প্রার্থী কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর- পিডিএফ

প্রার্থী কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন

এই পোস্টে প্রার্থী কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর দেওয়া আছে। এই প্রশ্ন গুলো মূল বইয়ে পাবেন না। তাই আপনাকে গাইড ফলো করতে হবে। যাদের কাছে গাইড নেই তারা এই পোস্ট টি পড়ুন। এখান থেকেই সব সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর সহ দেখতে পারবেন।

প্রার্থী কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন

সৃজনশীল ১ঃ  

দেখিনু সেদিন রেলে
কুলি বলে এক বাবু সাব
তারে ঠেলে দিল নিচে ফেলে।
চোখ ফেটে এল জল
এমনি করিয়া কী জগৎ জুড়িয়া
মার খাবে দুর্বল?

ক. সুকান্ত ভট্টাচার্যের জন্ম সাল কত?
খ. আমরা প্রত্যেকেই এক একটা জ্বলন্ত অগ্নিপিন্ডে পরিণত হব-বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
গ. কবিতাংশের প্রথম তিন চরণেপ্রার্থী কবিতার যে দিকটির সাথে বৈসাদৃশ্য রয়েছে তার বর্ণনা দাও।
ঘ.ভাবের উক্ত বৈসাদৃশ্যকে সাদৃশ্যপূর্ণ করতেপ্রার্থী কবিতায় সুকান্ত ভট্টাচার্যের অভিমত বিশেস্নষণ কর।

সৃজনশীল ২ঃ 

প্রচ- শীতের রাত্র কমলাপুর রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা গেল কিছু অসহায় ছিন্নমূল শিশু পল্টাফর্মের উপরে জড়সড় হয়ে শুয়ে আছে। ছিন্ন বস্ত্র গায়ে দিয়ে তারা শীত নিবারণের বৃথা চেষ্টা করছে।

ক. সকালের এক টুকরো রোদ্দুর কীসের চেয়ে দামি?
খ. প্রার্থী কবিতায়রোদ্দুরের তৃষ্ণা বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকটিতে বর্ণিত দিকটিপ্রার্থী কবিতার যে দিকের সাথে সংগতিপূর্ণ তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ.“উদ্দীপক ওপ্রার্থী কবিতায় বর্ণিত শ্রেণির ভাগ্য উন্নয়নই ছিল সুকান্ত ভট্টাচার্যের উদ্দেশ্য”- বিশেস্নষণ কর।

প্রার্থী কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

উত্তর ১ঃ 

ক. সুকান্ত ভট্টাচার্য ১৯২৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন।

খ. আর্তমানবতার কল্যাণে সব মানুষ অনুপ্রাণিত হবে- উক্তিটিতে কবি একথাটিই বোঝাতে চেয়েছেন।সূর্যের আলো ও তাপ ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সবাই সমানভাবে উপভোগ করতে পারে। দরিদ্র মানুষদের জন্য সূর্যের তাপ শীতকালে আশীর্বাদ হয়ে আসে। কবির আশা, সূর্যের এ পরোপকারী মনোভাব আমাদের মাঝে সঞ্চালিত হবে- আমরা সবাই সূর্যের মতো অন্যের কল্যাণে নিবেদিত এক-একটি জ্বলন্ত অগ্নিপিন্ডে পরিণত হব।

গ.

কবিতাংশের প্রথম তিন চরণে অসহায় খেটে খাওয়া মানুষের প্রতি নির্যাতনের চিত্র ফুটে উঠলেও এসব মানুষের মুক্তির সংকল্পের কথা প্রকাশ পায়নি, যা কবিতায় প্রকাশিত হয়েছে। এখানেই কবিতাংশের প্রথম তিন চরণের সঙ্গেপ্রার্থী কবিতার বৈসাদৃশ্য।

প্রার্থী কবিতায় সমাজের অসহায় মানুষের প্রতি কবির প্রগাঢ় মমত্ববোধের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।সূর্য নামক রূপকের অন্তরালে কবি এমনিই এক শক্তিময় চেতনার কামনা করেছেন, যা আমাদের সবার মধ্যে নতুন প্রাণ সঞ্চার করবে। তার শক্তিতে অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা জড়তা মুক্ত হব এবং পৃথিবী থেকে দূর করব সব শোষণ, বঞ্চনা আর অভাব-অনটন।

কিন্তু উদ্দীপকের কবিতাংশের প্রথম তিন চরণেপ্রার্থী কবিতার বিপরীতমুখী ভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। এখানে জনৈক বাবু সাবকে কুলি বলে এক দরিদ্র মানুষকে নিচে ঠেলে ফেলে দিতে দেখা যায়। এর মাধ্যমে অসহায় মানুষের প্রতি মমত্ববোধের পরিবর্তে, অত্যাচার-নির্যাতন ও মিথ্যা অহমিকার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। অর্থাৎ কবিতায় কবি যাদেরকে উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য উদ্দীপকে দেখা যায় সেসব মানুষই অসহায়দেরকে নির্যাতন করছে। অর্থাৎ কবিতাংশের প্রথম তিন চরণের সাথেপ্রার্থী কবিতার অসহায়ের প্রতি মমত্ববোধের দিকটির বৈসাদৃশ্য রয়েছে।

ঘ.

উদ্দীপকে যে অমানবিকবোধের প্রকাশ ঘটেছে কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যপ্রার্থী কবিতায় তা দূর করার অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

উদ্দীপকের কবি কুলির অসহায় অবস্থায় কষ্ট পেয়েছেন। তিনি যদি এর প্রতিকারের ভাবনাও প্রকাশ করতেন, তাহলে কবি সুকান্তের অভিমতের সঙ্গে চমৎকার এক সাদৃশ্য গড়ে উঠত। অভাবী ও দুঃখী মানুষদের জন্য সূর্যের অফুরন্ত তাপের প্রত্যাশা করেছেন কবি। কারণ তিনি তাদের কষ্ট হৃদয় দিয়ে অনুভব করেছেন। উদ্দীপকের কবিও তেমনি কুলির দুর্দশায় চোখের জল ফেলেছেন। এদিক থেকে তাদের অনুভূতির আংশিক সাদৃশ রয়েছে।

উদ্দীপকের কবিতায় অসহায়ের জন্য সহমর্মিতা প্রকাশ পেলেও আমাদেরকে সেখানেই থেমে থাকলে চলবে না। তাদের দুঃখ দূর করার দৃঢ় সংকল্পে নিজেকে তৈরি করার কথা কবি সুকান্ত তারপ্রার্থী কবিতায় ব্যক্ত করেছেন।

উত্তর ২ঃ 

ক. সকালের এক টুকরো রোদ্দুর সোনার চেয়ে দামি।

খ. প্রার্থী কবিতায়রোদ্দুরের তৃষ্ণা বলতে শীতের সকালে রোদের প্রতি মানুষের আকাক্সক্ষাকে বোঝানো হয়েছে।শীতের সকালের রোদ অনেক প্রতীক্ষতি। আমাদের সমাজে অনেক দরিদ্র মানুষ বাস করে। এদের বস্ত্র ও আশ্রয়ের অভাব। বিশেষ করে যাদের গরম কাপড়ের খুব অভাব তারা রাতে খড়কুটো জ্বালিয়ে এক টুকরো কাপড় দিয়ে কান ঢেকে বহু কষ্টে শীত আটকায়। তাই শীতার্ত মানুষ এক টুকরো রোদ প্রত্যাশা করে যা তাকে একটু উষ্ণতা দেবে।

গ.

উদ্দীপটিতে বর্ণিত দিকটিপ্রার্থী কবিতার দরিদ্র-অসহায় মানুষের শীত নিবারণের চেষ্টার সাথে সংগতিপূর্ণ।

প্রার্থী কবিতায় দরিদ্র, অসহায়, বঞ্চিত, অবহেলিত মানুষের কথা বর্ণিত হয়েছে; যারা দীন-দরিদ্র মানুষ। সামান্য শীত নিবারণের জন্য যারা নানা চেষ্টা করে। শেষে সব আশা ছেড়ে সূর্যের উত্তাপ প্রার্থনা করে। এ অসহায় মানুষগুলো অন্নহীন, বস্ত্রহীন, আশ্রয়হীন।

উদ্দীপকেও একই বিষয়বস্তুর প্রতিফলন ঘটেছে। এসব মানুষ দীন-দরিদ্র বলে আশ্রয় নিয়েছে কমলাপুর রেলস্টেশনে। ছিন্নমূল এ মানুষগুলো পল্টাফর্মে জড়সড় হয়ে বসে আছে। ছিন্নবস্ত্র গায়ে দিয়ে শীত নিবারণের বৃথা চেষ্টা করছে। অর্থাৎ শীতে কষ্ট ভোগের দিক দিয়ে উদ্দীপকের বিষয়টিপ্রার্থী কবিতায় শীত বস্ত্রহীন শীতার্ত মানুষের প্রতিচ্ছবি।

ঘ.

উদ্দীপক ওপ্রার্থী কবিতায় বর্ণিত শ্রেণির ভাগ্য উন্নয়নই ছিল সুকান্ত ভট্টাচার্যের উদ্দেশ্যই”- এ মন্তব্যটি সঠিক।

প্রার্থী কবিতায়, কবির অসহায়, দরিদ্র মানুষের প্রতি গভীর মমত্ব প্রকাশ পেয়েছে। আমাদের সমাজের এমন কিছু মানুষ আছে, যারা আশ্রয়হীন ও বস্ত্রহীন। এ মানুষগুলো চির অবহেলিত। আমাদের সমাজে তারা শোষিত, যা কবির হৃদয়কে দারুণভাবে ব্যথিত করে তিনি এ বৈষম্য দূর করতে চান। সাম্যভিত্তিক সমাজ গড়তে চান। যেখানে এ মানুষগুলো পাবে তাদের প্রাপ্য অধিকার।

উদ্দীপকে অসহায়-দরিদ্র মানুষের কথা তুলে ধরা হয়েছে। এ মানুষগুলো আশ্রয়হীন। তাই তারা থাকে কমলাপুর রেলস্টেশনে। শীত নিবারণের সামান্য বস্ত্রও তাদের নেই। তারাও আমাদের সমাজের মানুষ। তাই তাদের এমন হীন অবস্থা কখনই কাম্য নয়।

উদ্দীপকে যেসব অসহায় মানুষের কথা বলা হয়েছে, কবিতায় তাদের প্রতি গভীর মমত্ব প্রকাশ পেয়েছে। কবি এদের নিয়ে সাম্যভিত্তিক সমাজ গড়তে চান।

শেষ কথা

আশা করছি এই পোস্ট টি আপনাদের অনেক ভালোলেগছে এবং এই পোস্ট থেকেপ্রার্থী কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর সংগ্রহ করতে পেরেছেন। এই রকম শিক্ষামূলক আরও পোস্ট পেতে আমার সাথেই থাকুন। অষ্টম শ্রেণির বাংলা ১ম পত্রের অনেক পোস্ট এই ওয়েবসাইটে শেয়ার করা হয়েছে। পোস্ট টি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

আরও দেখুনঃ

প্রার্থী কবিতা- সুকান্ত ভট্টাচার্য। অষ্টম শ্রেণি বাংলা ১ম পত্র

জাগো তবে অরণ্য কন্যারা- সুফিয়া কামাল। ৮ম শ্রেণি