৬ষ্ঠ শ্রেণীর বংলা এ্যাসাইনমেন্ট সমাধান ২০২১ – ১৩তম সপ্তাহ
পৃথিবীতে পরের কল্যাণেই আমাদের আগমন। মানুষ সামাজিক জীব। পারস্পরিক ত্যাগের মধ্য দিয়েই গড়ে উঠেছে মানবসমাজ। সমাজের অন্য সবার কথা ভুলে নিজের কথা ভাবলে তা হবে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন।
পৃথিবীতে পরের কল্যাণ করাতেই আছে প্রকৃত সুখ। সমাজে মানুষ একাকী বাঁচতে পারে না। পারস্পরিক ত্যাগের মধ্য দিয়েই গড়ে উঠেছে মানবসমাজ। এ সমাজে প্রতিটি মানুষ একে অন্যের ওপর নির্ভরশীল। তাই অন্যকে বাদ দিয়ে এ সমাজে স্বাভাবিকভাবে বাঁচা সম্ভব না। তাই এভাবে সুখী হওয়াও সম্ভব না।
মানুষ মানুষের উপর নির্ভরশীল, এ সত্যকে মেনেই বিশ্বাসের সৃষ্টি। সাধারণত, আমরা কেউ নিজের ভাল কাজের তালিকা তৈরি করিনা বা প্রয়োজন হয়না।
কারণ ছোটবেলা হতেই আমরা বড়দের কাছ থেকে এগুলো শিখি এবং অনেকটা নিত্যদিনের কাজের বাইরে থাকে বিষয়গুলো। অনেকে এ কাজগুলো নিয়মিত করে থাকেন, অনেকে ব্যস্ততার কারণে করে উঠতে পারেননা। যদিও ভাল কাজকে তালিকায় সীমাবদ্ধ করা যায়না তারপরেও মানুষের জন্য কল্যাণকর এমন দশটি কাজের তালিকা হলো—
১. রাস্তার উপর পড়ে থাকা এক টুকরা আবর্জনা তুলুন এবং পাশের ট্র্যাশ/ নিরাপদ দূরত্বে ফেলুন।
২. অফিস, ব্যাংক, লিফট বা একটি ট্রেনে- বাসে অন্য কারোর জন্য দরজা খোলা রাখা। কাউকে বাসে উঠতে সাহায্য করা।
৩. অন্য কোন ব্যক্তিকে আপনার সীট দিন (বিশেষ করে মহিলা, বৃদ্ধ, অসুস্থ ব্যক্তি এবং physically- challenged যারা আছেন)। যে কৃতজ্ঞতাবোধ আপনি তার মুখে দেখবেন তা নিশ্চিত আপনার মন ছুঁয়ে যাবে।
৪. কেউ কোনো ঠিকানা জানতে চাইলে তাকে তথ্য দিয়ে সাহায্য করুন।
৫. বন্ধু, পরিবার বা সহকর্মী; তারা কোথাও বের হলে তাদের জন্য পরিবহন ঠিক করা বা তাদের গন্তব্যস্থলে পৌছাতে সাহায্য করতে পারেন।
৬. যেকোনো charity বক্সে কিছু টাকা রাখতে চেষ্টা করুন এবং রাস্তায় ভিক্ষুকদের সাহায্য করুন।
৭. কোনো কাজে লাইনে দাড়িয়ে থাকলে কেউ যদি খুব ব্যস্ত থাকে বা খুব জরুরী তাহলে তাকে আপনার সামনে জায়গা করে দিন।
৮. বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার রাখতে আপনার পরিবারকে সহায়তা করুন।
৯. স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে পারেন। কোনো রান্নার কাজে বা মসজিদে বা কোনো এতিমখানায়, এমনকি কোনো শিশুকে বিনা পারিশ্রমিকে কিছু শিখাতে পারেন।
১০. অসহায়দের নানা ধরনের সহযোগিতা করার মত মনোভাব আপনার মাঝে থাকতে হবে। আপনার মন কতটা উদার তা নির্ভর করবে অসহায়দের পাশে আপনি কতটা থাকতে পারছেন। শুধু একা একা ভালো থেকে ভালো মানুষ হয়ে ওঠা যায় না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকতে হয়।
মূলত যে অন্যের মঙ্গল ও কল্যাণের জন্য প্রয়োজনে ত্যাগ স্বীকার করে, সে-ই প্রকৃত সুখী। সুখ প্রতিটি মানুষেরই একান্ত কাম্য। দুঃখ পরিহারের চেষ্টার মধ্য দিয়ে চলে মানুষের সুখ লাভের কর্মতৎপরতা। মূলত জগতে যারা কেবল সুখ খোঁজে তারা জীবনে দুঃখ-যন্ত্রণা সয়ে, সব সংকট মোকাবিলা করে জীবনসংগ্রামে সফলতার মাধ্যমে অর্জন করে সুখ। অন্যের কল্যাণে নিবেদিত ব্যক্তিই প্রকৃত সুখ লাভ করে থাকে। কেননা আমাদের এই পৃথিবীতে আগমনই হয়েছে পরের কল্যাণের জন্য।