পড়া মনে রাখার ১৫টি সহজ কৌশল – পড়া মনে রাখার সহজ উপায়

পড়া মনে রাখার সহজ উপায়। 

পড়া মনে রাখার ১৫টি সহজ কৌশল - পড়া মনে রাখার সহজ উপায়
 

পড়া ভুলে যাওয়া মানুষের একটা কমন জিনিস। কেউ কেউ আছে যারা অল্প পড়ে বেশী মনে রাখতে পারে । আবার অনেকে আছে যারা অনেক পড়াশুনা করে কিন্তু পড়া মনে রাখতে পারে না। পাড়া কি ভা মনে রাখবেন তার জন্য আমাদের আজকের আয়োজন। এই লেখাটি পড়লে আপনে জানতে পারবেন কি করে সহজে পড়া মনে রাখা যায়।যদি আপনারা এই কয়েকটা কৌশল অবলম্বন করতে পারেন তাহলে পড়া মনে রাখা আপনার জন্য একটু হলেও সহজ হবে।তাই আজকে লিখতে বসলাম কি করে আপনি সহজে পড়া মনে রাখবেন। তাহলে দেখে নেওয়া যাক পাড়া মনে রাখার সহ উপায়গুলো:


 

আপনি যদি মনে করেন এই আর্টিকেলটি পড়তে পারবেন না তাহলে নিচের ভিডিওটি দেখে নিন। তাছাড়া  এখানে ক্লিক করে আমাদের ইউটিউব চ্যানেল সাবক্রাইব করে রাখুন


১. যা পড়েছি তা অন্যকে শেখানো:

পড়া মনে রাখার জন্য প্রাচীনকাল থেকেই এ পদ্ধতিটি বেশ জনপ্রিয়। নিজে যা পড়েছি বা জেনেছি তা অন্যকে শেখানোর মাধ্যমে মস্তিষ্কে আরো ভালোভাবে গেঁথে যায়। তাছাড়া অন্যকে শেখানোর ফলে নিজের দক্ষতা প্রকাশ পায় এবং পড়াটি ভালভাবে আয়ত্ত হয়েছে কিনা তাও বুঝা যায়।
 

২. পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো:

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ব্রেইন যেকোন ইনফরমেশন বা তথ্যকে মেমরি বা স্মৃতিতে পরিণত করে ঘুমানোর সময়। তাই পড়া মনে রাখার জন্য পড়ালেখার পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানোও জরুরি। সাধারণত একজন সুস্থ ব্যক্তির দিনে  ঘন্টার মত ঘুমানো উচিত। এর থেকে কম ঘুমালে পড়া মনে রাখার ক্ষমতা কমে যায়।
 

৩. নিমনিক তৈরী করা:

আমাদের ব্রেইন আগোছালো জিনিস মনে রাখতে পারে না। তাই কোন কিছু ছক বা টেবিল আকারে সাজিয়ে নিলে কিংবা কবিতার ছন্দ বানিয়ে পড়লে তা সহজেই মনে রাখা যায়। পড়া মনে রাখার এই কৌশল কে নিমনিক (mnemonic) বলা হয়।
 

৪. পড়ার জন্য সঠিক সময় নির্বাচন করা:

অনেকেরই ধারণা সারাদিন-সারারাত পড়লেই পড়া বেশি মনে থাকে। এটা নিতান্তই ভুল ধারণা। কারণ সবসময় আমাদের ব্রেইন একইভাবে কাজ করতে পারে না। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, বিকালের পর আমাদের ব্রেইনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। তাই বিকালের পরে অর্থাৎ সন্ধ্যায় বা রাতে পড়া বেশি কার্যকর হয়।
 

৫. কনসেপ্ট ট্রি ব্যবহার করে পড়া:

কোন বিষয় পড়ার আগে অধ্যায়গুলোকে কয়েকটি অংশে ভাগ করে নিলে পড়তে সুবিধা হয়। একে একটি গাছের সাথে তুলনা করা যেতে পারে। গাছটিকে একটি অধ্যায় বিবেচনা করে প্রতিটি পাতায় অংশ গুলোর একটি করে সারমর্ম লিখে পড়লে পড়া মনে রাখতে সহজ হয়। এ পদ্ধতিকে কনসেপ্ট ট্রি বলা হয়। পড়া মনে রাখতে এটি বেশ কার্যকর।
 

৬. লিখে লিখে বা ছবি এঁকে পড়ার অভ্যাস করা:

কোন জিনিস পড়ার সাথে সাথে লিখলে বা ছবি আঁকলে পড়ার প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায়। কারন নিউরো সায়েন্সের মতে, কিছু লিখলে বা ছবি আঁকলে ব্রেইনের অধিকাংশ জায়গা উদ্দীপিত হয় এবং ছবি বা লেখাটিকে স্থায়ী মেমরিতে রূপান্তরিত করে ফেলে। ফলে পড়াটি মস্তিষ্কতে দীর্ঘস্থায়ী হয়। সাধারণভাবেও বুঝা যায়, বইতে যেসব বিষয় ছবি দিয়ে ব্যাখ্যা করা হয় তা-ই আমাদের বেশি মনে থাকে। পরীক্ষার সময়ও চোখের সামনে বইয়ের ছবিটিই ভেসে উঠে। তাই লিখে বা ছবি এঁকে পড়া অনেক কার্যকর
 

৭. বেশি বেশি পড়া ও অনুশীলন করা:

আমাদের ব্রেইন ক্ষণস্থায়ী স্মৃতি গুলোকে তখনই দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতিতে পরিণত করে যখন তা বারবার ইনপুট দেয়া হয়। বারবার ইনপুট দেয়ার ফলে ব্রেইনের স্মৃতি গঠনের স্থানে গাঠনিক পরিবর্তন হয় যা দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতি তৈরীতে সাহায্য করে। তাই বেশি বেশি পড়া ও অনুশীলন করা পড়া মনে রাখার অন্যতম উপায়। এক্ষেত্রে 10 Minute School-এর এডমিশনের মডিউলটি বিশ্ববিদ্যালয় এডমিশন পরীক্ষার্থীদের অনেক সহায়তা করতে পারে।


৮. কালারিং বা মার্কার পেন ব্যবহার করে দাগিয়ে পড়া:

আমাদের মধ্যে অনেকেই মার্ক করে বা দাগিয়ে পড়ে। এটাও পড়া মনে রাখতে বেশ কার্যকর। মার্ক করার ফলে কোন শব্দ বা বাক্যের প্রতি আকর্ষণ ও আগ্রহ বেড়ে যায়। পাশাপাশি এর উপর ব্রেইনের ভিজ্যুয়ালিটি ইফেক্টও বেড়ে যায় যা পড়াকে মনে রাখতে সহায়তা করে।
 

৯. পড়ার প্রতি আকর্ষণ অনুভব করা:

যে বিষয়টি পড়ব তার প্রতি আকর্ষণ জাগাতে হবে। কিংবা আকর্ষণীয় উপায়ে পড়ার চেষ্টা করতে হবে। এতে পড়া সহজে মনে থাকবে।
 

১০. পড়তে বসার আগে ১০ মিনিট হাঁটা:

পড়ার টেবিলে বসার পূর্বে ১০ মিনিট হাঁটলে বা হালকা ব্যায়াম করলে মস্তিষ্কের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এতে পড়া মনে রাখতে বেশ সুবিধা হয়। ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গেছে, পড়ার পূর্বে ১০ মিনিট হাঁটলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা প্রায় ১০ শতাংশ পরিমাণ বেড়ে যায়। তাহলে একটু হাঁটার পরেই শুরু হোক পড়ালেখা।


১১. কল্পনায় ছবি আঁকা]

বিষয়সদৃশ একটি ছবি আঁকতে হবে মনে। গল্পের প্রতিটি চরিত্রকে আশপাশের মানুষ বা বস্তুর সঙ্গে মিলিয়ে নিতে হবে। তারপর সেই বিষয়টি নিয়ে পড়তে বসলে মানুষ কিংবা বস্তুটি কল্পনায় চলে আসবে। এ পদ্ধতিতে কোনো কিছু শিখলে সেটা ভুলে যাওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। আর মস্তিষ্ককে যত বেশি ব্যবহার করা যায়, তত ধারালো হয় ও পড়া বেশি মনে থাকে।
 
১২. অর্থ জেনে পড়া
ইংরেজি পড়ার আগে শব্দের অর্থটি অবশ্যই জেনে নিতে হবে। ইংরেজি ভাষা শেখার প্রধান শর্ত হলো শব্দের অর্থ জেনে তা বাক্যে প্রয়োগ করা। বুঝে না পড়লে পুরোটাই বিফলে যাবে। সৃজনশীল পদ্ধতিতে ইংরেজি বানিয়ে লেখার চর্চা করা সব থেকে জরুরি। কারণ পাঠ্যবইয়ের যেকোনো জায়গা থেকে প্রশ্ন আসতে পারে। ইংরেজি শব্দের অর্থভাণ্ডার সমৃদ্ধ হলে কোনো পড়া ভুলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে না।


১৩. পড়ার সঙ্গে লেখা
কোনো বিষয় পাঠ করার সঙ্গে সঙ্গে সেটি খাতায় লিখতে হবে। একবার পড়ে কয়েকবার লিখলে সেটা সবচেয়ে বেশি কার্যকর হয়। পড়া ও লেখা একসঙ্গে হলে সেটা মুখস্থ হবে তাড়াতাড়ি। পরবর্তী সময়ে সেই প্রশ্নটির উত্তর লিখতে গেলে অনায়াসে মনে আসে। এ পদ্ধতির আরেকটি সুবিধা হচ্ছে হাতের লেখা দ্রুত করতে সাহায্য করে। পড়া মনে রাখতে হলে শেখার সঙ্গে সঙ্গে বেশি বেশি লেখার অভ্যাস করতে হবে।
 
১৪. মুখস্থ বিদ্যাকে ‘না’ বলা
মুখস্থ বিদ্যা চিন্তাশক্তিকে অকেজো করে দেয়, পড়াশোনার আনন্দও মাটি করে দেয়। কোনো কিছু না বুঝে মুখস্থ করলে সেটা বেশিদিন স্মৃতিতে ধরে রাখা যায় না। কিন্তু তার মানে এই নয়, সচেতনভাবে কোনো কিছু মুখস্থ করা যাবে না। টুকরো তথ্য, যেমন: সাল, তারিখ, বইয়ের নাম, ব্যক্তির নাম ইত্যাদি মনে রাখতে হবে। কী মনে রাখছেন, এর সঙ্গে অন্যান্য বিষয়ের কী সম্পর্ক তা খুঁজে বের করতে হবে। এ ছাড়া বিজ্ঞানের কোনো সূত্র কিংবা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আয়ত্ত করতে সেটা আগে বুঝে তারপর মুখস্থ করতে হবে.
 
১৫. গল্পের ছলে পড়া
যেকোনো বিষয় ক্লাসে পড়ার পর সেটা আড্ডার সময় বন্ধুদের সঙ্গে গল্পের মতো করে উপস্থাপন করতে হবে। সেখানে প্রত্যেকে প্রত্যেকের মনের ভাবগুলো প্রকাশ করতে পারবে। সবার কথাগুলো একত্র করলে অধ্যায়টি সম্পর্কে ধারণাটা স্বচ্ছ হয়ে যায়। কোনো অধ্যায় খণ্ড খণ্ড করে না শিখে আগে পুরো ঘটনাটি সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা নিতে হবে। পরে শেখার সময় আলাদাভাবে মাথায় নিতে হবে। তাহলে যেকোনো বিষয় একটা গল্পের মতো মনে হবে।

পড়াশুনাকে আরো আনন্দময় করতে আমাদের ইউটিউব চ্যানেল সাবক্রাইব করে রাখুন। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *