৬ষ্ঠ শ্রেনীর বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এ্যাসাইনমেন্ট সমাদান ১৬তম সপ্তাহ

৬ষ্ঠ শ্রেনীর বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এ্যাসাইনমেন্ট সমাদান ১৬তম সপ্তাহ

সমাধান: নিন্মে ইউনেস্কো কর্তিক ঘােষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে সুন্দরবনের গুরুত্ব তুলে ধরে একটি পােস্টার উপস্থাপন বাতৈরি করা হলাে।

সুন্দর বন ৬ ডিসেম্বর ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। এটি বাংলাদেশ ও ভারতীয় অংশ হলেও বাংলাদেশেই বেশিরভাগ অঞ্চল রয়েছে এবং ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় ভিন্ন ভিন্ন নামে সুচিবদ্ধ হয়েছে। যথাক্রমে সুন্দর বন ও সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান নামে।

সুন্দরবনের অবস্থানঃ সুন্দরবন হলো বঙ্গোপসাগরের উপকুলবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত একটি প্রশস্তু বনভুমি। বিশ্বের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মধ্যে এটি অন্যতম। পদ্মা,মেঘনা, ও ব্রহ্মপুত্র নদীদ্বয়ের অববাহিকায় বদ্বীপ এলাকায় অবস্থিত এই অপরুপ বনভুমি।

বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগের হাট,পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলা মিলে সুন্দরবনের অংশ। সুন্দরবনের মােট আয়তন ১০ হাজার বর্গকিলামিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশের অংশ হলাে ৬০১৭ বর্গকিলোমিটার বাকী অংশ হলাে ভারতীয়দের। সুন্দরবনে জালের মতো জড়িয়ে রয়েছে সামুদ্রিক স্রোতধারা কাদা চর এবং ম্যানগ্রোভ বনভুমির লবনাক্ততাসহ ক্ষুদ্রায়তন দ্বীপমালা। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সুন্দরবনের গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা রয়েছে। এটি দেশের বনজ সম্পদের একক বৃহত্তম উৎস। এই বন কাঠের উপর নির্ভরশীল শিল্পে কাচামালের জোগান দেয়। এই বন বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ধেকে আমাদের রক্ষা করে।

বাংলাদেশে সুন্দরবনের গুরুত্ব নিম্নরুপঃ

১. সুন্দরবনে প্রচুর পরিমান সুন্দরী,গেওয়া, বনকাঠি, গরান ও কেওড়া সহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে। এই গাছগুলো বাংলাদেশের অর্থনীতিকে প্রচুর সমৃদ্ধ করেছে।

২. সুন্দরবন বনজ সম্পদ হতে প্রচুর কাঠ, জ্বালানি সংগ্রহ করা হয়।

৩. সুন্দরবন থেকে প্রচুর মধু সংগ্রহ করা হয়।

৪. এই বন থেকে প্রচুর শামুক ও ঝিনুক সংগ্রহ করা হয়। সুন্দরবনে মােট ৩৩৪ প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে।

৫. সুন্দরবনের জেলেরা প্রচুর পরিমান মাছ ধরে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকে।

৬ সুন্দর বনে প্রচুর পরিমানে উদ্ভিদ থাকায় প্রাণীকুল সহজে টিকে থাকতে পারে।

৭ সুন্দরবনে যে সমস্ত প্রাণী ও উদ্ভিদ রয়েছে তা পরিবেশের জন্য অনুকুল।

৮. এই বনে প্রচুর অর্থনৈতিক কর্মকান্ড হয়ে থাকে বলে অনেক লােক সহজে জীবিকা নির্বাহ করে।

৯. এই বন আছে বলে বাংলাদেশের মত নিম্ন অঞ্চল এলাকায় পরিবেশ বিপর্যয় ঘটছে না।

১০.এই বনে হাজার ও রকম প্রাণী বসবাস করে বিধায় এক দিকে প্রাণী বসবাসের অনুকুল স্থান ও টিকে থাকল।

১১. সুন্দরবন বাংলাদেশের পর্যটক খাতকে সমৃদ্ধ করেছে।

১২. সুন্দরবন দেখতে প্রতি বছর বিদেশি পর্যটক বাংলাদেশে আসে ফলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হচ্ছে।

১৩. এই বন থাকার ফলে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে ব্যাপক পরিচয় লাভ করে।

১৪. সুন্দরবন ভূমিক্ষয় রােধ করছে এবং বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি করছে।

১৫. সুন্দরবন বিভিন্ন ভেষজ উদ্ভিদের যােগান দিচ্ছে।

পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, বাংলাদেশের যত প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে সুন্দরবন তাদের মধ্যে অন্যতম। এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য শুধু বাংলাদেশের নয় পুরো বিশ্বে এর সুযােগ সুবিধা ভােগ করছে। বিশ্বের একমাত্র ম্যানগ্রোভ বন হচ্ছে আমাদের সুন্দরবন। যা বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে সম্মানের আসনে নিয়েছে। সুন্দরবন আল্লাহ প্রদত্ত এক প্রাকৃতিক নিয়ামত। এ সম্পদকে কাজে লাগাতে পারলে বাংলাদেশ আরো সমৃদ্ধশালী হতে পারবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *