অষ্টম শ্রেণীর কৃষি শিক্ষা অ্যাসাইনমেন্টের উত্তর ষষ্ঠ সাপ্তাহ

অষ্টম শ্রেণীর কৃষি শিক্ষা অ্যাসাইনমেন্টের উত্তর ষষ্ঠ সাপ্তাহ


সৃজনশীল প্রশ্ন: ১

সখিপুর গ্রামের মিনারা বেগম বাড়ির পাশের ৫ শতক জমির পুকুরে রুই, কাতলা, সিলভার কার্প ও কার্পিও জাতের মাছ চাষের উদ্যোগ নেন। এজন্য তিনি মৎস্য কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে প্রয়োজনীয় চুন, সার প্রয়োগ করে পুকুর প্রস্তুত করেন।

ক) মিনারা বেগম পুকুরে কি পরিমাণ ইউরিয়া সার প্রয়োগ করেছিলেন? নির্ণয় কর।
খ) মিনারা বেগমের উদ্যোগটি মূল্যায়ন কর।

ক উত্তর:

উত্তর: মিনারা বেগম পুকুরে যে পরিমাণ ইউরিয়া সার প্রয়োগ করেছিলেন, তা নির্ণয় করা হলো-

আমরা জানি,
পুকুরের মাছ ছাড়ার পূর্বে পুকুর প্রস্তুত করতে শতক প্রতি ইউরিয়া সার প্রয়োজন ১০০-১৫০ গ্রাম।

অর্থাৎ,

১ শতক জমিতে ইউরিয়া সার প্রয়োজন = ১০০-১৫০ গ্রাম

৫ শতক জমিতে ইউরিয়া সার প্রয়োজন = (১০০-১৫০)×৫ গ্রাম

= ৫০০-৭৫০ গ্রাম।

যেহেতু মিনারা বেগম এর পুকুরের জমির পরিমাণ ৫ শতক, সেহেতু তিনি তার পুকুরে ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ইউরিয়া সার প্রয়োগ করেছিলেন।


খ উত্তরঃ
উত্তর: সখিপুর গ্রামের মিনারা বেগম বাড়ির পাশের ৫ শতক জমির পুকুরে রুই, কাতল, সিলভার কার্প ও কার্পিও জাতের মাছ চাষের উদ্যোগ নেন।

মিনারা বেগমের গৃহীত উদ্যোগটি খুবই প্রশংসনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ বলে আমি মনে করি।

উদ্দীপকে মিনারা বেগম যে পদ্ধতিতে মাছ চাষ করেছেন, তা হলো মিশ্র মাছ চাষ পদ্ধতি। মিনারা বেগম যে মাছগুলো চাষ করার জন্য বেছে নিয়েছেন, সে মাছগুলো পুকুরে বিভিন্ন স্তরের খাবার খেয়ে বেঁচে থাকে।

এই মাছ চাষ করার জন্য প্রথমেই তিনি পুকুর প্রস্তুত করেন। পুকুর প্রস্তুত করার জন্য তিনি মৎস্য কর্মকর্তার পরামর্শ নেন।

তিনি মৎস্য কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে প্রয়োজনীয় চুন, সার প্রয়োগ করে পুকুর প্রস্তুত করেন।

উপরোক্ত মাছগুলো পুকুরে চাষের সুবিধা গুলো নিচে দেয়া হল-

১. এরা জলাশয় এর বিভিন্ন স্তরের খাবার খায় যেমন- কাতলা পুকুরের উপর স্তরে, রুই মধ্যস্তরে এবং মৃগেল নিচের স্তরের খাবার খায়।

২. এরা রাক্ষসের স্বভাবের নয়।

৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো।

৪. দ্রুত বর্ধনশীল।

৫. চাষের জন্য সহজেই হ্যাচারিতে পোনা পাওয়া যায়।

৬. স্বল্পমূল্যের সম্পূরক খাবার খেয়ে বেড়ে ওঠে।

৭. খেতে সুস্বাদু ও বাজারে চাহিদা আছে।

মিশ্র চাষের অনেক সুবিধা রয়েছে যেমন-

ক) মাছ পুকুরের বিভিন্ন স্তরে থাকে ও খাবার খায় বলে পুকুরের সকল জায়গা ও খাবারের সদ্ব্যবহার হয়

খ) কোন স্তরের খাবার জমা হয়ে নষ্ট হয় না। ফলে পুকুরের পরিবেশ ভালো থাকে

গ) মিশ্র চাষে মাছের রোগবালাই কম হয়

ঘ) সর্বোপরি উৎপাদন বৃদ্ধি পায়

উপরোক্ত আলোচনা থেকে বলা যায়, মিনারা বেগম এর উক্ত উদ্যোগটি সফল ভাবে পরিচালনা করতে পারলে তিনি নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি, এলাকার অনেকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করতে পারবেন।

ফলে তার এলাকার বেকারত্বের হার হ্রাসের পাশাপাশি জাতীয় পর্যায়ে বেকারত্ব হ্রাস পেতে সহযোগিতা করবে।

অন্যদিকে, তিনি যে মাছ চাষ করবেন সে মাছ বিক্রি করে অনেক টাকা আয় করতে পারবেন; যা জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখবে।

এছাড়া চাষকৃত মাছ মিনারা বেগম এর এলাকার মাছের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানি করে দেশের মানুষের চাহিদা পূরণ করতে অবদান রাখবে।

পরিশেষে বলা যায়, মিনারা বেগম এর মাছ চাষের উদ্যোগের ফলে জাতীয় অর্থনীতি বেগবান হওয়ার পাশাপাশি দেশের বেকারত্বের হার হ্রাস পাবে। অতএব উদ্যোগটি তাৎপর্যপূর্ণ।

২ ‍উত্তরঃ

পলিব্যাগে চারা তৈরী সুবিধাজনক কেন ব্যাখ্যা করা হলঃ-

যে নার্সারিতে পলিব্যাগে চারা উৎপাদন করা হয় তাকে পলিব্যাগ নার্সারি বলা হয়।

বিভিন্ন ধরনের ফল ও বনজ গাছের চারা উৎপাদনের জন্য সরাসরি অথবা অঙ্কুরিত বীজ বপন করা যায়।

পলিব্যাগ নার্সারিতে চারা উৎপাদনের অনেক সুবিধা থাকায় বেশিরভাগ ফলজ ও বনজ চারা উৎপাদন করা হয়।

পলিব্যাগ নার্সারিতে চারা উৎপাদন করার প্রধান সুবিধা গুলো হলো-

১. যে কোন মাপের এবং ঘনত্বের তৈরি করা যায়।

২. মজবুত ও দীর্ঘস্থায়ী।

৩. হালকা ও সহজে পরিবহনযোগ্য।

৪. উৎপাদিত চারা পরিচর্যা করা সহজ এবং মৃত্যু হার কম।

৫. পলিব্যাগে চারা পরিবহনের চারার কোনো ক্ষতি হয় না।

৬. পলিব্যাগে চারা রোপণ করা সহজ।

৭. সহজে পরিবহনযোগ্য বলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে চারা রক্ষা করা যায়।

৮. চারা বিতরণ ও বিপণন করতে সুবিধা হয়।

One Comment on “অষ্টম শ্রেণীর কৃষি শিক্ষা অ্যাসাইনমেন্টের উত্তর ষষ্ঠ সাপ্তাহ”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *