৯ম শ্রেণীর পৌরনীতি ও নাগরিকতা এ্যাসাইনমেন্ট সমাধান ১৪তম সপ্তাহ

৯ম শ্রেণীর পৌরনীতি ও নাগরিকতা এ্যাসাইনমেন্ট সমাধান ১৪তম সপ্তাহ

তারিখ : — সেপ্টেম্বর , ২০২১ খ্রি .
বরাবর , প্রধান শিক্ষক রাকিবুল স্কুল ,ঢাকা।
বিষয় : পরিপূর্ণ নাগরিক অধিকার পেতে হলে যথাযথ কর্তবা পালন করতে হয়- 


জনাব,
বিনতি নিবেদন এই যে , আপনার আদেশ নং বা.উ.বি.৩৫৫-১ তারিখ ১৩/৯/২০২১ অনুসারে উপরােক্ত বিষয়ের উপর আমার স্বব্যখ্যাত প্রতিবেদনটি নিন্মে পেশ করলাম ।

ভূমিকা :’নাগরিক’ কথাটির অর্থ অতি ব্যাপক। সাধারণভাবে নাগরিক বলতে কোনো নগরের অধিবাসীকে বোঝায়। কিন্তু বর্তমানে বৃহত্তর অর্থে কোনো রাষ্ট্রের অধিবাসীকে নাগরিক বলা হয়। গ্রিসের ক্ষুদ্র নগর তথা রাষ্ট্রের অধিবাসী সে রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে প্রথম যে স্বীকৃতি লাভ করেছিল তা বহুকালের বিচিত্র পরিবর্তন ও বিবর্তনের মাধ্যমে বর্তমানে বৃহত্তর অর্থের পরিধিতে পৌঁছেছে। তাই আজকের দিনে নাগরিক বিশেষ কোনো নগরের অধিবাসী নয়, শহর, বন্দর, গ্রামগঞ্জ যে যেখানেই থাকুক না কেন সে সেই রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে পরিচিত।


নাগরিকের গুণাবলীঃ

নাগরিক হলো ব্যক্তির পরিচয়। যেমন- আমাদের পরিচয় আমরা বাংলাদেশের নাগরিক। আর রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে ব্যক্তি যে মর্যাদা ও সম্মান পেয়ে থাকে তাকে নাগরিকতা বলে।


নিম্নে গুণাবলী গুলো দেওয়া হলঃ

 

  • রাষ্ট্রের সদস্য হওয়া।
  • স্থায়ীভাবে বসবাস করা।
  • রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করা ও আইন মেনে চলা।
  • সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকার ভোগ করা।
  • রাষ্ট্রের বিভিন্ন দায়িত্ব কর্তব্য পালন করা।

 


নাগরিকতা অর্জনের পদ্ধতিঃ

নাগরিকতা অর্জনের দুটি পদ্ধতি রয়েছে। যেমন-
ক) জন্মসূত্র,
খ) অনুমোদন সূত্র।

সুনাগরিক হিসেবে করণীয় /কর্তব্যঃ

রাষ্ট্রের সব নাগরিক সুনাগরিক নয়। আমাদের মধ্যে যে বুদ্ধিমান, যে সকল সমস্যার সহজ সমাধান করে, যা বিবেক আছে সে ন্যায়-অন্যায়, সৎ-অসৎ বুঝতে পারে এবং অসৎ কাজ থেকে বিরত থাকে। আর যে আত্মসংযমী সে বৃহত্তর স্বার্থে নিজের ক্ষুদ্র স্বার্থ ত্যাগ করতে পারে।এসব গুণসম্পন্ন নাগরিকদের বলা হয় সুনাগরিক।

সুনাগরিকের প্রধানত তিনটি গুণ রয়েছে।যথা-

১। বুদ্ধি,

২। বিবেক,

৩। আত্মসংযম

বুদ্ধিঃ বুদ্ধি নাগরিকের অন্যতম গুণ। বুদ্ধিমান নাগরিক পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্রের বহুমুখী সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের ক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে। সুনাগরিকের বুদ্ধির উপর নির্ভর করে আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সফলতা। তাই বুদ্ধিমান নাগরিক রাষ্ট্রের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। প্রতিটি রাষ্ট্রের উচিত নাগরিকদের যথাযথ শিক্ষা দানের মাধ্যমে বুদ্ধিমান নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা।

বিবেকঃ রাষ্ট্রের নাগরিকদের হতে হবে বিবেক বোধ সম্পন্ন। এগুলোর মাধ্যমে নাগরিক ন্যায়-অন্যায়, সৎ -অসৎ, ভালো-মন্দ অনুধাবন করতে পারে। বিবেকবান নাগরিক একদিকে যেমন রাষ্ট্রপ্রদত্ত অধিকার ভোগ করে ঠিক তেমনি রাষ্ট্রের প্রতি যথাযথভাবে দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করে এবং ন্যায়ের পক্ষে থাকে।যেমন- বিবেকসম্পন্ন নাগরিক রাষ্ট্রের প্রতি অনুগত থাকে আইন মান্য করে যথাসময়ে কর প্রধান করে, নির্বাচনের যোগ্য ও সৎ ব্যক্তি কে ভোট দেয়।

আত্মসংযমঃ সুনাগরিকের আত্মসংযম থাকা উচিত। এর অর্থ নিজেকে সকল প্রকার লোভ-লালসা ঊর্ধ্বে রেখে সততা ও নিষ্ঠার সাথে নিজের দায়িত্ব কর্তব্য পালন করা। অর্থাৎ সমাজে বৃহত্তর স্বার্থে নিজের ক্ষুদ্র স্বার্থ ত্যাগ করার নাম আত্মসংযম। আমাদের মধ্যে যিনি এ গুণের অধিকারী তিনি যেমন স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশ করতে পারেন, তেমনি অন্যের মতামত প্রকাশের নিজেকে সংযত রাখেন। এছাড়া, প্রত্যেক নাগরিককে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও পক্ষপাতিত্বের ঊর্ধ্বে থাকতে হবে। এর মাধ্যমে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ জাগ্রত হয়।


আমার পরিবারের সদস্যরা নাগরিক হিসাবে যেসব অধিকার ভোগ করে তা নিম্নে দেওয়া হলোঃ-

অধিকার হলো সমাজ ও রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত কতগুলো সুযোগ-সুবিধা,যা ভোগের মাধ্যমে নাগরিকের ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটে। অধিকার ব্যতীত মানুষ তার ব্যক্তিত্ব উপলব্ধি করতে পারে না। অধিকারের মূল লক্ষ্য ব্যক্তির সর্বজনীন কল্যাণ সাধন রাষ্ট্রের নাগরিকদের মানসিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিকাশের জন্য অধিকার অপরিহার্য। নাগরিক হিসেবে আমাদের অধিকারঃ

১। নৈতিক অধিকার
২। আইনগত অধিকার

১। নৈতিক অধিকারঃ নৈতিক অধিকার মানুষের বিবেক এবং সামাজিক নৈতিকতা বা ন্যায়বোধ থেকে আসে। যেমন দুর্বলের সাহায্য লাভের অধিকার নৈতিক অধিকার।এটি রাষ্ট্রকর্তৃক প্রণয়ন করা হয় না যার ফলে এর কোনো আইনগত ভিত্তি নেই।তাছাড়া এ অধিকার ভঙ্গ কারি কে কোন শাস্তি দেওয়া হয়না। নৈতিক অধিকার বিভিন্ন সমাজের বিভিন্ন রকম হতে পারে ।

২। আইনগত অধিকারঃ যেসব অধিকার রাষ্ট্রের আইন কর্তৃক স্বীকৃত ও অনুমোদিত সে গুলোকে আইনগত অধিকার বলে। আইনগত অধিকার বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-ক) সামাজিক খ)রাজনৈতিক ও গ)অর্থনৈতিক অধিকার।


ক) সামাজিক অধিকারঃ সমাজের সুখ শান্তিতে বসবাস করার জন্য আমরা সামাজিক অধিকার ভোগ করি। যেমন জীবনরক্ষার, স্বাধীনভাবে চলাফেরা ও মতপ্রকাশের, পরিবার গঠনে, শিক্ষার, আইনের দৃষ্টিতে সমান সুযোগ লাভের, সম্পত্তি লাভের ও ধর্মচর্চার অধিকার ইত্যাদি।

খ) রাজনৈতিক অধিকারঃ নির্বাচনে ভোটাধিকার, নির্বাচিত হওয়া এবং সকল প্রকার অভাব-অভিযোগ আবেদনের মাধ্যমে প্রতিকার পাওয়া কে রাজনৈতিক অধিকার বলে। এসব অধিকার ভোগের বিনিময় নাগরিকরা রাষ্ট্রপরিচালনায় পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়।


গ) অর্থনৈতিক অধিকারঃ জীবনধারণ করা এবং জীবনকে উন্নত ও এগিয়ে নেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপ্রদত্ত অধিকারকে অর্থনৈতিক অধিকার বলে।যেমন-যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ করার অধিকার, ন্যায্য মজুরি লাভের অধিকার, অবকাশ লাভের অধিকার, শ্রমিক সংগঠনের অধিকার।

উপসংহার : আমাদের দেশে বর্তমানে অগণিত সমস্যা জাতীয় জীবনকে নিপীড়িত করছে। এসব সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব দেশের পরিচালকমণ্ডলীর হাতে ন্যস্ত থাকলেও জনগণ তা থেকে মোটেই বিচ্ছিন্ন নয়। তাই নাগরিকদেরকে দেশ গঠনমূলক পরিকল্পনা দান করতে হবে এবং তা বাস্তবায়নের জন্য নিজ নিজ কর্তব্য পালন করতে হবে। দেশের উন্নতির জন্য শান্তি-শৃঙ্খলার প্রয়োজন। নাগরিকরা যদি কর্তব্যসচেতন হয় তবে দেশ শৃঙ্খলার মাধ্যমে উন্নতির দিকে ধাবিত হবে। আইনের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন, সরকারি আদেশ-নিষেধ অনুসরণ

ইত্যাদি যথাযথভাবে পালন করলে দেশের অগ্রগতি ত্বরান্বিত হবে। অনেক স্বার্থপর ব্যক্তি নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য অনাচারের আশ্রয় নেয়, নাগরিকগণকে তা রোধ করতে হবে। চোরাচালান, কালোবাজারি, দুর্নীতি রোধকল্পে নাগরিকদের কাজ করতে হবে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য এ দুটি মৌলিক কাজে নাগরিকদের যৌথ উদ্যোগ নিতে হবে। মনে রাখা উচিত, দেশ সরকারের নয়, জনগণের। দেশের কল্যাণের দায়িত্ব সম্পর্কে নাগরিকরা কর্তব্যপরায়ণ না হলে শুধু সরকারের পক্ষে দেশের সার্বিক কল্যাণ সাধন করে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব নয়।

প্রতিবেদকের নাম : রাকিব হোসেন সজল
রোল নং : ০১
প্রতিবেদনের ধরন : প্রাতিষ্ঠানিক,
প্রতিবেদনের শিরোনাম : পরিপূর্ণ নাগরিক অধিকার পেতে । হলে যথাযথ কর্তবা পালন করতে হয়-
প্রতিবেদন তৈরির স্থান : ঢাকা
তারিখ : –/—/২০২১ ইং ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *