এসএসসি ২০২১ ব্যবসায় উদ্যোগ এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২য় সপ্তাহ

এসএসসি ২০২১ ব্যবসায় উদ্যোগ এ্যাসাইনমেন্ট ২য় সপ্তাহ

বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যবসায় উদ্যোগে ভূমিকা নিরূপণ

এসএসসি ২০২১ ব্যবসায় উদ্যোগ এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২য় সপ্তাহ

শিরােনাম: ব্যবসায় উদ্যোগ ও উদ্যোক্তা

উদ্যোগ ও ব্যবসায় উদ্যোগের ধারণাঃ

যেকোনাে ব্যবসায়ও কোনাে একজন ব্যক্তি বা কয়েকজনের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফসল। একটি ব্যবসায় স্থাপনের ধারণা চিহ্নিতকরণ থেকে শুরু করে ব্যবসায়টি স্থাপন ও সফলভাবে পরিচালনাই ব্যবসায় উদ্যোগ। বিশদভাবে বলতে গেলে, ব্যবসায় উদ্যোগ বলতে বােঝায় লাভবান হওয়ার আশায় লােকসানের সম্ভাবনা জেনেও ঝুঁকি নিয়ে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠার জন্য দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাওয়া ও সফলভাবে ব্যবসায় পরিচালনা করা।

ব্যবসায় উদ্যোগ (Entrepreneurship) এবং ব্যবসায় উদ্যোক্তা (Entrepreneur) শব্দ দুটি একটি অন্যটির সাথে জড়িত। যিনি ব্যবসায় উদ্যোগ গ্রহণ করেন তিনিই ব্যবসায় উদ্যোক্তা। আমেরিকার ফোর্ড কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা হেনরি ফোর্ড, জাপানের ইলেকট্রনিক পণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ম্যাটসুসিটা কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা কনােকে ম্যাটসুসিটা পৃথিবী বিখ্যাত শিল্পোদ্যোক্তা ছিলেন। পরিশেষে বলা যায় যে, কোন কাজের কর্মপ্রচেষ্টাই উদ্যোগ। উদ্যোগ যেকোন বিষয়েই হতে পারে। আর ব্যবসায় উদ্যোগ বলতে বােঝায় লাভবান হওয়ার আশায় লােকসানের সম্ভাবনা জেনে ও ঝুঁকি নিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠার জন্য দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাওয়া ও সফলভাবে ব্যবসা পরিচালনা করা।


ব্যবসায় উদ্যোগ গড়ে উঠার অনুকূল পরিবেশের ধারণাঃ

আমাদের দেশে মেধাশক্তির খুব বেশি ঘাটতি নেই। শুধুমাত্র অনুকূল পরিবেশের অভাবে আমাদের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। ব্যবসায় উদ্যোগ গড়ে উঠার জন্য।যেসকল অনুকূল পরিবেশ থাকা উচিতঃ

ক) আর্থ-সামাজিক স্থিতিশীলতা:
অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা যেমন ব্যবসায় উদ্যোগের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে, তেমনি অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা ব্যবসায় উদ্যোগের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।

খ) উন্নত অবকাঠামােগত উপাদান: ব্যবসায় পরিচালনার জন্য আনুষঙ্গিক কিছু সুযােগ সুবিধা, যেমন বিদ্যুৎ, গ্যাস ও যাতায়াত ব্যবস্থা দরকার। ব্যবসায়ের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির জন্য এই সকল উপাদান থাকা বাঞ্চনীয়।

গ) প্রশিক্ষণের সুযােগ: প্রশিক্ষণের অভাবে অনেক সময় সুযােগ থাকা সত্ত্বেও সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয় না। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ব্যবসায়ের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা সম্ভব।

ঘ) অনুকূল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি: আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনুকূল থাকলে ব্যবসায় স্থাপন ও পরিচালনা সহজ হয়। অন্যদিকে অস্থিতিশীল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ব্যবসায় স্থাপন ও পরিচালনার ক্ষেত্রে মারাত্মক হুমকির সৃষ্টি করে।

ঙ) পর্যাপ্ত পুঁজির প্রাপ্যতা: যেকোনাে ব্যবসায় উদ্যোগ সফলভাবে বাস্তবায়ন করার জন্য প্রয়ােজন পর্যাপ্ত পরিমাণ পুঁজি বা মূলধন। চ) সরকারি হস্তক্ষেপ: সরকারি পৃষ্ঠপােষকতার মাধ্যমে দেশের ব্যবসায় উদ্যোগের আরও সম্প্রসারণ ও সমৃদ্ধি সম্ভব। সরকারি বিভিন্ন সিদ্ধান্ত যেমন কর মওকুফ, স্বল্প বা বিনা সুদে মুলধন সরবরাহ ইত্যাদি ব্যবসায় উদ্যোগের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারবে।


ব্যবসায় উদ্যোগের বৈশিষ্ট্যঃ

ব্যবসায় উদ্যোগের ধারণা বিশ্লেষণ করলে যে সকল বৈশিষ্ট্য ও কার্যাবলী লক্ষ্য করা যায় তা হলাে:

 

১) এটি ব্যবসায় স্থাপনের কর্ম উদ্যোগ।

২) নতুন সম্পদ সৃষ্টি করা ও মূলধন গঠন করা।

৩) ঝুঁকি আছে জেনেও লাভের আশায় ব্যবসা পরিচালনা করা।

৪) নিজের জন্য কর্মসংস্থানের সুযােগ সৃষ্টি করা।

৫) সার্বিকবাবে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখা।

৬) ব্যবসা উদ্যোগের ফলাফল হল একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান।

৭) ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান সফলভাবে পরিচালনা করা।

৮) অন্যদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযােগ সৃষ্টি করা।

৯) ব্যবসায় উদ্যোগের জন্য একটি ফলাফল হলাে একটি পণ্য বা সেবা

১০) মুনাফার পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতা গ্রহণ করা। – দল।


আর্থ–সামাজিক উন্নয়নে ব্যবসায় উদ্যোগের গুরুত্বঃ


ব্যবসায় উদ্যোগের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যবসায় উদ্যোগের গুরুত্বসমূহ নিচে আলােকপাত করা হলাে:

ক) সম্পদের সঠিক ব্যবহার: ব্যবসায় উদ্যোগ আমাদের দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ ও কৃত্রিম সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করে থাকে। এছাড়া নতুন নতুন শিল্প স্থাপনের মাধ্যমে বিনিয়ােগ বৃদ্ধি করা এবং সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। নিশ্চিত করা সম্বব হয়ে

খ) কর্মসংস্থানের সুযােগসৃষ্টি:
আমাদের দেশে সরকারের পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের মাধ্যমেও বিভিন্ন শিল্প কারখানা স্থাপন, পরিচালনা ও সম্প্রসারণ হয়ে থাকে। এর মাধ্যমে নিত্যনতুন কর্মসংস্থানের সুযােগ সৃষ্টি হয় যা বেকার সমস্যা দূর করতে উল্লেখযােগ্য ভূমিকা রাখে।

গ) দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি: বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। আমাদের এই বিশাল জনসংখ্যাই আমাদের সম্পদ হতে পারে। কারণ ব্যবসায় উদ্যোক্তা দেশের অদক্ষ জনগােষ্ঠিকে উৎপাদনশীল কাজে নিয়ােজিত করে দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তর করতে পারে।

ঘ) জাতীয় উৎপাদন ও আয় বৃদ্ধি:
ব্যবসায় উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের জাতীয় আয় বৃদ্ধি পায়। ফলে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত জাতীয় আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়।

ঙ) পরনির্ভরশীলতা দূরীকরণ: ব্যবসায় উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা আমাদের পরনির্ভরশীলতা অনেকাংশে হ্রাস করতে পারি। ব্যবসায় উদ্যোগের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা একদিন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারব।

পরিশেষে বলা যায় যে, উপরােক্ত কার্যাবলিগুলাে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যবসায় উদ্যোগের গুরুত্ব অনেকাংশে বেশি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *