৮ম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় ৮ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

৮ম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় ৮ম অধ্যায় সৃজনশীল

আজকের অধ্যায় টি হচ্ছে বাংলাদেশে জলবায়ু ও দুর্যোগ মোকাবিলা। এই অধ্যায়ে অনেক ধরনের প্রশ্ন রয়েছে। এর মধ্যে ৮ম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় ৮ম অধ্যায় সৃজনশীল গুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে দুর্যোগপ্রবণ এলাকাগুলোর একটি। আমরা জানি যে, ভূ-পৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধি বা উষ্ণায়নের কারণে সারা পৃথিবীতেই আজ জলবায়ুর পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। জলবায়ুর এই পরিবর্তনের ফলে উষ্ণমণ্ডলীয় দেশে শুষ্ক মৌসুমে ফসলের উৎপাদন হ্রাস পায়। এছাড়া বর্ষাকালে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত, বন্যা ও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান এবং বৈশ্বিক উষ্ণায়ন এ দুর্যোগ সংঘটনের কারণ । বাংলাদেশের জীবন ও অর্থনীতির উপর এইসব দুর্যোগের প্রভাব লক্ষ করা যায়। নিচের অংশ থেকে এই ৮ম অধ্যায়ের সকল ধরনের সৃজনশীল গুলো সংগ্রহ করে নিন।

৮ম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় ৮ম অধ্যায় সৃজনশীল

এই অংশে ৮ম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় ৮ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন শেয়ার করেছি। এগুলো মূল বইয়ে নেই। তাই পড়ার জন্য এই পোস্ট থেকে সংগ্রহ করতে হবে।

সৃজনশীল প্রশ্ন ১ঃ 

বাংলাদেশের দুর্যোগ’ থেকে একটি সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করা হলো।
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নের উত্তর লিখ।
তিন বন্ধু সকালে ব্যায়াম করার উদ্দেশ্যে হাঁটতে বেরিয়েছে। শহরের একটি রাস্তা দিয়ে হাঁটছে । হঠাৎ তাদের নাকে দুর্গন্ধ গেল। তাকাতেই দেখল পাশের খাল দিয়ে ময়লা-আবর্জনা ভেসে যাচ্ছে। তখন এক বন্ধু আরিফ বলল, এখানে একটি সুন্দর খাল ছিল। আমাদের ছোটবেলায় এখানে মাছ ধরতাম। গোসল করতাম। এখন এসব স্বপ্ন বলে মনে হয়। রাস্তা পেরিয়ে মাঠের কাছে যেতেই সকাল আকাশের দিকে কালো ধোঁয়া বেরোতে দেখে। তখন আরেক বন্ধু রিপন বলল, এখানে অনেক জায়গাজুড়ে বাগান ছিল। এখানে ছিল ফুরফুরে বাতাস। এখন আর এসব কিছু নেই। তৃতীয় বন্ধু হাসিব আফসোস করে বলল, বৈশ্বিক উষ্ণতার বাড়িয়ে আমরা নিজেদের তি নিজেরাই করছি।

ক. ‘গ্রিন হাউস প্রক্রিয়া’ কী?
খ. ব্যাপকহারে নবায়নের ফলে বর্তমান বিশ্বে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে কেন?
গ. উদ্দীপকে তিন বন্ধু কোন বিষয়গুলো ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছে বুঝিয়ে লিখ।
ঘ. উদ্দীপকে তিন বন্ধুর কথায় ভেতরে যে বিষয়টি অন্তর্নিহিত রয়েছে-এর জন্য মূলত কারা দায়ী? বিশ্লেষণ করো।

সৃজনশীল প্রশ্ন ২ঃ 

উদ্দীপক :
ঘটনা-১ : আমাদের দেশে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, সিলেট ও নেত্রকোনা জেলায় প্রায়ই এক ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়ে থাকে। এই দুর্যোগের জন্য মানুষও অনেকটা দায়ী।

ঘটনা-২ : আমাদের দেশের উত্তরাঞ্চলে অনেক সময় একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ হতে দেখা যায়। এই দুর্যোগের ফলে ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হয়।ফলে বিপর্যস্ত পরিবারগুলো বিকল্প আয়ের উৎস খুঁজতে থাকে।

ক) সুনামি শব্দের অর্থ কী?
খ) গ্রিনহাউস গ্যাস বলতে কী বোঝো?
গ) ঘটনা ১-এ কোন দুর্যোগের কথা বলা হয়েছে? তার কারণ ও ফলাফল লেখো।
ঘ) ঘটনা ২-এ উল্লিখিত দুর্যোগের প্রতিকারগুলো বিশ্লেষণ করো।

৮ম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় ৮ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

এখানে উপরের দেওয়া ৮ম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় ৮ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর শেয়ার করেছি। যারা নিজে নিজে উত্তর গুলো লিখতে পারবেন না, তারা এখানে দেওয়া সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর দেখে নিবেন।

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর 

ক. গ্রিন হাউস প্রক্রিয়া হলো কতগুলো গ্যাসের সমন্বয়ে গঠিত একটি আচ্ছাদন।

উত্তর : খ. বর্তমান বিশ্বে ব্যাপক হারে নগরায়নের ফলে মানুষ কাজের খোঁজে শহরে ভিড় জমাচ্ছে। ফলে শহরে জনসংখ্যা ও যানবাহনের চাপ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। এই যানবাহন থেকে বের হচ্ছে বিষাক্ত কালো ধোঁয়া কার্বন ডাই-অক্সাইড। আরো রয়েছে কলকারখানার কালো ধোঁয়া, যা বায়ুতে কার্বনের পরিমাণকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। এই কার্বন বাযুমণ্ডলের ওজোনস্তরকে তি করছে। তাই ব্যাপক হারে নগরায়নের ফলে বর্তমান বিশ্বে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

গ.

উদ্দীপকে তিন বন্ধু তাদের আলোচনায় খাল, বিল, নদী ও সমুদ্রের পানিতে ময়লা-আবর্জনা ফেলা, ইটের ভাটা ও শিল্প কলকারখানা থেকে বিষাক্ত কালো ধোঁয়া ও বন উজাড়করণের কথা ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছে । বিশ্বের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে মহাসমুদ্র, নদী-নালা, খাল-বিল, হাওড়-বাঁওড়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সমুদ্রে তেজস্ক্রিয় বর্জ্য নিপে করার ফলে তা দূষিত হচ্ছে। এ দূষিত বাষ্প বাতাসে মিশে ওজোনস্তরের তি করছে। এ ছাড়া অনেক নদী ও খাল বর্জ্য ফেলার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বর্তমান বিশ্বে ব্যাপক হারে নগরায়নের ফলে কাজের খোঁজে মানুষ শহরে ছুটছে, ফলে শহরে বাড়ছে জনসংখ্যার চাপ, বাড়ছে যানবাহনের সংখ্যা। এসব যানবাহনের নির্গত কালো ধোঁয়া, ইটের ভাটা ও শিল্প-কারখানার কালো ধোঁয়া বায়ুতে কার্বন ডাই- অক্সাইডের পরিমাণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। ফলে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে আমাদের জীবন হুমকির সম্মুখীন। সবুজ উদ্ভিদ বাতাস থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে এবং আমাদের জন্য অক্সিজেন ত্যাগ করে । কিন্তু ব্যাপকহারে বৃ নিধন বা বন উজাড়করণের ফলে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে গেছে। ফলে বায়ুমণ্ডলের ওজোনস্তর য়কারী সিএফসি গ্যাস অস্বাভাবিকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

ঘ.

উদ্দীপকে তিন বন্ধুর কথার ভেতরে যে বিষয়টি অন্তর্নিহিত রয়েছে তা হলো বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি। এ জন্য মূলত মানুষ দায়ী। তাদের সৃষ্ট কর্মকাণ্ডের ফলেই বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা যেসব দ্রব্য ব্যবহার করি যেমনÑ রেফ্রিজারেটর, এয়ারকন্ডিশনার, প্লাস্টিক, ফোম, অ্যারোসল প্রভৃতির ফলে বায়ুমণ্ডলে উৎপাদন হচ্ছে এক ধরনের গ্রিন হাউস গ্যাস (এইচসিএফসি)। এ গ্যাসের কারণে বায়ুমণ্ডলের ওজোনস্তর তিগ্রস্ত হচ্ছে। ওজোনস্তর সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি শোষণ করে পৃথিবীর জীবজগৎকে রা করে।

ওজোনস্তর য়ের কারণে ভূপৃষ্ঠের অতি বেগুনি রশ্মির প্রভাব শতকরা পাঁচ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে জীবজগৎ কঠিন বিপদের সম্মুখীন। পৃথিবী থেকে জীববৈচিত্র্য দিন দিন হারিয়ে যেতে শুরু করেছে। মরুকরণ শুরু হয়েছে। উন্নত বিশ্বের দেশগুলো অধিক হারে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করে পরিবেশ নষ্ট করছে। তা ছাড়া এসব দেশ পারমাণবিক চুল্লি ব্যবহার করে, যা থেকে প্রচুর বর্জ্য সৃষ্টি হয়। এই বর্জ্য গ্রিন হাউস গ্যাস সৃষ্টি করে। শিল্প-কারখানার বর্জ্য ও কালো ধোঁয়া থেকেও প্রচুর পরিমণে পারদ, সিসা, আর্সেনিক নির্গত হয়।

সুতরাং উপরিউক্ত আলোচনার মাধ্যমে এটা বলা যায়,পরিবেশ বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য মানব সৃষ্ট কর্মকাণ্ডই দায়ী। উদ্দীপকে তিন বন্ধুর আলোচনার ভেতর দিয়ে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণ যে, মানুষের কর্মকাণ্ড এটাই প্রতীয়মান হয়েছে।

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর  

ক. সুনামি শব্দের অর্থ হলো সমুদ্রতীরের ঢেউ।

খ. গ্রিনহাউস গ্যাস বলতে বায়ুমণ্ডলকে ঘিরে কতগুলো গ্যাসের সমন্বয়ে গঠিত আচ্ছাদনকে বোঝায়।কার্বন ডাই-অক্সাইড, নাইট্রাস-অক্সাইড, জলীয়বাষ্প, সিএফসি প্রভৃতি গ্রিনহাউস গ্যাস নামে পরিচিত। এগুলোকে তাপ বৃদ্ধিকারক গ্যাসও বলে। এই গ্যাসগুলো বায়ুমণ্ডলকে ঘিরে পৃথিবীর চারপাশে চাদরের মতো একটি আচ্ছাদন তৈরি করে আছে।এই আচ্ছাদনই গ্রিনহাউস নামে পরিচিত।

গ.

ঘটনা ১-এ যে দুর্যোগের কথা বলা হয়েছে তা হলো ভূমিধস।বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, সিলেট ও নেত্রকোনা জেলায় প্রায়ই ভূমিধস হয়ে থাকে, যা উদ্দীপকে বর্ণিত তথ্যের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।

সাধারণত দীর্ঘমেয়াদি ও ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেই ভূমিধস ঘটে থাকে। ভারি বৃষ্টিপাত হলে বেলে পাথর ও কাদা দিয়ে গঠিত পাহাড়ে ভূমিধস ঘটতে পারে।তা ছাড়া মানুষ ব্যাপক হারে গাছপালা ও পাহাড় কেটে ভূমিধসের কারণ ঘটায়। ভূমিধসের ফলে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী জনগণের ঘরবাড়ি মাটির নিচে চাপা পড়তে পারে। আমাদের দেশে ভূমিধস হয়ে মানুষের প্রাণহানি ও বাড়িঘর নষ্ট হয়।

ঘ.

ঘটনা ২-এ উল্লিখিত দুর্যোগ খরার ক্ষেত্রে কতগুলো প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।

ঘটনা ২-এ বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা বলা হয়েছে, যে দুর্যোগে ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হয়। ফলে বিপর্যস্ত পরিবারগুলো বিকল্প আয়ের উৎস খুঁজতে থাকে। ঘটনা ২-এ বর্ণিত এসব তথ্যের সঙ্গে পাঠ্যপুস্তকে বর্ণিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ খরার সঙ্গে মিল রয়েছে। খরা মোকাবেলায় কতগুলো পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়।

খরার আগে খরাপ্রবণ অঞ্চলে পুকুর ও খাল খনন করতে হবে। তা ছাড়া যেখানে যেখানে সম্ভব বৃষ্টির পানি ধরে রাখতে হবে। দুর্যোগ সময়ের জন্য শুকনো খাবার ও নগদ অর্থ মজুদ রাখতে হবে। একইভাবে গবাদি পশুর জন্যও খাবার মজুদ রাখা প্রয়োজন। এলাকায় গভীর নলকূপ স্থাপন করতে হবে। যেসব ফসল চাষে খুব বেশি পানির দরকার হয় না খরাপ্রবণ এলাকায় সেসব ফসল আবাদ করতে হবে।

পরিশেষে বলা যায়, খরা একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। তবে উল্লিখিত প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা খরা মোকাবেলায় সহায়ক হবে।

শেষ কথা

আশা করছি এই পোস্ট আপনাদের ভালোলেগেছে এবং এখান থেকে ৮ম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় ৮ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর সংগ্রহ করতে  পেরেছেন। এই ওয়েবসাইটে শিক্ষা সংক্রান্ত পোস্ট শেয়ার করা হয়। বিভিন্ন শ্রেণির প্রশ্ন সমাধান ও উত্তর পেতে আমার সাথেই থাকুন।

আরও দেখুনঃ

বাংলাদেশে জলবায়ু ও দুর্যোগ মোকাবিলা ৮ম শ্রেণি।

বাাংলাদেশঃ রাষ্ট্র ও সরকার ব্যবস্থা বাংলাদেশ ও বিশবপরিচয় ৮ম শ্রেণি

One Comment on “৮ম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় ৮ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *