৬ষ্ঠ শ্রেণীর কৃষি শিক্ষা এ্যাসাইনমেন্ট সমাধান ১৪তম সপ্তাহ
এসাইনমেন্টের শিরােনামঃ কৃষি প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি
কৃষি প্রযুক্তিঃ
বাংলাদেশের জনসংখ্যা বাড়ছে। বাড়তি লােকের জন্য অতিরিক্ত খাদ্য ও অন্যান্য চাহিদা বেড়ে যায়। কিন্তু জমির পরিমান বৃদ্ধি পায়না বরং কমে যায়। তাই অল্প জমিতে অধিক ফসলের প্রয়ােজনে আমাদের কৃষি প্রযুক্তির উপর নির্ভর করতে হয়। কৃষি সমস্যা সমাধানের জন্য গবেষণালব্ধ জ্ঞান ও কলাকৌশলকে কৃষি প্রযুক্তি বলে।
কৃষি প্রযুক্তির প্রধান বৈশিষ্ট্য হলােঃ
(ক) এর মধ্যে নতুনত্ব থাকবে।
(খ) কৃষিকাজ সহজ করবে।
(গ) অধিক উৎপাদনের নিশ্চয়তা থাকবে।
(ঘ) খরচ করম কিন্তু লাভ বেশি হবে।
কৃষি প্রযুক্তির বিষয়গুলােঃ
কৃষি সমস্যা সমাধানের জন্য গবেষণালব্ধ জ্ঞান ও কলাকৌশলকে কৃষি প্রযুক্তি বলে। কৃষি এখন শুধু ফসল উৎপাদনের ব্যাপার নয়। শুধু পশু- পাখি পালনও নয়। কয়েকটি উৎপাদন ক্ষেত্র নিয়ে কৃষির বিকাশ ঘটেছে। তেমনি প্রত্যেকটি উৎপাদন ক্ষেত্রের প্রযুক্তিও বিকাশ লাভ করেছে। ফসল উৎপাদন পশু-পাখি পালন, মৎস্য চাষ, বনায়ন এসব বিষয় নিয়েই কৃষি। তাই কৃষি প্রযুক্তি বলতে এই রিষয়গুলাে সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তিকে বুঝায়।
বিষয়ভিত্তিক কৃষি প্রযুক্তিগুলাের তালিকা তৈরি :
বিনা চাষে দানা জাতীয় ফসল চাষঃ
অনেক সময় জমি চাষ না করেই দানা জাতীয় ফসল যেমন- ভুট্টা চাষ করা যায়। বর্ষার পানি জমি থেকে নেমে গেলে জমি কাঁদাময় থাকে। এমন সময় জমি চাষ না করেই ঐ জমিতে ভুট্টার বীজ রােপণ করলে ভাল ফলন হয়। এতে করে খরচ ও শ্রম দুটোই কম লাগে।
গ্রামীণ পরিবেশে ডিম সংরক্ষণঃ
আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষকরা হাঁস-মুরগির ডিম সংরক্ষণ করতে পারে। তবে তার জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রয়ােজন হয়। আবার বিদ্যুৎ ছাড়াও বিশেষ উপায়ে ডিম সংরক্ষণ করা যায়।
নিম্নে এই পদ্ধতির বর্ণনা দেয়া হলােঃ
সাধারণত ডিম ৫/১০ দিনের বেশি ভাল থাকে না। ঘরের মেঝেতে গর্ত করে সেই গর্তে হাঁড়ি বসিয়ে ডিম রাখা যায়। গর্তে হাঁড়ির চারদিকে কাঠ কয়লা রেখে পানি দিয়ে ভিজিয়ে রাখলে ডিম ঠাণ্ডা থাকে এবং এভাবে ২০/২৫ দিন পর্যন্ত ডিম ভাল থাকে।
বন্যা মৌসুমে মাছ চাষ পদ্ধতিঃ
বন্যা মৌসুমে হাওড় এলাকায় খাঁচায় মাছ চাষ করা যায়। এটি এক ধরনের কৃষি প্রযুক্তি। এই পদ্ধতিতে শ্রোতহীন বা কম শ্রোতের পানিতে খাঁচা তৈরি করা হয়। খাঁচার উপরের দিকে মাছের খাদ্য সরবরাহ করা হয়। এই খাঁচার চারিদিকে জাল দিয়ে ঢাকা থাকে ফলে মাছ খাঁচার বাহিরে যেতে পারে না। বন্যা মৌসুমে হাওড় এলাকার পুকুর, বিলের পানি উছলে যায়। আর এই পানির সাথে চাষ করা মাছও বাহিরে চলে যায়। এর ফলে মাছ চাষীরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
শীত মৌসুমে গবাদি পশুর জন্য কাঁচা ঘাসের ব্যবস্থাঃ
শীতকালে অনেক স্থানে ঘাসের অভাব দেখা দেয়। তখন পশুকে মানু সম্মত খাবার দেয়া কষ্টকর হয়ে পড়ে। তাই বর্ষাকালে কাঁচা ঘাস সংরক্ষণ করে এই সমস্যা দূর করা সম্ভব। কাঁচা ঘাস সংরক্ষণ পদ্ধতিকে সাইলেজ বলা হয়। এতে ঘাসের পুষ্টিমানের কোন পরিবর্তন হয় না। যে নির্দিষ্ট স্থানে বা গর্তে ঘাস রাখা হয় তাকে বলা হয় সাইলােপিট। এই স্থানে বায়ু রােধক অবস্থা তৈরি করা হয়। এই অবস্থায় ঘাসে লাষ্টিক এসিড তৈরি হয় যা কাঁচা ঘাস সংরক্ষণে কাজ করে। তাই শীতকালে গবাদিপশুর ফার্ম করতে চাইলে পশুর খাদ্য সমস্যা দূর করার ক্ষেত্রে উপরােক্ত পদ্ধতি প্রযােগ করা যাবে।