবে পরিচিত । বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলেও এসব নৃ-গোষ্ঠীর কারো কারো অবস্থান রয়েছে।বাংলাদেশে আরও কয়েকটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো- ডালু, হদি, পাত্র, রাজবংশী, বর্মণ, বানাই, পাহান, মাহাতো, কোল প্রভৃতি। বৃহত্তর সিলেট, গাজীপুর, ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল জেলার বিভিন্ন স্থানে এদের বসবাস ।

চাকমা

বাংলাদেশের রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলায় বসবাসকারী বৃহত্তম ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী হলো চাকমা। নৃতাত্ত্বিক বিচারে চাকমারা মঙ্গোলীয় নৃগোষ্ঠীর লোক। বাংলাদেশের বাইরেও চাকমারা ভারতের ত্রিপুরা, মিজোরাম ও অরুণাচলে বসবাস করে ।

সামাজিক জীবন : চাকমা সমাজে মূল অংশ পরিবার। কয়েকটি চাকমা পরিবার নিয়ে গঠিত হয় ‘আদাম’ বা ‘পাড়া’। পাড়ার প্রধানকে বলা হয় কার্বারি। কয়েকটি পাড়া নিয়ে গঠিত হয় মৌজা। মৌজার প্রধানকে বলা হয় হেডম্যান। কার্বারি ও হেডম্যান মিলে যথাক্রমে পাড়া ও মৌজার শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা করে। কয়েকটি মৌজা মিলে চাকমা সার্কেল গঠিত হয় এবং এর প্রধান হলেন চাকমা রাজা। চাকমা সমাজে রাজার পদটি বংশানুক্রমিক। চাকমা সমাজ পিতৃতান্ত্রিক। চাকমা পরিবারে পিতাই প্রধান ।

অর্থনৈতিক জীবন : চাকমাদের জীবিকার প্রধান উপায় হচ্ছে কৃষিকাজ। যে পদ্ধতিতে তারা চাষ করে তাকে বলা হয় ‘জুম’। এই পদ্ধতিতে ঘুরে ঘুরে অর্থাৎ স্থানান্তরের মাধ্যমে চাষাবাদ করা হয় । পাহাড়ের বনভূমি কেটে, পুড়িয়ে অল্প কয়েক বছর চাষাবাদের পর দীর্ঘ সময় ঐ স্থান ফেলে রাখা হয় জমির উর্বরতা বৃদ্ধির জন্য । তবে বর্তমান সময়ে তারা হালচাষেও অভ্যস্ত হয়েছে।

ধর্মীয় জীবন : চাকমারা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। তাদের অধিকাংশ গ্রামে ‘কিয়াং’ বা বৌদ্ধ মন্দির রয়েছে। চাকমারা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় দিনকে ভক্তি সহকারে পালন করে। চাকমাদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বৈশাখী পূর্ণিমা । গৌতম বুদ্ধের জন্ম, মৃত্যু ও বুদ্ধত্ব প্রাপ্তির দিন এটি । তাছাড়া ‘মাঘী পূর্ণিমার’ রাতে কিয়াং বা প্যাগোডার প্রাঙ্গণে গৌতম বুদ্ধের সম্মানে ফানুস উড়ায়। চাকমা সমাজে মৃতদেহ দাহ করা অর্থাৎ পোড়ানো হয় ।

সাংস্কৃতিক জীবন

চাকমারা নিজেদের তাঁত দিয়ে পোশাক তৈরি করে। চাকমা মেয়েদের পরনের কাপড়ের নাম “সিলোন’ এবং ‘হাদি’। পূর্বে চাকমা পুরুষেরা এক রকম মোটা সুতার জামা, ধুতি ও গামছা পরত এবং মাথায় এক রকম পাগড়ি বাঁধতো। ইদানীং তারা শার্ট, প্যান্ট ও লুঙ্গি পরিধান করে। চাকমা নারীদের তৈরি বিভিন্ন কাপড়ের মধ্যে ‘ফুলগাদি’ ও নানা ধরনের ওড়না দেশি ও বিদেশি সবার কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

চাকমারা বাঁশ ও বেত দিয়ে সুন্দর সুন্দর চাকমাদের প্রধান খাদ্য ভাত। তারা ভাতের সাথে মাছ, মাংস এবং শাকসবজি খেতে ভালোবাসে। তাদের প্রিয় খাদ্য বাঁশ কোড়ল। বাঁশ কোড়ল দিয়ে চাকমা মেয়েরা বেশ কয়েক ধরনের রান্না করে। চাকমারা হা-ডু-ডু, কুস্তি এবং ‘ঘিলাখারা’ খেলতে ভালোবাসে। ছোট ছোট মেয়েরা ‘বউটি’ খেলে। ঝুড়ি, পাখা, চিরুনি, বাঁশি এবং বাদ্যযন্ত্র তৈরি করে।

চাকমাদের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সর্ববৃহৎ উৎসব হলো ‘বিষ্ণু’। বাংলা বর্ষের শেষ দুদিন ও নববর্ষের প্রথম দিনে চাকমারা বিজু উৎসব পালন করে। অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর তুলনায় চাকমারা তুলনামূলকভাবে বেশি শিক্ষিত। চাকমাদের নিজস্ব ভাষা রয়েছে।

গারো

বাংলাদেশের বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলায় বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে গারোরা হলো সংখ্যাগরিষ্ঠ । গারোরা ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইলের মধুপুর, নেত্রকোনা, শেরপুর, জামালপুর ও গাজীপুরের শ্রীপুরে বাস করে। বৃহত্তর সিলেট জেলায়ও কিছু সংখ্যক গারো রয়েছে। বাংলাদেশের বাইরে ভারতের মেঘালয় ও অন্যান্য রাজ্যেও গারোরা বাস করে। বাংলাদেশের গারোরা সাধারণত সমতলের বাসিন্দা ।

গারোরা সাধারণত ‘মান্দি’ নামে নিজেদের পরিচয় দিতে পছন্দ করে। গারোরা মঙ্গোলীয় নৃগোষ্ঠীর লোক ।

সামাজিক জীবন : 

গারোদের সমাজ মাতৃসূত্রীয় । তাদের সমাজে মাতা হলেন পরিবারের প্রধান সন্তানেরা মায়ের উপাধি ধারণ করে। পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ কন্যা পরিবারের সম্পত্তির উত্তরাধিকার লাভ করে থাকে। গারো পরিবারে পিতা সংসার ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করে । গারো সমাজের মূলে রয়েছে মাহারি বা মাতৃগোত্র পরিচয়। তাদের সামাজিক জীবনে বিশেষত বিয়ে, উত্তরাধিকার, সম্পত্তির ভোগ-দখল ইত্যাদিতে এই মাহারির গুরুত্ব অপরিসীম। মাতার বংশ ধরেই গারোদের চাচি (গোত্র) ও মাহারি (মাতৃগোত্র) নির্ণয় করা হয় । গারো সমাজে একই মাহারির পুরুষ ও নারীর মধ্যে বিয়ে নিষিদ্ধ । বর ও কনেকে ভিন্ন ভিন্ন মাহারির অন্তর্ভুক্ত হতে হয়। গারো সমাজে বেশ কয়েকটি দল রয়েছে। এরকম প্রধান পাঁচটি দল হচ্ছে : সাংমা, মারাক, মোমিন, শিরা ও আরেং।

অর্থনৈতিক জীবন : বাংলাদেশের গারোরা সাধারণত কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। পূর্বে গারোরা জুম চাষে অভ্যস্থ ছিল। বর্তমানে সমতলের গারোদের মধ্যে জুম চাষের প্রচলন নেই । তারা হাল চাষের সাহায্যে প্রধানত ধান, নানা জাতের সবজি ও আনারস উৎপাদন করে।

ধর্মীয় জীবন : গারোদের আদি ধর্মের নাম ছিল ‘সাংসারেক’। অতীতে গারোরা বিভিন্ন দেবদেবীর পূজা করত। তাদের প্রধান দেবতার নাম ছিল ‘তাতারা রাবুগা’। গারোরা সালজং, সুসিমে, গোয়েরা, মেন প্রভৃতি দেবদেবীর পূজা করত। নাচ-গান ও পশু বলিদানের মাধ্যমে তারা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করত। বর্তমানে গারোদের অধিকাংশ লোক খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বী। তারা এখন বড়দিনসহ খ্রিষ্ট ধর্মীয় উৎসব পালন করে।

সাংস্কৃতিক জীবন
  • গারো নারীদের নিজেদের তৈরি পোশাকের নাম ‘দকমান্দা’ 13 ‘দকশাড়ি’। পুরুষদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকের নাম ‘গান্দো’।
  • গারোরা ভাতের সাথে মাছ ও শাকসবজি খেয়ে থাকে। তাদের একটি বিশেষ খাদ্য হচ্ছে কচি বাঁশের গুঁড়ি। এর জনপ্রিয় নাম ‘মেওয়া’। এছাড়াও তারা কলাপাতা মোড়ানো পিঠা, মেরা পিঠা এবং তেলের পিঠা খেতে পছন্দ করে।
  • গারোরা খুব আমোদ-প্রমোদ প্রিয়। তাদের সামাজিক উৎসবগুলো কৃষিকেন্দ্রিক। তাদের প্রধান সামাজিক ও কৃষি উৎসব হলো ‘ওয়ানগালা।
  • বাংলাদেশের গারোদের ভাষা ‘আচিক’। এই ভাষার নিজস্ব বর্ণমালা নেই। গারো ভাষা তিব্বতীয়-বর্মি ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত।

সাঁওতাল

বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাংশে বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে একটি প্রধান নৃগোষ্ঠী হলো সাঁওতাল। তারা রাজশাহী, দিনাজপুর, রংপুর ও বগুড়া জেলায় বাস করে। ধারণা করা হয়, সাঁওতালদের পূর্বপুরুষরা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও অন্যান্য অঞ্চল থেকে বাংলাদেশের এসব অঞ্চলে আসে। আমাদের পার্শ্ববর্তী ভারতীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডে সাঁওতালদের বসবাস রয়েছে।

সাঁওতালরা অস্ট্রালয়েড নৃগোষ্ঠীভুক্ত লোক। তাঁদের দেহের রং কালো, উচ্চতা মাঝারি ধরনের এবং চুল কালো ও ঈষৎ ঢেউ খেলানো ।

সামাজিক জীবন : সাঁওতাল সমাজ হলো পিতৃতান্ত্রিক। তাদের সমাজে পিতার সূত্র ধরে সন্তানের দল ও গোত্র পরিচয় নির্ণয় করা হয়। সাঁওতাল সমাজের মূল ভিত্তি হচ্ছে গ্রাম-পঞ্চায়েত। পঞ্চায়েত পরিচালনার জন্য সাধারণত পাঁচজন সদস্য থাকেন। এরা হলো মাঞ্জহি হারাম, জগমাহি, জগপরানিক, গোডেৎ ও নায়কি। নারকিকে তারা পঞ্চায়েত সদস্য নয় বরং ধর্মগুরু হিসাবে মনে করে ।

অর্থনৈতিক জীবন : সাঁওতালদের প্রধান জীবিকা হলো কৃষি। বৃহত্তর রাজশাহী, দিনাজপুর ও রংপুর জেলায় তারা মূলত কৃষি শ্রমিক হিসাবে কাজ করে। নারী ও পুরুষ উভয়ই ক্ষেতে কাজ করে। তারা ধান, সরিষা, তামাক, মরিচ, তিল, ইক্ষু প্রভৃতি ফসলের চাষ করে। তাছাড়া বাঁশ, বেত, শালপাতা প্রভৃতি দ্বারা নানা প্রকার মাদুর, ঝাড়ু প্রভৃতি তৈরি করে নিজেদের প্রয়োজন মিটায় ও হাটে বিক্রি করে।

