সাহসী জননী বাংলা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর -PDF

সাহসী জননী বাংলা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন

এখানে সাহসী জননী বাংলা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর দেওয়া আছে। যারা প্রশ্ন সংগ্রহ করতে চান, তারা সম্পূর্ণ পোস্ট টি পড়ুন। পাকিস্তানি হানাদাররা এদেশের মধ্যে পৌরাণিক কাহিনির অসুরের মতাে তাণ্ডব চালিয়েছে, গুলি করে নির্বিচারে নিরীহ বাঙালিকে হত্যা করেছে, আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করেছে গ্রামের পর গ্রাম।

বাঙালি জাতি তাদের সেই অত্যাচারের সমুচিত জবাব দিয়েছে। তারা দীর্ঘ নয় মাস লড়াই করে বর্বরদের অসুর নৃত্য থামিয়ে দিয়েছে। তারা বন্দুকের গুলি দিয়েই শত্রুর গুলির প্রতিবাদ করেছে, তাদের অসুর নৃত্য, ঠা ঠা হাসি ফিরিয়ে দিয়েছে। কবি এখানে বাঙালিদের সাহস ও সংগ্রামী মনােভাবটি ব্যক্ত করেছেন। নিচে থেকে সৃজনশীল প্রশ্ন পিডিএফ সংগ্রহ করুন।

সাহসী জননী বাংলা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন

এখানে সাহসী জননী বাংলা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর শেয়ার করেছি। যাদের সৃজনশীল প্রশ্ন অনুশীলন করতে হবে তারা নিচের দেওয়া প্রশ্ন গুলো পড়ে নিবেন।

সৃজনশীল ১ঃ 

লক্ষ লক্ষ হা-ঘরে দুর্গত
ঘৃণ্য যম-দূত-সেনা এড়িয়ে সীমান্তপারে ছোটে,
পথে পথে অনশনে অন্তিম যন্ত্রণা রোগে ত্রাসে
সহস্রের অবসান, হন্তারক বারুদে বন্দুকে
মূর্ছিত-মৃতের দেহ বিদ্ধ করে, হত্যা-ব্যবসায়ী
বাংলাদেশ-ধ্বংস-কাব্যে জানে না পৌঁছল জাহান্নামে
এ জন্মেই;
বাংলাদেশ অনন্ত অক্ষত মূর্তি জাগে

ক. মুক্তিযুদ্ধকালে কোটি বাঙালি দীর্ঘ নয় মাস কোন প্রতিবেশী রাষ্ট্রে নির্বাসিত জীবন যাপনে বাধ্য হয়?
খ. ‘তোদের রক্তাক্ত হাত মুচড়ে দিয়েছি নয় মাসে’- কথাটি বুঝিয়ে লেখো।
গ. উদ্দীপকে প্রথম পাঁচ চরণে ‘সাহসী জননী বাংলা’ কবিতার কোন দিকটি প্রকাশ পেয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের শেষ বাক্যটি ‘সাহসী জননী বাংলা’ কবিতার মূলভাবকেই তুলে ধরেছে- কথাটি বিশ্লেষণ করো।

সৃজনশীল ২ঃ 

দুঃসাহসী এক বিপ্লবী বাঙালি ছিলেন সূর্যসেন। ব্রিটিশদের শাসন শোষণ থেকে স্বদেশকে মুক্ত করার বাসনায় তিনি সশস্ত্র সংগ্রামে আত্মনিয়োগ করেন। চট্টগ্রামকে ব্রিটিশ শাসনমুক্ত করার জন্য গড়ে তোলেন ‘চট্টগ্রাম বিপ্লবী বাহিনী’। ১৯৩০ সালে চট্টগ্রামকে ইংরেজমুক্ত করে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। কিন্তু বেশিদিন তা রক্ষা করতে পারেন নি। ১৯৩৩ সালে তিনি গ্রেফতার হন। চরম নির্যাতনের পর তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়। বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে তিনি চিরস্মরণীয়।

ক. ‘কার্তুজ’ শব্দের অর্থ কী?
খ. সাহসী জননী বাংলার বুকে চাপা মৃতের আগুন কেন?
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘সাহসী জননী বাংলা’ কবিতার বৈসাদৃশ্য তুলে ধরো।
ঘ. ‘উদ্দীপকের প্রকাশিত চেতনাই ‘সাহসী জননী বাংলা’ কবিতার মূলভাব’ – উক্তিটির যথার্থতা বিচার করো।

সাহসী জননী বাংলা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

এখানে সাহসী জননী বাংলা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর দেওয়া আছে। যারা নিজে নিজে এই প্রশ্নের উত্তর লিখতে পারবেন না, নিচে থেকে উত্তর গুলো সংগ্রহ করে নিবেন।

উত্তর ১ঃ 

ক. মুক্তিযুদ্ধকালে কোটি বাঙালি দীর্ঘ নয় মাস প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে নির্বাসিত জীবন যাপনে বাধ্য হয়।

খ. বাঙালির রক্তে পাকবাহিনীর যে হাত রঞ্জিত হয়েছে অসীম সাহসী বাঙালি তা মুচড়ে প্রতিশোধ গ্রহণ করেছে।
মুক্তিযুদ্ধের নয়টি মাস দেশজুড়ে নারকীয় গণহত্যা চালায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। লাখো শহিদের রক্তে তাদের হাত কলঙ্কিত হয়। বাঙালির সম্মিলিত প্রতিরোধের মুখে তাদের সেই কলঙ্কিত হাত মুচড়ে যায়। তারা পরাজয় মেনে নিতে বাধ্য নয়।

গ.

