শবে বরাতের আমল সমূহ ও করনীয় ২০২৪

শবে বরাতের আমল

শবে বরাত, যা লাইলাতুল বরাত বা মধ্য-শাবান নামেও পরিচিত, হিজরী শাবান মাসের ১৪ ও ১৫ তারিখের মধ্যবর্তী রাত। মুসলিমদের কাছে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ রজনী। এই রাতে আল্লাহ তা’আলা তার বান্দাদেরকে বিশেষভাবে ক্ষমা করেন এবং তাদের প্রতি অনুগ্রহ বর্ষান। ই রাতে আগামী এক বছরের জন্য সকল প্রাণীর রিযিক, ভাগ্য ও কর্মলিপি লিপিবদ্ধ করা হয়। নামাজ, আমল, দোয়া ও দুরদ পাঠ এবং কুরআন তিলাওয়াত এর মাধ্যমে শবে বরাত পালন করা যাবে। শবে বরাতের আমল সমূহ ও করনীয় জানতে সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ুন।

শবে বরাতের আমল

পবিত্র কুরআনে পবিত্র শবে বরাত নিয়ে নির্দিষ্ট কোন নামাজের নিয়ম নেই তবুও পবিত্র শাবান মাসে আমরা বেশি বেশি ইবাদত বন্দেগির মাধ্যমে মহান আল্লাহ তাআলার নিকট্য অর্জন করতে পারি। শবে বরাতের আমল নফল ইবাদতের মধ্যে পড়ে। সুতরাং এই রাত্রে আমরা নফল নামাজের মাধ্যমে মহান আল্লাহতালার সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারি। এছাড়াও শবে বরাতের অনেক ধরনের আমল রয়েছে। আমি লক্ষ্য করেছি যে অনেকেই ইন্টারনেটে পবিত্র শবে বরাতের আমল সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক হয়েছে। তাই নিচের অংশে আমি আপনাদের জন্য পবিত্র শবে বরাত কিভাবে পালন করবেন বা আমল করবেন সে সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করেছি।

শবে বরাত কত তারিখে ২০২৪

  • বেশি বেশি নফল নামাজ পড়া।
  • নামাজে কিরাআত ও রুকু-সেজদা দীর্ঘ করা।
  • পরের দিন নফল রোজা রাখা।
  • বেশি করে দুরূদশরীফ পাঠ করা।
  • বেশি করে তসবিহ পাঠ করা (সুবহানাল্লাহ , আলহামদুলিল্লাহ , আল্লাহুআকবার)
  • কোরআন তিলওয়াত করা।
  • বেশি করে তাওবা ও ইস্তেগফার পাঠ করা।
  • বেশি করে দান-সদকা করা। গরীব-মিসকিনদের সাহায্য করা।
  • এ রাতে কাজা হয়ে যাওয়া নামায পড়তে পারেন। তবে শুধুমাত্র ফরজ ও বিতির নামাজের কাজা পড়বেন।
  • শেষ রাতে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তে পারেন। যা দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য হাসিল হয়।
  • ফজর নামাজ জামাতের সাথে আদায় করা।
  • কবর জিয়ারত করা।
  • নিজের জন্য, পিতা-মাতার জন্য, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও সকল মোমিন মুসলমানের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করা।
  • দেশ ও জাতির কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া করা।

শবে বরাতের আমল করার উপায়

ক্ষমা ও অনুগ্রহের রাত: এই রাতে আল্লাহ তা’আলা তার বান্দাদেরকে বিশেষভাবে ক্ষমা করেন এবং তাদের প্রতি অনুগ্রহ বর্ষান। নিয়ামত ও রিযিক বন্টনের রাত: এই রাতে আগামী এক বছরের জন্য সকল প্রাণীর রিযিক, ভাগ্য ও কর্মলিপি লিপিবদ্ধ করা হয়। দোয়া ও ইবাদতের রাত: এই রাতে দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। মুসলমানদেরএই রাতে রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগীতে লিপ্ত থাকা। এছাড়া আরও বিভিন্ন উপায়ে আমল করা যাবে। বসে বসে সারারাত জিকির, তসবিহ পাঠ করেও শবে বরাতের রাতে আমল করার অনুমতি আছে। কিন্তু কুরআন বা হাদিসে নির্দিষ্ট কোনো ইবাদত, নামাজ বা রোজার কথা উল্লেখ করা হয় নি। তাই আপনার পছন্দ মতো আমল করতে পারবেন।

 করণীয়:

  • রাত জেগে ইবাদত করা: তাঁহাজ্জুদ, নফল নামায, তেলাওয়াতে কুরআন, দোয়া ও জিকির-আজকার করা।
  • ক্ষমা প্রার্থনা: নিজের ও অন্যদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া।
  • দান-ধ্যান: গরিব-দুঃখীদের দান করা।
  • পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের সাথে সময় কাটানো: একে অপরের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা।

শবে বরাত: ক্ষমা ও অনুগ্রহের রাত

শবে বরাত, যা লাইলাতুল বরাত বা মধ্য-শাবান নামেও পরিচিত, হিজরী শাবান মাসের ১৪ ও ১৫ তারিখের মধ্যবর্তী রাত। মুসলিমদের কাছে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ রজনী। শবে বরাত পালনের মূল উদ্দেশ্য হল আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও অনুগ্রহ লাভ করা। ইসলামী নিয়ম-নীতি মেনে চলার মাধ্যমে এই রাতের পূর্ণ ফায়দা লাভ করা সম্ভব। কুসংস্কার ও অযৌক্তিক বিশ্বাস থেকে দূরে থাকা।

ইসলামী নিয়ম অনুযায়ী শবে বরাতের তাৎপর্য:

  • ক্ষমা ও অনুগ্রহের রাত: এই রাতে আল্লাহ তা’আলা তার বান্দাদেরকে বিশেষভাবে ক্ষমা করেন এবং তাদের প্রতি অনুগ্রহ বর্ষান।
  • নিয়ামত ও রিযিক বন্টনের রাত: এই রাতে আগামী এক বছরের জন্য সকল প্রাণীর রিযিক, ভাগ্য ও কর্মলিপি লিপিবদ্ধ করা হয়।
  • দোয়া ও ইবাদতের রাত: এই রাতে দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। মুসলমানরা এই রাতে রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগীতে লিপ্ত থাকে।

 করণীয়:

  • রাত জেগে ইবাদত করা: তাঁহাজ্জুদ, নফল নামায, তেলাওয়াতে কুরআন, দোয়া ও জিকির-আজকার করা।
  • ক্ষমা প্রার্থনা: নিজের ও অন্যদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া।
  • দান-ধ্যান: গরিব-দুঃখীদের দান করা।
  • পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের সাথে সময় কাটানো: একে অপরের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা।

শবে বরাতে যা করা উচিত নয়:

  • অযৌক্তিক ও কুসংস্কারমূলক বিশ্বাস ও কর্মকাণ্ড: শবে বরাত সম্পর্কে অনেক অযৌক্তিক ও কুসংস্কারমূলক বিশ্বাস ও কর্মকাণ্ড প্রচলিত আছে। যেমন:
  • রাত জেগে কেবল মিষ্টি খাওয়া
  • রাতভর কবর জিয়ারত করা
  • ‘চাঁদ রাত’ পালন করা
  • ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের সাথে পাঁচ ওয়াক্ত বরাতের নামায’ পড়া
  • অতিরিক্ত ক্লান্তি ও শারীরিক ক্ষতি: অতিরিক্ত ইবাদতের মাধ্যমে নিজেকে ক্লান্ত করে ফেলা বা শারীরিক ক্ষতি করা উচিত নয়।

শবে বরাতের আমলের ফজিলত

এই  শবে বরাত আমাদের জন্য একটি আত্ন-পরিশোধন ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের সুযোগ। এই রাতে আমরা আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা, দান-ধ্যান ও ইবাদত-বন্দেগীর মাধ্যমে আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভ করতে পারি। বে বরাত পালনের মূল উদ্দেশ্য হল আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও অনুগ্রহ লাভ করা। শবে বরাতে আমল করার মাধ্যমে অনেক ধরনের ফজিলত লাভ করা যাবে।

  • ক্ষমা ও অনুগ্রহের রাত: এই রাতে আল্লাহ তা’আলা তার বান্দাদেরকে বিশেষভাবে ক্ষমা করেন এবং তাদের প্রতি অনুগ্রহ বর্ষান।
  • নিয়ামত ও রিযিক বন্টনের রাত: এই রাতে আগামী এক বছরের জন্য সকল প্রাণীর রিযিক, ভাগ্য ও কর্মলিপি লিপিবদ্ধ করা হয়।
  • দোয়া ও ইবাদতের রাত: এই রাতে দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। মুসলমানরা এই রাতে রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগীতে লিপ্ত থাকে।

হাদিস শরীফে এসেছে- ‘হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, পাঁচটি রাত এমন আছে, যে রাতে বান্দার কোনো দোয়া ফেরত দেওয়া হয় না। আর তা হলো-

জুমআর রাতের দোয়া, রজব মাসের প্রথম রাতের দোয়া, নিসফা শাবান তথা অর্ধ শাবানের রাতের দোয়া, ঈদুল ফিতর তথা রোজার ঈদের রাতের দোয়া, ঈদুল আজহা তথা কুরবানির ঈদের রাতের দোয়া।’ (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক)। তাই আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের জন্য নিচের দোয়াটি বেশি বেশি পড়তে পারেন-

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাগফিরলি জামবি, ওয়া ওয়াসসি’লি ফি দারি, ওয়া বারিক লি রিজকি। (নাসাঈ)

অর্থ: হে আল্লাহ! আমার গোনাহ মাফ করে দাও। আমার জন্য আমার বাসস্থান প্রশস্ত করে দাও। এবং আমার রিজিকে বরকত দিয়ে দাও।

শেষ কথা

শবে বরাত হল আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও অনুগ্রহ লাভের একটি সুবর্ণ সুযোগ। এই রাতের পূর্ণ ফায়দা লাভের জন্য আমাদের ইসলামী নিয়ম-নীতি মেনে চলতে হবে এবং কুসংস্কার ও অযৌক্তিক বিশ্বাস থেকে দূরে থাকতে হবে। শবে বরাতের আমল সমূহ ও করনীয় বিষয় মেনে আমল করার চেষ্টা করবেন।

আরও দেখুনঃ

শবে বরাত পালনের নিয়ম ও করনীয় ২০২৪

শবে বরাত নামাজের নিয়ম

One Comment on “শবে বরাতের আমল সমূহ ও করনীয় ২০২৪”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *