রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর পিডিএফ। এস এস সি

রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন

রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন প্রশ্নের উত্তর পিডিএফ সংগ্রহ করতে সম্পূর্ণ পোস্ট টি পড়ুন। কবিতাটি শ্রমজীবী মানুষ রানারদের নিয়ে লেখা।তাদের কাজ হচ্ছে গ্রাহকদের কাছে ব্যক্তিগত ও প্রয়োজনের চিঠি পৌঁছে দেয়া। রানাররা এতটাই দায়িত্বশীল যে কোনো কিছুই  তাদের কাজের বাধা হয়ে ওঠে না। রাত হোক, দুর্গম পথ হোক, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া হোক -নিরন্তর তাদের এই কাজ করে যেতে হয়।চিঠি মানেই সুখে-আনন্দে, দুঃখে-শোকে ভরা সংবাদ।

এই সংবাদের জন্যেই অপেক্ষায় থাকে প্রিয়জনরা। প্রিয়জনদের কাছে যথাসময়ে এই খবর পৌঁছে দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।রানারদের তাই ক্লান্তি নেই, অবসর নেওয়ার অবকাশ নেই।তারা ছুটছেন তো ছুটছেনই। এই মহান পেশায় যারা নিয়োজিত রয়েছেন তারা যে মানুষ হিসেবে কতটা মহৎ, কবিতাটিতে এই ভাবনারই প্রতিফলন দেখি আমরা। নিচে থেকে প্রশ্ন উত্তর পড়ুন।

রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন

এই কবিতার অনেক গুলো সৃজনশীল প্রশ্ন রয়েছে। তবে মূল বইয়ে একটি মাত্র সৃজনশীল প্রশ্ন পাবেন। বাকি সৃজনশীল গুলো আপনাকে গাইড বই থেকে সংগ্রহ করতে হবে। অনেকের কাছ গাইড নেই। যার কারণে অতিরক্ত সৃজনশীল গুলো অনুশ্লিন করতে পারতেছেন না। এখানে তাদের জন্য বইয়ের বাইরের রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর সহ দেওয়া আছে।

সৃজনশীল প্রশ্ন ১ঃ 

রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ঢাকা রােদ, বৃষ্টি, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া কোনােকিছুতেই বিরাম নেই ট্রাফিক পুলিশ হাশেম সাহেবের । রােদ-ঝড়-বৃষ্টি সব উপেক্ষা করে জনগণের জন্য যানজট ও নিরাপদ সড়ক রাখার আপ্রাণ চেষ্টা তার। পরিবারকে সময় দেওয়ার মতাে সময় নেই তার। বেতন যা পান তাও নুন আনতে পান্তা ফুরায়’ দশা। তার কলেজপড়ুয়া ছেলে প্রায়ই আক্ষেপ করে বলে ‘বাবা, এবার একটু নিজের দিকে, স্ত্রী-সন্তানের দিকে মন দাও।’

ক. রানার কী হাতে চলেছে?
খ. শপথের চিঠি’ বলতে কী বােঝানাে হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের হাশেম সাহেবের মাধ্যমে রানার কবিতার কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. হাশেম সাহেবের ছেলের কণ্ঠে যেন কবি সুকান্তের সুর ধ্বনিত হয়েছে’– বিশ্লেষণ কর।

সৃজনশীল প্রশ্ন ২ঃ 

সামাদ সাহেব ব্যাংকে ক্যাশিয়ার হিসেবে ৩০ বছর যাবৎ কর্মরত আছেন। সবার আগে অফিসে আসেন এবং সবশেষে অফিস ত্যাগ করেন। একদিন ভাইয়ের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে অপরাহে তিনি বাড়ি যান। পরদিন যথাসময়ে তিনি পুনরায় ফিরে আসেন। তার কারণে কারাে এতটুকু কষ্ট যাতে না হয় সে ব্যাপারে তিনি বেশ সচেতন।

ক. রানার ভােরে কোথায় পৌছে যাবে?
খ. রাত নির্জন, পথে কত ভয়, তবুও রানার ছােটে। রানার কেন ছােটে?
গ. উদ্দীপকের সামাদ সাহেবের মাঝে ‘রানার’ কবিতার রানার চরিত্রের সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “সামাদ সাহেব ‘রানার’ চরিত্রের বিশেষ দিককে ধারণ করলেও রানার স্বতন্ত্র।”- মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই কর।

রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

এখানে উপরে দেওয়া সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর গুলো দেওয়া হয়েছে। অনেকে হয়তো এই প্রশ্নের উত্তর জানেন না। তারা এখান থেকে সেগুলো সংগ্রহ করে নিন। প্রশ্নের উত্তর গুলো কবিতার আলোকে লেখা হয়েছে। তাই আপনারা প্রথমে কবিতা ও এর ব্যাখ্যা পড়ে নিবেন।

জেনেনিনঃ  রানার কবিতা  ও ব্যাখ্যা পড়ুন।

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর ১ঃ 

ক উত্তরঃ রানার খবরের বােঝা হাতে চলেছে।

খ উত্তরঃ শপথের চিঠি’ বলতে কবি বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় শ্রমজীবী মানুষের জাগরণের বাণীবদ্ধ চিঠিকে বুঝিয়েছেন। রানার কবিতায় সমাজে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্যের দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে। রানার এখানে অসাম্য ও অমানবিকতার শিকার। রানার সামান্য বেতনে অসামান্য দায়িত্ব পালন করে।

রাতের বেলা সবাই যখন আরামে নিদ্রা যায়, সে তখন লণ্ঠন জ্বেলে খবরের বােঝা হাতে শহরের দিকে ছুটে চলে। ক্ষুধার ক্লান্তিতে ক্ষয়ে ক্ষয়ে যায়, তবু সে ছুটে চলে । গভীর রাতে পথের দস্যু অপেক্ষা তার সূর্য ওঠার ভয় বেশি। শ্রমজীবী মানুষের এমন দুঃখময় জীবনের অবসানকল্পে কবি এখানে তাদের জাগরণ প্রত্যাশা করেছেন।

গ উত্তরঃ

উদ্দীপকে হাশেম সাহেবের মাধ্যমে ‘রানার কবিতার রানারের পেশাগত দায়িত্ব পালনের দিকটি ফুটে উঠেছে।

পেশাগত দায়িত্ব পালনে অবহেলা করা উচিত নয়। আমাদের সমাজে অনেক লােক আছে যারা তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে না। এর ফলে সমাজে নানা রকম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। যারা দায়িত্বে অবহেলা করে তারা ব্যক্তি, সমাজ, জাতি ও দেশের ক্ষতি করে।

সবারই উচিত অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা। উদ্দীপকে ট্রাফিক পুলিশ হাশেম সাহেবের নিষ্ঠার সঙ্গে পেশাগত দায়িত্ব পালনের দিকটি তুলে ধরা হয়েছে। তিনি প্রতিকূল পরিবেশেও দায়িত্বে অবহেলা করেন না। যানজট নিরসন ও নিরাপদ সড়ক রাখার কাজে তিনি আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যান।

দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি পরিবারের সদস্যদের সময় দিতে পারেন না। অমানবিক পরিশ্রম করে তিনি যা আয় করেন, তা দিয়ে তার সংসার চলে না। উদ্দীপকের হাশেম সাহেবের এই দায়িত্ব সচেতনতা ও সংসারের অভাব-অনটনের দিকটি রানার কবিতার রানারের পেশাগত দায়িত্ব পালনে পরিবারের লােকদের সময় না দিতে পারার বিষয়টির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।

রানার খবরের বােঝা, মানিঅর্ডার নিয়ে রাতের অন্ধকারে লণ্ঠন জ্বালিয়ে শহরের দিকে ছুটে চলে। পথে দস্যুর ভয়ের চেয়েও সে সূর্য ওঠাকে বেশি ভয় পায়। ক্ষুধার যন্ত্রণায় কাতর হলেও সে দায়িত্বে অবহেলা করে না। সে পিঠে টাকার বােঝা বহন করলেও তা ছুঁয়ে দেখে না। এভাবে উদ্দীপকের হাশেম সাহেব ‘রানার কবিতার রানারের মতাে দায়িত্বশীল ও অভাবী।

ঘ উত্তরঃ

হাশেম সাহেবের ছেলের কণ্ঠে যেন কবি সুকান্তের সুর ধ্বনিত হয়েছে- মন্তব্যটি যথার্থ।

যুগে যুগে যাদের শ্রমে সভ্যতা গড়ে উঠেছে, তারাই সবচেয়ে বেশি অবহেলার শিকার হয়েছে। তাদের দাবি শুধু খেয়েপরে বেঁচে থাকার। সেটুকুও শােষক, মহাজন, মজুদদাররা দিতে চায় না। শ্রমজীবীদের শ্রম শােষণ করে তারা বিলাসী জীবনযাপন করে।

আর দায়িত্বনিষ্ঠরা পরিবার-পরিজন নিয়ে নিদারুণ কষ্টে দিন কাটায়। উদ্দীপকে একজন দায়িত্বশীল, সৎ ও নিষ্ঠাবান ট্রাফিক পুলিশের জীবনযাপন এবং তার পরিবারের সকলের ক্ষোভের দিকটি প্রকাশ পেয়েছে।

এখানে ট্রাফিক পুলিশ হাশেম সাহেব তার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের প্রতি উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছেন। তার কলেজপড়ুয়া ছেলে তাকে সেই কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। হাশেম সাহেব নিজের প্রতিও উদাসীন। তাই ছেলে তাকে নিজের প্রতি এবং স্ত্রীসন্তানের প্রতি নজর দিতে বলেছে।

উদ্দীপকে প্রতিফলিত হাশেম সাহেবের ছেলের কণ্ঠে যে আবেদন ফুটে উঠেছে, তা রানার কবিতার কবির কণ্ঠেও ধ্বনিত হয়েছে। কবিও রানারকে ক্ষুধার ক্লান্তিতে ক্ষয়ে যাওয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সতর্ক করেছেন। কারণ রানারও নিজের প্রতি এবং তার স্ত্রীর প্রতি উদাসীন।

কেবল অর্পিত দায়িত্ব পালনে সে রাতের অন্ধকারে ছুটে চলে। অবসর নেওয়ার অবকাশ তার নেই। রানার কবিতায় রানার নতুন খবরের বােঝা কাঁধে মাঠ-ঘাট, পথ-প্রান্তর পেছনে ফেলে শহরের পানে ছুটে চলে। এই ছুটে চলার সঙ্গে সে তার জীবনের বহু আশা ও স্বপ্নও পেছনে ফেলে যায়। কেউ তার খোঁজ রাখে না।

পরিবারের সদস্যদের প্রতি সেও দায়িত্ব পালন করতে পারে না। নিজের ইচ্ছা-অনিচ্ছার মূল্যও সে দিতে পারে না। কবি তাই রানারকে সমস্ত ভীরুতা পিছনে ফেলে নতুন জীবনের স্বপ্ন বাস্তবায়নে তৎপর হতে বলেন। তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মালিক-মহাজনদের শােষণের থাবা থেকে মুক্ত হবে সেই প্রত্যাশা করেন।

এভাবে রানার কবিতায় কবির কণ্ঠে যে বাণী ধ্বনিত হয়েছে তা উদ্দীপকের হাশেম সাহেবের ছেলের কথার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। এ দিক থেকে প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর ২ঃ

ক উত্তরঃ রানার ভােরে শহরে পৌছে যাবে।

খ উত্তরঃ রাত নির্জন, পথে কত ভয়, তবুও রানার ছােটে।’- এ কথার মধ্য দিয়ে দায়িত্বে অবহেলা না করে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রানারের ছুটে চলাকে বােঝানাে হয়েছে।

রানার কবিতায় কবি শ্রমজীবী মানুষের জীবনযাপন, দুঃখবােধ এবং তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে সততার দিকটি তুলে ধরেছেন। রানার মানুষের সুখ-দুঃখের অনেক অজানা সংবাদবাহক। পিঠে খবরের বােঝা, টাকার বােঝা নিয়ে রাতের অন্ধকারে লণ্ঠন জ্বালিয়ে, ঝুমঝুম্ ঘন্টা বাজিয়ে ছুটে চলে রানার। সূর্য ওঠার আগেই সে গন্তব্যে পৌছতে চায়। তাই নির্জন পথে দস্যুর ভয়ের চেয়ে তার বড় ভয় কখন সূর্য ওঠে।

গ উত্তরঃ

উদ্দীপকের সামাদ সাহেবের মাঝে ‘রানার কবিতার রানার চরিত্রের সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি হলাে পেশাগত দায়িত্ববােধ।

পেশাগত দায়িত্ব পালনে অবহেলা করা উচিত নয়। অথচ বহু লােক আছে যারা দায়িত্ব ও কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করে না। এরা দেশ জাতি ও সমাজের উন্নতির অন্তরায়। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অর্পিত দায়িত্ব পালনে প্রাণপাত করে। তারাই সভ্যতার নির্মাতা, অগ্রযাত্রী।

উদ্দীপকে ব্যাংকের ক্যাশিয়ার সামাদ সাহেবের দায়িত্ববােধ, সততা ও সময়নিষ্ঠার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। সামাদ সাহেব ভাইয়ের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে বাড়িতে গেলেও পরদিন অফিসে আসতে তার দেরি হয়নি। তিনি দীর্ঘ চাকরি জীবনে সবার আগে অফিসে আসেন এবং সবার পরে যান। এই বিষয়টি তার দায়িত্ববােধের ও সময়নিষ্ঠার পরিচয় বহন করে। রানার কবিতায় রানার তার পেশাগত দায়িত্ব পালনে অত্যন্ত সচেতন।

পিঠে খবরের বােঝা, টাকার বােঝা নিয়ে রাতের অন্ধকারে লণ্ঠন জ্বালিয়ে সে ছুটে চলে। পথে দস্যুর ভয়ের চেয়েও সে সূর্য ওঠার ভয়ে বেশি ভীত। ক্ষুধার যন্ত্রণা নিয়ে সে ছুটে চলে তার দায়িত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বলে। ক্যাশিয়ার হয়েও ক্যাশের কোনাে গরমিল করেন না উদ্দীপকের সামাদ সাহেব। এ বিষয়টি রানার কবিতার রানার পিঠে যে টাকার বােঝা বহন করে সে টাকা তার না ছুঁয়ে দেখার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। উদ্দীপক ও কবিতা উভয় ক্ষেত্রেই দুজন কর্তব্যনিষ্ঠ ও সময়নিষ্ঠ পেশাজীবী।

ঘ উত্তরঃ

সামাদ সাহেব রানার চরিত্রের বিশেষ দিককে ধারণ করলেও রানার স্বতন্ত্র’- মন্তব্যটি যথার্থ ।

সমাজে নানা বৈশিষ্ট্যের এবং পেশার লােক বসবাস করে। তাদের একের আচরণের সঙ্গে অন্যের আচরণের মিল-অমিল দুটোই লক্ষ করা যায়। পেশাগত দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে এদের মধ্যে অনেক সময় যথেষ্ট মিল পাওয়া যায়। কিন্তু জীবনযাপন, জীবনের দুঃখবােধ, কাজের ধরন ইত্যাদির মধ্যে মিল থাকে না। থাকলেও তা পুরােপুরি নয়, খণ্ডিত বা আংশিক থাকে।

উদ্দীপকে সামাদ সাহেব ক্যাশিয়ার হিসেবে ব্যাংকে কাজ করছেন ৩০ বছর যাবৎ। কাজের প্রতি তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠাবান। তার কারণে কারও – যেন কোনাে কষ্ট না হয় সে ব্যাপারে তিনি অত্যন্ত সচেতন। তিনি যথাসময়ে অফিসে আসেন এবং সময় শেষ হওয়ার পর অফিস ত্যাগ করেন। ভাইয়ের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে বাড়িতে গেলেও পরদিন যথাসময়ে অফিসে উপস্থিত থাকেন। উদ্দীপকে ক্লান্ত শ্বাস ছুঁয়েছে আকাশ, মাটি ভিজে গেছে ঘামে- এসব কথা নেই।

