৮ম শ্রেণীর কৃষি শিক্ষা এ্যাসাইনমেন্ট সমাধান ১৪তম সপ্তাহ

৮ম শ্রেণীর কৃষি শিক্ষা এ্যাসাইনমেন্ট সমাধান ১৪তম সপ্তাহ

এসাইনমেন্টের শিরােনামঃ কৃষি প্রযুক্তি


১ নং

নিম্নলিখিত ফসলগুলাে দিয়ে গনি মিয়া কোন ধরনের শস্য পর্যয় অবলম্বন করবেন তা চার্টের সাহায্যে উপস্থাপন করা হলােঃ

গনি মিয়ার উঁচু, মাঝারি উঁচু, মাঝারি নিচু বিভিন্ন ধরনের ফসলি জমি রয়েছে। এ থেকে বুঝা যায়, গনি মিয়া পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও জেলার এবং দিনাজপুরের উত্তর-পশ্চিম অংশের কৃষি পরিবেশ-১ এর অন্তর্ভুক্ত। এখানকার কৃষকরা পারট, আউশ, গােলআলু, ফুলকপি, বাঁধাকপি, আখ, মাষকলাই, মুগ, সরিষা ও গম চাষ করেন। কৃষকেরা বৃষ্টিপাত নির্ভর ফসল ফলান, আবার সেচনি্ভর ফসলও ফলান। গনি মিয়া রবি, খরিপ-১ এবং খরিপ-২ মৌসুমভিত্তিক পাট, আউশ, গােলআলু, ফুলকপি, বাঁধাকপি, আখ, মাষকলাই, মুগ, সরিষা ও গম ইত্যাদি ফসল ফলান। এগুলাে ফলানাের জন্য কৃষক বছরভিত্তিক নিম্নোক্ত শস্যপর্যায় গ্রহণ করতে পারেন।

১ম বছর-

খণ্ড-১

রবি: আউশ
খরিপ-১: পাট
খরিপ-২: পতিত

খণ্ড-২

রবি : সরিষা, ফুলকপি,
খরিপ-১: মুগ
খরিপ-২ : আখ

খণ্ড-৩
রবি : গােল আলু, বাঁধাকপি
খরিপ-১: মাষকলাই
খরিপ-২: গম

২য় বছর-

খণ্ড-১
রবি: গােল
আলু,
বাঁধাকপি

খরিপ-১: মাষকলাই
খরিপ-২: গম

খণ্ড-২

রবি : সরিষা, ফুলকপি,
খরিপ-১: মুগ
খরিপ-২: আখ

খণ্ড-৩

রবি: আউশ
খরিপ-১: পাট
খরিপ-২: পতিত

শস্য পর্যায়ক্রমে দেখা যায় যে, প্রথম বছরে যেভাবে ফসল উৎপাদন শুরু হয়েছিল, দ্বিতীয় বছরে আবার সেভাবেই শেষ হচ্ছে।

শস্য পর্যায়ক্রমে দেখা যায় যে, প্রথম বছরে যেভাবে ফসল উৎপাদন শুরু হয়েছিল, দ্বিতীয় বছরে আবার সেভাবেই শেষ হচ্ছে।


২ নং

শস্য পর্যায়ঃ

শস্য পর্যায় একটি উন্নত কৃষি প্রযুক্তি। এর দ্বারা মাটির স্বাস্থ্য ভালাে থাকে, ফসল ভালাে হয়, অধিক ফলন হয়। রােগ-পােকা কম হয় এবং সারের কার্যকারিতা ভালাে হয়। প্রযুক্তি হিসেবে শস্য পর্যায়ের ব্যবহার সব দেশেই প্রচলিত। মার্টির উবরতা বজায় রেখে একখণ্ড জমিতে শস্য ঋতুর বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন ফসল উৎপাদন করার নাম শস্য পর্যায়। অ্থাৎ একই জাতের ফসল একই জমিতে বারবার উৎপাদন না করে অন্য জাতের ফসল উৎপাদন করাই হচ্ছে শস্য পর্যায়। যেমন- গভীরমূলী ফসল উৎপাদনের পর অগভীরমূলী জাতীয় ফসলের আবাদ করা উচিত। ফলে পােকা-মাকড় ও রােগবালাইয়ের উপদ্রব কম হয়।


৩ নং

শস্য পর্যায় এর জন্য এমন ফসল নির্বাচন করতে হবে যাতে নিম্নে উল্লিখিত বিষয়গুলাে গুরুত্ব পায়-

ক) পরপর একই ফসলের চাষ না করা।
খ) একই শিকড় বিশিষ্ট ফসলের চাষ না করা।
গ) ফসলের পুষ্টি চাহিদা কম বেশি অনুযায়ী নির্বাচন করা।
ঘ) ফসলের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা।
ঙ) সবুজ সার যেমন- ধইঞ্চা চাষ করা।
চ) গবাদিপশুর খাবারের জন্য ঘাসের চাষ করা।
ছ) খাদ্যশস্য ও অথ্থকরী ফসলের চাষ করা।


৪ নং

ভূমি উন্নয়নে শস্য পর্যায়ের ভূমিকাঃ

শস্য পর্যায় একটি উন্নত কৃষি প্রযুক্তি। এর দ্বারা মাটির স্বাস্থ্য ভালাে থাকে, ফসল ভালাে হয়, অধিক ফলন হয়। পােকা-মাকড় ও রােগবালাই কম হয় এবং সারের কার্যকারিতা ভালাে হয়। মাটির উবরতা বজায় রেখে একখণ্ড জমিতে শস্য ঋতুর বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন ফসল উৎপাদন করার নাম শস্য পর্যায়। বিভিন্ন জাতের ফসল উৎপাদন হয় বলে মাটিতে গাছের পুষ্টি বজায় থাকে। শস্য পর্যায় এর ফলে মাটিতে নাইট্রোজেন যুক্ত হয়। এভাবে শস্যপর্যায় ভূমি উন্নয়নে ভূমিকা রাখে।


৫ নং

শস্য পর্যায়ের সুফল পেতে গনি মিয়ার শস্যপর্যায়ের ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে যুক্তিসঙ্গত। ব্যাখ্যা করা হলােঃ

আমাদের দেশের কৃষকরা জেনে অথবা না জেনে শস্যপর্যায় প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসছেন। বৈজ্ঞানিক যুক্তি হয়তাে তারা দিতে পারবেন না। কিন্তু এতটুকু জ্ঞান তাদের আছে যে, একই ফসল একই জমিতে বছরের পর বছর চাষ করলে ফলন কমে যায়। মাটির উবরতা কমে যায়। পােকামাকড় ও রােগবালাইসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়। কৃষকেরা তাদের জমিতে ফসল ফলান সেগুলােকে রবি, খরিপ-১, খরিপ-২ এই তিন ভাগে ভাগ করেছেন। কাজেই কৃষক প্রথমত মৌসুম অনুযায়ী কি ফসল চাষ করবেন তা নির্ধারণ করেন।

দ্বিতীয়তঃ কোন জমিতে কি ফসল ফলাবে তাও নির্ধারণ করেন। শস্য পর্যায় এর বিধি অনুযায়ী কৃষকের জমিকে খণ্ডে খণ্ডে ভাগ করার প্রযােজন পড়ে। আর খণ্ডগুলাের আকার সমান রাখার নিদেশ রয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশের কৃষকদের জমি বিভিন্ন খন্ডে ভাগ করে ভাগ হযে আছে যা আকারে সমান নাও হতে পারে। কৃষকদের অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করেই তারা জমি ও ফসল নির্বাচন করেন। উপরােক্ত আলােচনা ও পূর্ববর্তী প্রশ্নের আলােকে বলা যায়, শস্য পর্যায় এর সুফল পেতে হলে গণি মিয়ার শস্য পর্যায় এর ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে যুক্তিসঙ্গত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *