প্রতিবছর ১৭ ই মার্চ সারা বাংলাদেশে জাতীয় শিশু দিবস পালন করা হয়ে থাকে। মূলত এই দিনটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন। জাতির পিতার এই জন্মদিন কে মূলত শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই দিনটিকে অর্থাৎ ১৭ই মার্চকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।
এরপর থেকেই প্রতিবছর এই দিনটি শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হয়। গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের ১০০ তম জন্মবার্ষিকী পালন করা হয়। শতবর্ষ জন্মবার্ষিকীতে অনেক জাকজমকপূর্ণভাবে উদযাপন করা হয়েছিল। বাংলাদেশের প্রায় সকল জেলায় মুজিব শত বর্ষ পালন করা হয়।
১৭ই মার্চ কি দিবস
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন। এছাড়া এটি বাংলাদেশের জাতীয় শিশু দিবস। ১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের অক্লান্ত সেনানী এবং স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি। তার জন্মদিন জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালিত হয়। শিশুদের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ এবং তাদের অধিকার রক্ষার জন্য ১৯৭৯ সালে এই দিবস প্রবর্তন করা হয় এই দিনে সারাদেশে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শিশুদের মনোরঞ্জন এবং তাদের সৃজনশীলতা বিকশিত করার জন্য বিভিন্ন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। ১৭ই মার্চ আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিনে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাই এবং শিশুদের অধিকার রক্ষার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হই।
বাংলাদেশে জাতীয় শিশু দিবস কবে
বাংলাদেশে জাতীয় শিশু দিবস প্রতি বছর ১৭ই মার্চ পালিত হয়। ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশে প্রথম জাতীয় শিশু দিবস পালিত হয়। ১৯৯৬ সালে তৎকালীন সরকার ১৭ই মার্চকে ‘জাতীয় শিশু দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৯৭ সাল থেকে এই দিনটি সরকারিভাবে পালিত হয়ে আসছে। সারাদেশে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শিশুদের মনোরঞ্জন এবং তাদের সৃজনশীলতা বিকশিত করার জন্য বিভিন্ন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। শিশুদের অধিকার রক্ষা ও তাদের উন্নয়নে কাজ করা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়। এই দিবস পালনের উদ্দেশ্য শিশুদের প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধি করা। শিশুদের অধিকার রক্ষা করা এবং শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য কাজ করা। জাতীয় শিশু দিবস আমাদের সকলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিনে আমাদের শিশুদের প্রতি দায়িত্ব এবং কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন হতে হবে এবং তাদের অধিকার রক্ষা ও উন্নয়নে কাজ করতে হবে।
১৭ই মার্চ কেনো জাতীয় শিশু দিবস পালন করা হয়
এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মগ্রহণ করে। এছাড়া প্রতি বছর ১৭ মার্চে বাংলাদেশে জাতীয় শিশু দিবস পালন করা হয়। এই দিনটি শিশুদের উন্নত অধিকার, সুরক্ষা, ও শিক্ষা সংক্রান্ত সমস্যার উপর মনোনিবেশ করতে এবং তাদের জনকল্যাণে জনপ্রিয় হতে উদ্দীপ্ত করতে অনুষ্ঠিত হয়। এই দিনে বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপ, সৃজনশীল প্রদর্শনী, ও উপকরণের মাধ্যমে বাচ্চাদের সাথে সম্পর্ক করা হয়। জাতীয় শিশু দিবস বাংলাদেশে একটি গৌরবময় অনুষ্ঠান, যা শিশুদের অধিকার, সুরক্ষা, ও উন্নত ভবিষ্যত সংক্রান্ত জাগরুক করার জন্য সৃষ্টি করে। এই দিনে সমাজের অবগতি বাড়াতে বিভিন্ন অভিযান, শিক্ষা প্রোগ্রাম, ও সাংস্কৃতিক আয়োজন করা হয়।
সরকার, গোষ্ঠীবাদী সংগঠন, এবং সমাজের বিভিন্ন অংশের লোকে এই দিনটি পৌঁছাতে বিশেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ছাত্র ছাত্রী সংগঠন, এবং সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে। এই অনুষ্ঠানে সৃজনশীল ও শিক্ষামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে শিশুদের আবশ্যক জ্ঞান এবং দক্ষতা অর্জন করার জন্য উৎসাহিত হয় এবং তাদের বৃদ্ধি ও উন্নত ভবিষ্যতের দিকে একটি নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি করা হয়। এই দিনে বাচ্চাদের সাথে বিভিন্ন খেলাধুলা, রচনা প্রতিযোগিতা, ও আরোহী কার্যক্রমের মাধ্যমে তাদের শিক্ষামূলক আমোদের সমাজের অংশ হিসেবে উদ্দীপ্ত করা হয়। এই মৌমাছির দিনে আমরা সমস্ত শিশুদের ভবিষ্যত সমৃদ্ধির দিকে একসঙ্গে চলার আহবান জানাচ্ছি।
১৭ই মার্চ পালনের গুরুত্ব
১৭ই মার্চ বাংলাদেশের জাতীয় শিশু দিবস। এই দিবস টি আমাদের ও শিশুদের জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ১৭ই মার্চ কেনো জাতীয় শিশু দিবস পালন করা হয় এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা জেনে নেওয়া যাক।
শিশুদের অধিকার রক্ষা:
- এই দিনটি শিশুদের অধিকার রক্ষা ও তাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করার সুযোগ করে দেয়।
- শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, নিরাপত্তা এবং বিকাশের অধিকার রক্ষার জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করে।
- শিশুদের প্রতি সহিংসতা, শোষণ এবং বৈষম্য রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
শিশুদের মধ্যে জাতীয়তাবোধ জাগ্রত করা:
- এই দিনটি শিশুদের মধ্যে জাতীয়তাবোধ, দেশপ্রেম এবং সহমর্মিতা জাগ্রত করে।
- তাদের মধ্যে নীতিবোধ, সৃজনশীলতা এবং নেতৃত্বের গুণাবলী বিকশিত করতে সাহায্য করে।
- তাদেরকে দেশের ভবিষ্যৎ কর্মী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য অনুপ্রাণিত করে।
সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি:
- জাতীয় শিশু দিবস শিশুদের প্রতি সামাজিক দায়িত্ববোধ ও সচেতনতা বৃদ্ধি করে।
- শিশুদের প্রতি সকলের কর্তব্য ও নৈতিক দায়িত্ব সম্পর্কে মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
- শিশুদের জন্য একটি সুন্দর ও বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তোলার প্রত্যয় জাগ্রত করে।
শিশুদের আনন্দ উদযাপন:
- এই দিনটি শিশুদের আনন্দ, উৎসব ও বিনোদনের দিন।
- বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলাধুলা, আনন্দ-উৎসবের মাধ্যমে শিশুদের আনন্দ বর্ধিত করা হয়।
- তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস, সৃজনশীলতা এবং সামাজিক দক্ষতা বিকশিত করতে সাহায্য করে।
বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি:
- ১৭ই মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন।
- শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর অগাধ ভালোবাসার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এই দিনটি জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
- বঙ্গবন্ধু শিশুদেরকে দেশের ভবিষ্যৎ হিসেবে দেখতেন এবং তাদের উন্নয়নে সর্বদা গুরুত্ব দিয়েছিলেন।
শেষ কথা
জাতীয় শিশু দিবস শুধু একটি দিনের উৎসব নয়, বরং শিশুদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্যের প্রতি সচেতন থাকার একটি সার্বক্ষণিক প্রক্রিয়া। এই দিনটি আমাদের সকলকে শিশুদের জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য একজোট হয়ে কাজ করার অনুপ্রেরণা জোগায়। আমাদের শিশু দিবস রক্ষায় কাজ করতে হবে। তাদের অধিকার কে প্রাধান্য দিতে হবে। আশা করছি ১৭ই মার্চ কি দিবস? কেনো এই দিবস পালন করা হয় তা জানতে পেরেছেন।
আরও দেখুনঃ
৭ই মার্চ নিয়ে উক্তি, স্ট্যাটাস, বাণী ও ফেসবুক স্ট্যাটাস
বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ লিখিত