উদ্দীপকের সামাদ সাহেবের পেশাগত দায়িত্ববােধ ও সময়নিষ্ঠা রানার চরিত্রের বিশেষ দিককে ধারণ করে। কিন্তু রানার চরিত্রের অন্যসব দিক তার চরিত্রের মধ্যে ফুটে ওঠেনি। রানার কবিতার রানার শ্রমজীবী নিম্নশ্রেণির মানুষের প্রতিনিধি। সে অসাম্যের, অমানবিকতার শিকার। কিন্তু উদ্দীপকের সামাদ সাহেব তা নন। সামাদ সাহেবের অফিসের সময়সূচি এবং রানার কবিতার রানারের সময়সূচি এক নয়। রানারের জীবনের সমস্ত দুঃখ কালাে রাতের খামে ঢাকা পড়ে থাকে। এসব কারণে রানার স্বতন্ত্র। কাজেই প্রশ্নে উল্লিখিত মন্তব্যটি যথার্থ হয়েছে।

রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

এখানে আড়ও কিছু সৃজনশীল প্রশ্ন দেওয়া আছে। প্রশ্নের সাথে উত্তর গুল এখানেই পেয়ে যাবেন। এই সৃজনশীল টী কবিটার আলকে তৈরি করা হয়েছে। নিচে থেকে রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর সংগ্রহ করুন।

শ্রেণিবৈষম্য ও ক্ষুধা নিবারণে অনন্যোপায় মানুষের প্রতিবাদ-এর আলােকে প্রণীত। ওরে ভাই- বড় ক্ষিদে, কী করি বল তাে উপায়, লাগা না ফন্দি-ফিকির, যা করে মিলবে দু পাই! পশুরাও খাচ্ছে চরে, মানুষ ক্ষিদেয় মরেধনীদের ঘর ভরে যায় গরিবের শ্রমের রূপায়! চরিটা মন্দ কিসে— সমাজের ফক্কিকারি, গরিবে রাখতে চেপে বড়দের খবরদারি! এদিকে পেট জ্বলে যায়, কী হবে পুঁথির কথায়? পরকাল পচুক চুলায় বাচাটাই কেলেঙ্কারি!

ক. সুকান্ত ভট্টাচার্যের পৈতৃক নিবাস কোথায়?
খ. রানারের প্রিয়া কেমন করে রাত কাটায়? বর্ণনা কর।
গ. উদ্দীপকটি রানার কবিতার সঙ্গে কোন দিক থেকে বৈসাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে প্রতিফলিত ধনী-গরিবের বৈষম্যের দিকটি ‘রানার কবিতার শ্রেণিবৈষম্যের সঙ্গে একসূত্রে গাঁথা।” মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।

উত্তর দেখুনঃ 

ক উত্তরঃ সুকান্ত ভট্টাচার্যের পৈতৃক নিবাস গােপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায়।

খ উত্তরঃ রানারের প্রিয়া বেদনা আর অভিমান নিয়ে একা একা নিদ্রাহীন রাত কাটায়। রানার চিঠি নিয়ে রাতের পথে পথে ছুটে চলে । ঘরে তার প্রিয়া তার জন্য অপেক্ষার প্রহর গােনে। নিঃসঙ্গ রাত প্রিয়ার কাছে তখন অসহ্য আর যন্ত্রণাময় মনে হয়। রানারের প্রতীক্ষায় প্রিয়া সারা রাত জেগে থাকে।বিরহে তার চোখে ঘুম আসে না, তবুও রানার আসে না, ফলে প্রিয়ার মনে সৃষ্টি হয় বেদনাময় হাহাকার। তার প্রিয়ার এই বেদনা রানার জানে, তবু তার কিছুই করার থাকে না; কারণ তার কাঁধে অনেক মানুষের কাছে চিঠি পৌছানাের দায়িত্ব।

গ উত্তরঃ

উদ্দীপকটি রানার কবিতার সঙ্গে রানারের স্বভাব-বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে বৈসাদৃশ্যপূর্ণ। আমাদের সমাজে নানা শ্রেণি-পেশার নানা বৈশিষ্ট্যের লােক বাস করে। এসব লােকের মধ্যে পেশাগত দায়িত্ববােধ সম্পন্ন ইতিবাচক স্বভাব-বৈশিষ্ট্যের লােক যেমন দেখা যায়, তেমনই নেতিবাচক বৈশিষ্ট্যের লােকও দেখা যায়।

কেউ নির্লোভ জীবনযাপন করে, আবার কেউ আত্মস্বার্থ এবং অর্থ-বিত্তের জন্য লােভী হয়ে ওঠে। উদ্দীপকের কবিতাংশে ক্ষুধা নিবারণের জন্যে অন্যায় পথে পা বাড়ানাের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। এখানে ক্ষুধার জ্বালায় মানুষের অসৎ হয়ে পড়ার বিষয়টি প্রতিফলিত হয়েছে। ক্ষুধার্ত ব্যক্তি দু’পয়সার জন্য ফন্দি-ফিকিরের আশ্রয় নিতে চায়।

উদ্দীপকের কবিতাংশে প্রতিফলিত এই দিকটির সঙ্গে ‘রানার কবিতার রানারের স্বভাব-বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে বৈসাদৃশ্যপূর্ণ। কারণ রানার ক্ষুধার যন্ত্রণায় কাতর হয়ে ক্লান্তিতে ক্ষয়ে গেলেও চুরির কথা ভাবে না। প্রতিনিয়ত টাকার বােঝা পিঠে বয়ে নিলেও সে টাকায় রানার লােভ করে না। সে তার দায়িত্বে অবহেলা করে না।

ঘ উত্তরঃ

উদ্দীপকে প্রতিফলিত ধনী-গরিবের বৈষম্যের দিকটি ‘রানার’ কবিতার শ্রেণিবৈষম্যের সঙ্গে একসূত্রে গাঁথা।”- মন্তব্যটি যথার্থ ।

সমাজে প্রধানত দুই শ্রেণির লােক বাস করে- ধনী ও দরিদ্র। সমাজের দরিদ্র শ্রেণির মানুষরা কঠোর পরিশ্রম করেও তাদের মৌল-মানবিক চাহিদা পূরণ করতে পারে না। কারণ ধনিকশ্রেণি গরিবের শ্রমের মূল্য ও মর্যাদা দিতে চায় না। তারা নানাভাবে নিম্নশ্রেণির মানুষকে শােষণ করে।

উদ্দীপকে গরিবের শ্রমের অর্থে ধনীদের ঘর ভরে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। দরিদ্র শ্রেণির শ্রমের মূল্য না দিয়ে ধনিকশ্রেণি তাদের শােষণ করে। ফলে দরিদ্র শ্রেণির মানুষ কঠোর পরিশ্রম করেও দুবেলা খেতে পায় না।

উদ্দীপকের এই বিষয়টি ‘রানার কবিতার দরিদ্র রানারের দুঃখ-দারিদ্র্য এবং শ্রমের উপযুক্ত মূল্য না পাওয়ার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। কবিতায় দেখা যায় অভাবের তাড়নায় রানারের জীবন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। ধনিকশ্রেণি যদি দরিদ্র রানারের শ্রমের উপযুক্ত মূল্য দিত তাহলে তাকে ক্ষুধার ক্লান্তিতে ক্ষয়ে যেতে হতাে না। রানারের ক্লান্ত, বিষন্ন, দুঃখময় জীবনের কথা প্রকৃতি ছাড়া কেউ মনে রাখে না।

রানার কবিতায় কবি রানারের দুঃখ-দারিদ্রের অসহায় জীবনের দিকটি তুলে ধরেছেন। সেখানে রানার দিন-রাত পরিশ্রম করলেও ক্ষুধার অন্ধকার থেকে মুক্তি পায়নি। এখানে ধনী ও দরিদ্র শ্রেণির যে বৈষম্য প্রতিফলিত হয়েছে তা উদ্দীপকে প্রতিফলিত ধনী-দরিদ্রের বৈষম্যের দিকটি নির্দেশ করেছে। যেখানে রানার দিন-রাত পরিশ্রম করলেও ক্ষুধার অন্ধকার থেকে মুক্তি পায় না। তাই প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ বলা যায়।

রানার কবিতার সৃজনশীল PDF

সৃজনশীল প্রশ্ন ১ :
আমি যেন সেই বাতিওয়ালা,
সে সন্ধ্যায় রাজপথে-পথে বাতি জ্বালিয়ে ফেরে
অথচ নিজের ঘরে নেই যার বাতি জ্বালার সামাথ্য,
ডনজের ঘরে জমে থাকে দুঃসহ অন্ধকার।

ক. রানার কী পিছনে ফেলে সামনে চলে?
খ.‘জীবনের সব রাত্রিকে ওরা কিনেছে অল্প দামে’-কথাটি বুঝিয়ে লেখ।
গ. উদ্দীপকটি ‘রানার’ কবিতার কোন দিক থেকে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপকে ‘রানার’ কবিতার একটি বিশেষ দিকের প্রতিফলন ঘটেছে, সম্পূর্ণ বিষয় নয়।”-উক্তিটির যথার্থতা প্রমান কর।

সৃজনশীল প্রশ্ন ২ঃ  সিএনলিচালক বাদল মিয়া পরিশ্রমী মানুষ। সকাল থেকে মধ্যরাত অবধি সে যাত্রী আনা-নেওয়া করে। সে গাড়ির মিটার অনুযায়ী ভাড়া রাখে। একদিন সন্ধ্যায় এক যাত্রী নেমে যাওয়ার পর সে যাত্রীর আসনের নিচে একটি মানিব্যাগ পড়ে থাকতে দেখে। মালিকের নামধাম জানতে সে মানিব্যাগটি খুললে তাতে এক হাজার টাকার দশটি নোট দেখতে পায়। সে এই টাকা নেয় না, বরং মানিব্যাগে পাওয়া কার্ডের নাম্বারে যোগাযোগ করে তা ফিরিয়ে দেয়।

ক. কার দুঃখের চিঠি কেউ কোনোদিনও পড়বে না?
খ. ‘এর জীবনের দুঃখ কেবল জানবে পথের তৃণ’- উদ্ভিটির তাৎপর্য কী?
গ. উদ্দীপকের বাদল মিয়ার মাঝে ‘রানার’ কবিতার রানারের কোন বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দিষ্ট দিকটিই রানার চরিত্রের একমাত্র দিক নয় মন্তব্যটি বিচার করো।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ঃ সামাদ সাহেব ব্যাংকে ক্যাশিয়ার হিসেবে ৩০ বছর যাবৎ কর্মরত আছেন। সবার আগে অফিসে আসেন এবং সবশেষে অফিস ত্যাগ করেন। একদিন ভাইয়ের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে অপরাহ্নে তিনি বাড়ি যান। পরদিন যথাসময়ে তিনি পুনরায় ফিরে আসেন। তার কারণে কারো এতটুকু কষ্ট যাতে না হয় সে ব্যাপারে তিনি বেশ সচেতন।

ক. রানার ভোরে কোথায় পৌঁছে যাবে?
খ. ‘রাত নির্জন, পথে কত ভয়, তবুও রানার ছোটে । রানার কেন ছোটে?
গ. উদ্দীপকের সামাদ সাহেবের মাঝে “রানার’ কবিতার রানার চরিত্রের সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “সামাদ সাহেব রানার চরিত্রের বিশেষ দিককে ধারণ করলেও রানার স্বতন্ত্র মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই কর।

শেষ কথা

আশা করছি এই পোস্ট থেকে রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর পিডিএফ সংগ্রহ করতে পেরেছেন। এই রকম আরও ভালো ভালো পোস্ট পেতে আমার সাথেই থাকবেন। এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সকল শ্রেণির শিক্ষাসংক্রান্ত তথ্য শেয়ার করা হয়।  আমার সাথে শেষ পর্যন্ত থাকার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভালোথাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

আরও দেখুনঃ

রানার কবিতা –সুকান্ত ভট্টাচার্য। নবম-দশম শ্রেণি- পিডিএফ

পোস্টার কবিতা-আবুল হোসেন। বাংলা ১ম পত্র এস এস সি

আমি কোনো আগন্তুক নই জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর- পিডিএফ

আমি কোনো আগন্তুক নই-আহসান হাবীব। বাংলা কবিতা