২৫শে ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে পবিত্র শবে বরাত পালিত হবে। আরবি শাওয়াল মাসের ১৪ তারিখ মধ্যরাতকেই পবিত্র শবে বরাতের রাত বলা হয়ে থাকে। এই রাতে এবাদত বন্দেগির মাধ্যমে মহান আল্লাহ তালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য নফল নামাজ আদায় করে থাকে। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঁঃ) শাবান মাসে তিনটি রোজা রাখতেন। তিনি বলেছেন শাবান মাসে বেশি বেশি নফল নামাজ আদায় করতে এবং নফল রোজা রাখতে।
যেহেতু পবিত্র শবে বরাত চলে এসেছে তাই অনেক ধর্মপ্রাণ মুসল্লীগণ শবে বরাতের রোজা রাখতে চায়। ইতিমধ্যে তারা ইন্টারনেটে শবেবরাত রোজা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন উত্তর খুঁজে বেড়াচ্ছে। আমি লক্ষ্য করেছি যে অনেকেই জানতে চেয়েছে যে শবে বরাতের রোজা কয়টি ও কত তারিখে রোজা রাখতে হবে। এই পোস্ট পবিত্র শবে বরাতের রোজা কয়টি রাখতে হবে তা শেয়ার করেছি।
শবে বরাতের রোজা কয়টি
শবে বরাত বা লয়ালাতুল বরাঃ বিশেষ রকমের নামাজ ও ইবাদতের রাত। এই রাতে মুসলিমদের মধ্যে বেশ কিছু বিশেষ আদর্শ আছে, এবং এর সাথে সম্পর্কিত কিছু ইসলামিক তথ্য নিম্নে দেওয়া হলো: শবে বরাত রাতে বিশেষভাবে ইবাদত ও দোয়া করা হয়। ইবাদতের মধ্যে নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, দুআ, যিকর, সালাতুত তাসবীহ ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। কিছু হাদিসে আছে যে, এই রাতে আল্লাহ তাআলা মুসলিমদের রইতা দেখতে নাযিল হয় এবং তাদের প্রতি মোহরমের মধ্যে মক্কা শহরে রোজা ধরতে দেয়।
এর মাধ্যমে হযরত মোহাম্মদ (সা.) এবং তার উম্মতের প্রতি আল্লাহ তাআলা আসমান থেকে রহমত নাযিল করেন। এই রাতে মুসলিমদের জন্য একটি উপলক্ষ্য হলো রোজা রাখা। কিছু হাদিসে আছে যে, এই রাতে রোজা রাখা হোক এবং এই রোজার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা মানুষকে মোহরমের সময় দুর্ভাগ্য হতে বাঁচাতে সাহায্য করতে পারে।
শবে বরাতের রোজা কয়টি রাখতে হবে
পবিত্র শবে বরাত এর এই ফজিলত ময় দিবস উপলক্ষে অনেক ধর্ম প্রান মুসুল্লিগণ শবে বরাতের বিশেষ রোজা রাখতে চান। তাই তারা ইন্টারনেটে শবে বরাতের রোজা কয়টি তা খুজে থাকেন। সত্যি বলতে শবে বরাতের মোট কয়টি রোজা রাখতে হবে তা নির্দিষ্ট নয়। আপনি আপনার সাধ্য অনুযায়ী যে কয়টি ইচ্ছা নফল রোজা রাখতে পারেন।
পবিত্র হাদিস শরীফে শবে বরাতের রোজার বিশেষ ফজিলত পাওয়া যায়। রাসূল (সঃ) বলেনঃ ১৫ শাবানের রাতে তোমরা নফল ইবাদাত করো এবং পরদিন রোজা রাখো। এই হাদিস দিয়ে শবে বরাতের একটি নফল রোজা রাখা প্রমাণিত হয়। তবে বিভিন্ন হাদিস থেকে যানা যায় আমাদের প্রিয় নবি হযরত মুহাম্মদ (সঃ) প্রত্যেক আরবি মাসের ১৩, ১৪, ও ১৫ তারিখে তিন দিন তিনটি রোজা রাখতেন। এছাড়াও তিনি মহান আল্লাহ্ তালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য নফল রোজা রাখতে উৎসাহিত করেছেন। সে হিসেবে শাবান মাসে তিনটি রোজা রাখা যেতে পারে। আপনি চাইলে শাবান মাসের ১৩,১৫ ও ১৫ দিনে নফল রোজা রাখতে পারেন।
শবে বরাতের রোজা কয়টি পালন করতে হয়
আমাদের প্রাণ প্রিয় নবি হযরত মুহাম্মদ (সঃ) প্রতি আরবি মাসেই নফল রোজা রাখতেন। মহান আল্লাহ্ তালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ও সওয়াব লাভের জন্য নফল রোজা রাখা প্রত্যেক মুমিনের উচিৎ। রোজা রাখার বিষয়ে একটি হাদিসে বলা হয়েছে, হযরত উম্মে সালমা ও হযরত আয়েশা (র) থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ শাবান মাসে হযরত মুহাম্মদ (সঃ) অধিকহারে রোজা রাখতেন। যেন তিনি গোটা শাবান মাসেই রোজা রাখতেন। (তিরমিজি – ১৫৫, ১৫৬, ১৫৯)। সে হিসেবে শাবান মাসে বেশি বেশি নফল রোজা রাখা অধিক সওয়াবের কাজ। কারণে অনেক ধর্মপ্রাণ মুসল্লীগণ পবিত্র শবে বরাতের দিনে নফল রোজা রেখে থাকেন।
শবে বরাত একটি পবিত্র রাত। এই রাতে বিভিন্ন ধরনের আমলের মাধ্যমে শবে বরাত পালন করা যাবে। হাদিসে বা কুরআনে রোজা নিয়ে নির্দিষ্ট কোনো রোজা রাখার কথা জানা যায়নি। অনেকে শবে বরাতে রোজা পালন করবে। আবার কেউ রোজা পালন করে না। এখন শবে বরাতে রোজা রাখা না রাখা সম্পূর্ণ আপনার উপর নির্ভর করবে। রোজা রাখলেও কোনো সমস্যা নেই, আর না রাখলেও কোনো সমস্যা হবে না।
শবে বরাতের রোজার নিয়ত
রোজার নিয়ত করার পূর্বে প্রথমে আপনাকে জেনে নিতে হবে মূলত নিয়ত কি। নিয়ত হচ্ছে অন্তরের সিদ্ধান্ত, এর মানে হলো আপনি যে কাজ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন সেটি নিয়ত। সুতরাং আপনি যখন কোন কাজ করা সংকল্প গ্রহণ করবেন তখনই আপনার নিয়ত হয়ে যাবে। পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে নির্দিষ্ট নিয়মে রোজা রাখার কোন বিধান নেই। তবে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) পবিত্র শাবান মাসে তিনটি করে রোজা রাখতেন। আপনিও চাইলে শবে বরাত উপলক্ষে তিনটে রোজা রাখতে পারেন। তবে নফল এই রোজা রাখার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোন নিয়ত নেই।
শেষ কথা
সাধারণত শবে বরাতের জন্য নির্ধারিত কোনো রোজা নেই। এটা সম্পূর্ণ আপনার উপর নির্ভর করে। তবে কিছু ক্ষেত্রে পাওয়া গেছে শবে বরাতের অর্থাৎ শাবান মাসে ৩ দিন রোজা রাখা যাবে। চাইলে এই ৩ দিন রোজা রাখতে পারেন। আশা করছি এই পোস্ট আপনাদের ভালোলেগেছে এবং শবে বরাতের রোজা কয়টি পালন করতে হয় তা বুঝতে পেরেছেন।
আরও দেখুনঃ
শবে বরাতের আমল সমূহ ও করনীয় ২০২৪