ধর্মীয় জীবন : সাঁওতালরা প্রধানত প্রকৃতি পূজারি। তবে এদের একাংশ খ্রিষ্ট ধর্ম গ্রহণ করেছে এবং তারা খ্রিষ্ট ধর্মের আচার-অনুষ্ঠান পালন করে থাকে।

সাংস্কৃতিক জীবন :

সাঁওতালদের প্রধান খাদ্য ভাত। সাধারণত সাঁওতালরা মাটির ঘরে বাস করে। তাদের বাড়ির দেয়াল মাটির তৈরি এবং তাতে খড়ের ছাউনি থাকে। সাঁওতালরা তাদের ঘর-বাড়ি খুব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখে।সাঁওতালদের নিজস্ব উৎসবাদির মধ্যে ‘সোহরাই’ এবং ‘বাহা’ উল্লেখযোগ্য। তাদের সংস্কৃতির একটি উল্লেখযোগ্য অনুষ্ঠান হলো ‘ঝুমুর নাচ’। সাঁওতালদের বিবাহ অনুষ্ঠানে আয়োজিত হয় ‘দোন’ ও ‘ঝিকা’ নাচ ।সাঁওতাল মেয়েরা শাড়ি পরে।

পুরুষরা ধুতি এবং ইদানীংকালে লুঙ্গিও পরে থাকে। সাঁওতালরা অলঙ্কারপ্রিয়। মেয়েরা হাতে ও গলায় পিতলের বা কাঁসার গহনা পরে। অনেক পুরুষ সাঁওতালও অলঙ্কার ব্যবহার করে । পুরুষদের কেউ কেউ গলায় মালা ও হাতে বালা পরে থাকে।

সাঁওতালদের মধ্যে শিক্ষিতের হার খুব কম হলেও বর্তমানে সাঁওতাল পরিবারের ছেলে-মেয়েরা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রতি আগ্রহী হচ্ছে। ১৮৫৫ সালের ৩০ জুন সংঘটিত সাঁওতাল বিদ্রোহ ছিল ইংরেজ শাসন শোষণের বিরুদ্ধে ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম ঐতিহাসিক বিদ্রোহ । এই বিদ্রোহের নায়ক দুই ভাই সিধু ও কানুকে সাঁওতালরা বীর হিসেবে ভক্তি করে।

মারমা

বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে জনসংখ্যার দিক থেকে মারমাদের অবস্থান দ্বিতীয়। মারমা নৃগোষ্ঠীর অধিকাংশই রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলায় বাস করে। ‘মারমা’ শব্দটি ‘ম্রাইমা’ শব্দ থেকে উদ্ভূত।

সামাজিক জীবন : পাবর্ত্য অঞ্চলে বোমাং সার্কেলের অন্তর্ভূক্ত মারমা সমাজের প্রধান হলেন বোমাং চিফ বা বোমাং রাজা । প্রত্যেক মৌজায় কতগুলো গ্রাম রয়েছে। গ্রামবাসী গ্রামের প্রধান মনোনীত করে। মারমারা গ্রামকে তাদের ভাষায় ‘রোয়া এবং গ্রামের প্রধানকে ‘রোয়াজা’ বলে।
মারমা পরিবারে পিতার স্থান সর্বোচ্চ হলেও পারিবারিক কাজকর্মে মাতা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। মারমা সমাজে পারিবারিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে মেয়েদের মতামত বেশ গুরুত্ব দেওয়া হয়।

অর্থনৈতিক জীবন : মারমাদের জীবিকার প্রধান উপায় হচ্ছে কৃষি। তাদের চাষাবাদের প্রধান পদ্ধতিকে জুম বলা হয়৷

ধর্মীয় জীবন : মারমারা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। তারা এ ধর্মেরই অনুষ্ঠানাদি উদযাপন করে। প্রায় প্রত্যেকটি মারমা গ্রামে বৌদ্ধবিহার ‘কিয়াং’ এবং বৌদ্ধ ভিক্ষু ‘ভাঙে’দের দেখা যায়। মারমারা বৈশাখী পূর্ণিমা, আশ্বিনী পূর্ণিমা, কার্তিকী পূর্ণিমা, মাঘী পূর্ণিমা ইত্যাদি দিনগুলোতে বৌদ্ধমন্দিরে গিয়ে ফুল দিয়ে এবং প্রদীপ জ্বালিয়ে বুদ্ধের পূজা করে। কাপ্তাইরের অনতিদূরে চন্দ্রঘোনার কাছে কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ তীরে অবস্থিত ‘চিরম বৌদ্ধবিহার’ মারমাদের নির্মিত একটি খুবই সুন্দর বৌদ্ধমন্দির। প্রতি বছর বহু বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী সেখানে বুদ্ধ প্রণাম ও পূজা করতে যায় ।

সাংস্কৃতিক জীবন : 

মারমাদের ঘরবাড়ি বাঁশ, কাঠ ও ছনের তৈরি যা কয়েকটি খুঁটির উপর মাটি থেকে ৬-৭ ফুট উপরে নির্মিত হয়।

মারমা পুরুষেরা মাথায় ‘বং’ (পাপড়ি বিশেষ), গারে জামা ও লুঙ্গি পরে। নারীরা পায়ে যে রাউজ পরে তার নাম ‘আঞ্জি’, এছাড়াও তারা ‘থামি’ পরে। কাপড় বোনার কাজে মারমা নারীরা দক্ষ । তাদের মধ্যে হস্তচালিত ও কোমর উভয় ধরনের তাঁতের ব্যবহার রয়েছে।
মারমারা পার্বত্য অঞ্চলের অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মতো ভাতের সাথে মাছ-মাংস ও নানা ধরনের শাকসবজি খায় ।

মারমারা পুরাতন বর্ষকে বিদায় ও নববর্ষকে বরণ উপলক্ষে সাংগ্রাই উৎসব উদযাপন করে। এ সময় তারা ‘পানিখেলা’ বা ‘জলোৎসব’-এ মেতে উঠে। এই উৎসবে পানিখেলার নির্দিষ্ট স্থানে নৌকা বা বড় পাত্রে পানি রাখা হয়। এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে এই উৎসব বেশ আনন্দ-উদ্দীপনার সাথে উদযাপিত হয়ে থাকে।

রাখাইন

বাংলাদেশের পটুয়াখালী, বরগুনা ও কক্সবাজার জেলায় রাখানইরা বাস করে। রাখাইনরা মঙ্গোলীয় নৃগোষ্ঠীর লোক। তাদের মুখমণ্ডল গোলাকার, দেহের রং ফরসা ও চুলগুলো সোজা ।

‘রাখাইন’ শব্দটির উৎপত্তি পালি ভাষার ‘রাক্ষাইন’ থেকে। এর অর্থ হচ্ছে রক্ষণশীল জাতি যারা
নিজেদের পরিচয়, সংস্কৃতি ও ধর্মীয় কৃষ্টিসমূহকে রক্ষা করতে সচেষ্ট।

বর্তমান মিয়ানমারের আরাকান অঞ্চল রাখাইনদের আদিবাস। রাখাইনরা এক সময় আরাকান থেকে এদেশে এসেছিল। তারা নিজেদের রাক্ষাইন নামে পরিচয় দিতে ভালোবাসে।

সামাজিক জীবন : রাখাইন পরিবার প্রধানত পিতৃতান্ত্রিক। পিতাই পরিবারের প্রধান। তবে নারীদেরকে
তারা শ্রদ্ধা করে।

অর্থনৈতিক জীবন : রাখাইনরা প্রধানত কৃষির উপর নির্ভরশীল। তবে এর পাশাপাশি নিজস্ব হস্তচালিত তাঁত থেকে কাপড় বোনার কাজও তারা করে থাকে ।

ধর্মীয় জীবন :
  • বাংলাদেশের রাখাইনরা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। রাখাইন শিশু-কিশোরদের বৌদ্ধ মন্দিরে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের হাতে ধর্মীয় শিষ্টাচারে দীক্ষিত করা হয়।
  • সাংস্কৃতিক জীবন : নদীর পাড় ও সমুদ্র উপকূলের সমতল ভূমিতে রাখাইনদের গ্রামগুলো অবস্থিত। রাখাইনরা মাচা পেতে ঘর তৈরি করে। তাদের কারও ঘর গোলপাতার ছাউনি, আবার কারও ঘর টিনের হয়ে থাকে।
  • রাখাইনরা নানা পালাপার্বণে বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান পালন করে থাকে। এর মধ্যে ধর্মীয় অনুষ্ঠান বিশেষ করে গৌতম বুদ্ধের জন্ম-বার্ষিকী, বৈশাখী পূর্ণিমা, বসন্ত উৎসব প্রধান। তবে চৈত্র-সংক্রান্তিতে রাখাইনরা যে সাংগ্রাই উৎসব পালন করে সেটাই তাদের সবচেয়ে বৃহৎ ও সর্বজনীন আনন্দ উৎসব।
  • রাখাইন পুরুষেরা লুঙ্গি ও ফতুয়া পরে। পুরুষরা সাধারণত ফতুয়ার উপর লুঙ্গি পরে। মন্দিরে প্রার্থনাকালীন এবং বিভিন্ন ধর্মীয় ও লোকজ অনুষ্ঠানে তারা মাথায় পাগড়ি পরে। পাগড়ি তাদের ঐতিহ্যের প্রতীক। রাখাইন মেয়েরা লুঙ্গি পড়ে। লুঙ্গির উপরে ব্লাউজ পরে।

বাংলাদেশের চাকমা, মারমা, সাঁওতাল, রাখাইন নৃগোষ্ঠীর সাথে বাঙালি সংস্কৃতির সংমিশ্রণ ও আদান-প্রদান

বাংলাদেশের মানুষ প্রাচীন কাল থেকে বিভিন্ন সংস্কৃতির সংস্পর্শে এসেছে এবং সেই সকল সংস্কৃতির বিভিন্ন উপাদান গ্রহণ করেছে। এক সংস্কৃতির সাথে অন্য সংস্কৃতির বিভিন্ন উপাদানের বিনিময়ের ফলে তৈরি হয় সংস্কৃতির সংমিশ্রণ যা মানুষে-মানুষে সাংস্কৃতিক আন্তঃসম্পর্কের ভিত রচনা করে। এই আন্তঃসম্পর্ক যতটা ঘনিষ্ঠ এবং স্থায়ী হবে ততই বিভিন্ন সংস্কৃতির মধ্যে সুষম যোগাযোগ স্থাপিত হবে।বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসমূহ বহু কাল থেকে বাঙালিদের সাথে এই ভূখণ্ডে বসবাস করে আসছে।

জীবনের প্রয়োজনে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসমূহ যেমন বাঙালিদের অনেক কার্যাবলি গ্রহণ করেছে তেমনি বাঙালিরাও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসমূহের সংস্কৃতির অনেক উপাদান গ্রহণ করেছে। ফলে সকলের মধ্যে পারস্পরিক নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে যা বাংলাদেশকে একটি বহুসংস্কৃতির দেশ হিসাবে বিশ্বে তুলে ধরেছে।

ভাষা
বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত শব্দ কুড়ি, গণ্ডা, পণ, গোলমাল, হৈ-চৈ, আবোল-তাবোল, টা-টি, ঠনঠন, কন-কন, ভোঁ-ভোঁ প্রভৃতি বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শব্দভাণ্ডার থেকে এসেছে। এছাড়া লাঙল, জোয়াল, ঢেঁকি, কুলা, ম‍ই, দড়ি, কাস্তে, পাঁচনি, নিড়ানি, হাল, পাল, দাঁড়, লগি, বৈঠা, বাতা, মাছ ধরার উপকরণ- পলো, ডুলা, কোচ, চাঁই, বড়শি ইত্যাদি উপকরণগুলো ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সংস্কৃতি থেকে এসেছে। ভাষাতত্ত্ববিদগণের গবেষণা থেকে জানা যায় যে, চাকমা ভাষা বাংলা, পালি, ওড়িয়া এবং অহমিয়া প্রভৃতি ভাষার শব্দের সাথে গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত ও সাদৃশ্যপূর্ণ।

উৎসব

নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার জন্য পালিত পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের বৈসাবি বা বিজু আর বাঙালির পহেলা বৈশাখ আজ একই বিন্দুতে মিলিত হয়েছে। নতুন ধান মাড়াইয়ে বাঙালির নবান্ন আর ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ওয়ানগালা একই সূত্রে গ্রোথিত ।

খেলাধুলায় বাংলাদেশের বিভিন্ন খেলাধুলায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষদের অংশ গ্রহণ চোখে পড়ার মতো । বাংলাদেশের জাতীয় মহিলা ফুটবল ও হকি দলে পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারী খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাথে বাঙালিদের সংমিশ্রণ ও বিনিময়কেই তুলে ধরে।

অর্থনীতি 

ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষদের উৎপাদিত শস্য ও দ্রব্যাদি সারা দেশের মানুষের প্রয়োজন মিটাচ্ছে । খাসিয়াদের পান, খাসিয়া ও মণিপুরিদের কমলা, পাহাড়ের মসলা, উত্তরবঙ্গের ধান, গারোদের আনারস সবার চাহিদা পূরণের পাশাপাশি অবদান রাখছে জাতীয় অর্থনীতিতে। সিলেটের মণিপুরিদের উৎপাদিত মণিপুরি শাড়ি ও শাল আজ দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে যা আমাদের বৈদেশিক আয়ের ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করছে।

সংস্কৃতিতে 

বর্তমানে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীরা তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক-পরিচ্ছদ, অলঙ্কার এবং খাদ্যাভাসে বাঙালিদের পোশাক (শার্ট, প্যান্ট, থ্রিপিস), অলঙ্কার (ইমিটেশন) এবং খাদ্যাভ্যাস (ভাত, মাছ, কোমল পানীয় ইত্যাদি নিজেদের জীবনে ধারণ করছে। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী মণিপুরিদের নাচ সকলের নিকট জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। তাছাড়া সাঁওতালদের ঝুমুর নাচ, চাকমাদের বাঁশ নৃত্য, ত্রিপুরাদের বোতল নাচও সকলের নিকট জনপ্রিয়। এর ফলে একে অপরের মাঝে সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের আদান প্রদানের মাধ্যমে নিজেদের আন্তঃসম্পর্ক আরও দৃঢ় হচ্ছে।

রাজনৈতিক জীবনে

বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে এদেশের নৃগোষ্ঠীদের অবদান অবিস্মরণীয় । যা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও বাঙালিদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির সংমিশ্রণ ও আদান-প্রদানের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। মুক্তিযুদ্ধে চাকমা, মারমা, মং, রাখাইন, সাঁওতাল, ওঁরাও, মালপাহাড়ি, গারোসহ আরও অনেক ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল এবং অনেকে শহিদও হয়েছেন ।

এভাবে ভাষার ব্যবহার, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও বাঙালিরা একে অপরের সান্নিধ্যে এসে নিজেদের পারস্পরিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করেছে।

শেষ কথা

আশা করছি এই পোস্ট আপনাদের ভালোলেগেছে এবং এখান থেকে ৮ম শ্রেণি ১০ম অধ্যায় বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় mcq প্রশ্ন উত্তর  সংগ্রহ করতে পেরেছেন। এই ওয়েবসাইটে শিক্ষা সংক্রান্ত পোস্ট শেয়ার করা হয়। বিভিন্ন শ্রেণির প্রশ্ন সমাধান ও উত্তর পেতে আমার সাথেই থাকুন।

আরও দেখুনঃ

৮ম শ্রেণি ১০ম অধ্যায় বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় mcq প্রশ্ন উত্তর

বাংলাদেশের সামাজিক সমস্যা সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর। ৮ম শ্রেণি

One Comment on “বাংলাদেশের বিভিন্ন নৃগোষ্ঠী- অষ্টম শ্রেণি একাদশ অধ্যায়।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *