৭ম শ্রেণীর বাংলা এ্যাসাইনমেন্ট সমাধান ২০২১ – ৯ম সপ্তাহ

৭ম শ্রেণীর বাংলা এ্যাসাইনমেন্ট ২০২১ – ৯ম সপ্তাহ

“আমার বাড়ি” কবিতায় বন্ধুকে আপ্যায়নের জন্য কী কী আয়ােজন ও খাবারের কথা উল্লেখ আছে? কবিতায় বর্ণিত আপ্যায়নের সাথে বর্তমান সময়ের অতিথি আপ্যায়নের সাদৃশ্য বৈসাদৃশ্য নিজের পারিবারিক অভিজ্ঞতার আলােকে লিখ।

৭ম শ্রেণীর বাংলা এ্যাসাইনমেন্ট সমাধান ২০২১ – ৯ম সপ্তাহ

উত্তর:


পল্লীকবি জসিম উদ্দিন তার “আমার বাড়ি” প্রকৃতির, অতিথি ও আপ্যায়ন এই তিনটিকে এক সুতায় বেঁধেছেন। তার কবিতায় মানবপ্রেম ও সৌজন্যবোধের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। এবং প্রকৃতিও যে গৃহের অথিতিকে আপ্যায়নের জন্য উন্মুখ তা এই কবিতায় ফুটে উঠেছে। আমার বাড়ি কবিতায় কবি তার বন্ধুকে হেমন্তের শালি ধানের চিড়া, বিন্নি ধানের খই, সবরী কলা, গামছা বাঁধা দই দিয়ে আপ্যায়নের কথা বলেছেন।

কবিতায় বর্ণিত আপ্যায়নের সাথে বর্তমান সময়ের আপ্যায়নের সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া নিতান্তই কঠিন। বাঙালি অতিথি পরায়ণ এই সুনামটা ধরে রাখলেও অতিথি আপ্যায়নের ধরণটি ধরে রাখতে পারে নি। তবে এ কথা বলার কোন অবকাশ নেই যে কবি বন্ধুর আপ্যায়নের চিত্রটি বর্তমানে একেবারেই বিলীন হয়ে গেছে। আমি নিজ পারিবারিক অভিজ্ঞতা থেকে নির্দ্বিধায় বলতে পারি কবিতায় বর্ণিত অতিথি আপ্যায়নের চিত্র শহুরে জীবনে না দেখা গেলেও গ্রামীণ জীবনে ঠিকই দেখা যায়। কোন এক শীতকালে পরিবারের সাথে নানার বাড়ি গিয়ে পল্লীকবির আপ্যায়নের চিত্রটি কিছুটা হলেও উপলব্ধি করতে পেরেছি।

খেজুরের রসের পায়েস, নানা ধরনের পিঠা-পুলি, সফেদা, বরই, জলপাই, আমলকি, ডালিম, নিজ বাড়িতে বানানো দই সবকিছুই মনভরে উপভোগ করার মতো। কিন্তু শহুরে জীবনে এমন চিত্র দেখা নিতান্তই কঠিন। শহরের কৃত্রিমতায় অতিথি আপ্যায়নের মধ্যে তেমন আন্তরিকতা পাওয়া যায় না। এখানে বাহিরের তৈরী খবর দিয়ে আপ্যায়ণ করা হয় অতিথিকে। প্রকৃতির উষ্ণ অভ্যার্থনা শহরের অতিথিরা পায় না।


কবি জসিম উদ্দিনের “আমার বাড়ি” কবিতায় বন্ধুকে আপ্যায়নের জন্য যে যে আয়ােজন ও খাবারের কথা উল্লেখ আছে তা নিম্নে উল্লেখ করা হলাে:

কবি জসিম উদ্দিন তার ” হাসু ” কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ” আমার বাড়ি ‘ কবিতায় কোন এক বন্ধু বা প্রিয়জনকে নিজের বাড়িতে আমন্ত্রণ করেছেন । তিনি তার বন্ধুকে তারা ফুলের মালা গেঁথে পড়াতে চেয়েছেন তথা তারা ফুলের মালা দিয়ে তাকে বরণ করে নিতে চেয়েছেন । তিনি তাকে আপ্যায়ন করতে চান জল তথা পানি বা শরবত খাইয়ে এবং শালি ধানের চিড়া, কবরী কলা এবং গামছা বাঁধা দই দিয়ে।

প্রকৃতির সান্নিধ্যে কেমন করে অতিথির প্রাণ জুড়াবে এর এক নিবিড় পরিচয় আছে এই কবিতাটি তে। কবি তার বন্ধুকে ছায়াময় গাছের নিচে শান্ত ও নিরিবিলি জায়গায় ঘুমাতে দিবেন। কবি তার বন্ধুর সাথে সারা দিন কাটাবে তথা তার বন্ধুর সাথে বেশিরভাগ সময় কাটাবে খেলাধুলা করেও গল্পগুজব করে। কবির সাথে সাথে যেন অতিথিকে আপ্যায়ন করতে গাছ, ফুল এবং পাখিরাও উন্মুখ হয়ে আছে। অতিথির বিশ্রাম ও আনন্দের জন্য গৃহস্থের আন্তরিক প্রয়াস কবিতায় বিশেষভাবে লক্ষণীয়।

নিজের পারিবারিক অভিজ্ঞতার আলোকে বর্তমান সময়ে অতিথি আপ্যায়নের ক্ষেত্রে সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য নিম্নে উপস্থাপন করা হলাে:


সাদৃশ্য:


১. বর্তমান সময়ে ও আমরা অতিথিকে বিভিন্ন ধরনের ফুলের মালা বা ফুলের তােড়া দিয়ে বরণ করে নেই।

২. বর্তমান সময়ে আমরা অতিথিকে আপ্যায়নের জন্য বিভিন্ন ধরনের খাবারের আয়ােজন করে থাকি। যেমনঃ সেমাই, নুডলস, পাস্তা, খিচুড়ি, বিরিয়ানি, পােলাও, মাংস, দই কোরমা ইত্যাদি। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের মাছ মাংস, শাকসবজি ও ফলমূল এর ব্যবস্থা করে থাকি।


বৈসাদৃশ্য:

১. বর্তমান সময়ে আমরা অতিথি বন্ধুর সাথে বেশি খেলাধুলা করে, টিভি দেখি, ভার্চুয়াল গেম খেলি।

২. বর্তমান সময়ে আমরা কবরী কলা, গামছা বাঁধা দই, চিড়া-মুড়ি, খই এগুলাের পরিবর্তে বন্ধুকে আপ্যায়নের জন্য বিভিন্ন ধরনের আধুনিক মুখরােচক খাবারের আয়ােজন করে থাকি।

অবশেষে, আমরা বলতে পারি যে, বাঙ্গালীদের যে একটা ঐতিহ্য আছে অতিথি বন্ধুকে আপ্যায়নের সেটা এখনাে পর্যন্ত বিদ্যমান আছে আমাদের বাঙালি সমাজে। যদিও পূর্বের তুলনায় এখন ভিন্নভাবে আপ্যায়ন করা হয় অতিথি বন্ধুর আপ্যায়ন এর ক্ষেত্রে কোন ত্রুটি রাখা হয় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *