এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম সৃজনশীল প্রশ্ন

এই পোস্ট থেকে এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর সংগ্রহ করতে পারবেন। তাই সম্পূর্ণ পোস্ট টি পড়ুন। এই গল্পের লেখক শেখ মুজিবুর রহমান।‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’- জয় বাংলা। সত্যিই এ বজ্র কণ্ঠস্বরের ওপরে ভিত্তি করেই রচিত হয়েছিল বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের। যে ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আজও মাথা উঁচু করে আছে আমাদের জন্মভূমি বাংলাদেশ।

১৯৪৭ সালে ভারত উপমহাদেশের রাজনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন সূচিত হয়। যার ফলে ভারত উপমহাদেশ বিভক্ত হয়ে ভারত ও পাকিস্তান নামক দুটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্ম হয়।আমাদের পুর্ব বাংলা পশ্চিম পাকিস্তানের শাসনাধীনে চলে যায় এবং পুর্ব বাংলা পুর্ব পাকিস্তান নামে পরিচিতি পায়। যে আশা আকাঙ্খা নিয়ে পূর্ব বাংলার বাংলাভাষী জনগন পশ্চিম পাকিস্তানের সংগে মিলিত হয় , সেই আশা আকাঙ্খা সামান্য সময়ের ব্যবধানেই ভুলুষ্ঠিত হয়।

এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম সৃজনশীল প্রশ্ন

এই অংশে এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম সৃজনশীল প্রশ্ন দেওয়া আছে। এই প্রশ্ন মূল বইয়ে দেওয়া নেই। তাই এগুলো এই পোস্ট থেকে সংগ্রহ করবেন অথবা এখান থেকে পড়ে নিবেন।

সৃজনশীল ১ঃ  

প্রণ ইংরেজ শাসকদের কাছ থেকে উপমহাদেশের মুক্তির জন্য মহাত্মা গান্ধী একসময় এ দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেন। নানাভাবে তাদের মাঝে দেশপ্রেম জাগ্রত করার চেষ্টা করেন। এরই ধারাবাহিক ফসল স্বদেশি আন্দোলন, অহিংস আন্দোলন ইত্যাদি। কালের বিবর্তনে জন্ম হয় পাকিস্তান ও ভারত নামক দুটি পৃথক রাষ্ট্রের এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশের।

ক. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম কত তারিখে?
খ। ৭ই মার্চের ভাষণকে ঐতিহাসিক ভাষণ বলার কারণ কী?
গ. উদ্দীপকটিতে এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ ভাষণের কোন দিকটি ফুটে উঠেছে, তা ব্যাখ্যা করাে।
ঘ. “উদ্দীপকটি যেন, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম ভাষণটির মূলভাবকে ধারণ করে আছে”- মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার করাে।

সৃজনশীল ২ঃ 

বাংলাদেশ একসময় স্বাধীন ছিল না। পাকিস্তানিরা এ দেশের মানুষকে শাসনের নামে শােষণ করত। রাজনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সব অধিকার থেকে বাঙালিরা ছিল বঞ্চিত। গণমানুষের মুক্তির জন্য দীর্ঘ সংগ্রামের পর বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন যা ৭ই মার্চের ভাষণ নামে পরিচিত।

ক. কবে আইয়ুব খানের পতন হয়?
খ. রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব’ উক্তিটি ব্যাখ্যা করাে।
গ. উদ্দীপকের ভাষণ এ দেশের সর্বস্তরের জনসাধারণের মুক্তির আহ্বান’— কথাটি ব্যাখ্যা করাে।
ঘ. ৭ই মার্চের ভাষণ মহান মুক্তিযুদ্ধের পথনির্দেশক, অকাট্য দলিল’— বক্তব্যটি মূল্যায়ন করাে।

সৃজনশীল ৩ঃ 

অহিংসার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় গণতন্ত্র যেখানে সবারই সমান স্বাধীনতা থাকে। যেখানে প্রত্যেকেই হবে তার জগৎ-নিয়ন্তা। এটাই সেই গণতন্ত্র যাতে আপনাদের আজ অংশগ্রহণ করতে আহ্বান জানাচ্ছি। একদিন আপনারা বুঝতে পারবেন, হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে পার্থক্য ভুলে যাওয়া এবং আপনারা আপনাদের শুধু মানুষ মনে করবেন এবং সবাই একত্র হয়ে স্বাধীনতার আন্দোলনে ব্রতী হবেন।

ক. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম কত তারিখে?
খ. বাংলার ইতিহাস এদেশের মানুষের রক্ত দিয়ে রাজপথ রঞ্জিত করার ইতিহাস’ বলতে কী বােঝানাে হয়েছে?
গ. উদ্দীপকে মহাত্মা গান্ধীর ভাষণে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা করাে।
ঘ. ‘উদ্দীপকটি এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’-ভাষণটির সম্পূর্ণভাব ধারণ করে—’মন্তব্যটির যথার্থতা মূল্যায়ন করাে।

এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

এখান থেকে উপরের দেওয়া সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর সংগ্রহ করে নিন। এই অংশে সকল প্রশ্নের সঠিক উত্তর গুলো দেওয়া হয়েছে।

উত্তর ১ঃ 

ক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ই মার্চ।

খ। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ বলেই এটিকে ঐতিহাসিক ভাষণ বলা হয়েছে।৭ই মার্চের ১৮ মিনিটের ভাষণের মধ্যে বাঙালি জাতির স্বাধীনতার বীজমন্ত্র লুকায়িত ছিল। বঙ্গবন্ধুর বজ্রকণ্ঠের তেজোদীপ্ত এ ভাষণই মানুষকে মুক্তিপাগল করে তুলেছিল। এরই প্রেক্ষিতে বাঙালি মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে এবং স্বাধীনতা অর্জন করে। তাই এ ভাষণটিকে ঐতিহাসিক ভাষণ ‘বলা হয়েছে।

গ।

উদ্দীপকটিতে এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ রচনায় প্রকাশিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেশের মানুষকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করার দিকটি ফুটে উঠেছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলার মানুষের কল্যাণচিন্তায় জীবন অতিবাহিত করেছেন। তিনি পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠীর অন্যায়অত্যাচারের বিরুদ্ধে সর্বদা সােচ্চার ছিলেন এবং তার বজ্রকণ্ঠের আহ্বানে সাড়া দিয়েই বাঙালি জাতি স্বাধীনতা অর্জন করে। এ ক্ষেত্রে তিনি জাতির মুক্তির দিকনির্দেশকের ভূমিকা পালন করেছেন।

উদ্দীপকে ভারতবর্ষের অবিসংবাদিত নেতা মহাত্মা গান্ধী সম্পর্কে বলা হয়েছে। তিনি বিদেশি অপশাসন থেকে জাতিকে মুক্তি প্রদানের লক্ষ্যে নিরন্তর কাজ করে গেছেন। তিনি স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। তার নেতৃত্বেই ভারতবর্ষে স্বাধীনতার জন্য অহিংস আন্দোলনের সূচনা হয় এবং পরিশেষে ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত হয় উপমহাদেশ। একইভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞার মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করেন। তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বেই অর্জিত হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা। অর্থাৎ উদ্দীপকের মহাত্মা গান্ধী এবং আলােচ্য রচনার বঙ্গবন্ধু উভয়েই দেশের মানুষকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিলেন।

ঘ।

“উদ্দীপকটি যেন ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ ভাষণটির মূলভাবকে ধারণ করে আছে”- মন্তব্যটি যথার্থ ।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ই মার্চের ভাষণে বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করেন এবং পাকিস্তানি অপশাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানাের আহ্বান জানান। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে দেশবাসী মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয় এবং ছিনিয়ে আনে কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা।

উদ্দীপকের মহাত্মা গান্ধী একজন দেশদরদি মহান নেতা। ভারতবর্ষকে ব্রিটিশ অপশাসন থেকে মুক্ত করার অভিপ্রায়ে তিনি নেতৃত্বের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। তার ডাকে সাড়া দিয়ে ভারতবাসী ব্রিটিশ অপশাসনের বিরুদ্ধে সংগঠিত হয়। শুধু তা-ই নয়, স্বদেশি আন্দোলন, অহিংস আন্দোলন তার প্রচেষ্টারই ধারাবাহিক ফল।

এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ রচনায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের চিত্র ফুটে উঠেছে। পরাধীন জাতিকে মুক্তির স্বাদ দিতে তিনি মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন। তাঁর উদাত্ত আহ্বানে উজ্জীবিত হয়ে পরাধীন জাতি স্বাধীনতাকামী হয়ে ওঠে। বঙ্গবন্ধুর যােগ্য নেতৃত্বেই বাঙালিরা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে দেশকে স্বাধীন করে। আলােচ্য উদ্দীপকটিতে মহাত্মা গান্ধীর এমনই ভূমিকার কথা তুলে ধরা হয়েছে। সে বিবেচনায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

উত্তর ২ঃ 

ক। ১৯৬৯ সালে আইয়ুব খানের পতন হয়।

খ। আলােচ্য কথাটি দ্বারা স্বদেশ ও স্বাধীনতার জন্য বাঙালির বারবার আত্মত্যাগের বিষয়টি বােঝানাে হয়েছে।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ৭ই মার্চের ভাষণে, স্বদেশের জন্য বাঙালির রক্ত ঝরানাের ধারাবাহিক ইতিহাস টেনেছেন। তিনি বলেছেন, ২৩ বছরের করুণ ইতিহাস বাংলার অত্যাচারের, বাংলার মানুষের রক্তের ইতিহাস। ১৯৫২ সালে, ‘৫৮ সালে, ‘৬৬ সালে, ‘৬৯ সালে বাঙালি স্বাধিকারের জন্য রক্ত দিয়েছে। এভাবে দেশের জন্য, স্বাধীনতার জন্য বারবার আত্মত্যাগের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি আবার বলেছেন, ‘রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব। এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাল্লাহ।’ বঙ্গবন্ধুর এমন উক্তিতে মূলত স্বাধীনতার জন্য রক্তদানের শপথ উচ্চারিত হয়েছে।

গ।

উদ্দীপকে উল্লিখিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণটির মধ্যে বাঙালি জাতির মুক্তির দিকনির্দেশনা লুক্কায়িত ছিল।

বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণটি দীর্ঘকাল ধরে বাঙালিদের ওপর চলে আসা শশাষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে জাতিকে অনুপ্রাণিত করেছে। এ ভাষণের মাধ্যমেই তিনি জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে তাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে আহ্বান জানান। বাঙালির শেকল ভাঙার মন্ত্র উচ্চারিত হয়েছিল এই ভাষণের মধ্য দিয়েই।

উদ্দীপকে উল্লিখিত ৭ই মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু বাঙালিদের ওপর দীর্ঘ সময় ধরে চলা পাকিস্তানের শােষণ ও নিপীড়নের নানা দিক তুলে ধরেন। বঙ্গবন্ধুর সেই ৭ই মার্চের তেজোদীপ্ত ভাষণ জনসাধারণকে স্বাধিকার আন্দোলনে উজ্জীবিত করে। তার বকণ্ঠে ধ্বনিত অগ্নিঝরা বক্তব্যে ও সঠিক দিকনির্দেশনায় এদেশের আপামর জনসাধারণ পাকিস্তানিদের অন্যায় আগ্রাসনকে রুখে দাঁড়ানোের সাহস পায়। শুধু তাই নয়, এ ভাষণে প্রদত্ত দিকনির্দেশনা অনুসরণ করেই এ দেশের মানুষ স্বাধীনতা লাভ করে। সে বিবেচনায় প্রশ্নোত্ত কথাটি যথার্থ অর্থবহ।

ঘ।

১৯৭১ সালের স্বাধীনতাসংগ্রামে মুক্তির জন্য বাঙালি জাতিকে উদ্বুদ্ধ করতে ৭ই মার্চের ভাষণ ছিল পথনির্দেশক, অকাট্য দলিল।

“এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ রচনায় ৭ই মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির ওপর পাকিস্তানি শাসকদের শােষণ ও নিপীড়নের নানা দিক তুলে ধরেন। পাশাপাশি এ-অত্যাচার থেকে তিনি বাঙালির মুক্তির পথনির্দেশ করেন। এ ভাষণের মাধ্যমেই বাংলার আপামর জনগণকে তিনি মুক্তি সংগ্রামের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে বলেন।

উদ্দীপকে পশ্চিম পাকিস্তানিরা বাঙালিদের সব অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছিল। সুদীর্ঘ সংগ্রামের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গণমানুষের মুক্তির লক্ষ্যে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন। তারই বজ্রকণ্ঠের আহ্বানে বাংলার লাখাে জনতা সেদিন স্বাধীনতাযুদ্ধে যাওয়ার অনুপ্রেরণা পেয়েছিল। এই ভাষণে সে দৃপ্ত প্রত্যয় ছিল।

“এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ রচনায় বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ ছিল সুচিন্তিত ও দিকনির্দেশনামূলক। ‘৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ‘৫৪-এর নির্বাচনে জয়লাভ করেও ক্ষমতা না পাওয়া, ‘৬৬-এর ছয় দফা আন্দোলনে পাকিস্তানি পুলিশের গুলিবর্ষণ ইত্যাদি দিক তিনি ভাষণে তুলে ধরেন।

এমন, অনাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তােলার দিকনির্দেশনা ছিল বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে। ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগের পর বাংলার অত্যাচারিত ও নিপীড়িত মানুষের পাশে দাড়িয়ে নেতৃত্ব দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ বিবেচনায় প্রশােত মন্তব্যটি যথাযথ ।

উত্তর ৩ঃ 

ক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ই মার্চ ।

খ। বাংলার ইতিহাস এদেশের মানুষের রক্ত দিয়ে রাজপথ রঞ্জিত করার ইতিহাস’- বলতে বাঙালির অধিকার আদায়ে আন্দোলন-সংগ্রামে রক্তদান ও আত্মদানের ইতিহাস বােঝানাে হয়েছে।

১৯৪৭ সালে ভারত উপমহাদেশ বিভক্ত হওয়ার পর থেকেই বাংলার জনগণ পশ্চিম পাকিস্তানিদের দ্বারা নানাভাবে শােষিত ও নির্যাতিত হয়েছে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করেও ক্ষমতায় না যাওয়া, ১৯৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলনে ছাত্রদের ওপর গুলি, ১৯৬৯এর গণঅভ্যুত্থানে হত্যা পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠীর অন্যায়-অত্যাচারকে নির্দেশ করে। তাদের অন্যায়-অত্যাচারকে ভয় না পেয়ে বাঙালি জাতি আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে নিজেদের অধিকার অর্জন করেছে। প্রশ্নোত উক্তিটির মাধ্যমে এ কথাই বােঝানাে হয়েছে।

গ।

উদ্দীপকে উল্লিখিত মহাত্মা গান্ধীর ভাষণে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও স্বাধিকার চেতনার দিকটি ফুটে উঠেছে।

বাঙালির মুক্তির লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। সেই ভাষণে তিনি পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠীর নির্যাতন ও শােষণ থেকে মুক্তির লক্ষ্যে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে বাঙালির জাতীয়তাবােধ ও স্বাধিকার চেতনাকে স্পষ্ট করে তােলেন।

উদ্দীপকে মহাত্মা গান্ধীর ভাষণে স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক অধিকারের কথা বলা হয়েছে। ভাষণের প্রথম অংশে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণে সবাইকে তিনি স্বাধীনতার জন্য একসঙ্গে আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। জাতি-ধর্ম-নির্বিশেষে এ দেশের সকল মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছেন। এক্ষেত্রে মহাত্মা গান্ধী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মনােভাব অভিন্ন। এদিক থেকে উদ্দীপকের মহাত্মা গান্ধীর ভাষণে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের অসাম্প্রদায়িক মনােভাবের দিকটিই ফুটে উঠেছে।

ঘ।

উদ্দীপকটি এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’- ভাষণটির সম্পূর্ণভাব ধারণ করে”- মন্তব্যটি যথার্থ ।

৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টার কথা ব্যক্ত করেছেন। এ ভাষণে তিনি বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য সবরকম ত্যাগ স্বীকার করার কথা বলেছেন। তার এ বক্তব্যই বাঙালি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের প্রেরণা যুগিয়েছিল।

উদ্দীপকে মহাত্মা গান্ধীর ভাষণে স্বাধীনতার আশাবাদ ব্যক্ত করার দিকটি ফুটে উঠেছে। এ ভাষণে তিনি স্বাধীনতা অর্জনে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং অহিংস আন্দোলনের প্রয়ােজনীয়তার কথা ব্যক্ত করেছেন। কেননা, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ব্যতীত বিদেশিদের অন্যায়-নির্যাতন থেকে দেশকে মুক্ত করা অসম্ভব। পশ্চিম পাকিস্তানিদের শাসন-শােষণ ও নির্যাতন থেকে দেশবাসীকে মুক্ত করার লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ই মার্চের ভাষণ দেন। সেই ভাষণে বাঙালির মুক্তির দৃঢ় শপথে তিনি উচ্চারণ করেন, ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ উদ্দীপকে মহাত্মা গান্ধীর ভাষণেও জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে দেশের সকল মানুষের জন্য গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান ধ্বনিত হয়েছে। হিন্দু-মুসলমান ভেদাভেদ ভুলে স্বাধীনতা আন্দোলনে সকলে একসঙ্গে মিলিত হবে একথাই ব্যক্ত করেছেন মহাত্মা গান্ধী।

সুতরাং বলা যায়, স্বাধীন বাঙালি জাতি ও সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ছিল দিকনির্দেশনামূলক যা উদ্দীপকে মহাত্মা গান্ধীর বক্তব্যেও প্রতিফলিত হয়েছে। অতএব, উদ্দীপকটি এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’— ভাষণটির সম্পূর্ণভাব ধারণ করে।

শেষ কথা

আশা করছি এই পোস্ট আপনাদের ভালোলেগেছে এবং এখান থেকে এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর PDF সংগ্রহ করতে পেরেছেন। এই রকম শিক্ষাসংক্রান্ত তথ্য পেতে আমার সাথেই থাকুন। এই ওয়েবসাইটে শিক্ষামূলক পোস্ট শেয়ার করা হয়।

আরও দেখুনঃ

তৈলচিত্রের ভূত সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর। পিডিএফ