উদ্দীপকের প্রথম পাঁচ চরণে ‘সাহসী জননী বাংলা’ কবিতায় বর্ণিত শত্রুসেনাদের নির্মমতার দিকটি প্রকাশ পেয়েছে।

১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে এদেশের অসংখ্য মানুষ ভিটেমাটি ছাড়া হয়। তারা হানাদার বাহিনীর ভয়ে দেশে আশ্রয় নেয়। শত্রুর এই অসুরিক আচরণ বাঙালি জাতিকে প্রতিরোধ সংগ্রামে বাধ্য করেছিল। ‘সাহসী জননী বাংলা’ কবিতায় বাঙালির এই সংগ্রামী দিকটি বর্ণিত হয়েছে।

উদ্দীপকের প্রথম পাঁচ চরণে বাঙালির ওপর শত্রুসেনার অসুরিক আচরণের দিকটি প্রকাশ পেয়েছে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী রাতের অন্ধকারে নিরীহ বাঙালির ওপর নির্মম নৃশংসতা চালায়। তাদের আক্রমণে অনেকে শহিদ হয়। এতে জীবন বাঁচানোর তাগিদে অনেকেই ভিটেমাটি ছেড়ে আশ্রয় নেয় ভারতে। অসহায় বাঙালি জাতির এই বর্ণনা ‘সাহসী জননী বাংলা’ কবিতায় কবি সুনিপুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। আর কবিতার এই দিকটি উদ্দীপকের প্রথম পাঁচ চরণে সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ পেয়েছে।

ঘ.

সাহসী জননী বাংলা’ কবিতার মূলকথা হলো সমস্ত বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়, যা উদ্দীপকের শেষ চরণে ফুটে উঠেছে।

বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে বীর বাঙালিরা শত্রুসেনার নৃশংসতাকে প্রতিরোধ করেছিল। তারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে দেশকে মুক্ত করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মুক্তিযুদ্ধে। সকলে সমন্বিত সংহতিতে পরাভূত করেছিল অশুভ শক্তিকে। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের এই গর্বিত দিকটি ‘সাহসী জননী বাংলা’ কবিতায় কবি তুলে ধরতে চেয়েছেন।

উদ্দীপকের শেষ চরণে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে নানা বাধা-বিপত্তি অতিক্রমের ইতিহাস লুক্কায়িত রয়েছে। বাংলাদেশের সুদীর্ঘ ইতিহাসে নানা সংগ্রাম প্রতিরোধের ঘটনা রয়েছে। যুগে যুগে এ সকল প্রতিরোধে বাঙালিরা তাদের দৃঢ় সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে। শত্রুর বিপক্ষে লড়াই করে তারা ছিনিয়ে এনেছে তাদের কাক্সিক্ষত স্বপ্ন। ‘সাহসী জননী বাংলা’ কবিতায় বাঙালির এই দিকটি তুলে ধরা হয়েছে। আর উদ্দীপকের শেষ চরণের মর্মার্থও এ রকমই।

‘সাহসী জননী বাংলা’ কবিতায় বীর বাঙালি শত্রু সেনাকেও পরাজিত করে ফিরে এসেছে দেশমাতৃকার ক্রোড়ে। ফলে বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশ। বাঙালির সংগ্রামী এই ইতিহাসই হলো কবিতার মূল কথা। আর উদ্দীপকের শেষ চরণে এই স্বাধীন বাংলার অভ্যুদয়ের দিকটিই প্রকাশিত হয়েছে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের শেষ চরণটি ‘সাহসী জননী বাংলা’ কবিতার মূলভাবকেই তুলে ধরেছে।

উত্তর ২ঃ 

ক. ‘কার্তুজ’ শব্দের অর্থ বন্দুকের টোটা।

খ. হানাদার বাহিনীর গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের প্রতিশোধ নেওয়ার সুপ্ত বাসনায় সাহসী জননী বাংলার বুকে চাপা মৃতের আগুন জ্বলে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশ পরিণত হয় লাশের দেশে। সমস্ত দেশকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে পাকিস্তানি যুদ্ধবাজ সেনাবাহিনী। স্বজনহারা, গৃহহারা বাঙালি বুকে পাথর বেঁধে অপেক্ষা করে এর সমুচিত জবাব ফিরিয়ে দিতে তাদের মনের ভেতরের প্রতিশোধের ছাইচাপা আগুন জ্বলে। এই প্রসঙ্গটিই উঠে এসেছে আলোচ্য চরণে।

গ.

দেশের স্বাধীনতা অর্জনে সাফল্যের দিক বিবেচনায় উদ্দীপকটি ‘সাহসী জননী বাংলা’ কবিতার সাথে বৈসাদৃশ্যপূর্ণ।

‘সাহসী জননী বাংলা’ কবিতায় উল্লেখিত হয়েছে বাঙালির বীরত্বের কথা। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে পাক-হানাদার বাহিনী এদেশের মানুষের ওপর পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞ ও নির্মম নির্যাতন চালিয়েছিল। তাদের বর্বরোচিত আচরণের প্রতিবাদে মুক্তিকামী মানুষ গর্জে উঠেছিল। তাদের বিরুদ্ধে গড়ে তুলেছিল প্রবল প্রতিরোধ। এই সংগ্রামী চেতনা ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা দেশের মানুষের মনে। তাই তারা যুদ্ধ করেছিল জীবন বাজি রেখে। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে প্রিয় মাতৃভূমিকে স্বাধীন করেছিল।

উদ্দীপকে আমরা লক্ষ করি, এই মাটির এক সাহসী সন্তান সূর্যসেন তাঁর বাহিনী নিয়ে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ইংরেজদের শাসন-শোষণ থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য প্রাণপণ লড়াই করেন। চট্টগ্রামকে তিনি সাময়িকভাবে ব্রিটিশ শাসনমুক্ত করেন। ‘সাহসী জননী বাংলা’ কবিতায় বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামে চূড়ান্ত বিজয় লাভের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সূর্যসেন তাঁর আন্দোলনকে সম্পূর্ণরূপে সফল করতে পারেননি।

ঘ.

উদ্দীপক ও ‘সাহসী জননী বাংলা’ কবিতা উভয় ক্ষেত্রে স্বাধীনতার চেতনাই প্রকাশিত হয়েছে।

‘সাহসী জননীর কবিতায় মুক্তযুদ্ধে বাঙালি সাহসী ভূমিকার উল্লেখ করা হয়েছে। দানবতুল্য পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালির রক্তে তাদের হাত রঞ্জিত করেছিল। বাঙালিকে তার অধিকার না দিয়ে তাদের ওপর পৈশাচিক আক্রমণ চালিয়েছিল। এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে বাঙালিও একদিন গর্জে ওঠে, অস্ত্র হাতে তুলে নেয়। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে হানাদারদের পরাজিত করে ও দেশ থেকে বিতাড়িত করে। দেশপ্রেমে উজ্জীবিত জনতার প্রবল প্রতিরোধের কথাই কবিতার বর্ণিত হয়েছে।

উদ্দীপকে বর্ণিত সূর্যসেন ছিলেন এক বীর বাঙালি। চট্টগ্রাম অঞ্চলে তিনি ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। তিনি এক বিপ্লবী বাহিনী গঠন করে চট্টগ্রামকে ইংরেজ মুক্ত করে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ইংরেজরা তাঁকে গ্রেফতার করে অন্যায়ভাবে ফাঁসি দিয়েছিল। স্বাধীনতা সংগ্রামের যে মহান প্রেরণা তিনি দিয়ে গেছেন ‘সাহসী জননী বাংলা’ কবিতায়ও তার পরিচয় পাই আমরা।

আলোচ্য কবিতাটি মূল্যায়ন করলে আমরা পাই, কবিতার মূলবক্তব্যে স্থান পেয়েছে দেশপ্রেমের চেতনায় সংগঠিত মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট ও প্রতিরোধ যুদ্ধ। আর উদ্দীপকেও উল্লেখিত হয়েছে একই দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সূর্যসেনের ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে আত্মদানের ঐতিহাসিক ঘটনা। মুক্তিযুদ্ধ ও ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন ছিল বাঙালির ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা ও স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার আন্দোলন। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে সূর্যসেনের মতো আরো বহু মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে। একসময় ব্রিটিশরা এদেশ ছেড়ে চলে যেতেও বাধ্য হয়েছে। আবার সেই চেতনাকে ধারণ করেই বাঙালি এদেশকে পাক-হানাদারমুক্ত করেছিল। তাই এ কথা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, উদ্দীপক ও আলোচ্য কবিতাতে একই চেতনা প্রকাশিত হয়েছে।

শেষ কথা

আশা করছি এই পোস্ট থেকে সাহসী জননী বাংলা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন পিডিএফ সংগ্রহ করতে পেরেছেন। এই রকম আরও ভালো ভালো পোস্ট পেতে আমার সাথেই থাকবেন। এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সকল শ্রেণির শিক্ষাসংক্রান্ত তথ্য শেয়ার করা হয়।  আমার সাথে শেষ পর্যন্ত থাকার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভালোথাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

আরও দেখুনঃ

সাহসী জননী বাংলা – কামাল চৌধুরী। বাংলা কবিতা

বোশেখ কবিতা – আল মাহমুদ। বাংলা ১ম পত্র এস এস সি

 পিডিএফ আমার পরিচয় কবিতার mcq ও বহুনির্বাচনি প্রশ্ন উত্তর

আমার পরিচয় কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর পিডিএফ