বাংলা কবিতা বন্দনা- শাহ মুহম্মদ সগীর। বাংলা ১ম পত্র পিডিএফ

বাংলা কবিতা বন্দনা

এই পোস্টে বন্দনা কবিতাটি দেওয়া আছে। নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ১ম পত্রের গদ্যের একটি অংশ এই কবিতা। কবিতাটি লিখেছেন শাহ মুহম্মদ সগীর। এই পোস্টে বাংলা কবিতা বন্দনা সম্পূর্ণ দেওয়া আছে। পোস্টের নিচে কবিতাটি পিডিএফ ফাইলে শেয়ার করা হয়েছে। তো যারা পিডিএফ সংগ্রহ করতে চান তারা পোস্টের নিচে থেকে সংগ্রহ করে নিবেন। এখানে বন্দনা কবিতার পাঠ পরিচিতি ও লেখক পরিচিতি দেওয়া আছে।

বাংলা কবিতা বন্দনা

প্রথমে প্রণাম করি এক করতার।
যেই প্রভুর জীবদানে স্থাপিলা সংসার।।
দ্বিতীয়ে প্রণাম কঁরো মাও বাপ পাত্র।
যান দয়া হন্তে জন্ম হৈল বসুধায়।।
পিঁপড়ার ভয়ে মাও না থুইলা মাটিতে।
কোল দিয়া বুক দিয়া জগতে বিদিত।।
অশক্য আছিলুঁ দুর্বল ছাবাল
তান দয়া হন্তে হৈল এ ধড় বিশাল।।
না খাই খাওয়াএ পিতা না পরি পরাএ।
কত দুক্ষে একে একে বছর গোঞাএ।।
পিতাক নেহায় জিউ জীবন যৌবন।
কনে না সুধিব তান ধারক কাহন।।
ওস্তাদে প্রণাম করো পিতা হন্তে বাড়।
দোসর-জনম দিলা তিঁহ সে অাহ্মার।।
আহ্মা পুরাবাসী আছ জথ পৌরজন।
ইস্ট মিত্র আদি জথ সভাসদগগণ।
তান সভান পদে মোহার বহুল ভকতি।
সপুটে প্রণাম মোহর মনোরথ গতি।।
মুহম্মদ সগীর হীন বহোঁ পাপ ভার।
সভানক পদে দোয়া মাগোঁ বার বার।

বন্দনা কবিতার শব্দার্থ

  • বন্দনা – স্তুতি, প্রশংসা।
  • করোঁ – করি।
  • যান – যার।
  • হন্তে – হতে, থেকে।
  • বসুধায় – পৃথিবীতে।
  • থুইলা – রাখল।
  • অশক্য – অশক্ত, দুর্বল।
  • আছিলুঁ – ছিলাম।
  • মুই – আমি।
  • ছাবাল – ছাওয়াল, ছেলে, সন্তান।
  • গােঞাও – গুজরান করে, অতিবাহিত করে।
  • পিতাক – পিতাকে।
  • নেহায় – স্নেহে।
  • বিদিত – জানা।
  • জিউ – আয়ু জীবিত থাকা।
  • কনে – কখনও।
  • ধারক – ধারের, ঋণের।
  • কাহন – ষােলপণ, টাকা।
  • বাড় – বেশি।
  • দোসর – দ্বিতীয়।
  • পুরাবাসী – নগরবাসী।
  • আহ্মার – আমার।
  • মােহার – আমার।
  • মনােরথ – ইচ্ছা, অভিলাষ।
  • সপুটে – করজোড়ে।
  • সভানক – সবার। তিঁহ – তিনিও।

বন্দনা কবিতার পাঠ পরিচিতি

শাহ মোহাম্মদ সগিরের বন্দনা পর্ব যথেষ্ট বড়, এখানে শুধু গুরুজনদের  প্রতি বন্দনার অংশটুকু স্থান পেয়েছে। কবি তার মূল কাব্যর পারম্ভে মহান সৃষ্টি কর্তা আল্লাহর প্রশংসা করেছেন। সংকলিত এই কবিতাংশে জন্মদাতা পিতামাতা ও জ্ঞানদাতা শিক্ষকের প্রতি শ্রদ্ধা নিবন্ধন করেছে। পিতা মাতা অশেষ দুঃখ-কষ্ট  স্বীকার করে পরম যত্নে সন্তান কে বড় করে তুলেন। শিক্ষক জ্ঞানদান করে তাকে মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেন। তাই তাদের প্রতি অফুরন্ত শ্রদ্ধা দেখাতে হবে। কবি তার কাব্য রচনায় সাফল্য লাভের জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করেছেন। শ্রদ্ধা বোধ ও কৃতজ্ঞতা মনুষ্যত্বের প্রধান ধর্ম। কবিতাংশে তাই প্রকাশিত হয়েছে।

বন্দনা কবিতার লেখক পরিচিতি

শাহ মোহাম্মদ সগির আনুমানিক ১৪-১৫ শতকের কবি। মুসলমান কবিদের মধ্যে তিনি প্রাচীনতম। তিনি গৌরের সুলতান গিয়াস উদ্দিন আজম শাহের রাজত্বকালে কাব্য রচনা করেন। কাব্যটি পঞ্চদশ শতকের প্রথম দিকে রচিত হয়েছিলো বলে অনুমান করা হয়। কাব্যর রাজবন্দনায় মহামতি গ্যেছ বলে যাকে উল্লেখ করা হয়েছে তিনি গিয়াস উদ্দিন আজম শাহ নামে অনুমিতও। শাহ মোমাম্মদ সগিরের কাব্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের কতিপয় শব্দ ব্যবহার লক্ষ করে মোহাম্মদ এনামুল হোক তাকে চট্টগ্রামের অধিবাসী বলে বিবেচনা করেছেন।

সুকুমার রায়ের বন্দনা কবিতা

এই একই কবিতা টি কবি সুকুমার রায় লিখেছেন। এখানে তার লেখা বন্দনা কবিতা টি দেওয়া আছে। তবে এই কবিতাটি নবম-দশম শ্রেণির পাঠ্য বইয়ে দেওয়া নেই। নিচে থেকে কবিতাটি পরেনিন।

বন্দনা
– সুকুমার রায়

নমি সত্য সনাতন নিত্য ধনে,
নমি ভক্তিভরে নমি কায়েমনে।
নমি বিশ্বচরাচর লোকপতে
নমি সর্বজনাশ্রয় সর্বগতে।
নমি সৃষ্টি-বিধারণ শক্তিধরে,
নমি প্রাণপ্রবাহিত জীব জড়ে।
তব জ্যোতিবিভাসিত বিশ্বপটে
মহাশুন্যতলে তব নাম রটে।
কত সিন্ধুতরঙ্গিত ছন্দ ভরে
কত স্তব্ধ হিমাচল ধ্যান করে।
কত সৌরভ সঞ্চিত পুষ্পদলে
কত সূর্য বিলুন্ঠিত পাদতলে।
কত বন্দনঝঙ্কৃত ভক্তচিতে
নমি বিশ্ব বরাভয় মৃত্যুজিতে।

শেষ কথা

শেষ পর্যন্ত পোস্ট টি পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি  এই পোস্ট টি আপনাদের অনেক ভালোলেগেছে এবং এই পোস্ট থেকেবাংলা কবিতা বন্দনা সংগ্রহ করতে পেরেছেন। শিক্ষা সংক্রান্ত এই রকম আরও পোস্ট এই ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে। নবম-দশম শ্রেণির সকল বিষয়ের প্রশ্ন উত্তর এই ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন।

আরও দেখুনঃ

বাংলা গল্প তথ্য প্রযুক্তি- মুহম্মদ জাফর ইকবাল। বাংলা ১ম পত্র

বাংলা গল্প রক্তে ভেজা একুশ-সেলিনা হোসেন। বাংলা ১ম পত্র এস এস সি

বনমানুষ আবু ইসহাক বাংলা গল্প নবম-দশম শ্রেণি- পিডিএফ

বাংলা গল্প বাঙলা শব্দ-হুমায়ুন আজাদ। বাংলা ১ম পত্র এস এস সি

বাংলা গল্প আমাদের সংস্কৃতি- আনিসুজ্জামান। বাংলা ১ম পত্র

স্বাধীনতা আমার স্বাধীনতা-মমতাজউদদীন আহমদ। বাংলা গল্প