এসএসসি ২০২২ বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ৫ম সপ্তাহ

এসএসসি ২০২২ বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ৫ম সপ্তাহ

তারিখঃ

বরাবর,

প্রধান শিক্ষক

বিদ্যালয়ের নাম

বিষয়ঃ বিশ্বের কয়েকটি দেশের বড় ধরনের ভুমিকম্পের কারন, উৎস ও ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে তালিকা তৈরিপূর্বক বাংলাদেশে ভুমিকম্পে বিপুল ক্ষয়ক্ষতিতে নিজের করণীয় বিশ্লেষণ।

জনাব, বিনীত নিবেদন এই যে আপনার আদেশ নং ন স ম উ বি ৩৬৬-১, তারিখ-২৪-০৬-২০২১ অনুসারে উপরােক্ত বিষয়ের উপর প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করলাম।


সচুনাঃ

ভূমিকম্প একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। পৃথিবীর বহু দেশে এক বহু অঞ্চলে এই প্রবণতা লক্ষ করা যায়। সত্যতার বহু ধ্বংসলীলার কারণ হিসেবে ভূমিকম্পকে দায়ী করা হয়। ধারণা করা হয়, গত ৪,০০০ বছরে ভূমিকম্পের সলীলায় পৃথিবীর প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ লােক মারা গেছে। নানা প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় ভূপৃষ্ঠ পরিবর্তিত হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে, সূরে নিচের অংশে তেজস্ক্রিয় পদার্থগুলাে থেকে তাপ বিচ্ছুরিত হয়। এই তাপ সঞ্চিত হয়ে পৃথিবীর অভ্যন্তরে পরিচলন স্রোতের সৃষ্টি হয় এবং সেখানে প্রবল শক্তি উৎপন্ন হয়ে ভূত্বকের বিভিন্ন অংশে আলােড়ন ও পরিবর্তন সাধন কাছে।

অভ্যন্তরীণ শক্তি দ্বারা ভূত্বকের এই পরিবর্তন আকমিক প্রক্রিয়া ও ধীর প্রক্রিয়ায় অনুষ্ঠিত হয়। আকষিকতাবে পরিবর্তনকারী শক্কির মধ্যে ভূমিকম্প ও আশ্রয়শিরি প্রধান। কখনো কখনাে ভূপৃষ্ঠের কতক অশে হঠাৎ কোনো কারণে কেঁপে ওঠে। এরকম অত্যান্ত মৃদু থেকে প্রচণ্ড হয়ে থাকে, যা মাত্র কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী হয়। ভূপৃষ্ঠের এরূপ আকমিক ও ক্ষণস্থায়ী কম্পনকে ভুমিকম্প বলে। ভূতস্করের যে স্থানে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয় তাকে ভূমিকম্পের কেন্দ্র (Focs) বলে। কেন্দ্রের ঠিক সােজাসুজি উপরে ভূপৃষ্ঠের নাম উপকেন্দ্র (Epicenter) । কম্পনের বেশ উপকেন্দ্র হতে ধীরে ধীরে চরিদিকে কমে যায়।
৪টি দেশের ভূমিকম্পের কারন ও উৎস বর্ণনাঃ

ভালগিভিয়া, চিলিঃ

১৯৬০ সালে চিলির ভালগিভিয়া অঞ্চলে প্রায় ৯.৫ মাত্রার প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্প ঘাত হানে। পরবর্তীতে গবেষকরা জানান যে, এই ভূমিকম্পটির শক্তিমত্তা ছিল প্রায় ১৭৮ গিগাট্রন। ভূমিকম্পটি ভালদিভিয়া ছাড়াও পার্শ্ববর্তী হওযাই দ্বীপেও আঘাত হেনেছিল। প্রাথমিক ধাক্কাতেই প্রায় ৬ হাজার মানুষ মারা যাত্ৰ এ ভূমিকম্পে এবং ১ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ মাখিক ক্ষতি হয়। তবে ভূমিকম্প পরবর্তীতে আঘাতলাস্থ আরও আনক মানুষ মারা যায়।

সানসি, চীনঃ

চীনের শানসি প্রদেশের এ ভূমিকম্পটিকে বলা হয়, ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ভূমিকম্প। ১৫৫৬ সালের ২৩ জানুয়ারি চীনের শানসি প্রদেশকে কেন্দ্র করে এ ভূমিকম্পটি মােট ৯৭টি দেশে একযােগে অধ্যক্ত হােনছিল। বেশ কয়েকটি দেশের সমতল ভূমি প্রায় ২০ মিটার ডেবে গিয়েছিল। ৮.০ মাত্রার এই ভূমিকম্পটির শক্তিমত্তা এক গিগাট্রল হওয়া সত্ত্বেও এতে প্রায় সাড়ে ৮ লক্ষাধিক মানুষ মারা যায়। শানসি প্রদেশের মােট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশই এই ভূমিকম্পে মারা গিয়েছিল।

সুমাত্রা, ইন্দোনেশিয়াঃ

২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর ভারতীয় মহাসাগরে সৃষ্ট ১৯,১ থেকে ১৯.৩ মাত্রার ভূমিকম্পটি ৩২ গিগাট্রন শক্তি নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রায় আঘাত হানে। পার্শ্ববর্তী দেশ মালদ্বীণ এবং থাইল্যান্ডেও এই ভূমিকম্পের ধাক্কা লাগে। এ ঘটনায় ভ্রায় আড়াই লাখ মানুষ রাতারাতি মারা যায় এবং আনুমানিক ৭ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাপের স্কয়স্কৃতি হয়। তবে পরবর্তী সময়ে বিশ্লেষকরা জানান যে, ভূমিকম্পটি ৮ খােৰু ১০ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী ছিল।


জ্বলাম্বা উপদ্বীপ ভূমিকম্পঃ

২০২০ সালে জুলাই মানে শক্তিশালী এক ভূমিকম্পে কেঁপেছে। যুক্তরাষ্ট্রের দূরবর্তী। পশ্চিম আলাস্কা উপদ্বীন এলাকা। ৭.৮ মাত্রার এই ভূমিকম্পের পর সেখানে সুনামি সতর্কতা সংকেত জারি করা হয়েছে কলে জানিযােদ্ধ বার্তা সংস্থা, এএফপি। যুক্তরাষ্ট্রের জিওলজিক্যাল সার্ভে থেকে জানানাে হয়েছে, আন্তর্জাতিক মান সময় বুধবার সকাল ৬টা ১২ মিনিটে এই ভূমিকম্প হয়। এর অবদান। আলাস্কার অ্যাঙ্কোরেজ এলাকা থেকে ৫০০ মাইল দক্ষিণ পশ্চিম এবং দূরবর্তী পেৱিভিল এলাকা থেকে ৬০ মাইল দুদ্ধিণ ও দুদ্ধিণপূর্বাঞ্চলে। ভূমিকম্পের পর প্রশান্ত মহাসাগরীয় সুনামি সতর্ক কেন্দ্র থেকে পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে, “ভূমিকম্মটির মাত্রায় মানে হচ্ছে এর।

এপিসেন্টারের ৩০০ কিলােমিটারের মধ্যে উপকূলে সুনামি ঢেউযের সম্ভাবনা আছে। ”আলাস্কাল উপদ্বীপ এবং দক্ষিণ আলাস্কা এলাকায় সুনামি সতর্কতা দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ভূমিকম্পটি কয়েকশত মাইল দূর থেকেও টের পাওয়া গেচ্ছে বলে জানিয়েছে এএফপি। ভূমিকম্পের এপিসেন্টারের ৪০০ কিলােমিটার দূরের (হামার নামে এক বাসিন্দা বালন, “বিছানা ও জানালার পর্দা আনেকক্ষণ ধরেই দুলছিল। মনে হয়েছে অনেক লম্বা ঝাঁকুনি। এই অঞ্চলে ১৯৬৪ সালে ১২ মাত্রার ভয়াবহ এক ভূমিকম্প হযেছিল, যা এখন পর্যন্ত রেকর্ড মাত্রার। এর ফলে সৃষ্ট সুনামিতে ২৫০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েঘিল।


বাংলাদেশের ভূ-কম্পন এলাকাভিত্তিক মানচিত্রঃ

ভূ-কম্পন এলাকাভিত্তিক মানচিত্রে দেখা যায়, বাংলাদেশের ৪৩ % এলাকা ভূমিকম্পের উচ্চমাত্রার ঝুঁকিতে (জোন-১: প্রলয়ঙ্করী), ৪১ % এলাকা মধ্যম (জোন -২: বিপজ্জনক) এবং ১৬ % এলাকা নিম্ন ঝুঁকিতে (জোন -৩: লঘু রয়েছে। যেখানে ১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দের ভূ-কম্পন মানচিত্রে ২৬ % প্রলয়ঙ্করী , ৩৮ % বিপজ্জনক এবং ৩৬ % লঘু ঝুঁকিতে ছিলাে।


নতুন মানচিত্র অনুযায়ী, মাত্রাভেদে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার অবস্থান নিম্নরূপঃ

জোন -১ প্রলয়ঙ্করী: পঞ্চগড়, রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম , জামালপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা , সুনামগঞ্জ, কিশােরগঞ্জ, মৌলভীবাজার , সিলেট, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সম্পূর্ণ অংশ, এবং ঠাকুরগাঁও, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজারের অংশবিশেষ। জোন-১ এ অবস্থিত বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চল ভূমিকম্পজনিত কারণে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে। জোন -২ বিপজ্জনক: রাজশাহী, নাটোর, মাগুরা, মেহেরপুর, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী এবং ঢাকা। জোন-২ এ অবস্থিত রাজশাহী জেলা, ভূতাত্ত্বিকভাবে সক্রীয় ভূমিকম্প এলাকায় অবস্থিত এবং তাই ১৮৯৭ খ্রিষ্টাব্দের ভূমিকম্পে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। জোন -৩ লঘু: বরিশাল, পটুয়াখালী, খুলনা, যশাের, কটিয়া নড়াইল সাতক্ষীরা বরগুনা মেহেরপুর ও সব দ্বিপচর।

সেচ্ছাসেবক হিসেবে ভূমিকম্পে আমার করনীয় গুলাে হলােঃ


১. ভূমিকম্পের সময় সাধারণত ক্ষতিগ্রস্ত হয় উঁচু ভবন। তাই ভূমিকম্প শেষ হওয়ার পর একজন স্বেচ্ছাসেবক অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত ভবন থেকে ধীর-স্থির ও শৃঙ্খলা বদ্ধ ভাবে সকল মানুষকে বের করে আনবে।
২. বিদ্যুৎ-গ্যাস টেলিফোন লাইনের কোনাে সমস্যা হয়েছে কিনা অথবা কোন সমস্যা দেখা দিলে প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৩.সরকারি সংস্থাগুলাে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সহযােগিতা করার জন্য তাদেরকে যােগাযােগ করা লাগবে।
৪. একজন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে আপনাকে অবশ্যই অস্থায়ী আশ্রয় সালে ক্ষতিগ্রস্ত লােকদের নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে এবং যােগাযােগ ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা সার্বিক সহযােগিতা করতে হবে।
৫. ভূমিকম্প বিষয়ে সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান। পুরাে পরিস্থিতি থাকা আবশ্যক সে জন্য সম্ভাব্য মনগ্রম পরবর্তী সময়ে সঠিক ভাবে নিজেকে নিয়ােজিত করতে হবে এবং প্রয়ােজনীয় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে)
৬. ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধার ও ত্রাণ কর্মসূচি নিশ্চিতকরণ করতে হবে।
৭. উদ্ধার কর্মসূচির অভাবে অসংখ্য প্রাণহানি ঘটে থাকে তাই ভূমিকম্প পরবর্তী সময়ে সর্বপ্রথম দক্ষ প্রশিক্ষক স্বেচ্ছাসেবকদের উদ্ধার কাজে মনােনিবেশ করতে হবে।
৮. পরবর্তী সময়ে তাদের সুষ্ঠু ও সাবলীলভাবে সকলের কাছে ত্রাণ বিতরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৯. পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
১০. রক্ত দান করা বা আহতদের জন্য রক্ত জোগাড়

প্রতিবেদকের নাম ও ঠিকানাঃ


প্রতিবেদন তৈরির তারিখ : ১৬ জুলাই, ২০২১
প্রতিবেদন তৈরির সময় : বিকাল ৪ টা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *