পরিক্ষায় ভাল রেজাল্ট করার কার্যকরি উপায় – পরিক্ষায় ভাল রেজাল্ট করার উপায়

পরিক্ষায় ভাল রেজাল্ট করা উপায়

 

পরিক্ষায় ভাল রেজাল্ট করা কার্যকরি উপায়
 

পরিক্ষায় ভাল রেজাল্ট করার উপায় কি? আসলে পরিক্ষায় ভাল রেজাল্ট করার জন্য পড়ার থেকে ভাল কোন উপায় নাই। পরিক্ষায় ভাল রেজাল্ট করতে হলে অবশ্যই আপনাকে ভাল করে পড়াশুনা করতে পারবেন। ভাল পড়াশুনার পাশাপাশি যদি আপনি কিছু টেকনিক খাটিয়ে পড়াশুনা করতে পারেন তাহলে আপনার পরিক্ষার রেজাল্ট কয়েক গুণ ভাল হবে। এমন কয়েকটা টেকনিক নিয়ে আমাদের আজকের আয়োজন। যদি এই টেকনিক গুলো মেনে  চলতে পারন তাহলে আপনার পরিক্ষার রেজাল্টএ একটু হলেও পরিবর্তন দেখতে পারবেন। তাহলে দেখে নেওয়া যাক পরিক্ষায় ভাল রেজাল্ট করার উপায়গুলো:-

 

পরিক্ষায় ভাল রেজাল্ট করা ১৫ উপায়।



০১. রুটিন তৈরি করা

এই রুটিন তৈরি করার বিষয়ে আমরা সেই ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি। কিন্তু আমাদের মধ্যে খুব শিক্ষার্থীই আছে, যারা আসলেই রুটিন তৈরি করে। কেউ যদি করেও থাকে, তাহলে এক-দু’দিন পর তা আর ফলো করে না।
কিন্তু ভাল রেজাল্ট করার জন্য পড়াশোনাটাকে একটা রুটিনের মধ্যে নিয়ে আসাটা খুবই জরুরী। তাই, একটা রুটিন তৈরি করে; টাইমিং একটু এদিক-ওদিক হলেও সেই রুটিন মেনে চলা উচিত।
০২. পড়াশোনাকে প্রাধান্য দিন
পড়াশোনার সময়ে শুধুই পড়াশোনায় মনোযোগ দেওয়া উচিত। বই খোলার পর ফোনে কথা বলা, টিভি দেখা, এমনকি টুকিটাকি খাওয়ার দিকেও মনোযোগ না দেওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। পড়ার নির্দিষ্ট সময়ে শুধুই পড়াকে প্রাধান্য দিন।
 

০৩. পড়ালেখার একটি পরিকল্পনা তৈরি করুন

পরিকল্পনা ব্যতীত কোন কাজ করা সম্ভব নয়। তাই, আপনি কিভাবে পড়ালেখা করবেন তার পরিকল্পনা করে নিন। প্রতি সপ্তাহের কিংবা মাসের জন্য একটি রুটিন করে নিন। রুটিন কিছু কাজের সময় নির্দিষ্ট করে নিন যেমন:
  • স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের সময়।
  • ধর্মীয় কাজ।
  • পরিবারকে দেয়া সময়।
  • খেলাধুলা।
রুটিনে উপরে উল্লেখিত কাজের সময় পড়ালেখা বাদ রাখুন। বাকি সময়ে আপনার পড়ালেখার একটি নিয়ম ঠিক করে নিন। সপ্তাহের শেষের দিনটি, পূর্বের পড়া রিভাইসের জন্য নির্দিষ্ট করে নিন। আর বন্ধের দিনটি বন্ধের মত করেই কাটাবেন।
যেকোনো সময় পড়া শুরু করার পূর্বে নিচের কাজগুলো করে নিবেন। যেমন:
  • পড়ার পরিবেশ তৈরি করে নেয়া।
  • মোবাইল ফোন নিজের থেকে দূরে রাখা। প্রয়োজনে অন্য ঘরে বা বন্ধ করে রাখা।
  • পড়া শেষ করার আগে কেউ যেন বিরক্ত না করে, তা নিশ্চিত করা।
  • প্রয়োজনীয় সমস্ত নোট এবং রেফারেন্স বই একত্রিত রাখুন।
  • পানির পাত্র ও গ্লাস সাথে রাখুন। পানি মনোযোগ বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
  • সময় নির্দিষ্ট করে নিন।

 

পরিক্ষায় ভাল রেজাল্ট করা কার্যকরি উপায় - পরিক্ষায় ভাল রেজাল্ট করার উপায়

 

০৪. বইয়ের বিশেষ বিশেষ অংশে রঙিন কোড ব্যবহার করা

বইয়ের প্রতিটা অধ্যায়ে কিছু গুরুত্বপুর্ণ অংশ থাকে । যেগুলো অনেক সময় খুজে বের করতে গেলে সময় নষ্ট হয় । এই কারণে ঐ সকল অংশগুলোতে রঙিন কালি দিয়ে চিহ্নিত করে রাখবে ।  তাহলে পরবর্তীতে খুব সহজেই সেটা তোমার সামনে চলে অাসবে । সময় সাশ্রয়ের সাথে পড়াটাও সহজ হবে।

০৫. শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সাহায্য চাওয়া

আমরা একটা কাজ খুব করে থাকি। ক্লাসে কোন কিছু না বুঝলে, স্যার/ মিসকে জিজ্ঞেস করি না। মনে করি যে, পরে বই দেখে বুঝে নিবো অথবা পাশের কোন বন্ধুকে জিজ্ঞেস করি। প্রায়ই যেটা হয়, বই দেখলেও আমাদের সঠিকভাবে বিষয়টা বোঝা হয় না। আর বন্ধু নিজে যত ভালোভাবেই বুঝে থাক না কেন, একজন শিক্ষক/ শিক্ষিকা যত যত্ন নিয়ে আমাদের পুরো বিষয়টা বুঝিয়ে দিতে পারবেন; সহপাঠী বন্ধু তা কখনোই পারবে না।

জেনে নিন পরিক্ষায় এ+ পাওয়ার উপায়

 

০৬.ক্লাসের সময় নোট করুন

ক্লাসের শিক্ষকের পড়া নোট রাখা খুব ভাল একটি অভ্যাস। তবে, খেয়াল রাখবেন পড়া নোট করতে গিয়ে যেন শিক্ষকের পড়া থেকে বঞ্চিত না হন। অনেকে নোট করা নিয়ে এত ব্যস্ত হয়ে পরে যে পরে মূল পড়া বুঝতে পারে না। তাই এই দিকটি খেয়াল রাখতে হবে।
স্যারের গুরুত্বপূর্ণ কথা এবং আপনার নিকট যা কঠিন মনে হয় তা নোট করুন। বাসায় যখন পড়তে বসবেন তখন সে নোটটি সামনে রাখুন। এটা আপনাকে দ্রুত পড়া মুখস্থ করতে সহায়তা করবে। প্রতিদিন যা ক্লাসে শেখেন, পড়ার টেবিলে তা আবার পুনরায় মনে করার চেষ্টা করুন।
০৭. সময় ভাগ ভাগ করে নিন
বিভিন্ন বাড়ির কাজ বা অ্যাসাইনমেন্ট শেষ করার জন্য ভাগ ভাগ করে কাজ করতে হয়।  ডমেনিকা রোমান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘এটা অনেকটা মাংসের স্টেক খাওয়ার মতো। এক টুকরো করে কেটে চিবিয়ে খেতে হয়। পুরোটা এক কামড়ে খাওয়া যায় না।’ অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেবার শেষ তারিখটা জেনে নিয়ে এর আগেই শিডিউল করে ফেলুন কবে কতটুকু লিখবেন। একদিন বিষয়টি নিয়ে রিসার্চ করুন, আরেকদিন ২০ শতাংশ লিখে ফেলুন, আবার একদিন সহপাঠিকে দিয়ে রিভিউ করিয়ে নিন। অবশ্য সবসময় এত গুছিয়ে কাজ করা যায় না, কখনো ডেডলাইনের আগের রাত্রেই কাজ শেষ করতে হয়।  তারপরেও একটি শিডিউল করা থাকলে কাজটা ভালো হয়।

০৮. প্রতিযোগী ঠিক করো

তুমি যখন সামনে কোনো কিছুকে টার্গেট করে চলতে থাকবা,  তখন তোমার গতিটাও ঐ টার্গেটের বস্তুর সাথে তাল মিলিয়ে হবে । তাই তুমি এক্ষেত্রে তোমার থেকে ২ধাপ ওপরের ছাত্রকে টার্গেট করো । অার সেটা মন থেকেই করো । তাহলে দেখবে তোমার পড়ালেখার গতিও বেড়ে গেছে।

০৯. গ্রুপ স্টাডি করা

গ্রুপ করে পড়া সবসময়ই খুব ফলপ্রসূ একটি পন্থা। কিন্তু এর দু’টি সমস্যা রয়েছে। প্রথমত, দেখা করাটা সবসময় সম্ভব হয় না। দ্বিতীয়ত, অনেক সময়েই গ্রুপ স্টাডি আড্ডায় রূপ নেয়। এ দু’টি সমস্যারই সমাধান রয়েছে। প্রযুক্তির বদৌলতে এখন গ্রুপ স্টাডি করার জন্য দেখা করাটা খুব জরুরী না। বিভিন্ন অনলাইন অ্যাপের মাধ্যমেই সেটা করা যায়। আর, এর ফলে গ্রুপ স্টাডিটা আড্ডায় পরিণত হবার সম্ভাবনাও কমে যায়।

