এসএসসি ২০২১ ব্যবাসায় উদ্যোগ এ্যাসাইনমেন্ট সমাধান ৫ম সপ্তাহ

এসএসসি ২০২১ ব্যবাসায় উদ্যোগ এ্যাসাইনমেন্ট সমাধান ৫ম সপ্তাহ

আত্মকর্মসংস্থানের ধারণা:

সাধারণ অর্থে নিজের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নিজেই করাকে আত্মকর্মসংস্থান বলে। আত্মসংস্থান এর মাধ্যমে একজন মানুষ নিজের পাশাপাশি অনেক বেকার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযােগ সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে অধিক চাহিদাকৃত চাকরির উপর চাপ কম পড়ে এবং বেকারত্ব হ্রাস পায়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় বিভিন্ন খুচরা বিক্রয়, রেডিও ও টেলিভিশন মেরামত ইত্যাদি।

আত্মকর্মসংস্থানের উপযুক্ত ও লাভজনক ক্ষেত্র তালিকায় উপস্থাপন

আত্মকর্মসংস্থানের উপযুক্ত ও লাভজনক ক্ষেত্রসমূহের নাম ধারাবাহিকভাবে তালিকায় উপস্থাপন করা হলাে:

আত্মকর্মসংস্থানে উদ্বুদ্ধকরণে ৬টি করণীয়:

আত্মকর্মসংস্থানের জন্য প্রয়ােজন ব্যক্তিগত দক্ষতা ও স্বনির্ভর পেশায় নিয়ােজিত থেকে জীবিকা অর্জনের প্রবল ইচ্ছা শক্তি। যেহেতু দেশে চাকরির সুযােগ সীমিত এবং ইচ্ছা করলেই সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে এত অধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব নয় তাই একমাত্র বিকল্প হচ্ছে নিজের নিজের কর্মসংস্থান করা। বর্তমানের আগামী। প্রজন্মকে আত্মকর্মসংস্থানে উদ্বুদ্ধ করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। যেমন

১, আমাদের অনুপ্রাণিত হতে হবে যে, কোনাে পেশা বা কাজই ছােট ও অপমানের নয়।
২. স্ব স্ব এলাকায় আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে যারা স্বাবলম্বী ও সফল হয়েছে তাদেরকে বিদ্যালয়ে এনে আমাদেরকে তাদের জীবনকাহিনী শােনতে হবে।
৩. স্ব স্ব এলাকার আত্মকর্মসংস্থানের উপযুক্ত ক্ষেত্রগুলাের তালিকা প্রণয়ন করে বিদ্যালয় ও ইউনিয়ন পরিষদের দেয়ালে প্রচারের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
৪. বিদ্যালয় বা কলেজ থেকে যে সকল শিক্ষার্থী ঝরে পড়ে কিংবা নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসার সুযােগ পায় না তাদেরকে । বিভিন্ন উপযুক্ত ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ ও ঋণপ্রদানে ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষাক্রমে বৃক্তিমূলক, কারিগরি ও কর্মমুখী শিক্ষাকে পর্যাপ্তভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।।
৬. আত্মকর্মসংস্থানকে সামনে রেখ যুব উন্নয়ন ব্যাংক ও শিক্ষা ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে সহজ শর্তে ঋণপ্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।

আত্মকর্মসংস্থানের গুরুত্ব

চট্টগ্রামের হামিদ সাহেব স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাশ করেও যােগ্যতামাফিক কোনাে চাকরি পায় নি। বেশ কিছু দিন বেকার থাকার পর তিনি স্থানীয় যুব উন্নয়ন কার্যালয় থেকে কম্পিউটার বিষয়ে একটি প্রশিক্ষণ নেওয়ার, শিদ্ধান্ত নেন। প্রশিক্ষণ শেষে তার পার্শবর্তী একটি বাজারের মধ্যে সে একটি কম্পিউটার। হাবের দোকান দেন। প্রতিনিয়ত তার দোকানে এখন ক্রেতা/কাস্টমার থাকে। মাসে তার আয় প্রায় ৩০,০০০ টাকা। লাভের টাকা পেয়ে তার আগ্রহ বহুগুণে বেড়ে গেল। এরপর তিনি ঢাকায় একটি কম্পিউটার মেলায় তার কয়েকটি এক্সেসরিজ নিয়ে একটি স্টল দেন। কঠোর পরিশ্রম আর সুযােগের সঠিক ব্যবহারের কারণে তার ব্যবসায় ৫ বছরে অনেক বড় আকার ধারণ করে। তিনি সম্প্রতি তার জেলায় একজন স্বনামধন্য কম্পিউটার স্পেশালিষ্ট। পুরস্কার। গ্রহণকালে তিনি আগত সবাইকে আত্মকর্মসংস্থানের নিম্নোক্ত প্রয়ােজনীয়তা সম্পর্কে অবগত করেন
১. কর্মসংস্থানের প্রধান উৎস সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে শ্রমজীবী ও চাকরিজীবী লােকের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।
২. অন্যান্য পেশায় আয়ের সম্ভাবনা সীমিত। কিন্তু আত্মকর্মসংস্থান থেকে প্রাপ্ত আয় প্রথমদিকে সীমিত ও অনিশ্চিত হলেও পরবর্তীতে এ পেশা থেকে আয় বৃদ্ধির সম্ভাবনা অসীম।
৩. বর্তমানে আত্মকর্মসংস্থানের আওতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আগের তুলনায় বর্তমানে আত্মকর্মসংস্থানে নিয়ােজিত ব্যক্তিদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে।
৪, আত্মকর্মসংস্থানের সবচেয়ে বড় মূলধন হলাে নিজের ক্ষমতা। কর্ম সম্পাদনের জন্য যে যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল প্রয়ােজন তার আত্মকর্মসংস্থান করাও অনেকটা সহজ।
৫. আত্মকর্মসংস্থান একটি স্বাধীন পেশা। আর এ ব্যবসায় যেহেতু অনেক সময় নিজের বাড়িতে বা জমিতে করা যায় যেহেতু আলাদা খরচ হয় না।
৬, আত্মকর্মসংস্থানে নিয়ােজিত থাকলে তরুণ সমাজ নানা সমাজ বিরােধী কাজে লিপ্ত না থেকে সমাজ ও দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবে।
৭. আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে শহরমুখী জনস্রোত নিয়ন্ত্রণ ও গ্রামীণ সমাজ ও অর্থনীতির উন্নয়ন নিশ্চিত করা যায়।
৮. আত্মকর্মসংস্থানের মানসিকতা যুবসমাজকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে এবং স্বেচ্ছামূলক কাজে উৎসাহিত করে।
৯. আত্মকর্মসংস্থানের জন্য বয়স কোনাে সমস্যা নয়। এর মাধ্যমে যে কোনাে বয়সের মানুষ তার দক্ষতা অনুযায়ী অর্থ উপার্জন করতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *