এই পোস্টে কপোতাক্ষ নদ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর দেওয়া আছে। কপোতাক্ষ নদ’ কবিতাটি কবির চতুর্দশ কবিতাবলি থেকে গৃহীত হয়েছে। এই কবিতায় কবির স্মৃতিকাতরতার আবরণে তাঁর অত্যুজ্জ্বল দেশপ্রেম প্রকাশিত হয়েছে। কবি যশোর জেলার কপোতাক্ষ নদের তীরে সাগরদাঁড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে মধুসূদন এই নদের তীরে প্রাকৃতিক পরিবেশে বড় হয়েছেন। যখন তিনি ফ্রান্সে বসবাস করেন, তখন জন্মভূমির শৈশব, কৈশোরের বেদনা-বিধুর স্মৃতি তাঁর মনে জাগিয়েছে কাতরতা। দূরে বসেও তিনি যেন কপোতাক্ষ নদের কলকল ধ্বনি শুনতে পান।
কপোতাক্ষ নদ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
এখানে কপোতাক্ষ নদ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর গুলো দেওয়া আছে। এই কবিতা থেকে গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন দেওয়া থাকে। বিভিন্ন বোর্ড পরীক্ষার প্রশ্ন সম্পর্কে ধারনা পেতে নিচে দেওয়া সৃজনশীল প্রশ্ন গুলো অনুশীলন করুন।
সৃজনশীল ১ঃ
বাংলার নদী কি শোভাশালিনী
কি মধুর তার কুল কুল ধ্বনি
দু’ধারে তাহার বিটপীর শ্রেণি
হেরিলে জুড়ায় হিয়া।
ক. মাইকেল মধুসূদন দত্তের অমর কীর্তি কোন কাব্যটি?
খ. ‘দুগ্ধ স্রোতোরূপী তুমি জন্মভূমি-স্তনে’- ব্যাখ্যা করো।
গ. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার মূলভাবের সাথে উদ্দীপকের মূলভাবের সাদৃশ্য বর্ণনা করো।
ঘ. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার পরিণতির দিকটি উদ্দীপকে অনুপস্থিত- বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল ২ঃ
সৌহার্দ্য ব্যারিস্টারি পড়ার জন্য কানাডা গেলেও মন পড়ে থাকে কর্ণফুলীর তীরের সেই ছায়াঘেরা গ্রাম নন্দীপুরে। নদীর দুতীরের প্রাকৃতিক শোভা ও শৈশবের স্মৃতি মনে করতেই সে আবেগতাড়িত হয়। তার ধারণা, বাংলা সাহিত্যসম্ভারের অনেক অংশ জুড়ে রয়েছে নদীর অবস্থিতি।
ক. বাংলা সাহিত্যে সনেটের প্রবর্তন করেন কে?
খ. ‘স্নেহের তৃষ্ণা’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকে সৌহার্দ্যরে অনুভূতি ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার আলোকে ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপকে যে ভাবটি প্রতিফলিত হয়েছে তা যেন ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার মূলভাব”- উক্তিটি মূল্যায়ন করো।
সৃজনশীল ৩ঃ
বাংলাদেশের নিজস্ব আকাশ আছে, কিন্তু তা বেড়া দিয়ে বিচ্ছিন্ন করা নয়, বহির্বিশ্বকে তা দূর দূর করে দূরে তাড়ায় না, তার অনুকূল আলােহাওয়াকে অস্পৃশ্য করে পাশে ঠেলে না। এ আকাশ উদার, কিন্তু এর স্বাতন্ত্রে অন্য কারাে হস্তক্ষেপও সে সহ্য করে না। আকাশ, সূর্য, নদী, গাছপালা, পাহাড়, সমুদ্র, পৃথিবীর আর সব দেশের মতাে এখানেও রয়েছে। কিন্তু ঐ সব সর্বজনীন বস্তুপুঞ্জসমৃদ্ধ প্রকৃতি এমন এক বিশেষ গুণে মণ্ডিত, যা একবারে পূর্ব বাংলারই। এ প্রকৃতির বিশিষ্টতা গুণ এ অঞ্চলের অধিবাসীদেরও স্বভাবে ও মানসগঠনে বৈশিষ্ট্য দিয়েছে, যা আমাদের স্বতন্ত্র এক চরিত্র ও মানবিক আদলের উৎস। এখানকার প্রকৃতি ও মানুষ এক অবিচ্ছিন্ন পরিমণ্ডলে সমন্বিত হয়ে একটি স্বকীয় স্বরূপে নির্দিষ্ট, সুস্পষ্ট।
ক. শৈশবে কবি মধুসূদন দত্ত কোন নদের তীরে বড় হয়েছেন?
খ. কপােতাক্ষ নদকে মায়ের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে কেন?
গ. উদ্দীপকে ‘কপােতাক্ষ নদ’ কবিতার কোন দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “স্বদেশের প্রতি অনুরাগ প্রকাশের বিচারে উদ্দীপকের মূলভাব এবং কপােতাক্ষ নদ’ কবিতার মূলভাব একসূত্রে গাঁথা।” মন্তব্যটি সম্পর্কে তােমার মতামত দাও।
কপোতাক্ষ নদ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
এখানে উপরের দেওয়া সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর দেওয়া আছে। অনেকেই এই উত্তর গুলো নিজে নিজে করতে পারেননি। তারা নিচে থেকে প্রশ্নের উত্তর গুলো সংগ্রহ করেনিন।
উত্তর ১ঃ
ক. মাইকেল মধুসূদন দত্তের অমর কীর্তি ‘মেঘনাদবধ’ কাব্যটি।
খ. স্বদেশ ও শৈশব-কৈশোরের স্মৃতিবিজড়িত কপোতাক্ষ নদের প্রতি গভীর মমত্ববোধ প্রকাশিত হয়েছে আলোচ্য চরণে।
প্রবাসে বসবাস করলেও স্বদেশকে গভীরভাবে ভালোবাসেন ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত। বিশেষভাবে তাঁকে আলোড়িত করে তাঁর শৈশব-কৈশোরের স্মৃতিঘেরা কপোতাক্ষ নদ। এই নদীর সাথে কবির যেন নাড়ির সম্পর্ক বিদ্যমান। কবিতায় জন্মভূমিকে তিনি মা হিসেবে কল্পনা করেছেন। আর কপোতাক্ষ নদকে কল্পনা করেছেন সেই মায়ের স্তনের অমূল্য দুগ্ধ হিসেবে। এর মাধ্যমে কপোতাক্ষ নদের প্রতি কবির অত্যন্ত গভীর অনুরাগের প্রমাণ পাওয়া যায়।
গ.
স্বদেশের নদীর প্রতি মুগ্ধতার অনুভূতি প্রকাশের দিক থেকে উদ্দীপক ও ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার মাঝে সাদৃশ্য লক্ষ করা যায়।
‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবি মাইকেল মদুসূদন দত্ত স্বদেশের প্রতি তাঁর প্রাণের গভীর আবেগ প্রকাশ করেছেন কপোতাক্ষ নদকে ঘিরে। এই নদীর তীরে তাঁর মধুময় শৈশব-কৈশোর কেটেছে। প্রবাসজীবনের একাকিত্বের মাঝে বারবার তাঁর মন সেই নদের কথা ভেবে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়ে। কপোতাক্ষ নদের কথা স্মরণ করে তিনি গভীর মানসিক প্রশান্তি লাভ করেন।
উদ্দীপক কবিতাংশে স্বদেশের নদীর প্রতি কবিমনের ভালোলাগার প্রকাশ ঘটেছে। কবির চোখে বাংলার নদীর সৌন্দর্য অনন্য। নদীর কুল কুল ধ্বনি তাঁর প্রাণ জুড়ায়। দুইপাশের বৃক্ষের সারির শ্যামল ছায়া তাঁকে মুগ্ধ করে। নদীকে ঘিরে জন্মভূমির প্রতি আবেগ প্রকাশের এমন প্রমাণ মেলে ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতাতেও।
ঘ.
‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় স্বদেশের হৃদয়ে ঠাঁই পাওয়ার অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যমে ভাবের পূর্ণতাপ্রাপ্তি ঘটেছে। কিন্তু উদ্দীপক কবিতাংশে এমন পরিণতি লক্ষ করা যায় না।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘কপোতাক্ষ নদ’ একটি চতুর্দশপদী কবিতা। এ কবিতায় চৌদ্দ চরণের সমন্বয়ে একটি সুসংহত ভাবের প্রকাশ ঘটেছে। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার প্রথম আট চরণের স্তবক অর্থাৎ অষ্টকে রয়েছে ভাবের সূচনা। পরের ছয় চরণের স্তবক অর্থাৎ ষষ্টকে এটি পরিণতি লাভ করেছে।
উদ্দীপক কবিতাংশের কবি স্বদেশের নদীর সৌন্দর্যে মুগ্ধ। নদীর স্রোতধারা, তীরের বৃক্ষরাজির মায়া ইত্যাদি তাঁর মন কেড়ে নেয়। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবি তাঁর প্রিয় কপোতাক্ষ নদের কথা ভেবে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। নদীকে ঘিরে স্বদেশের প্রতি মমত্ববোধ প্রকাশের এ দিকটি উদ্দীপক কবিতাংশেও রয়েছে। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার প্রথম স্তবকের সাথে উদ্দীপক কবিতাংশের এক্ষেত্রে সাদৃশ্য লক্ষ করা গেলেও শেষ স্তবকের পরিণতির দিকটি উদ্দীপক কবিতাংশে অনুপস্থিত।
কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার ষষ্টকে কবির মনের ভাব পরিণতি লাভ করেছে। কবি স্বদেশের মানুষের মনে অমর হতে চান। তাই তিনি কপোতাক্ষ নদের কথা তাঁর কবিতায়, গানে ব্যক্ত করেন। কবির বিশ্বাস এর মাধ্যমেই স্বদেশের জন্য তাঁর প্রাণের আকুলতা স্বদেশবাসীর কাছে পৌঁছে যাবে। উদ্দীপক কবিতাংশে ভাবের এমন সুসংহত পরিণতি লক্ষ করা যায় না। উদ্দীপকে স্বদেশকে ঘিরে ভালোলাগার যে অনুভূতির প্রকাশ ঘটেছে তাকে কবিতার প্রাথমিক প্রস্তাবনা বা ভাবের প্রবর্তনা বলেই ধরে নেওয়া যায়।
উত্তর ২ঃ
ক. বাংলা সাহিত্যে সনেটের প্রবর্তন করেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত।
খ. ১নং সৃজনশীল প্রশ্নের খ নং উত্তর দেখ।
গ.
জন্মভূমির প্রতি স্মৃতিকাতরতায় উদ্দীপকের সৌহার্দ্য এবং ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবি একই ধারায় প্রবাহিত।
‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবির অনুভূতি জন্মভূমির প্রতি ভালোবাসা গভীরভাবে ব্যক্ত করেছে। সে দূর পরবাসে বসে শৈশব-কৈশোরের স্মৃতি মনে করে কাতর হয়ে পড়ে। দূরে বসেও তিনি কপোতাক্ষ নদের কলকল ধ্বনি শুনতে পান। কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের হৃদয়ের কাতরতা ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার মধ্যে ব্যক্ত হয়েছে।
উদ্দীপকের সৌহার্দ্য ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবির মতোই অনুভূতি ব্যক্ত করেছে। সে সুদূর কানাডায় বসে কর্ণফুলীর স্মৃতি মনে করে কাতর হয়ে পড়ে। তার এই প্রাণের আকুতি মাইকেল মধুসূদন দত্তের কপোতাক্ষ নদের প্রতি ভালোবাসার সাথে সাদৃশ্যময় হয়ে উঠেছে। দূর পরবাসে বসে ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবি স্নেহভরে জন্মভূমিকে স্মরণ করেছেন। উদ্দীপকের সৌহার্দ্যরে ক্ষেত্রেও একই ঘটনার অবতারণা লক্ষণীয়। তাই বলা যায়, প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও জন্মভূমির প্রতি উদ্দীপকের সৌহার্দ্য এবং ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবির অনুভূতি এক।
ঘ.
উদ্দীপকে প্রকাশিত জন্মভূমির প্রতি ভালোবাসার ভাব ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার মূলভাবকে প্রতিফলিত করেছে।
‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত শৈশব-কৈশোরের স্মৃতিবিজড়িত নদীর কথা লিখেছেন। তিনি দূর পরবাসে বসে জন্মভূমির টানে হয়েছেন আবেগাপ্লুত। তাঁর এই জন্মভূমিপ্রীতি প্রকাশিত হয়েছে কবিতার মাধ্যমে। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার মধ্যে কবি দেশপ্রেম প্রকাশ করেছেন সরলভাবে।
উদ্দীপকে দেশের জন্য প্রবাসী সৌহার্দ্যরে হৃদয়ের আকুতি প্রকাশিত হয়েছে। দূর দেশে বসেও যে সে জন্মভূমিকে ভোলেনি তা উদ্দীপকটির মূলভাবে প্রকাশ পেয়েছে। সুদূর কানাডাতে বসেও শৈশবের স্মৃতিময় কর্ণফুলীর তীরের কথা তার মনে পড়েছে। ছায়াঘেরা নন্দীপুর তাকে আবেগতাড়িত করেছে। মূলত দূর পরবাসে বসেও জন্মভূমিকে মনে করে উদ্দীপকের সৌহার্দ্যরে মাঝে গভীর দেশপ্রেমেরই প্রকাশ ঘটেছে।
জন্মভূমির প্রতি ভালোবাসা প্রকাশে ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবি যেমন আবেগাপ্লুত হয়েছেন উদ্দীপকের সৌহার্দ্যও তাই। তাছাড়া কবির মনে হয়েছে ‘কপোতাক্ষ নদ’ যেন তাকে মায়ের স্নেহডোরে বেঁধেছে। তাই তিনি কোনোমতেই তাকে ভুলতে পারছেন না। উদ্দীপক এবং ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতা উভয়ই জন্মভূমির প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করে। কবিতায় কবির দেশপ্রেমই হলো মূলকথা। অন্যদিকে উদ্দীপকেও দেশপ্রেমের দিকই বর্ণিত হয়েছে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকে যে ভাবটি প্রতিফলিত হয়েছে তা যেন ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার মূলভাব।
উত্তর ৩ঃ
ক. শৈশবে কবি মধুসূদন দত্ত কপােতাক্ষ নদের তীরে বড় হয়েছেন।
খ. কপােতাক্ষ নদকে মায়ের সঙ্গে তুলনা করার কারণ- মাতৃদুগ্ধ যেমন শিশুকে বাঁচিয়ে রাখে তেমনি কপােতাক্ষ নদের জলও কবির তৃষ্ণা দূর করেছে, এ নদের দানে ও ঋণে কবি আবদ্ধ এবং এ নদ তার শৈশবকে বাঁচিয়ে রেখেছে।
শৈশব-কৈশােরের দিনগুলােতে কপােতাক্ষ নদই ছিল কবির আশ্রয়। তৃষ্ণা পেলে এ নদের জলেই কবি স্নেহের তৃষ্ণা মেটাতেন। কপােতাক্ষের জল ছাড়া অন্য কোনাে নদ-নদীর জল কবির স্নেহের তৃষ্ণা মেটাতে পারেনি। এ নদ শুধু একটি জলাধার নয়, কবির শৈশব-কৈশােরের সাথিও। কবি কপােতাক্ষকে তাই মায়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
গ.
উদ্দীপকে ‘কপােতাক্ষ নদ’ কবিতার স্বদেশের বৈচিত্র্যময় দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে।
আপন রূপ-রূস-গন্ধ নিয়ে প্রকৃতি চির প্রবহমান। প্রকৃতির সৌন্দর্য কখনাে শেষ হয় না। স্বদেশ প্রকৃতির বিচিত্র সৌন্দর্য মানুষকে বিমােহিত করে। মানুষ নিজের দেশের বনবনানী, মাঠ-ঘাট, গাছপালা, নদী-নালা, পশু-পাখির রূপবৈচিত্র্য ভুলতে পারে না। কারণ সেসবের সঙ্গে তার আনন্দ-বেদনার নানা স্মৃতি জড়িয়ে আছে।
উদ্দীপকে বাংলাদেশের রূপবৈচিত্র্যের কথা বলা হয়েছে। এদেশের উদার আকাশ, সূর্য, নদী, গাছপালা, পাহাড়, সমুদ্র, আর সব দেশের মতাে হলেও সেগুলাে যে বৈচিত্র্যময় ও স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে পরিপূর্ণ তা তুলে ধরা হয়েছে। পূর্ব বাংলার রূপবৈচিত্র্যের সঙ্গে এখানকার মানুষের গভীর সম্পর্ক ও বৈশিষ্ট্যের দিকটিও এতে প্রতিফলিত হয়েছে। উদ্দীপকের এই বিষয়টি ‘কপােতাক্ষ নদ’ কবিতার সৌন্দর্যচেতনার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। কবি আলােচ্য কবিতায় তার শৈশবের নদটির কথা বলতে গিয়ে বাংলার রূপবৈচিত্র্যকে নির্দেশ করেছেন, যা তাঁর সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে। কপােতাক্ষের জলধারা, সবুজ বাংলার বুক চিরে বয়ে চলা উদ্দীপকের রূপবৈচিত্র্যের সঙ্গে অভিন্ন।
ঘ.
“স্বদেশের প্রতি অনুরাগ প্রকাশের বিচারে উদ্দীপকের মূলভাব এবং ‘কপােতাক্ষ নদ’ কবিতার মূলভাব একসূত্রে গাঁথা।”- মন্তব্যটি সম্পর্কে আমি একমত।
বাংলাদেশের সঙ্গে নদীর সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। এদেশের প্রকৃতির সঙ্গে নদ-নদী অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। ফলে স্বদেশের কথা, মাতৃভূমির কথা বলতে গিয়ে কবি-সাহিত্যিকরা নদ-নদীর প্রসঙ্গ টানেন। সেসবের সঙ্গে তাদের জীবনের সম্পৃক্ততার দিক তুলে ধরেন। তাতে স্বদেশ প্রকৃতির রূপবৈচিত্র্য ধরা পড়ে।
উদ্দীপকে পূর্ব বাংলা তথা বাংলাদেশের সবুজ প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদান উল্লেখ করে এর বৈচিত্র্য তুলে ধরা হয়েছে। এই বিষয়টি ‘কপােতাক্ষ নদ’ কবিতার কবির প্রিয় কপােতাক্ষ নদের শােভা, এ নদের জলের কুলকুল ধ্বনি, এর বয়ে চলার সৌন্দর্যের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। কবিতায় কবির ব্যক্তিহৃদয়ের যে আর্তি প্রকাশ পেয়েছে, তার সঙ্গে এর মিল না থাকলেও স্বদেশ প্রকৃতির যে রূপ কবিকে আকৃষ্ট করেছে, তার সঙ্গে উদ্দীপকটির যথেষ্ট মিল রয়েছে। কারণ কবির স্বদেশ এবং উদ্দীপকের পূর্ব বাংলা এক ও অভিন্ন সৌন্দর্যের প্রতীক।
আলােচ্য কবিতায় কবি প্রবাসজীবনে তার শৈশবের নদীটিকে স্মরণ করেছেন। কবি কপােতাক্ষের সঙ্গে তার গভীর বন্ধন ও ভালােবাসার কথা বলেছেন। এতে নদীমাতৃক বাংলাদেশের রূপবৈচিত্র্যের প্রতি কবির মুগ্ধতাও প্রকাশ পেয়েছে। সেই দিক বিবেচনায় উদ্দীপকের বিষয়টি ‘কপােতাক্ষ নদ’ কবিতার সৌন্দর্যচেতনার সঙ্গে একসূত্রে গাঁথা পড়েছে।
কপোতাক্ষ নদ কবিতা
সতত, হে নদ, তুমি পড় মোর মনে !
সতত তোমার কথা ভাবি এ বিরলে;
যেমতি লোক নিশার স্বপনে
শোনে মায়া-মন্ত্রধক্ষনি) তব কলকলে
জুড়াই এ কান আমি ভ্রান্তির ছলনে !
বহু দেশে দেখিয়াছি বহু নদ-দলে,
কিন্তু এ স্নেহের তৃষ্ণা মিটে কার জলে ?
দুগ্ধ-স্রোতোরূপী তুমি জন্মভূমি-স্তনে।
সম্পূর্ণ পড়ুন
শেষ কথা
আমাদের সাথে শেষ পর্যন্ত থাকার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি এই পোস্ট টি আপনাদের অনেক ভাললেগেছে। এই পোস্ট টি ভালোলেগে থাকলে শেয়ার করতে পারেন। আশা করছি এই পোস্ট থেকে কপোতাক্ষ নদ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর পিডিএফ সংগ্রহ করতে পেরেছেন। এই রকম আরও ভালো ভালো পোস্ট পেতে আমাদের সাথেই থাকবেন। আজকের মতো এখানেই শেষ। ভালোথাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
আরও দেখুনঃ
কপোতাক্ষ নদ কবিতা- মাইকেল মধুসূদন দত্ত বাংলা পদ্য
বঙ্গবাণী কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর Pdf File সংগ্রহ
বঙ্গবাণী কবিতার জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর
বাংলা গল্প রক্তে ভেজা একুশ-সেলিনা হোসেন। বাংলা ১ম পত্র এস এস সি
বনমানুষ আবু ইসহাক বাংলা গল্প নবম-দশম শ্রেণি- পিডিএফ