নবম শ্রেণীর পৌরনীতি ও নাগরিকতা এ্যাসাইনমেন্ট ২০২১ সমাধান

নবম শ্রেণীর পৌরনীতি ও নাগরিকতা এ্যাসাইনমেন্ট ২০২১

নবম শ্রেণীর ২য় সপ্তাহের এ্যাসাইনমেন্ট প্রকাশ করা হয়েছে। এর মধ্য পৌরনীতি ও নাগরিকতা বিষয়টি দেওয়া হয়েছে। এখানে নবম শ্রেণীর ২য় সপ্তাহর পৌরনীতি ও নাগরিকতা এ্যাসইনমেন্টের সুন্দর সমাধান দেওয়া হয়েছে।

নবম শ্রেণীর পৌরনীতি ও নাগরিকতা এ্যাসাইনমেন্ট ২০২১

পৌরনীতি ও নাগরিকতা বিষয়টি পাঠ শেষে তোমার অর্জনসমূহের তালিকা সমন্বিত একটি পোস্টার তৈরি কর।

সংকেত- (নিচের বিষয়বস্তু সম্পর্কে তুমি যা জেনেছ)
১। নাগরিকতা
২। পরিবার
৩। সমাজ
৪। রাষ্ট্র
৫। আন্তর্জাতিক সংস্থা।

 


 

উত্তর: 

নাগরিকতা :

প্রাচীন গ্রিসে নাগরিক ও নগররাষ্ট্র ছিল অবিচ্ছেদ্য। ওই সময় গ্রিসে ছোট ছোট অঞ্চল নিয়ে গড়ে ওঠে নগর-রাষ্ট্র। যারা নগর রাষ্ট্রীয় কাজে সরাসরি অংশগ্রহণ করতো, তাদের নাগরিক বলা হতো। শুধু পুরুষশ্রেণি রাষ্ট্রীয় কাজে অংশগ্রহণের সুযোগ পেত বিধায় তাদের নাগরিক বলা হতো। বর্তমানে নাগরিকের ধারণার পরিবর্তন ঘটেছে। পাশাপাশি নগর-রাষ্ট্রের স্থলে বৃহৎ আকারের জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যেমন- বাংলাদেশের ক্ষেত্রফল ১,৪৭,৫৭০ বর্গ কিলোমিটার এবং লোকসংখ্যা প্রায় ১৯ কোটি। আমরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক।নাগরিক অধিকার ভোগের পাশাপাশি আমরা রাষ্ট্রের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করে থাকি। তবে আমাদের মধ্যে যারা অপ্রাপ্তবয়স্ক অর্থাৎ যাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে, তারা ভোটদান কিংবা নির্বাচিত হওয়ার মতো রাজনৈতিক অধিকার ভোগ করতে পারে না। তাছাড়া বিদেশিদের কোনো রাজনৈতিক অধিকার ভোগ করার সুযোগ নেই। যেমন- নির্বাচনে ভোট দ্বারা নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ নেই। মূলত রাষ্ট্র প্রদত্ত নাগরিকের মর্যাদা কে নাগরিকতা বলে।

পরিবার :

সমাজ স্বীকৃত বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে স্বামী-স্ত্রীর একত্রে বসবাস করাকে পরিবার বলে।
অর্থাৎ বৈবাহিক সম্পর্কের ভিত্তিতে এক বা একাধিক পুরুষ ও মহিলা তাদের সন্তানাদি, পিতামাতা এবং অন্যান্য পরিজন নিয়ে যে সংগঠন গড়ে ওঠে- তাকে পরিবার বলে। ম্যাকাইভারের মতে, সন্তান জন্মদান ও লালন পালনের জন্য সংগঠিত ক্ষুদ্র বর্গকে পরিবার বলে। আমাদের দেশে সাধারণত মা-বাবা, ভাই-বোন, চাচা চাচি ও দাদা-দাদির সমন্বয়ে পরিবার গড়ে ওঠে। তবে শুধু একজন মহিলা বা একজন পুরুষকে পরিবার বলা হয় না। মূলত পরিবার হলো স্নেহ, মায়া, মমতা, ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে গঠিত ক্ষুদ্র সামাজিক প্রতিষ্ঠান।
আমরা সবাই পরিবারে বাস করি। কিন্তু সব পরিবারের প্রকৃতি ও গঠন কাঠামো একরকম নয়।

কতগুলো নীতির ভিত্তিতে পরিবারের শ্রেণীবিভাগ করা যায়। যেমন-
(ক) বংশ গণনা ও নেতৃত্ব,
(খ) পারিবারিক কাঠামো ও
(গ) বৈবাহিক সূত্র।

সমাজ :

সমাজ বলতে সেই সংঘবদ্ধ জনগোষ্ঠীকে বোঝায়, যারা কোনো সাধারণ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য একত্রিত হয়। অর্থাৎ একদল লোক যখন সাধারণ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য সঙ্গবদ্ধ হয়ে বসবাস করে, তখনই সমাজ গঠিত হয়।

সমাজের এ ধারণাটি বিশ্লেষণ করলে এর প্রধান দু’টি বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। যথা-
ক) বহুলোকের সংঘবদ্ধভাবে বসবাস এবং
খ) ঐ সংঘবদ্ধতার পেছনে থাকে সাধারণ উদ্দেশ্য।

তাছাড়া সমাজের সদস্যদের মধ্যে আরও কিছু বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়-
ঐক্য ও পারস্পরিক সহযোগিতা,
নির্ভরশীলতা,
ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া,
সাদৃশ্য-বৈসাদৃশ্য ইত্যাদি।

সমাজের সাথে মানুষের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। মানুষকে নিয়ে সমাজ গড়ে উঠে। আর সমাজ মানুষের বহুমুখী প্রয়োজন মিটিয়ে উন্নত ও নিরাপদ সামাজিক জীবন দান করে। সমাজের মধ্যেই মানুষের মানবীয় গুণাবলি ও সামাজিক মূল্যবোধের বিকাশ ঘটে। সমাজকে সভ্য জীবনযাপনের আদর্শ স্থান মনে করে বলে মানুষ তার নিজের প্রয়োজনেই সমাজ গড়ে তোলে।
গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটল যথার্থই বলেছেন, মানুষ স্বভাবগত সামাজিক জীব। যে সমাজে বাস করে না, সে হয় পশু, না হয় দেবতা। মবস্তুত মানুষ জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সমাজে বসবাস করে এবং সামাজিক পরিবেশেই সে নিজেকে বিকশিত করে।

রাষ্ট্র :

রাষ্ট্র একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। বিশ্বের মানুষ কোনো না কোনো রাষ্ট্রে বসবাস করে। আমাদের এই পৃথিবীতে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ২০০ টি রাষ্ট্র আছে। প্রতিটি রাষ্ট্রেরই আছে নির্দিষ্ট ভূখণ্ড এবং জনসংখ্যা। এ ছাড়া রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য আরও আছে সরকার এবং সার্বভৌমত্ব। মূলত এগুলো ছাড়া কোনো রাষ্ট্র গঠিত হতে পারে না। অধ্যাপক গার্নার বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট ভূখণ্ডে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী, সুসংগঠিত সরকারের প্রতি স্বভাবজাতভাবে আনুগত্যশীল, বহিঃশত্রুর নিয়ন্ত্রণ হতে মুক্ত স্বাধীন জনসমষ্টিকে রাষ্ট্র বলে।’

এ সংজ্ঞা বিশ্লেষণ করলে রাষ্ট্রের চারটি উপাদান পাওয়া যায়। যথা-
১। জনসমষ্টি,
২। নির্দিষ্ট ভূখণ্ড,
৩। সরকার ও
৪। সার্বভৌমত্ব।

রাষ্ট্র কখন ও কীভাবে উৎপত্তি লাভ করেছে তা নিশ্চিত করে বলা কঠিন। তবে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা অতীত ইতিহাস ও রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে রাষ্ট্রের উৎপত্তি সম্পর্কে কতগুলো মতবাদ প্রদান করেছেন।

তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-
১। ঐশী মতবাদ,
২। বল বা শক্তি প্রয়োগ মতবাদ,
৩। সামাজিক চুক্তি মতবাদ ও
৪। ঐতিহাসিক বা বিবর্তনমূলক মতবাদ।

আন্তর্জাতিক সংস্থা :

দুই বা ততোধিক দেশে কর্মরত এক ধরনের সংস্থাবিশেষ। এতে সাধারণতঃ বেসরকারী সংস্থার তুলনায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ের জনগোষ্ঠীর সম্পৃক্ততাসহ সদস্য সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অধিক থাকে। এছাড়াও, সংস্থার কর্মক্ষেত্র কিংবা কর্মতৎপরতা ভিন্ন হয়। এ ধরনের সংস্থাগুলো দেশের সরকার ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করতে পারে না। তবে সরকারের কর্মপন্থার সাথে সীমিত পর্যায়ে অংশগ্রহণ করে থাকে।

জাতিসংঘ, রেডক্রস – আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। এছাড়াও রয়েছে (OIC),কমনওয়েলথ ইত্যাদি।

আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রধানতঃ দুই ধরনের হয়ে থাকে। সেগুলো হচ্ছে –
আন্তর্জাতিক বেসরকারী সংস্থা ও
আন্তঃসরকার সংস্থা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *