সপ্তম শ্রেণীর বাংলা এ্যাসাইনমেন্ট ৫ম সপ্তাহ ২০২১
সপ্তম শ্রেণীর বাংলা এ্যাসাইনমেন্ট ৫ম সপ্তাহ ২০২১ উত্তর
ক্রম |
শ্রমজীবির নাম |
সমাজে তাদের অবদান |
তাদের কিভাবে মূল্যয়ন করব |
১ |
কুলি |
কুলিরা রেলস্টেশনে যাত্রীদের মালামাল নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে দেয়। কুলিরা বাস স্টেশন কিংবা নােঘাটে যাত্রী কিংবা পরিবহন মামগ্রী উঠা নামানাের কাজ করে থাকে বিভিন্ন বাণিজ্যিক পণ্য পরিবহনের কাজও কুলিরা থাকেন । এছাড়াও তাদেরকে ভূ–গর্ভস্থ বিভিন্ন খনি হতে মালামাল উঠানাের কাজ করতে দেখা যায় ।
|
আবহমান কাল থেকে সারা বিশ্বের সব সৃষ্টির নির্মাতা হলো শ্রমিক, কর্মচারী ও মেহনতি মানুষ। যুগ যুগ ধরে কুলি – মজুরের মত লক্ষ কোটি শ্রমজীবী মানুষের হাত ধরে গড়ে উঠেছে মানব সভ্যতা । কুলি তিনি যিনি তার অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে আয় করছেন । শ্রদ্ধার সাথে, বিনম্রতার সাথে, নিজ নিজ দেশের প্রগতির জন্য কাজ করে যাচ্ছেন । তারাই আমাদের ভারী মালামাল ও পণ্যসমূহ এক স্থান হতে অন্য স্থানে পরিবহন করে। তাদের শ্রম দিয়ে আমাদের অর্থনীতির বুনিয়াদ সৃষ্টি করছি। কিন্তু ধীরে ধীরে শ্রমিক শব্দটিকেও আমরা নিম্নপর্যায়ের নিহিত অর্থে নিয়ে। গেছি। আধুনিক যুগের ক্রীতদাস পর্যায়ে বছরের পর বছর বিভিন্ন স্টেশনে আমাদের লাগেজের ভার বহন করে নিয়ে গিয়েছে এরী । কুলি –মজুরদের শ্রম ছাড়া কোন কিছুই উৎপাদিত হতে পারে না । দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে শ্রমজীবী মানুষের মেধা ও পরিশ্রমের অবদান ছাড়া কিছুই করা সম্ভব নয় । কুলি মজুর দের আমরা কখনাে ছােট চোখে দেখবাে না । কারণ আমাদের প্রয়ােজনে তারাই কিন্তু এগিয়ে আসেন । তারা না থাকলে আমাদের ভারি ভারি মালামালগুলাে কে পৌঁছে দিত? |
২ |
রাজমিস্ত্রি
|
রাজমিস্ত্রি ইট, সিমেন্ট, বালু, লােহার রড ইত্যাদি দিয়ে ঘর – বাড়ি তৈরি করেন । একজন রাজমিস্ত্রি কোন নির্মাণ কাজের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তার সহযােগীদের সাথে মিলে সম্পন্ন করেন। পাইলিং, ভবনের অবকাঠামাে দাঁড় করানাে, ছাদ ঢালাই, প্লাম্বিংসহ কোনাে অবকাঠামাের অধিকাংশ কাজ একজন রাজমিস্ত্রি করে থাকেন। তাছাড়াও কার্লভাট তৈরি থেকে শুরু করে সীমানা প্রাচীর তৈরি,গুদাম ঘর তৈরি প্রভৃতি কাজ রাজমিস্ত্রি করে থাকেন।
|
বিশ্বে মানবসভ্যতা গড়ে উঠেছে মানুষের শ্রমের বিনিময়ে । একটি দেশের উন্নয়নের অন্তরালে থাকে শ্রমিক – মজুরদের অক্লান্ত পরিশ্রম , ব্যথা বেদনা । কিন্তু সে অনুযায়ী শ্রমিকদের সুযােগ সুবিধা বাড়ছে না । যাদের ঘামে একটি একটি ইট সাজিয়ে বড়াে বড়াে ইমারত সদৃশ দেশ এগিয়ে যাচ্ছে তাদের যথাযথ সম্মান দেওয়া আবশ্যক। তাদের তৈরী করা ঘরেই আমরা শান্তিতে ঘুমাতে পারছি। এ সকল শ্রমজীবী মেহনতি মানুষ হচ্ছে উৎপাদন, শিল্পােন্নয়ন , তথা অর্থনৈতিক উন্নয়নের অপরিহার্য উপাদান, যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের মধ্যে নিহিত থাকে দেশের সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ। আমাদের চারপাশে এত সুন্দর সুন্দর দালান কোঠা সৃষ্টি হয়েছে শুধুমাত্র এই রাজমিস্ত্রিদের কল্যানেই। তাদের হাতের পরশে গড়ে উঠেছে এত সুন্দর সুন্দর ইমারত । তাই আমাদের উচিত তাদেরকে সম্মান দেওয়া, তাদের এই কাজটাকে আরাে বেশি সম্মান দেওয়া এবং তাদেরকে ছােট চোখে না দেখা । |
৩ |
কামার |
কামার একটি প্রাচীন পেশা যার কাজ লােহার জিনিসপত্র তৈরি করা । গৃহস্থালি এবং কৃষিকাজে ব্যবহৃত অধিকাংশ লেহজাত যন্ত্রপাতি কামাররা প্রস্তুত করেন । এগুলাের মধ্যে উল্লেখযােগ্য হচ্ছে দা, বটি, শাবল, কুড়াল, ছুরি ইত্যাদি । তাছাড়াও কোরবানি ঈদে ব্যবহৃত দা – ছুরি তৈরি এবং তাতে শাণ দেওয়া কামাররাই করে থাকেন ।
|
বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। তাদের কায়িক শ্রমে তৈরি হয় কৃষি ও শিল্প কারখানার নানান সামগ্রী । |
৪ |
মুচি |
মুচি জুতা তৈরি এবং জুতা মেরামতের কাজ করেন । ত্রুটিযুক্ত এবং পুরনাে জুতা, মেন্ডেল মেরামত করে আবার রং মাখিয়ে পুরাতন জুতায় চাকচিক্য সৃষ্টি করার কাজও করে থাকেন । মুচির চামার কর্তৃক সংগৃহীত চামড়া ব্যবহার উপযােগী করে তােলেন অথবা বিক্রির জন্য ট্যানারিতে নিয়ে যান।
|
যাদের ত্যাগে আমরা সভ্য সমাজে মর্যাদা নিয়ে পথ চলতে পারি মুচি সম্প্রদায় তাদের মধ্যে অন্যতম । কিন্তু আমাদের সমাজ এ মুচি শব্দটিকে খুবই অসম্মানজনক মনে করা হয় । অর্থনৈতিক বা সামাজিক প্রেক্ষাপট যা –ই থাকুক , মুচির পেশায় নিয়ােজিত ব্যক্তির এখনও নীচুশ্রেণির মানুষ বলেই গণ্য। আমাদের মর্যাদা বাড়াতে যাঁরা রাস্তায় বসে জীবন কাটিয়ে দেন সেই সব শ্রমজীবী দলিত পরিবারগুলােকে নিচু চোখে দেখে আলাদা করে রাখি আমরা। আমাদের উচিত সৎ, । পরিশ্রমী ও সংগ্রামী মানুষ হিসেবে মুচিকে সম্মানের চোখে দেখা । শ্রমজীবী মেহনতি মানুষ হচ্ছে উৎপাদন, শিল্পােন্নয়ন, তথা অর্থনৈতিক উন্নয়নের অপরিহার্য উপাদান, যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের মধ্যে নিহিত থাকে দেশের সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ। আমাদের সমাজে সকল ধরনের শ্রমজীবী মানুষের অনেক অবদান রয়েছে। আমরা কোনােভাবেই তাদের এ অবদানকে অস্বীকার করতে পারব না। |