বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ছোটদের কবিতা এবং জাতীয় শোক দিবসের কবিতা আবৃতি

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ছোটদের কবিতা

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ছোটদের কবিতা আজকের পোস্টে দেওয়া আছে। আজ ১৫ই আগস্ট জাতীয়  শোক দিবস। এই দিনটি সম্পূর্ণ বঙ্গবন্ধু কে ঘিরে অনুষ্ঠিত করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিতে এই দিন টিকে স্মরণীয় করা রাখার জন্য বাংলাদেশে শোক পালন করা হয়। সেই সাথে কিছু  আনন্দ পুর্নময় কিছু অনুষ্ঠান পালন করা হয় ছোটদের জন্য। ১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে সারা বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে রচনা প্রতিযোগিতা, কবিতা আবৃতি ও ছবি আকা নিয়ে প্রতিযোগিতা করা হয়। এজন্য অনেকে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ছোটদের কবিতা আবৃতি করে।

আবার অনেকে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে  জাতীয় শোক দিবসের কবিতা গুলো অনুসন্ধান করে। তাই আজকের এই পোস্টে আপনাদের জন্য সেরা কিছু শোক দিবসের কবিটা দিয়েছি। আপনারা যারা যারা  জাতীয় শোক দিবসের বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে   কবিতা  আবৃতি করতে চান তারা এই কবিতা গুলো দেখুন। এই কবিতা গুলো আপনি প্রতিযোগিতায় আবৃতি করতে পারবেন। নিচের দিকে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে কয়েক টি কবিতা ও রচনা দেওয়া আছে। তো যাদের প্রয়োজন তারা এই পোস্ট থেকে সংগ্রহ করেনিন অথবা কবিতা গুলো দেখেনিন।

 ১৫ আগস্ট কি?

প্রথমে আপনাদের কে ১৫ই আগস্ট সম্পর্কে বলি। অনেকেই জানে না যে ১৫ই আগস্ট কি? বা এটি কেন পালন করা হয়। ১৫ই আগস্ট হচ্ছে জাতীয় শোক দিবস। এই দিন টি বাংলালি জাতির এক মর্মাহত দিন। এই দিনটির জন্য কোনো বাঙ্গালি জাতি কোনো দিন অপেক্ষা করেনি। বঙ্গবন্ধু বাঙ্গালি জাতির জনক। তার নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ আজ স্বাধীন হয়েছে। ১৯৭৫ সালের আগস্ট ১৫ আগস্ট ভোরে নৃশংসভাবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা  করা হয়। সেদিন তার পরিবারের ১৮ জনকে এই পৃথীবি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এই দিনে মূলত বঙ্গবন্ধু কে রাজাকার বাহিনী তার পরিবার সহ তাকে মেরে ফেলে। যার কারণে ১৫ই আগস্ট কে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ছোটদের কবিতা

অনেকে জাতীয় শোক দিবসে কবিতা আবৃতি করতে চাচ্ছেন। তো তাহলে আপনারা কোথা থেকে শোক দিবসের কবিতা গুলো অনুশীলন করবেন? তাই আমরা আজকের এই পোস্টে আপনাদের জন্য বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ছোটদের কবিতা, বঙ্গবন্ধু কে নিয়ে শ্রেষ্ঠ কবিতা ও জাতিয় শোক দিবসের সেরা কবিতা গুলো নিয়ে এসেছি। তাই আপনারা যারা যারা কবিতা আবৃতি গুলো পেতে চান তারা নিচে থেকে দেখেনিন।

পনেরো আগস্ট
সৈয়দ শামসুল হক

.এখনও রক্তের রঙ ভোরের আকাশে।
পৃথিবীও বিশাল পাখায় গাঢ় রক্ত মেখে
কবে থেকে ভাসছে বাতাসে।
অপেক্ষায়- শব্দের- শব্দেই হবে সে মুখর- আরো একবার

জয় বাংলা ধ্বনি লয়ে যখন সূর্যের আলো তার
পাখায় পড়বে এসে
ইতিহাস থেকে আরো কিছুক্ষণ পরে।
মানুষ তো ভয় পায় বাক্হীন মৃত্যুকেই,

তাই ওঠে নড়ে
থেকে থেকে গাছের সবুজ ডাল পাতার ভেতরে।
পাতাগুলো হাওয়া পায়,
শব্দ করে ওঠে আর খাতার পাতাও

ধরে ওঠে অস্থিরতা- কখন সে পাবে স্বর-
জয় বাংলা ঝড়- তাকে দাও
জন্মনাভি! বোঁটা থেকে দ্যাখো আজও
অভিভূত রক্ত যায় ঝরে

বাঙালির কলমের নিবের ভেতরে।
স্তব্ধ নয় ইতিহাস! বাংলাও সুদূরগামী
তেরোশত নদীর ওপরে ওই আজও তো নৌকোয়
রক্তমাখা জনকের উত্থান বিস্ময়!

মুজিব
মজনু মিয়া

তুমি ছিলে তুমি রবে
শেখ মুজিবুর রহমান,
তোমার কৃতি তোমার স্মৃতি
চিরদিনি বহমান।

আগস্ট এলে শোকের দু’চোখ
ব্যথার জলে যায় ভরে,
তোমার গড়া বাংলাদেশে
শোক পতাকায় জল ধরে।

অমর অবিস্মরণীয়
জাতীয় নেতা তুমি,
বিশ্ব মাঝে উজ্জ্বল তুমি
উজ্জ্বল এই জন্মভূমি।

বাঙালির হয়েছে জয়
মুস্তাফিজুর রহমান

বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের বুদ্ধিদীপ্ত ভাষণে,
স্বাধীনতার সাধ জেগেছে বাঙালি প্রাণে,
সমগ্র বাঙালির একই ভাবনা।
কোনো অশুভকে পরোয়া করি না।

হিংস্র ঘাতকের থাবায় ২৫ মার্চ কালরাতে,
নির্মম ধ্বংসযজ্ঞ ঘটেছে বাঙালির ভূমিতে।
রক্তের বন্যায় এ দেশটাকে নিশ্চিহ্ন করতে,
ঘাতকেরা আঘাত হেনেছে দিবা-নিশিতে।

তারপরও বাঙালির স্বাধীনতার সাধ,
বাড়িয়েছে মনোবল ভেঙেছে ঘাতকের বাঁধ।
দেশপ্রেমের আদর্শ আর মানবিকতা,
বাঙালি হৃদয়ে দিয়েছে মুক্তির বার্তা।

দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের প্রতি ক্ষণে,
নানা শ্রেণি পেশার বাঙালির অংশগ্রহণে।
৩০ লক্ষ শহিদ আর ২ লক্ষ ইজ্জতের বিনিময়,
অবশেষে বীর বাঙালির হয়েছে জয়।

 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মরণে
অন্নদাশঙ্কর রায়

নরহত্যা মহাপাপ, তার চেয়ে পাপ আরো বড়ো
করে যদি যারা তাঁর পুত্রসম বিশ্বাসভাজন
জাতির জনক যিনি অতর্কিত তাঁরেই নিধন।
নিধন সবংশে হলে সেই পাপ আরো গুরুতর,

সারাদেশ ভাগী হয় পিতৃঘাতী সে ঘোর পাপের
যদি দেয় সাধুবাদ, যদি করে অপরাধ ক্ষমা।
কর্মফল দিনে দিনে বর্ষে বর্ষে হয় এর জমা
একদা বর্ষণ বজ্ররূপে সে অভিশাপের।

রক্ত ডেকে আনে রক্ত, হানাহানি হয়ে যায় রীত।
পাশবিক শক্তি দিয়ে রোধ করা মিথ্যা মরীচিকা।
পাপ দিয়ে শুরু যার নিজেই সে নিত্য বিভীষিকা।
ছিন্নমস্তা দেবী যেন পান করে আপন শোণিত।

আমি একজন মুজিব
চন্দন পাল

কিচিরমিচির শব্দে পাখি ডাকত
ঘুম ভাঙত রাতের শেষে
সূর্যের কিরণে জেগে উঠতে
তোমার প্রিয় বাংলাদেশে।

সফলতা কী, বিফলতা কী
নাই বা বুঝলে তুমি
তোমার বিনিময়ে আমরা পেয়েছি
তোমার প্রিয় জন্মভূমি।

নীতি আর আদর্শের স্বার্থে তুমি
নিজেকে করেছ ত্যাগ
তোমাকে মেরে আমরা পেয়েছি
সোনার সিংহ ভাগ।

তোমার দেশ আমাদের দিয়েছে
স্বীকৃতি আর পুরস্কার
তোমার ভাগে জুটল শুধু
মিথ্যা অপবাদের বুলেট ভার।

কী দরকার ছিল স্বাধীনতার
ভালোই তো ছিলে তুমি
তোমার বিনিময়ে আমরা পেলাম
তোমার প্রিয় জন্মভূমি।

মহানগর বন্ধুসভার সদস্য
৪র্থ বর্ষ, ঢাকা কলেজ।

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে  জাতীয় শোক দিবসের কবিতা আবৃতি

জাতিয় শোক দিবস উপলক্ষ্য ১৫ই আগস্ট কবিতা আবরিত ও রচনা প্রতিযোগিতা হবে। এই প্রতিযোগিতায় উত্তীর্ণ পার্থিদের পুরস্কিত করা হবে। আপনি চাইলে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবেন। এজন্য আপনাকে ভালো একটি কবিতা আবৃতি করতে হবে। আপনি হয়তো ভালো কোনো কবিতা পারেন না। তো তাহলে কোনো সমস্যা নেই। আমরা এখানে আপনাদের জন্য জাতয় শোক দিবসের বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে কিছু কবিতা আবৃতি নয়ে এসেছি। আপনারা এই কবিতা গুলো প্রতিযোগিতায় আবৃতি করতে পারবেন। এই কবিতা গুলো পড়ার জন্য আপনাকে নিচের অংশ দেখতে হবে।

জানতে হলে তাকে
আশরাফুল আলম পিনটু

শেখ মুজিবকে জানতে হলে
জানতে হবে দেশকে
জানতে হবে শুরু থেকে শেষকে।

ছয় দফাকে জানতে হবে
জানতে হবে হামলাকে
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলাকে।

জানতে হবে তার স্বাধিকার
আন্দোলনের মর্মকে
জেল-জুলুমের আগলভাঙা কর্মকে।

বঙ্গবন্ধু উপাধী আর
জানতে হবে ভোটকে
সত্তর সালে পাকিয়েছিল ঘোঁট কে।

জানতে হবে সাত মার্চের
ঐতিহাসিক ভাষণকে
পাকিস্তানের স্বৈরাচারী শাসনকে।
পঁচিশে মার্চ জানতে হবে
স্বাধীনতার লড়াইকে
ভাঙল কারা পাকহানাদার বড়াইকে।

জানতে হবে মুক্তিযুদ্ধ
ডিসেম্বরের ষোলকে
এ বিজয়ে স্বজনহারা হলো কে।

শোকের দিনে
সুফিয়ান আহমদ চৌধুরী

শ্যামলের দেশে গায় পাখি
শোকে গায় গান,
ঘরে ঘরে বয় শোক বান
হাসি খুশি ম্লান।

ভাসে প্রিয় ছবি শোক দিনে
মনে পড়ে কী যে,
বঙ্গবন্ধু নেই শোকে দেশ
চোখ জলে ভিজে।

জালিমেরা কাড়ে সুখ সব
দুখে নামে কান্না,
ভালোবাসা নেয় কেড়ে আহা
কাড়ে মুক্তো পান্না।

কোটি কোটি প্রাণে গাঁথা আছে
ফুলে ফুলে বুঝি,
আগস্টের এই দিনে সবখানে
ভালোবাসা খুঁজি।

বঙ্গবন্ধু অন্তরতে
ঠাঁই চিরদিন খাঁটি,
ভেজা রক্তে তাঁর দেশ
বাঙালির ঘাঁটি।

বঙ্গবন্ধু
মারুফ আহম্মেদ

আমি ঘুরে দেখতে চাই ঐ বাংলা
যেথা ঘুমিয়ে আছে জাতির পিতা,
যার অমর কীর্তিতে ভেঙেছিল
আমার বাংলা মায়ের পরাধীনতা।

যার বজ্রকণ্ঠ সুর খুলে দিয়েছে বাংলা
মায়ের পায়ে বাঁধানো শিকল,
হঠাৎ ভয়ে মুখ লুকালে বিছিয়ে দেয়
মা গায়ের ছেঁড়া শাড়ির আঁচল।

যার একটা ইশারায় জোট বেঁধেছিল
পুরো বঙ্গের অসহায় সাধারণ,
যার চাওয়ায় মুক্তির সংগ্রাম ঢাল
যুক্তি কৌশলে জিতেছে মহারণ।

যার ত্যাগেই মুক্ত স্বাধীন বাংলা
রয়েছে এ ইতিহাসের রচনায় অমর,
অভাগা দরিদ্রের কষ্ট ধুয়ে মুছে পরশ
আনে সুখ নামের ছোট ভ্রমর।

সহে নেব না আর সব যন্ত্রণা ঘাতকের
আঘাত সুর ভেসে আসলে,
এই ইতিহাস দেব না আমি মুছে যেতে
কভু রাখব প্রাণে আগলে।

নয় সাধারণ কেউ উত্তাল মহাসাগরে
ঢেউ অপ্রতিরোধ্য দুর্বার,
নোয়ায়নি মাথা শত বিপদে নেই মৃত্যুর
ভয় নয় সে পাত্র হারবার।

শেষ কথা

১৫ই আগস্ট আমাদের প্রতেকের জীবনের একটি মর্মাহিত দিন। এই দিনে আমরা আমাদের এক মহান নেতাকে হারিয়েছি। যার হাত ধরে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। আশা করছি এই পোস্ট টি আপনাদের ভালোলেগেছে। এই পোস্ট টি আপনাদের বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করেদিতে পারেন। আশা করছি আপনারা সবাই আজকের পোস্ট থেকে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ছোটদের কবিতাএবং জাতীয় শোক দিবসের কবিতা  গুলো সংগ্রহ করতে পেরেছেন। এই রকম আরও পোস্ট পেতে আমাদের সাথেই থাকবেন। আমাদের সাথে শেষ পর্যন্ত থাকার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

See More:

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের কবিতা ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবিতা

ছোটদের বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচনা প্রতিযোগিতা ১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস