কৃষিশিক্ষা ২য় পত্র ১ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

কৃষিশিক্ষা ২য় পত্র ১ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন

কৃষিশিক্ষা পরীক্ষার জন্য সংক্ষিপ্ত সিলেবাস শেয়ার করা হয়েছে। এই সংক্ষিপ্ত সিলেবাস ২য় পত্রে মৎস্য চাষ নামে একটি অধ্যায় আছে। এই অধ্যায় থেকে অনেক সুময় সৃজনশীল প্রশ্ন দেওয়া থাকে। তাই আপনাদের কে এই অধ্যায়ের সকল সৃজনশীল প্রশ্ন পড়তে হবে। এজন্য এই পোস্টে কৃষিশিক্ষা ২য় পত্র ১ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর সাজেশন দেওয়া আছে। এছাড়া যাদের কাছে সৃজনশীল পড়ার জন্য গাইড নেই তারা এই পোস্টে দেওয়া সৃজনশীল প্রশ্ন গুলো পড়ে নিবেন।

কৃষিশিক্ষা ২য় পত্র ১ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন

এখানে কৃষিশিক্ষা ২য় পত্র ১ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন দেওয়া আছে। এখান থেকে সৃজনশীল গুলো পড়ে নিবেন।

সৃজনশীল প্রশ্ন ১ঃ 

মিঠুন ২০০ শতক আয়তনের জমিতে ধানের সাথে গলদা চিংড়ি চাষের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি মৎস্য কর্মকর্তার পরামর্শ নেন। মৎস্য কর্মকর্তা তাকে জানান “ধানক্ষেতে খাদ্য ব্যবস্থাপনার উপর গলদা চিংড়ির ফলন নির্ভরশীল।” মিঠুন মৎস্য কর্মকর্তার পরামর্শ মোতাবেক ধানক্ষেতে গলদা চিংড়ি চাষ করে সফলতা লাভের চেষ্টা করেন।

ক. মাছ প্রতিদিনের খাদ্যের কত ভাগ আমিষের যোগান দেয়?
খ. কোন উপাদানগুলোর মাধ্যমে নিরাপদভাবে মাছ সংরক্ষণ করা হয় তা লেখো।
গ. মৎস্য কর্মকর্তার উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।
ঘ. মিঠুনের কার্যক্রমটির সুবিধা-অসুবিধা বিশ্লেষণ করো।\

সৃজনশীল প্রশ্ন ২ঃ 

আমাদের অর্থনীতিতে জাতীয় মাছের গুরুত্ব অপরিসীম। বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে প্রচুর পরিমাণে এই মাছ আহরণ করা হয়। তাই সারা বছরের চাহিদা মেটানোর জন্য একে এক বিশেষ পদ্ধতিতে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। যেখানে মাছের প্রোটিনের কিছু পরিবর্তন সাধনের মাধ্যমে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়। কিন্তু অনেক সময় এই পদ্ধতিতে কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।

ক. প্লিওপডস কী?
খ. চিংড়ি চাষে পানির কী কী গুণ থাকা উচিত? ব্যাখ্যা করো।
গ. উল্লিখিত মাছ সংরক্ষণে উদ্দীপকে বর্ণিত পদ্ধতিটি ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উল্লিখিত পদ্ধতিতে মাছ সংরক্ষণে সৃষ্ট সমস্যা বিশ্লেষণ করো।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ঃ 

বাগমারা উপজেলায় আয়োজিত মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন অনুষ্ঠানে মৎস্য কর্মকর্তা মৎস্য চাষিদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন জলাশয় যেমন-খাল, বিল, নদী, নালা, হাওর-বাঁওড় হতে মৎস্য সম্পদ হ্রাসের কারণ আলোচনা করেন। এরপর তিনি মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণে উপযুক্ত পরামর্শ প্রদান করেন।

ক. নিউসটন কী?
খ. পিএল টেকসইকরণ বলতে কী বোঝায়?
গ. উল্লিখিত সম্পদ হ্রাসে মৎস্য কর্মকর্তার বর্ণিত কারণসমূহ ব্যাখ্যা করো।
ঘ. মৎস্য কর্মকর্তার পরামর্শ বিশ্লেষণ করো।

কৃষিশিক্ষা ২য় পত্র ১ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

এই অংশে উপরের দেওয়া সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর গুলো দেওয়া আছে। যাদের উত্তর গুলো প্রয়োজন হবে তারা এখান থেকে দেখেনিবেন।

১ নং উত্তরঃ  

ক. মাছ প্রতিদিনের খাদ্যের শতকরা প্রায় ৬০ ভাগ আমিষের যোগান দেয়।

খ. নিরাপদ মাছ সংরক্ষণের প্রধান ৪টি উপাদান রয়েছে। যেমন-
১. মাছ ধরার পর পরিবেশ রক্ষা : মাছ ধরার পরে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে রাখা যাতে মাছের ভেতরে এনজাইমের ক্রিয়া, জীবাণুর ক্রিয়া ও রাসায়নিক বিক্রিয়া না হয় ।
২. মাছ প্রক্রিয়াজাত করা : যেমন- মাছের আর্দ্রতা কমানো ও বরফ দেয়া।
৩. বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ না দেওয়া।
৪. মাছ সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা।

গ.

মিঠুন ২০০ শতক আয়তনের জমিতে ধানের সাথে গলদা চিংড়ি চাষের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে মৎস্য কর্মকর্তা তাকে খাদ্য ব্যবস্থাপনার উপর গুরুত্বারোপ করতে বলেন।
ধানক্ষেতে গলদা চিংড়ি চাষের ক্ষেত্রে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি সম্পূরক খাদ্য প্রয়োগ করতে হবে। সাধারণত সম্পূরক খাদ্য হিসেবে ১৩ হারে চালের মিহি কুঁড়া ও গোবর সার প্রয়োগ করতে হয়। এভাবে হেক্টর প্রতি ১০ কেজি পরিমাণ খাদ্য প্রতি ৭ দিন পর পর নালার বিভিন্ন স্থানে দিতে হয়। তাই মিঠুনের জমিতে ৮.১০ কেজি খাদ্য প্রতিদিন দিতে হয়। পোনা মজুদের ১ মাস পর চালের কুঁড়া বা গমের ভুসি ও গুঁড়া খৈল ১ : ১ হারে একত্রে মিশিয়ে ১/২ দিন পরপর নালায় প্রয়োগ করতে হয়। | চিংড়ির মোট ওজনের ৩-৫% হারে এই খাদ্য একত্রে মিশিয়ে বল আকারে শেষ বিকেলে ধানক্ষেতের নির্দিষ্ট কতকগুলো স্থানে দিতে হয়। পুকুরে বা ঘেরে গলদা চাষের মত ধানক্ষেতে গলদা চাষের বেলায়ও শামুক বা ঝিনুকের মাংস বা নিম্নমানের গম বা চাল সিদ্ধ করে খাদ্য হিসেবে প্রয়োগ করলে ভালো ফল পাওয়া যায় ।
ধানের সাথে গলদা চিংড়ি চাষে সঠিক খাদ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত ফলন পাওয়া সম্ভব। তাই প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে পরিমাণমতো খাদ্য সঠিক নিয়মে ধানক্ষেতে প্রয়োগ করতে হবে।

ঘ.

মিঠুন তার জমিতে ধানের সাথে একই সময়ে গলদা চিংড়ি চাষের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এ ধরনের সমন্বিত চাষের কিছু সুবিধা-অসুবিধা রয়েছে।
ধানের সাথে চিংড়ি চাষ করলে চিংড়ির জন্য তেমন বাড়তি পুঁজির প্রয়োজন হয় না। এই চাষ পদ্ধতিতে একই জমি থেকে ধানের সাথে অতিরিক্ত ফসল হিসেবে চিংড়ি পাওয়া যায়। ধানক্ষেতে চিংড়ির বিচরণের জন্য আগাছা কম জন্মে, অনিষ্টকারী পোকামাকড় চিংড়ি খেয়ে ফেলে, ফলে কীটনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না। চিংড়ির মল ও অন্যান্য বর্জ্য পদার্থ ধানক্ষেতে।

সার হিসেবে কাজ করে। ধানক্ষেতে চিংড়ির চাষের ফলে ধানের ফলন ১০% পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। পরিবারের সুষম পুষ্টি নিশ্চিত হয়। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়।

ধানক্ষেতে চিংড়ি চাষের সুবিধার পাশাপাশি কিছু অসুবিধারও সৃষ্টি হয়। অনেকদিন বৃষ্টি না হলে ক্ষেতের পানি শুকিয়ে চিংড়ি চাষে অসুবিধার সৃষ্টি হতে পারে। অনেক সময় পানির গভীরতা চিংড়ি চাষের জন্য অনুকূল হয় না। বেশি বৃষ্টি বা বন্যা হলে চিংড়ি পানির সাথে ভেসে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ধানক্ষেতে রাসায়নিক সার, বিশেষ করে কীটনাশক ব্যবহার করা হয় যা চিংড়ির জন্য ক্ষতিকর। আকস্মিক ভাইরাসের আক্রমণেও অনেক বেশি ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
উপরের আলোচনা হতে দেখা যায়, ধানক্ষেতে গলদা চিংড়ি চাষের ক্ষেত্রে কিছু সুবিধার পাশাপাশি অসুবিধাও আছে যা বিবেচনায় নিয়ে চাষের সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

২ নং উত্তরঃ   

ক. চিংড়ির বক্ষ উপাঙ্গের শেষ ৫ জোড়া উপাঙ্গকে চলন পদ বা প্লিওপডস বলে।

খ. চিংড়ি চাষের জন্য ঘোলা, ভারি, কাদাযুক্ত পানি অনুপযোগী। চিংড়ি যাতে সঠিকভাবে বেড়ে উঠতে পারে সেজন্য পানিতে যথেষ্ট পরিমাণে অণুজীব থাকা বাঞ্ছনীয়। পানির স্বচ্ছতা ২৫-৩৫ সেমি, pH ৭-৮.৫ এবং সর্বোত্তম তাপমাত্রা ২৮°-৩১° সে. হলে ভালো হয়। পানিতে লবণাক্ততার মাত্রা বাগদার জন্য ১০-২৫ পিপিটি এবং গলদার জন্য ০-৪ পিপিটি থাকা প্রয়োজন।

গ.

উদ্দীপকে ইলিশ মাছ সংরক্ষণে শুষ্ক লবণায়ন পদ্ধতির কথা বলা হয়েছে।
শুষ্ক লবণায়ন পদ্ধতিতে ইলিশ মাছ সংরক্ষণে আঁইশ ও পাখনা দেহ থেকে ফেলে দেওয়া হয়। তারপর বুক চিরে নাড়িভুঁড়ি বের করে নেওয়া হয় এবং আড়াআড়িভাবে মাছটির বুকের দিক থেকে পিঠ পর্যন্ত কয়েকটি টুকরায় ভাগ করা হয়। গুদামজাতকরণের সুবিধার জন্য অনেক সময় ঘাড়ের কাছ থেকে একটি ছোট টুকরা কেটে বাদ দেওয়া হয় যাতে মাছটি সহজেই বাঁকানো যায় । কাটা মাছের দেহের বাইরে ও অভ্যন্তরে ভালোভাবে লবণ মাখিয়ে দেওয়া হয়।

এ ক্ষেত্রে লবণ ও মাছের অনুপাত থাকে ১ : ৪। ঝুড়ির তলায় লবণের আস্তরণ দিয়ে লবণায়িত মাছকে রেখে তার উপর আরেকবার লবণের স্তর দিয়ে মাছকে ঝুড়িতে সাজানো হয়। এরপর খড়ের তৈরি মাদুর দ্বারা ঝুড়িটিকে ঢেকে সাধারণ তাপমাত্রায় ঠাণ্ডা ও ছায়াযুক্ত স্থানে রাখা হয়। এভাবে ৭-১০ দিনে মাছে রাইপেনিং হয়। এরপর লবণজাত মাছ টিনের পারে গুদামজাত করা হয়। পরিশেষে বলা যায়, লবণায়ন মাছ সংরক্ষণের একটি প্রক্রিয়া যা মাছে খাবার লবণ প্রয়োগের মাধ্যমে করা হয়ে থাকে। এ পদ্ধতিতে মাছ এক বছর পর্যন্ত ভালোভাবে সংরক্ষণ করা যায়।

ঘ.

উদ্দীপকে উল্লিখিত পদ্ধতিটি হলো লবণায়নের মাধ্যমে মাছ সংরক্ষণ।
লবণজাতকরণ মাছ সংরক্ষণের একটি প্রক্রিয়া যা মাছে খাবার লবণের অনুপ্রবেশের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়ে থাকে। আমাদের দেশে ইলিশ মাছ লবণায়নের সময় যে সকল সমস্যার সৃষ্টি হয় তা হলো-
১. লবণায়িত করার সময় মাছ ও লবণের সঠিক অনুপাত মেনে চলা হয় না, ফলে মাছের গুণাগুণ ঠিক থাকে না।
২. অনেক ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানা হয় না, এমনকি মাছকে খণ্ড খণ্ড করে কাটার পর সেগুলোকে ধোয়া হয় না।
৩. মাছকে খণ্ড খণ্ড করে কাটার সময় অণুজীব দ্বারা আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা থাকে।
৪. অনেক সময় অতিরিক্ত লবণ ব্যবহার করা হয়, এতে প্রোটিনের জৈবিক মান নষ্ট হয়।
৫. অধিকাংশ সময়ই অবিশুদ্ধ লবণ ব্যবহৃত হয় যা মাছের আকর্ষণীয় রং, গঠন ও গন্ধ সৃষ্টিতে অন্তরায় হিসেবে কাজ করে।
৬. মুক্ত বাক্সে লবণজাতকৃত মাছের চর্বির জারণ ঘটে যা মাছের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আনতে পারে।
৭. লবণজাতকরণের সময় পদ্ধতিগত ত্রুটির কারণে অনেক ক্ষেত্রে মাছের মাংস থেকে তেল জাতীয় পদার্থ বের হয়ে সমস্ত দ্রব্যের উপর ছড়িয়ে পড়ে।
অর্থাৎ লবণজাত করে মাছ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে উল্লিখিত সমস্যাগুলো দেখা যায় যে কারণে অনেক সময় ইলিশ মাছ পচে নষ্ট হয়ে যায়।

৩ নং উত্তরঃ

ক. নিউসটন হলো পানির উপরিভাগে ঝুলে থেকে বা ভাসমান অবস্থায় সাঁতাররত বা বিশ্রামকারী জীব।

খ. গলদা চিংড়ির পোনাকে পিএল বা Post Larvae বলা হয়।
চিংড়ির পোনা পুকুরে ছাড়ার পূর্বে জলজ পরিবেশে খাপ খাওয়ানোর জন্য যে পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় তাকে পিএল টেকসইকরণ বলে।
এ পদ্ধতিতে পোনার ব্যাগ বা পাতিলটি পুকুরে কিছুক্ষণ ভাসিয়ে রাখতে হয়। ব্যাগের ভিতরের পানি এবং পুকুরের পানি অদল- বদল করতে হয়। এভাবে দুই পানির তাপমাত্রা ও লবণাক্ততায় সমতা আনতে হয়। পাড়ের কাছাকাছি সকালে বা বিকেলে পোনা ছাড়তে হয়।

গ.

মৎস্য কর্মকর্তা বাংলাদেশের বিভিন্ন জলাশয় হতে দিন দিন মাছ কমে যাওয়ার কারণ চাষিদের বলেন।
মৎস্য কর্মকর্তার বক্তব্য অনুযায়ী মাছ কমে যাওয়ার কারণ হলো—

মানুষ জলাশয় হতে নির্বিচারে মৎস্য শিকার করায় জলাশয়গুলো মৎস্যশূন্য হয়ে পড়ছে। দেশের অধিকাংশ নদ-নদী পলি দ্বারা ভরাট হয়ে যাচ্ছে। বিল, হাওর-বাঁওড় ও পরিত্যক্ত ডোবাগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রে কৃষি জমিতে পরিণত হচ্ছে। ফলে মাছ চাষের জায়গা হ্রাস পাচ্ছে। উন্মুক্ত জলাশয়ের মৎস্য আহরণ সংক্রান্ত আইন কার্যকর করার শৈথিল্যের কারণে নিষিদ্ধ মৌসুমেও মাছ শিকার করা হয়। রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের প্রভাবে মুক্ত জলাশয়ের মাছে প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে। অনেক সময় চিংড়ি মাছের পোনা সংগ্রহ করে বাছাই করার সময় অন্যান্য মাছের পোনা অবাধে মেরে ফেলা হয়।

ব্যাপক হারে ডিমওয়ালা মাছ ধরার কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মাছেরা তাদের বংশ বৃদ্ধির সুযোগ পায় না। ফলে মাছের পরিমাণ ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। প্রতি বছর হাজার হাজার মাছ রোগাক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। অপরিকল্পিতভাবে পানি সেচের কারণে বিভিন্ন জলাশয়গুলো মাছ চাষের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে। জনসংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষিজমি সম্প্রসারিত হচ্ছে, ফলে মৎস্যক্ষেত্র ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে। উল্লিখিত বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশে মৎস্য সম্পদ ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে।

ঘ.

মৎস্য কর্মকর্তা চাষিদের মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণের পরামর্শ দিলেন।
বাংলাদেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে প্রতিনিয়ত জলাশয় ভরাট হয়ে যাচ্ছে। আবার শিল্প প্রতিষ্ঠান ও কল-কারখানার বর্জ্য নদীর পানিতে পড়ে দূষণ সৃষ্টি করায় মৎস্য হ্রাস পাচ্ছে। মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণে তাই কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
জলাশয় যাতে ভরাট না হয় সে জন্য ড্রেজার দ্বারা মাটি খনন করা যাবেনা। নির্বিচারে পোনা ও ডিমওয়ালা মাছ ধরা বন্ধ করতে হবে। পরিকল্পিতভাবে পানি সেচ ও বাঁধ নির্মাণ করতে হবে। নিষিদ্ধ কারেন্টজাল ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। ফসলের জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশকের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।

অতিমাত্রায় মাছ আহরণ বন্ধ করতে হবে। যথাসম্ভব মৎস্য চাষের জলাশয়ের আয়তন বাড়াতে হবে। মৎস্য আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। চাষিদের ঋণের ব্যবস্থার মাধ্যমে মাছ চাষে উৎসাহিত করতে হবে। জলাশয়ে উদ্ভিদ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে অক্সিজেনের স্বল্পতা দূর করতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে সম্পূরক খাদ্য প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। জলাশয়ে রাক্ষুসে মাছ ও অন্যান্য ক্ষতিকর প্রাণী দূরীকরণের ব্যবস্থা নিতে হবে। সঠিক পরিকল্পনা অনুযায়ী মাছ চাষ করতে হবে। জলাশয়ের বিভিন্ন স্থানকে সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে। অতএব বলা যায়, মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণে মৎস্য কর্মকর্তার পরামর্শসমূহ অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে।

শেষ কথা

এখানে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সৃজনশীল প্রশ্ন দেওয়া আছে। আশা করছি এই পোস্ট থেকে কৃষিশিক্ষা ২য় পত্র ১ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর এইচ এস সি সাজেশন সংগ্রহ করতে পেরেছেন।  এই রকম আরও সাজেশন ও প্রশ্ন উত্তর পিডিএফ সংগ্রহ করতে আমার সাথেই থাকুন।