১০. নিজেকে অনুপ্রেরণা দিন

আল্লাহ মানুষকে রক্তে-মাংসে তৈরি করেছেন, কোন রোবট নয়। তাই, মন সবসময় এক রকম থাকবে না। অনেক সময় পড়ার ইচ্ছা থাকবে না। এজন্য নিয়মিত নিজেকে অনুপ্রেরণা দিতে হবে। যেমন:
  • আমি আমার সেরাটা করতে চাই
  • আমি যতটা পারি শিখতে চাই
  • আমি ভবিষ্যতের জন্য নিজেকে ভালভাবে প্রস্তুত করতে চাই
  • আমি অধ্যবসায়ী হতে চাই
  • আমি আরও সুশৃঙ্খল হতে চাই

১১. খাতায় সুন্দরভাবে উপস্থাপন

অাগে দর্শনধারী,পরে গুণবিচারী । কথাটা অামাদের অজানা নয় । তুমি সারা বছর যতোই ভালো পড়ালেখা করো, পরীক্ষার খাতায় যদি সেটা সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে না পারো তাহলে কোনো লাভ নেই । অার তার জন্য প্রথমেই তোমার হাতের লেখা সুন্দর করতে হবে । কারণ হাতের লেখা খারাপ হলে স্যারেরা সেটা অার ভিতরে তেমন পড়ে দেখতে চায়না । এই জন্য অাগে স্যারদের চোখে ভালো লাগাতে হবে।
নিয়মিত পড়ালেখার পাশাপাশি এগুলো তোমাদের জন্য কিছু কৌশল । তবে নিঃসন্দেহে খারাপ কোনো উপদেশ না সেটা তোমরাও বুঝতে পারছো । তাহলে একটু চেষ্টা করেই দেখো । সাফল্য তোমার হাতের মুঠোই।

১২. গল্পে গল্পে পড়া

পড়াশোনা বিষয়টা আমাদের অনেকের কাছেই খুব বোরিং মনে হয়। চাইলেও একে আমরা উপভোগ করতে পারি না। কিন্তু, গল্প পড়তে বা শুনতে কিন্তু সবাইই পছন্দ করে। তাই, এই বোরিং সময়গুলোতে পড়াশোনাটা যদি আমরা গল্পের মতো বানিয়ে ফেলি, তাহলে কিন্তু একঘেয়েমি কাটানোটা খুব কষ্টকর থাকে না।
প্রথমত, আমাদের টেনে পড়তে হবে। ঠিক যেমন গল্পের বই পড়ি তেমন। এবং পড়ার সময় কতটুকু মুখস্থ হচ্ছে তা নিয়েও ভাবা যাবে না। ধরে নিতে হবে যে, আমরা গল্প পড়ছি।
দ্বিতীয়ত, চ্যাপ্টারের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোকে গল্পের কোন একটি চরিত্র বানিয়ে ফেলতে হবে। চ্যাপ্টারটা যত হাস্যকর আর আজগুবি শোনাবে, পড়া মনে রাখতে ততটাই সহজ হবে।

১৩. ধর্ম কর্ম

পরীক্ষার সময় বা রেজাল্টের ২দিন অাগে টুপি মাথায় দিয়ে মসজিদে গেলে বা মন্দিরে গিয়ে মাথা ঠুকলে সৃষ্টিকর্তার মন জয় করা যায় না । যে যে ধর্মেই থাকো সে সেই ধর্ম মন থেকে সব সময় পালন করবে । অাগে সৃষ্টিকর্তার মন জয় করো।তিনি তোমাকে নিরাশ করবেন না।

১৪. নিজেকে পরীক্ষা করা

ভাবতে খুব অবাক লাগলেও সত্যি যে, মাঝে মাঝে শুধুমাত্র একটি পরীক্ষার হলে ঢোকার ফলেই আমাদের অনেক পড়া আমরা ভুলে যেতে পারি। এই সমস্যা সমাধানের জন্য, আমাদের নিজেদেরকে পরীক্ষার জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত করতে হবে। আর এই প্রস্তুতি নেয়ার জন্য মডেল টেস্ট দেয়া, বিভিন্ন কুইজ দেয়ার কোন বিকল্প নেই। তাই, পরীক্ষায় ভাল ফল অর্জন করতে হলে, আমাদের নিজেদেরই নিজেদের পরীক্ষা করতে হবে।


১৫. রুটিন তৈরি করা

এই রুটিন তৈরি করার বিষয়ে আমরা সেই ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি। কিন্তু আমাদের মধ্যে খুব শিক্ষার্থীই আছে, যারা আসলেই রুটিন তৈরি করে। কেউ যদি করেও থাকে, তাহলে এক-দু’দিন পর তা আর ফলো করে না।
কিন্তু ভাল রেজাল্ট করার জন্য পড়াশোনাটাকে একটা রুটিনের মধ্যে নিয়ে আসাটা খুবই জরুরী। তাই, একটা রুটিন তৈরি করে; টাইমিং একটু এদিক-ওদিক হলেও সেই রুটিন মেনে চলা উচিত।

ধন্যবাদ সবাইকে।
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *