অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম ২০২২ ।মোবাইল দিয়ে কাটুন টিকেট

ট্রেনের টিকিট

ট্রেনের টিকিট কাটার জন্য আমাদেরকে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। অনেকে ভোগান্তি পোহাতে কাঙ্ক্ষিত সেই ট্রেনের টিকিট পান না। বিশেষ করে কোন গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলোতে বাড়ি আসার ক্ষেত্রে ট্রেনের টিকিট একেবারেই পাওয়া যায় না। যার কারণে অনেকে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটতে চাই।কিন্তু অনেকেই অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কিভাবে কাটতে হয় সেই সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখেন না। আজকের আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমি আপনাদেরকে জানাবো কিভাবে খুব সহজে অনলাইনের মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট কাটবেন বা অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটার নিয়ম সম্পর্কে।তাহলে চলুন দেরী না করে জেনে নেওয়া যাকঃ-

 

অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটার নিয়ম 

 

বর্তমানে আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোনটি ব্যবহার করেই অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটতে পারবেন। কিভাবে অনলাইনের মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট কাটবেন সেটা সম্পর্কে আমি নিচে ধাপে ধাপে আলোচনা করবোঃ-

 

ধাপ ১ঃসর্বপ্রথম আপনাদের ব্রাউজার থেকে www.eticket.railway.gov.bd এই ওয়েবসাইটটিতে চলে যেতে হবে।ওয়েবসাইটটিতে আসার পর আপনারা এরকম একটি ছবি দেখতে পারবেন।

ট্রেনের টিকিট

সেখানে যদি আপনার রেজিস্ট্রেশন করা না থাকে তাহলে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এই জন্য আপনাদেরকে উপরে থ্রি ডট বাটনে ক্লিক করতে হবে এবং সেখানে গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে। 

 

ধাপ ২ঃরেজিস্ট্রেশন করা হয়ে গেলে এবার লগইন পৃষ্ঠায় যেতে হবে এবং সেখানে ব্যবহারকারীর নাম ইমেইল এবং পাসওয়ার্ড দিতে হবে। 

 

ধাপ ৩ঃআপনি যদি টিকিট কিনতে চান তাহলে এবার আপনাকে ড্রপডাউন মেনু থেকে ক্রয় সিলেক্ট করতে হবে। তারপরে স্টেশন থেকে দূরত্ব, তারিখ , ট্রেনের ক্লাস, এবং প্রাপ্ত বয়স্ক এবং বাচ্চাদের আসন সংখ্যা লিখতে হবে। 

ট্রেনের টিকিট

ধাপ ৪ঃForm ঘরটিতে আপনার যাত্রা শুরুর স্টেশনটির নাম ইংরেজিতে লিখতে হবে। কোন স্টেশনের নাম যদি দুই অক্ষরের হয়ে থাকে তাহলে তার মধ্যে আন্ডারস্কোর _ ব্যবহার করতে হবে। 

 

তারপরে to ঘরটিতে আপনার গন্তব্য স্টেশনের নাম লিখুন।তারপরে ডেট অফ ক্যালেন্ডার বাটনে ক্লিক করতে হবে। এখানে ক্লিক করে আপনি যে তারিখে ভ্রমণ করতে চান সেটা উল্লেখ করতে হবে। তারপরে আপনি কোন ধরনের সিটে ভ্রমন করতে চান সেটা উল্লেখ করতে হবে। তারপরে Find ticket অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে। 

 

ধাপ ৫ঃআপনাকে এবার ট্রেন সার্চ করতে হবে। অর্থাৎ আপনি কোন ট্রেনের মাধ্যমে ভ্রমণ করতে চান এবং যে গন্তব্যে ভ্রমণ করতে চান সেই গন্তব্যের উদ্দেশ্যে কোন ট্রেন গুলো যায় সেটা সার্চ করতে হবে। 

ট্রেনের টিকিট

ধাপ ৬ঃএবার আপনাদেরকে ফিল্টার নির্বাচন করতে হবে। এখানে সাধারণত দুইটি বিষয়কে ফিল্ডার হিসেবে ধরা হয়েছে।Seat type and departure time। অর্থাৎ সিটের ধরন এবং যাত্রার সময়। 

 

আপনি যখন ট্রেনের টিকিটের জন্য সার্চ করবেন তখন প্রথমেই সিট এর ধরন নির্ধারণ করে নিতে হবে। অর্থাৎ ট্রেনে অনেক ধরনের সিট আছে এখান থেকে আপনাকে সীট সিলেক্ট করে নিতে হবে। 

 

আর আপনি যদি কোন নির্দিষ্ট সময়ে যাত্রা করতে চান তাহলে আরেকটি ফিল্টার রয়েছে। ওই অংশটিতে সকল-ট্রেনের-সময়সূচি কে মোট চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। তাই আপনি চাইলে এখান থেকে যেকোন একটি ভাগ নির্ধারণ করে নিতে পারেন।

 

ধাপ ৭ঃট্রেনের তালিকায় প্রতিটি ট্রেনের নামের পাশেই ছাড়ার সময় উল্লেখ রয়েছে।এখান থেকে আপনাকে সিলেক্ট করতে হবে কোন ট্রেনটি করে আপনি যাত্রা করতে চান। তাছাড়া এখান থেকে আপনি দেখতে পারবেন আপনি যে ট্রেনে ভ্রমণ করতে চান সেই ট্রেনটিতে আর কয়টি সিট খালি রয়েছে। পর্যাপ্ত সিট যদি খালি থেকে থাকে তাহলে সবুজ রঙ্গের view seats বাটনে ক্লিক করতে হবে।

ট্রেনের টিকিট

ক্লিক করার সাথে সাথেই এরকম একটি ইন্টারফেস খুলে যাবে ।

 

ধাপ ৮ঃএবার আপনাকে সীট নির্ধারণ করতে হবে।এই ইন্টারফেসটির বাম পাশে ট্রেনের বগির একটি মডেল দেখানো হয়েছে। 

ট্রেনের টিকিট

আপনারা এই চিত্রে ঢাকা -চিটাগাং রুটের মহানগর প্রভাতী ট্রেনটির মডেল দেখতে পাচ্ছেন। আপনি যদি বগি পরিবর্তন করতে চান তাহলে লেখার উপর ঢ ক্লিক করলেই ড্রপডাউন মেনু খুলে যাবে । আর এই ড্রপডাউন মেনু থেকে চাইলে পছন্দমত বগি সিলেক্ট করে নেওয়া যাবে। 

 

ড্রপ ডাউন মেনু থেকে পছন্দমতো বগি নির্ধারণ করে ওই বগীর মডেল থেকে এবার সিট নির্ধারণ করে ফেলতে হবে। সিট নির্ধারণ করার জন্য সেট গুলোর উপর ক্লিক করতে হবে। যেসব সিটগুলো আপনারা ইতিমধ্যে ছাই রঙ্গের দেখতে পাচ্ছেন সেগুলো সিলেক্ট করা যাবে না। কারণ এই সকল সিট গুলো সব বিক্রি হয়ে গেছে।

 

সাদা সিট গুলোর মধ্য থেকে আপনাকে সীট সিলেক্ট করতে হবে। আপনি সিলেক্ট করলেই সিট গুলো সব সবুজ রঙ্গের হয়ে যাবে। সিট সবুজ রঙের হয়ে গেলে বাম পাশে ট্রেনের টিকিটের শ্রেণি, সিট সংখ্যা এবং ভাড়ার পরিমাণ দেখতে পারবেন। সবকিছু দেখে নিয়ে আপনি continue purchase বাটনে ক্লিক করবেন। 

 

ধাপ ৯ঃএই ধাপটিতে আপনাদেরকে যাত্রী তথ্য প্রদান করতে হবে। যখন আপনি অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটবেন তখন সংক্রিয়ভাবে সেটা আপনার নামে ইস্যু করা থাকবে। আর আপনি যদি এই ক্ষেত্রে একাধিক টিকিট কেটে থাকেন তাহলে অন্য যাত্রীদের তথ্য আপনাকে আলাদা ভাবে পূরণ করতে হবে। 

 

তাদের পূর্ণ নাম এবং তারা প্রাপ্তবয়স্ক কিংবা শিশু সেটা সেখানে উল্লেখ করতে হবে। passenger type এ ক্লিক করলে ড্রপডাউন মেনুতে আপনারা এই অপশনটি পেয়ে যাবেন। বাংলাদেশ রেলওয়ে ৩ থেকে ১২ বছর বয়সী বাচ্চাদের শিশু হিসেবে গণনা করে। তিন বছরের নিচে যে সকল শিশু রয়েছে তাদেরকে ট্রেনে ভ্রমণের জন্য কোন ধরনের ভাড়া দরকার হবে না।

ট্রেনের টিকিট

এবার এই সকল তথ্য গুলো পূরণ করার পর একাউন্ট খোলার সময় আপনি যে ইমেইল এবং মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করেছিলেন সেটা আপনার সাথে যোগাযোগের জন্য ব্যবহার হবে।

 

ধাপ ১০ঃএবার আপনাকে ট্রেনের ভাড়া পরিশোধ করতে হবে। যারা অনলাইনের মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট কিনবেন তারা চাইলে অনলাইনের মাধ্যমে ভাড়া পরিশোধ করতে পারবেন। অনলাইনে ট্রেনের টিকিট এর ভাড়া পরিশোধ করতে পেজের নিচের দিকে স্ক্রল করুন।

ট্রেনের টিকিট

এখান থেকে পেমেন্ট ডিটেলস সেকশনে গিয়ে আপনারা মোবাইল ব্যাংকিং এবং ডেবিট কার্ডের সাহায্যে ভাড়া পরিশোধ করতে পারবেন। যারা মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে ভাড়া পরিশোধ করতে চান তারা শুধু বিকাশ ব্যবহার করতে পারবেন। 

 

ধাপ ১১ঃঅনলাইনে ভাড়া পরিশোধ করা হয়ে গেলে এবার আপনাকে টিকিট সংগ্রহ করতে হবে। যারা অনলাইনের মাধ্যমে টিকিট কেটে থাকেন তাদের ভাড়া পরিশোধের 30 মিনিটের মধ্যে তাদের নামে টিকিট ইস্যু হয়ে যায়। 

 

আর এই টিকিট আপনারা সরাসরি ওয়েবসাইটের purchase history ট্যাপ থেকে সংগ্রহ করে নিতে পারবেন। তাছাড়া আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইলে টিকিট ইমেইল করে দেওয়া হবে।তাই এখান থেকে অথবা purchase history থেকে আপনারা টিকিট টি সংগ্রহ করে নিতে পারেন । 

 

ধাপ ১২:আপনি যখন টিকিটের পিডিএফ পেয়ে যাবেন তখনই টিকিট ক্রয়ের  মূল প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে। এখান থেকে আপনি টিকিটটি সঠিকভাবে আপনার নামে ইস্যু হয়েছে কিনা সেটা দেখে নিতে পারবেন। এই জন্য আপনাদেরকে ওয়েবসাইটের ভেরিফাই টিকিট ট্যাবে চলে যেতে হবে। তারপরে আপনি যে মোবাইল নাম্বারটি সাহায্যে টিকিট কেটেছেন তার পিএনআর অথবা টিকিট নাম্বার প্রবেশ করাতে হবে। তাহলেই খুব সহজে টিকিটের তথ্যাদি পেয়ে যাবেন। 

 

আমাদের শেষ কথা 

 

আশাকরি আমাদের আজকের আর্টিকেলটি যারা পড়েছেন অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কিভাবে কাটবেন সেই সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন। তার পরেও যদি কোন বিষয় সম্পর্কে বুঝতে কোন ধরনের অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে আমাদেরকে সরাসরি কমেন্ট করে জানিয়ে দিতে পারেন। আপনার প্রশ্নটির উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *