রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর পিডিএফ- SSC

রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

এই পোস্টে রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর পিডিএফ দেওয়া হয়েছে। যারা প্রশ্ন গুলো পড়তে চান নিচে থেকে পড়ে নিবেন। কবিতাটি শ্রমজীবী মানুষ রানারদের নিয়ে লেখা।তাদের কাজ হচ্ছে গ্রাহকদের কাছে ব্যক্তিগত ও প্রয়োজনের চিঠি পৌঁছে দেয়া। রানাররা এতটাই দায়িত্বশীল যে কোনো কিছুই  তাদের কাজের বাধা হয়ে ওঠে না। রাত হোক, দুর্গম পথ হোক, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া হোক -নিরন্তর তাদের এই কাজ করে যেতে হয়।চিঠি মানেই সুখে-আনন্দে, দুঃখে-শোকে ভরা সংবাদ। নিচে থেকে রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর পড়ুন অথবা পিডিএফ সংগ্রহ করুন।

রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন

কবিতা দ্বারা ডাক পিয়নের কথা বলা হয়েছে। যারা যেকোনো সময়ে মানুষের নিকটে বার্তা পৌঁছে দিতো। এই কবিতার অনেক গুলো সৃজনশীল প্রশ্ন রয়েছে। তবে মূল বইয়ে এই প্রশ্ন গুলো দেওয়া নেই। আপনাকে গাইড বই থেকে সংগ্রহ করতে হবে। যাদের কাছে গাইড নেই, তারা এই অংশ থেকে রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন সংগ্রহ করুন।

সৃজনশীল প্রশ্ন ১ঃ 

বাড়ির সকলের প্রতি সমান দায়িত্ব তার। কে, কখন চা খাবে, কখন ঔষধ খাবে; কোনাে কিছুই তার বাদ পড়ে না। কারাে কাপড় ময়লা হলে ধুয়ে ফেলা, খাওয়া-দাওয়ার খোঁজ নেয়া যেন তার প্রাত্যহিক রুটিন। গৃহিণীর কখন কী লাগবে তাও সে জানে। হেলেনার এমন কর্তব্যপরায়ণতায় সবাই মুগ্ধ। এগারাে বছরের এই মেয়েটির প্রতি সবাই তাই খুব আন্তরিক। তার একটু সর্দি-জ্বর হলেও সবাই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। গৃহের লােকদের এমন ব্যবহারে হেলেনা নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করে।

ক. রানার দস্যুর চেয়ে বেশি ভয় পায় কাকে?
খ. রানারের কাছে পৃথিবীটা কালাে ধোঁয়া মনে হয় কেন? বুঝিয়ে লেখ।
গ. উদ্দীপকের হেলেনার সাথে রানার কবিতার রানারের সাদৃশ্য বর্ণনা কর।
ঘ. উদ্দীপকের বাড়ির লােকজনের আন্তরিকতা ‘রানার’ কবিতার কবির চেতনাকে ধারণ করে কি? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।

সৃজনশীল প্রশ্ন ২ঃ 

ফারুক সাহেব একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। তিনি বিদ্যালয়ে যথাসময়ের আগে আসেন এবং ছুটির পর পরবর্তী দিনের কিছু কাজ গুছিয়ে বাড়ি ফেরেন। একদিন ভােরে আকস্মিকভাবে বাড়ি থেকে ছােট ভাইয়ের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে তিনি বাড়ি যান। ভাইয়ের দাফন-কাফন সম্পন্ন করে পরদিনই কর্মস্থলে পুনরায় ফিরে আসেন। বিদ্যালয়ে কর্মরত অন্যরা বিবিধ অসুবিধার সম্মুখীন না হন, এই ব্যাপারে তিনি খুবই দায়িত্বশীল ব্যক্তিত্ব।

ক. রানারের কাছে সহানুভূতির চিঠি পাঠাবে কে?
খ. দস্যুর ভয়, তারাে চেয়ে ভয় কখন সূর্য ওঠে।’- এই চরণ দ্বারা কবি কী বুঝিয়েছেন? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের ফারুক সাহেবের মধ্যে রানার’ কবিতার রানার চরিত্রের কোন দিকটি প্রতিফলিত? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের ফারুক সাহেব এবং ‘রানার’ কবিতার রানার দায়িত্বশীলতার দিক হতে সহঅবস্থানে বিরাজমান।” মন্তব্যটি মূল্যায়ন কর।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ঃ

প্রদীপ ফুলের হােস্টেলের ধােপা। ছাত্রদের কাপড় ধােলাই করে ইস্ত্রি করে দেয়। প্রতিদিন কাপড় ধুয়ে রাতভর ইস্ত্রি করে ভােরে ছাত্রদের কক্ষে পৌছে দেয়। পরিষ্কার ধবধবে কাপড় পরে ছাত্ররা জাতীয় সঙ্গীতে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ালে তার খুব ভালাে লাগে। সে বৃহস্পতিবার বাড়ি যায় এবং শুক্রবার বিকেলে চলে আসে। তার অবহেলার কারণে কাউকে যেন ময়লা কাপড়ে স্কুলে যেতে না হয় সে ব্যাপারে খুব সচেতন সে। একবার শীতের সময় খুব অসুস্থ অবস্থায় তাকে কাজ করতে দেখে হােস্টেল সুপার নিজে তাকে ছুটি দিয়ে দেন।

ক. রানার কী কাজ নিয়েছে?
খ. রানার সূর্য ওঠাকে ভয় পায় কেন?
গ. উদ্দীপকে প্রদীপের কাজে রানার’ কবিতার রানার চরিত্রের কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের হােস্টেল সুপার কবির প্রত্যাশা পূরণ করেছেন কি? তােমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।

রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

অনেকে উপরের দেওয়া প্রশ্নের উত্তর নিজে নিজে করতে পারবেন না। তাদের জন্য সকল সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর এখানে শেয়ার করেছি। যাদের উপরের দেওয়া সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর প্রয়োজন নিচে থেকে রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর  পিডিএফ সংগ্রহ করুন।

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর ১ঃ 

ক।রানার দস্যুর চেয়ে বেশি ভয় পায় সূর্য ওঠাকে।

খ। ঘরে অভাবের কারণে রানারের কাছে পৃথিবীটা কালাে ধােয়া’ মনে হয়।রানার শ্রমজীবী মানুষ। দায়িত্বের কারণে তাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। রাতের ঘুম বিসর্জন দিয়ে রানার ছুটে চলে। নির্জন রাতে বন্ধুর পথ সে অতিক্রম করে অসীম সাহসিকতায়। রানারের ঘামের চিহ্ন পড়ে থাকে পথের তৃণের উপর। কিন্তু প্রতিদানে রানার তেমন কিছুই পায় না। অভাবের কথা মনে হলে রানারের কাছে পৃথিবীটা কালাে ধোঁয়ার মতাে মনে হয়।

গ।

উদ্দীপকের হেলেনা ও রানার কবিতার রানারের সাদৃশ্য রয়েছে দায়িত্ববােধ এবং অর্পিত দায়িত্ব পালনে সচেতনতায়।

জীবন-জীবিকার তাগিদে মানুষ নানা রকম কাজ করে। কোনাে কাজই তুচ্ছ নয়। কাজের প্রতি যত্নবান এবং দায়িত্বশীলতাই মানুষকে মর্যাদাবান করে। জগতে শ্রম ও শ্রমের মর্যাদা যত বৃদ্ধি পায়, সভ্যতারও তত অগ্রগতি সাধিত হয়।

উদ্দীপকে বাসার কাজে নিয়ােজিত এগারাে বছরের এক বালিকার দায়িত্ববােধ, কর্মদক্ষতা এবং তার প্রতি গৃহকর্তার পরিবারের লােকদের মানবিক আচরণের দিকটি তুলে ধরা হয়েছে। এখানে হেলেনা রােগীকে ওষুধ খাওয়ানাে, কাপড় কাচা, চা বানানাে প্রভৃতি কাজ করে। বাড়ির সবার প্রতি সে সমান যত্ন ও দায়িত্ববােধ নিয়ে কাজ করে। এই দায়িত্বশীলতা ও কর্মসচেতনতার দিকটি রানার কবিতার রানারের দায়িত্ববােধ ও কর্মসচেতনতার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। রানারও সর্বদা সজাগ থাকে সূর্য ওঠার আগেই খবরের বােঝ নিয়ে শহরে পৌছে যাওয়ার জন্য; নিজে কষ্ট স্বীকার করে সে কখনাে দায়িত্বে অবহেলা করে না।

ঘ।

হ্যা, উদ্দীপকের বাড়ির লােকজনের আন্তরিকতা রানার’ কবিতার কবির চেতনাকে ধারণ করে।” কবির চেতনাকে ধারণ করে।

মানুষ সামাজিক জীব। পারস্পরিক সাহায্য-সহযােগিতার ভিত্তিতেই সমাজ উন্নত ও গতিশীল হয়। সমাজের মানুষ নানা রকম কাজে নিয়ােজিত থাকে। কর্মে দায়িত্ব ও কর্তব্যনিষ্ঠার পরিচয় দিলে সবাই তাকে ভালােবাসে এবং তার সঙ্গে মানবিক আচরণ করে।

উদ্দীপকে বাসা-বাড়ির কাজে নিয়ােজিত হেলেনা নামের এগারাে বছরের এক বালিকার দায়িত্ব সচেতনতা এবং তার প্রতি বাড়ির লােকের সহানুভূতিশীল আচরণের দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে। এখানে বাড়ির সবার প্রতি দায়িত্বশীল থাকার কারণে সে ঐ বাড়িরই একজন হয়ে উঠেছে। কাজের মেয়ে হেলেনার অসুস্থতায় বাড়ির সবাই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। কাজের লােকের প্রতি-এই মানবিকতার দিকটি রানার’ কবিতার রচয়িতার চেতনার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। কারণ ‘রানার’ কবিতায় কবি রানারের কষ্টকর জীবনের অবসান এবং তার প্রতি অন্যের সহানুভূতি প্রত্যাশা করেছেন।

‘রানার’ কবিতায় কবি রানারের কর্মক্লান্ত জীবনে অন্যদের সহানুভূতি প্রত্যাশা করেছেন। এই বিষয়টি উদ্দীপকের বাড়ির লােকদের মধ্যেও দেখা যায়। তারা বাড়ির কাজের মেয়ে হেলেনার অসুস্থতায় অস্থির হয়ে উঠেছে, তার প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছে। রানার কবিতার কবিও অনুরূপ সহানুভূতি প্রত্যাশা করেছেন ক্লান্তিতে ক্ষয়ে ক্ষয়ে যাওয়া রানারের জীবনের জন্য। সুতরাং বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ ।

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর ২ঃ 

ক। রানারের কাছে সহানুভূতির চিঠি পাঠাবে ভােরের আকাশ।

খ। ‘দস্যুর ভয়, তারা চেয়ে ভয় কখন সূর্য ওঠে।’- এই চরণ দ্বারা কবি রানারের পেশাগত দায়িত্ববােধ ও সময়নিষ্ঠা বুঝিয়েছেন।‘রানার’ কবিতায় কবি শ্রমজীবী মানুষের জীবনযাপন, দুঃখবােধ এবং তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে সততার দিকটি তুলে ধরেছেন। রানার মানুষের সুখ-দুঃখের অনেক অজানা সংবাদের বাহক। পিঠে খবরের বােঝ, মানিঅর্ডার নিয়ে রাতের অন্ধকারে লণ্ঠন জ্বালিয়ে, ঝুমঝুম্ ঘন্টা বাজিয়ে ছুটে চলে রানার। সূর্য ওঠার আগেই সে গন্তব্যে পৌছতে চায়। তাই নির্জন পথে দস্যুর ভয়ের চেয়ে সূর্য ওঠায় তার বড় ভয়।

গ।

উদ্দীপকের ফারুক হবের মাঝে ‘রানার কবিতার রানার চরিত্রের পেশাগত দায়িত্ববােধের দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে।

পেশাগত দায়িত্ব পালনে অবহেলা করা উচিত নয়। অথচ বহু লােক দায়িত্ব ও কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করে না। এরা দেশ, জাতি ও সমাজের উন্নতির অন্তরায়। তবে যেসব শ্রেণি-পেশার মানুষ অর্পিত দায়িত্ব পালনে প্রাণপাত করেন তারাই সভ্যতার নির্মাতা, অগ্রযাত্রী।

উদ্দীপকে সহকারী প্রধান শিক্ষক ফারুক সাহেবের দায়িত্ববােধ, সততা ও সময়নিষ্ঠার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। ফারুক সাহেব ভাইয়ের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে বাড়িতে গেলেও পরদিন বিদ্যালয়ে আসতে.তার দেরি হয়নি। তিনি দীর্ঘ চাকরি জীবনে সবার আগে বিদ্যালয়ে আসেন এবং সবার পরে যান। এই বিষয়টি তার দায়িত্ববােধ ও সময়নিষ্ঠার পরিচয় বহন করে। রানার’ কবিতায় রানার পিঠে খবরের বােঝ নিয়ে রাতের অন্ধকারে লণ্ঠন জ্বালিয়ে সে ছুটে চলে। পথে দস্যুর ভয়ের চেয়েও সে সূর্য ওঠার ভয়ে ভীত। সে পেশাগত দায়িত্ব পালনে অত্যন্ত সচেতন। উদ্দীপকের ফারুক সাহেব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক হলেও তিনি অত্যন্ত দায়িত্বশীল। অতএব বলা যায় যে, উদ্দীপকের ফারুক সাহেবের মাঝে ‘রানার’ কবিতার রানারের দায়িত্ব ও কর্তব্যবােধের দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে।

ঘ।

উদ্দীপকের ফারুক সাহেব এবং রানার’ কবিতার রানার দায়িত্বশীলতার দিক হতে সহঅবস্থানে বিরাজমান।”- মন্তব্যটি যথার্থ।

সমাজে নানা পেশার লােক দেখা যায়। তাদের মধ্যে অনেকেই পেশাগত দায়িত্ব পালনে তৎপর, আবার অনেকেই তা পালনে উদাসীন থাকে। প্রত্যেকেরই উচিত তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা। ‘রানার কবিতায় কবি শ্রমজীবী মানুষের জীবনযাপন, দুঃখবােধ এবং তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে সততার দিকটি তুলে ধরেছেন।

রানার মানুষের সুখ-দুঃখের অনেক অজানা সংবাদের বাহক। সে পিঠে খবরের বােঝা, মানিঅর্ডার নিয়ে রাতের অন্ধকারে লণ্ঠন জ্বালিয়ে ঝুম ঝুম ঘন্টা বাজিয়ে শহরের পথে ছুটে চলে। অন্ধকার পথে দস্যুর ভয় অপেক্ষা শহরে পৌছানাের আগে তার সূর্য ওঠার ভয়। অর্থের অভাবে, খাদ্যের অভাবে অতি পরিশ্রমে ক্লান্ত রানারের পিঠে টাকার বােঝা থাকলেও সে তা ছুঁয়ে দেখে না। রানার কবিতার রানারের এই দায়িত্ববােধ এবং পেশাগত দায়িত্ব পালনে নৈতিক দৃঢ়তার বিষয়টি উদ্দীপকের শিক্ষক ফারুক সাহেবের দায়িত্ব সচেতনতার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। তিনিও সময়নিষ্ঠ এবং পেশাগত দায়িত্ব পালনে অত্যন্ত সজাগ ও তৎপর।

উদ্দীপকের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ফারুক সাহেব ছােট ভাইয়ের মৃত্যুর খবর শুনে বাড়িতে গেলেও পরের দিনই বাড়ি থেকে ফিরে এসে তার কর্মস্থলে যােগ দেন। এখানে কাজের প্রতি তার মনােযােগ ও দায়িত্ববােধের যে পরিচয় পাওয়া যায় তা ‘রানার কবিতার রানারের দায়িত্ববােধের সঙ্গে একসূত্রে গাঁথা। তার কারণে বিদ্যালয়ের অন্যরা যাতে বিবিধ সমস্যার সম্মুখীন না হন, সেই দিকেও তিনি অত্যন্ত সচেতন। এসব দিক বিচারে তাই বলা যায় যে, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর ৩ঃ 

ক। রানার নতুন খবর আনার কাজ নিয়েছে।

খ। সূর্য ওঠার আগেই খবরের বােঝা শহরে পৌছে দিতে হবে বলে রানার সূর্য ওঠাকে ভয় পায়।

‘রানার কবিতায় শ্রমজীবী মানুষের প্রতিনিধি রানার একজন দায়িত্বশীল মানুষ। সে তার দায়িত্বের প্রতি যত্নশীল। অন্ধকার রাতে রানার লণ্ঠন হাতে ঘণ্টা বাজাতে বাজাতে ছুটে চলে। তার কাধে থাকে চিঠিপত্রের বােঝা, টাকার বােঝা, মূল্যবান জিনিসপত্র। নির্জন রাতে দুর্গম ও বন্ধুর পথে দস্যুর ভয় থাকে। রানার রাতের আঁধার কেটে, অন্ধকারে দস্যুর ভয় উপেক্ষা করে ছুটে চলে।  এ কারণেই রানার সূর্য ওঠাকে ভয় পায়।

গ।

উদ্দীপকে প্রদীপের কাজে রানার কবিতার রানীর চরিত্রের পেশাগত দায়িত্ববােধের দিকটি ফুটে উঠেছে।

সমাজে মানুষ নানা পেশায় জড়িত থাকে। প্রত্যেকের উচিত নিজ নিজ পেশার প্রতি যত্নবান হওয়া। পেশাগত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করার মধ্য দিয়েই ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, দেশ উন্নতির পথে এগিয়ে যায়। তাই পেশাগত দায়িত্ব পালনে অবহেলা করা উচিত নয়।

উদ্দীপকে স্কুল হােস্টেলের ধােপ প্রদীপের দায়িত্ববােধ ও সময়নিষ্ঠার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। সে প্রতিদিন হােস্টেলের ছাত্রদের কাপড় ধােলাই করে ইস্ত্রি করে দেয়। রাতভর সে কাপড় ইস্ত্রি করে, নিজের ব্যক্তিগত জীবনের হাসি-আনন্দ অপেক্ষা ছাত্রদের পরিচ্ছন্ন পােশাক তার কাছে বড় হয়ে ওঠে। এই বিষয়টি রানার’ কবিতার রানারের দায়িত্ববােধের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।

রানারও নিজের ব্যক্তিগত জীবনের সুখ-আনন্দ বিসর্জন দিয়ে নতুন খবরের বােঝা কাঁধে রাতের পথে পথে শহর অভিমুখে ছুটে চলে। তার দায়িত্বের প্রতি সে অত্যন্ত সচেতন। তাই অন্ধকার রাতে দস্যুর ভয় অপেক্ষা তার সূর্য ওঠার ভয় বেশি। উদ্দীপকের ধােপা প্রদীপও খুব দায়িত্ব সচেতন। তার অবহেলার কারণে কাউকে যেন ময়লা কাপড়ে স্কুলে যেতে না হয় এ ব্যাপারে সে সর্বদা সজাগ থাকে।

ঘ।

হ্যা, উদ্দীপকের হােস্টেল সুপার কবির প্রত্যাশা পূরণ করেছেন।

যুগে যুগে যাদের পরিশ্রমে সভ্যতা গড়ে উঠেছে, তারাই সবচেয়ে বেশি অবহেলার শিকার। তাদের দাবি খুব সামান্য, জীবনযাপনের চাহিদা অল্প, শুধু খেয়ে-পরে বেঁচে থাকার। তাই সহায় সম্পদের অধিকারীদের উচিত এদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া।

উদ্দীপকে স্কুল হােস্টেলের একজন ধােপার সচেতনতা ও দায়িত্বশীলতার দিকটি তুলে ধরা হয়েছে। সে রাতভর ছাত্রদের কাপড় ধােলাই ও ইস্ত্রি করে। কোনাে ছাত্রকে যাতে তার কারণে ময়লা কাপড় পরে স্কুলে যেতে না হয় তার জন্য সে তৎপর থাকে। উদ্দীপকের প্রদীপ নামের এই ধােপার দায়িত্ববােধ ‘রানার কবিতার রানারের দায়িত্ববােধের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।

রানারও অন্ধকার রাতে দস্যুর ভয়কে উপেক্ষা করে সূর্য ওঠার আগেই খবরের বােঝা শহরে পৌছে দেয়।রাত গিয়ে সূর্য ওঠে, নতুন আলাের স্পর্শে রানারের দুঃখের কালের অবসান কবি প্রত্যাশা করেন। কবির সেই প্রত্যাশা উদ্দীপকে প্রদীপের প্রতি হােস্টেল সুপারের সহানুভূতিতে কিছুটা হলেও প্রকাশ পেয়েছে। শীতের সময় প্রদীপ খুব অসুস্থ হয়ে পড়ায় হােস্টেল সুপার তাকে ছুটি দিয়ে সহানুভূতি দেখান।

রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

এখানে আরও কিছু রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর দেওয়া আছে। এই সৃজনশীল টি অতিরিক্ত প্রশ্ন হিসেবে অনুশীলন করতে পারবেন। যারা পড়তে চান, এখান থেকে পড়ুন।

সামাদ সাহেব ব্যাংকে ক্যাশিয়ার হিসেবে ৩০ বছর যাবৎ কর্মরত আছেন। সবার আগে অফিসে আসেন এবং সবশেষে অফিস ত্যাগ করেন। একদিন ভাইয়ের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে অপরাহে তিনি বাড়ি যান। পরদিন যথাসময়ে তিনি পুনরায় ফিরে আসেন। তার কারণে কারাে এতটুকু কষ্ট যাতে না হয় সে ব্যাপারে তিনি বেশ সচেতন।

ক. রানার ভােরে কোথায় পৌছে যাবে?
খ. রাত নির্জন, পথে কত ভয়, তবুও রানার ছােটে। রানার কেন ছােটে?
গ. উদ্দীপকের সামাদ সাহেবের মাঝে ‘রানার’ কবিতার রানার চরিত্রের সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “সামাদ সাহেব ‘রানার’ চরিত্রের বিশেষ দিককে ধারণ করলেও রানার স্বতন্ত্র।”- মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই কর।

উত্তরঃ  

ক। রানার ভােরে শহরে পৌছে যাবে।

খ। রাত নির্জন, পথে কত ভয়, তবুও রানার ছােটে।’- এ কথার মধ্য দিয়ে দায়িত্বে অবহেলা না করে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রানারের ছুটে চলাকে বােঝানাে হয়েছে।

রানার কবিতায় কবি শ্রমজীবী মানুষের জীবনযাপন, দুঃখবােধ এবং তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে সততার দিকটি তুলে ধরেছেন। রানার মানুষের সুখ-দুঃখের অনেক অজানা সংবাদবাহক। পিঠে খবরের বােঝা, টাকার বােঝা নিয়ে রাতের অন্ধকারে লণ্ঠন জ্বালিয়ে, ঝুমঝুম্ ঘন্টা বাজিয়ে ছুটে চলে রানার। সূর্য ওঠার আগেই সে গন্তব্যে পৌছতে চায়। তাই নির্জন পথে দস্যুর ভয়ের চেয়ে তার বড় ভয় কখন সূর্য ওঠে।

গ।

উদ্দীপকের সামাদ সাহেবের মাঝে ‘রানার কবিতার রানার চরিত্রের সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি হলাে পেশাগত দায়িত্ববােধ।

পেশাগত দায়িত্ব পালনে অবহেলা করা উচিত নয়। অথচ বহু লােক আছে যারা দায়িত্ব ও কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করে না। এরা দেশ জাতি ও সমাজের উন্নতির অন্তরায়। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অর্পিত দায়িত্ব পালনে প্রাণপাত করে। তারাই সভ্যতার নির্মাতা, অগ্রযাত্রী।

উদ্দীপকে ব্যাংকের ক্যাশিয়ার সামাদ সাহেবের দায়িত্ববােধ, সততা ও সময়নিষ্ঠার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। সামাদ সাহেব ভাইয়ের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে বাড়িতে গেলেও পরদিন অফিসে আসতে তার দেরি হয়নি। তিনি দীর্ঘ চাকরি জীবনে সবার আগে অফিসে আসেন এবং সবার পরে যান। এই বিষয়টি তার দায়িত্ববােধের ও সময়নিষ্ঠার পরিচয় বহন করে। রানার কবিতায় রানার তার পেশাগত দায়িত্ব পালনে অত্যন্ত সচেতন। পিঠে খবরের বােঝা, টাকার বােঝা নিয়ে রাতের অন্ধকারে লণ্ঠন জ্বালিয়ে সে ছুটে চলে।

পথে দস্যুর ভয়ের চেয়েও সে সূর্য ওঠার ভয়ে বেশি ভীত। ক্ষুধার যন্ত্রণা নিয়ে সে ছুটে চলে তার দায়িত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বলে। ক্যাশিয়ার হয়েও ক্যাশের কোনাে গরমিল করেন না উদ্দীপকের সামাদ সাহেব। এ বিষয়টি রানার কবিতার রানার পিঠে যে টাকার বােঝা বহন করে সে টাকা তার না ছুঁয়ে দেখার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। উদ্দীপক ও কবিতা উভয় ক্ষেত্রেই দুজন কর্তব্যনিষ্ঠ ও সময়নিষ্ঠ পেশাজীবী।

ঘ।

‘সামাদ সাহেব রানার চরিত্রের বিশেষ দিককে ধারণ করলেও রানার স্বতন্ত্র’- মন্তব্যটি যথার্থ ।

সমাজে নানা বৈশিষ্ট্যের এবং পেশার লােক বসবাস করে। তাদের একের আচরণের সঙ্গে অন্যের আচরণের মিল-অমিল দুটোই লক্ষ করা যায়। পেশাগত দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে এদের মধ্যে অনেক সময় যথেষ্ট মিল পাওয়া যায়। কিন্তু জীবনযাপন, জীবনের দুঃখবােধ, কাজের ধরন ইত্যাদির মধ্যে মিল থাকে না। থাকলেও তা পুরােপুরি নয়, খণ্ডিত বা আংশিক থাকে।

উদ্দীপকে সামাদ সাহেব ক্যাশিয়ার হিসেবে ব্যাংকে কাজ করছেন ৩০ বছর যাবৎ। কাজের প্রতি তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠাবান। তার কারণে কারও – যেন কোনাে কষ্ট না হয় সে ব্যাপারে তিনি অত্যন্ত সচেতন। তিনি যথাসময়ে অফিসে আসেন এবং সময় শেষ হওয়ার পর অফিস ত্যাগ করেন। ভাইয়ের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে বাড়িতে গেলেও পরদিন যথাসময়ে অফিসে উপস্থিত থাকেন। উদ্দীপকে ক্লান্ত শ্বাস ছুঁয়েছে আকাশ, মাটি ভিজে গেছে ঘামে- এসব কথা নেই। এই কথার বাস্তব উদাহরণ হয়েছেন রানার’ কবিতার রানার।

ক্ষুধিত রানারের জীবনযন্ত্রণা পথের তৃণ যেভাবে জানে- শহর কিংবা গ্রামের লােকেরা তা জানে না। রানার কবিতার ‘রানার’ চরিত্রের এই ট্র্যাজেডি উদ্দীপকে নেই। উদ্দীপকের সামাদ সাহেবের পেশাগত দায়িত্ববােধ ও সময়নিষ্ঠা রানার চরিত্রের বিশেষ দিককে ধারণ করে। কিন্তু রানার চরিত্রের অন্যসব দিক তার চরিত্রের মধ্যে ফুটে ওঠেনি। রানার কবিতার রানার শ্রমজীবী নিম্নশ্রেণির মানুষের প্রতিনিধি। সে অসাম্যের, অমানবিকতার শিকার। কিন্তু উদ্দীপকের সামাদ সাহেব তা নন। সামাদ সাহেবের অফিসের সময়সূচি এবং রানার কবিতার রানারের সময়সূচি এক নয়। রানারের জীবনের সমস্ত দুঃখ কালাে রাতের খামে ঢাকা পড়ে থাকে। এসব কারণে রানার স্বতন্ত্র। কাজেই প্রশ্নে উল্লিখিত মন্তব্যটি যথার্থ হয়েছে।

শেষ কথা

আশা করছি এই পোস্ট থেকে রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর পিডিএফ সংগ্রহ করতে পেরেছেন। এই রকম আরও ভালো ভালো পোস্ট পেতে আমার সাথেই থাকবেন। এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সকল শ্রেণির শিক্ষাসংক্রান্ত তথ্য শেয়ার করা হয়।  আমার সাথে শেষ পর্যন্ত থাকার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভালোথাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

আরও দেখুনঃ

রানার কবিতা –সুকান্ত ভট্টাচার্য। নবম-দশম শ্রেণি- পিডিএফ

পোস্টার কবিতা-আবুল হোসেন। বাংলা ১ম পত্র এস এস সি

আমি কোনো আগন্তুক নই জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর- পিডিএফ

আমি কোনো আগন্তুক নই-আহসান হাবীব। বাংলা কবিতা