এসএসসি ২০২১ হিসাব বিজ্ঞান এ্যাসাইনমেন্ট সমাধান ৮ম সপ্তাহ
( ক ) খতিয়ানের ধারনাসহ বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে গুরুত্ব ব্যাখাকরন
খতিয়ান কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন প্রকৃতির লেনদেনসমূহকে জাবেদা হতে স্থানান্তরিত করে সমজাতীয়তার ভিত্তিতে শ্রেণীবিন্যাসপূর্বক তাকে পৃথক পৃথক শিরােনামে সংক্ষিপ্তকারে যে হিসাব বইতে স্থায়ীভাবে লিপিবদ্ধ করা হয় তাকে খতিয়ান বলে ।
একটি প্রতিষ্ঠানের লেনদেন সমূহকে প্রাথমিকভাবে জাবেদায় লিপিবদ্ধ করার পর হিসাবের শ্রেণি অনুযায়ী যথাযথ সংরক্ষণ করার জন্য হিসাবের পাকা বইতে স্থানান্তর করা হয় । প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন শ্রেণীর হিসাব যেমন সম্পদ , দায় , মালিকানা স্বত্ব আয় ব্যয় হিসাব সংরক্ষণ করা হয় । এসব হিসাব সমূহকে এককথায় খতিয়ান বলা হয় । একটি চলমান ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে সম্পদ , দায় ও মালিকানা স্বত্ব
সম্পর্কিত হিসেবে সমূহের সাধারণত প্রারম্ভিক ডেবিট বা ক্রেডিট জের থাকে নির্দিষ্ট সময়ে সম্পন্ন লেনদেন সমূহের ফলাফল খতিয়ানের সংরক্ষিত হিসাবসমূহে যথাযথভাবে স্থানান্তর করা হয় এবং হিসাব কাল শেষে প্রতিটি হিসেবের জের নিরূপণ করা হয় । খতিয়ানের মাধ্যমে একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে নির্দিষ্ট সময়কালের আয় – ব্যয় লাভ ও
ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হয় এবং একটি নির্দিষ্ট তারিখে প্রতিষ্ঠানের সম্পদ ও মালিকানা স্বত্বের পরিমাণ জানা যায়।
বৈশিষ্ট্য :
> প্রতিটি হিসেবের শিরােনাম প্রদান করা হয় ।
> খতিয়ান প্রস্তুতে । ছক ও চলমান জের ছক অনুসরণ করা হয় ।
> প্রতিটি হিসেবের পৃথক পৃথক জের / উদ্বৃত্ত নির্ণয় করা হয় ।
> খতিয়ান প্রস্তুতে জাবেদা সহায়ক বই স্বরূপ কাজ করে খতিয়ানে লিপিবদ্ধ সময় জাবেদা পৃষ্ঠা নম্বর উল্লেখ করা হয় ।
> খতিয়ান হতে প্রাপ্ত হিসেবের উদ্বৃত্ত দ্বারা রেওয়ামিল প্রস্তুত করা হয় এবং হিসাব সংরক্ষণ কার্যক্রমের গাণিতিক শুদ্ধতা যাচাই করা হয় ।
খতিয়ান এর গুরুত্ব
ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত সকল পক্ষ এবং তথ্য ব্যবহারকারীগণ সহজেই তাদের প্রয়ােজনীয় তথ্য খতিয়ান হতে পেতে পারে । খতিয়ানের মাধ্যমে হিসাবের গাণিতিক শুদ্ধতা যাচাই করা যায় । এছাড়া খতিয়ানের অন্যান্য গুরুত্ব নিম্নরূপ :
দুতরফা দাখিলা পদ্ধতির বাস্তবায়ন : যেহেতু প্রতিটি লেনদেনের জন্য একটি ডেবিট পক্ষ এবং সমপরিমাণ অর্থ দ্বারা ক্রেডিট পক্ষ করা হয় ফলে দুতরফা দাখিলা পদ্ধতির নীতির বাস্তবায়ন হয় ।
নগদ টাকার পরিমাণ নির্ণয় : খতিয়ানের সাহায্যে
যেকোনাে সময় হাতে নগদ টাকার পরিমাণ জানা যায় ।
দেনা পাওনার পরিমাণ : প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির নামে
সংঘটিত লেনদেনগুলাে আলাদা হিসেবে রাখা হয় বলে কারবারের দেনা পাওনার পরিমাণ পাওয়া যায় ।
ভুলত্রুটি সংশােধন: লেনদেনগুলােকে প্রথমে জাবেদায় লিখে পরে খতিয়ান স্থানান্তর করা হয় বলে ভুলত্রুটি সহজেই উদঘাটন করা এবং সংশােধন করা যায় ।
আত্মসাৎ ও জালিয়াতির রােদ : বিভিন্ন লেনদেনসমূহ ভিন্ন ভিন্ন শিরােনম্নেস্থায়ীভাবে খতিয়ানে লিপিবদ্ধ করা হয় । ফলে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিবিধ প্রকার আত্মসাৎ জালিয়াতি সহজে রোধ করা যায়
লাভ – লােকসান নির্ণয়: খতিয়ানে আয়ব্যয় , লাভ – লােকশান ইত্যাদির জন্য আলাদা আলাদা হিসাব রাখা হয় এই হিসাব গুলাের সাহায্যে প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট সময় পরে বিশদ আয় বিবরণী তৈরি করে চূড়ান্ত ফলাফল জানতে পারে ।
আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত: প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তিও দায় – দেনার হিসাব নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত করে সঠিক আর্থিক অবস্থা নিরূপণ করা সম্ভব ।
সিদ্ধান্ত গ্রহণ: হিসাব সংক্রান্ত তথ্যাদি খতিয়ানে
সুশৃংখলভাবে পাওয়া যায় বলে ব্যবসা পরিচালনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায় ।