৭ই মার্চ নিয়ে কবিতা ও ভাষণ দিবসের বঙ্গবন্ধুর কবিতা-suggestionbd.top

৭ই মার্চ নিয়ে কবিতা

এই পোস্টে ৭ই মার্চ নিয়ে কবিতা গুলো দেওয়া হয়েছে। ৭ই মার্চ বাংলাদেশের জাতীয় একটি দিবস। এই দিনে লাখো বাঙ্গালির মাঝে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ভাষণ দেন। বাঙ্গালিদের দেশ কে রক্ষার করার জন্য আহ্বান জানা। তার এই ১৮ মিনিটের ভাষণ আজ দেশ ব্যাপী বিখ্যাত। অনেক কবি ৭ই মার্চ নিয়ে কবিতা লিখেছেন। অনেক লেখক এই দিনকে স্মরণীয় করতে বহু গল্প লিখেছেন। আপনাদের জন্য নিচে ৭ই মার্চ সম্পর্কে কবিতা শেয়ার করেছি দেখেনিন।

৭ই মার্চ নিয়ে কবিতা

সকল লেখক ৭ই মার্চ নিয়ে কবিতা কবিতা লিখেছেন। তাদের লেখা কবিতা থেকে শ্রেষ্ঠ কিছু কবিতা এখানে তুলে ধরেছি। আশা করছি এই কবিতা গুলো আপনাদের অনেক ভালো লাগবে। এখান থেকে ৭ই মার্চের কবিতা গুলো পড়ুন।

নতুন প্রজন্মের কাছে রাজনীতির কবি

আজকের দিনের স্কুলের বইয়ের পাতা
ক্লাসের পাঠে ভরছে খাতা,
কড়া চোখ শাসায় শীতল উষ্ণ
শিক্ষকের প্রশ্ন-

ওহে বালক,
বল, কে বাংলাদেশের জাতির জনক ?
একেবারে স্পষ্ট উত্তর
নেই এতটুকু নড়বড়

‘’উত্তাল ঢেউ গর্জে
বিশ্ব ঐতিহ্যের সেই সাতই মার্চে’’
মুক্তির সিম্ফনি
উঁচিয়ে তর্জনী,

জন্মদাতা বাংলাদেশ জন্মের কেন্দ্রবিন্দু
তিনি শেখ মুজিবুর রহমান তিনি বঙ্গবন্ধু ।
পঞ্চাশ বছরে তোমার উপাধি

তোমার চরণ যুগল ধরি
অভিনন্দিত সম্মানিত করি,
পঞ্চাশে মহীরুহ বঙ্গবন্ধু
বিন্দু থেকে সিন্ধু।

৭ই মার্চ
– শরিফুল ইসলাম

১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ
রেসকোর্স ময়দানে
জনসমুদ্রে জাগিল জোয়ার
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।

লক্ষ লক্ষ উন্মত্ত অধীর ব্যাকুল
বিদ্রোহী শ্রোতার জন্য,
একটি কবিতা শুনে
অপেক্ষার উত্তেজনা হবে ধন্য।

দিগন্ত প্লাবিত একখন্ড
আকাশের নিচে,
মিশেছিল প্রানের প্রিয়
ধু ধু মাঠের সবুজে।

কপালে কব্জিতে লালসালু বেঁধে
ছুটে এসেছিল এই মাঠে,
মৃত্যু হাতের মুঠোয়, চোখে স্বপ্ন
জয় বাংলার শ্লোগান ঠোটে।

শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে,
জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন এসে
দৃপ্ত পায়ে হেঁটে।
ঝলকে পলকে হৃদয়ে লাগিল দোলা,

তরীতে উঠিল পাল,
জনসমুদ্রে জাগিল জোয়ার
চোখেতে লোনা জল।
সোনালী সূর্যের সকল দুয়ার খুলি

কে রোধে সে বজ্রকন্ঠ বাণী,
গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে
শোনালেন তাঁর অমর-কবিতাখানি:
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম,
‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম।

বঙ্গবন্ধু

তুমি বিহনে
শোকবিধূর বিদগ্ধ প্রাণে
অশ্রু ঝরে ঘরে ঘরে,
দেশের জন্য সকলি করে দান
তার জন্য মায়ায় জাগে পরান ।

সাধ্য কার এত অল্প দিনে
রক্তের দামে স্বাধীনতা কিনে,
এসেছে সেই ক্রান্তিকাল
বুনন করেছে মুক্তির স্বপ্নজাল।

তুমিই তোমার তুল্য
নির্লোভ খাঁটি অমূল্য,
তোমার মত এমন আর কেউ
ছড়াবে না উঠাবে না আর
তুমুল উত্তাল ঢেউ।

গগন মণ্ডলে হেনকালে
তোমার মত আর কেউ
জনম জনমে
জন্মাবেনা ইহকালে।

৭ই মার্চের কবিতা

৭ মার্চের ভাষণ
মোহাম্মদ মাসুকুজ্জামান

রুদ্র প্রকটে বজ্র অনলে
উত্থিত তর্জনী লক্ষ্যে লাখো জনতা
দিলে ডাক মুক্তির সোপানে।
বক্ষে তোমার দেশমাতৃকা,

ছিল অনুরাগে।
পিতা তুমি আজও অমলিন
অবিনশ্বর।
ছিলে সেদিনও অধীশ্বর,
মুক্তিকামী চেতনার।

শব্দের বারুদে ক্রমাগত চয়নে-
দিয়েছিলে জ্বেলে তপ্ত চিঙ্গারে।
সপ্রতিভ সেই মুষ্টিবদ্ধ হাত
সাথে আঙুল একটি ছিল জাগরণ।

‘থাক সঙ্গবদ্ধ, হও এক; বলীয়ান’,
এ যেন তোমার অব্যক্ত কথন
তিমির বেদিতে।

কী মহান বাগ্মীতায়
কাগজে লেখা বিনে,
মননের কাগজে লিখিত বাণী-
বুনে ছিলে নেতা অবলীলায়।
শোষিত মানুষের হৃদয় ছুঁতে
৭ মার্চ একাত্তরে।

স্বাধীনতার অঙ্কুরিত সেই স্বপ্ন-
বেড়েছিল তোমার পুষ্টিতে,
মাত্র নয় মাসে, ১৬ ডিসেম্বরে।
তপ্ত গ্রীষ্ম পেরিয়ে শীতের আগমনে
স্বাধীন দেশের স্বাধীন বসন্ত-
পেয়েছিল আপামর, মানচিত্র মাঝে
অনেক ত্যাগ রক্তের দামে।

চেতনাদীপ্ত সে ভাষণ
মো. হাসান ঈমাম

আমি পৌঁছে দেব পৃথিবীর প্রতি প্রান্তরে
রক্তভেজা প্রতিটি জনপদে
আন্দোলনে মনোবল সঞ্চারণে

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের সে ভাষণ,
সহসা ভয়-সংকোচ ঝেরে ফেলে
হতাশার মাঝে শোষিত খুঁজে পাবে
শোষণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর যত প্রেষণ।

আমি মোহাচ্ছন্ন হয়ে অস্পৃশ্য শিহরণে
কান পেতে শুনবো সে ভাষণ।

আমি ছড়িয়ে দেব সে ভাষণ,
যে ভাষণ শোষকের দুর্গে তোলে কম্পন।
যে ভাষণে নিস্পৃহ হৃদয়ও করে শক্তি অন্বেষণ,
মুক্ত বাতাসে জাতির স্বপ্ন সাজাতে

ঘর থেকে মাতৃস্নেহের শৃঙ্খল ছিড়ে
নির্ভয়ে পথে-প্রান্তরে তোলে আলোড়ন,
আমি ছড়িয়ে দেব সারা বিশ্বে
দলিতদের মাঝে সে ভাষণ।

যে ভাষণে সুললিত কণ্ঠে মানুষের
অধিকার আদায়ে ঝরে বিনীত নিবেদন,
যে ভাষণ কভু বীরোচিত বাণীতে
দুর্বার দুর্দমনীয় স্বরে করে অধিকার অর্জন।

সবাই কান পেতে শোন বজ্রকণ্ঠের সে ভাষণ,
নিষ্প্রভ কর্ণও আজ ফিরে পাবে শিহরণ।

আমি কান পেতে শুনি সে ভাষণ-
যে ভাষণ শুনে এক মৃত্যুপুরে
শীর্ণকায় বাহুতে হয় পেশীশক্তির আগমন,
দেশের জন্য বীরদর্পে
যারা মৃত্যুকে করে আলিঙ্গন।

যে ভাষণ শুনে শূন্য হাতে
তপ্ত বুলেটের সম্মুখে
হাসিমুখে লাখো বক্ষ চিড়ে
বিশ্বের বুকে এক আলোকরশ্মির প্রজ্বলন,
বিপ্লবী জনতার হাতে বাংলাদেশের জাগরণ।

আমি দিন-রাত আত্মচেতনে উদ্বীপ্ত মননে
সদা কান পেতে থাকি শুনতে সে ভাষণ।

৭ই মার্চের কবিতা

সেই নদীর নাম রেসকোর্স ময়দান

ইতিহাস হয়েছে
মুক্তির ঢালে দিয়ে শান
লাখো মানুষের রেসকোর্স ময়দান,
তীব্র খরস্রোতে বইছে
ঢল নেমেছে ভেঙ্গে বান,
এ নদীর নাম রেসকোর্স ময়দান।

মুক্তিকামী মানুষের বহমানতা
এ নদীর নাব্য
এখানে আসবেন রাজনীতির অমর কবি
শোনাবেন মহাকাব্য।

দুয়ারে দুয়ারে
জোয়ারে জোয়ারে
উত্তাল ঢেউ গর্জে,

বিশ্ব ঐতিহ্যের সেই সাতই মার্চে,
এ নদীর কলতান
এ নদীর ঐকতান
প্রমত্তা নদী রেসকোর্স ময়দান।

উপস্থিত সকলে অধিষ্ঠিত আসনে
নিমগ্ন অমরত্বের ভাষণে,
ইতিহাস নাড়া দেয় সেই ধ্বনি
মানুষের ঢল অদ্ভুত ঐকতান

গড়ে মুক্তির দর্শন ,
কালজয়ী এক সিম্ফনি
রাজনীতির কবি উঁচিয়ে তর্জনী ।

জ্বলে উঠে শিখা লেলিহান
সেই রেসকোর্স ময়দান
এ নদী উত্তাল অবিরাম
এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম ।

রক্তের দামেই স্বাধীনতা কিনব
রক্ত যখন দিয়েছি আরো রক্ত দিব,
যার যা কিছু আছে অবশিষ্ট
ঝাঁপিয়ে পড় তাই দিয়ে হয়ে আদিষ্ট ।

অমরত্বের কবি বলেছেন
মহাকাব্যের বানী,
গুণমণি তিনি সকলেই জানি,

রাজনীতির কবি
তোমার মধুর বচনে
টেনে আনে যুগ থেকে যুগে সন্মুখ পানে
প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে স্বাধিকারের টানে ।

৭ই মার্চের ভাষণ

আজ দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আপনারা সবই জানেন এবং বুঝেন। আমরা আমাদের জীবন দিয়ে চেষ্টা করেছি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আজ ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, রংপুরে আমার ভাইয়ের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়েছে।

আজ বাংলার মানুষ মুক্তি চায়, বাংলার মানুষ বাঁচতে চায়, বাংলার মানুষ তার অধিকার চায়। কী অন্যায় করেছিলাম, নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ সম্পূর্ণভাবে আমাকে আওয়ামী লীগকে ভোট দেন। আমাদের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি বসবে, আমরা সেখানে শাসনতন্ত্র তৈয়ার করব এবং এই দেশকে আমরা গড়ে তুলব, এ দেশের মানুষ অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তি পাবে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আজ দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, তেইশ বৎসরের করুণ ইতিহাস বাংলার অত্যাচারের, বাংলার মানুষের রক্তের ইতিহাস।

ভাইয়েরা আমার, ২৫ তারিখে অ্যাসেম্বলি কল করেছে। রক্তের দাগ শুকায় নাই। আমি ১০ তারিখে বলে দিয়েছি যে ওই শহীদের রক্তের উপর পা দিয়ে কিছুতেই মুজিবুর রহমান যোগদান করতে পারে না। অ্যাসেম্বলি কল করেছে। আমার দাবি মানতে হবে: প্রথম, সামরিক আইন মার্শাল ল উইথ ড্র করতে হবে, সমস্ত সামরিক বাহিনীর লোকদের ব্যারাকে ফেরত নিতে হবে, যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তার তদন্ত করতে হবে, আর জনগণের প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে । তারপর বিবেচনা করে দেখব, আমরা অ্যাসেম্বলিতে বসতে পারব কি পারব না। এর পূর্বে অ্যাসেম্বলিতে বসতে আমরা পারি না।

বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ ও বক্তব্য এবং কিছু কথা

শেষ কথা

আমাদের সাথে শেষ পর্যন্ত থাকার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি এই পোস্ট টি আপনাদের অনেক ভাললেগেছে। এই পোস্ট টি ভালোলেগে থাকলে শেয়ার করতে পারেন। আশা করছি এই পোস্ট থেকে ৭ই মার্চ নিয়ে কবিতা ও ভাষণ দিবসের বঙ্গবন্ধুর কবিতা জানতে পেরেছেন। এই রকম আরও ভালো ভালো পোস্ট পেতে আমাদের সাথেই থাকবেন।  আজকের মতো এখানেই শেষ। ভালোথাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

আরও দেখুনঃ

৭ই মার্চের স্ট্যাটাস, উক্তি, ক্যাপশন 

বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ ও বক্তব্য এবং কিছু কথা