জমির খতিয়ান : প্রিয় বন্ধুরা তোমরা সবাই কেমন আছো । আশা করি ভালো আছো । আজকে আমরা নতুন একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো ।তা হলো কিভাবে আপনারা ঘরে বসেই মোবাইল ফোন কিংবা কম্পিউটার এর মাধ্যমে নিজের জমির দাগ,খতিয়ান,আরএস,সিএস ইত্যাদি যাবতীয় তথ্য দেখতে পারবেন ।মনোযোগ সহকারে পুরো পোস্টটি পড়ুন আশা করি খুব সহজেই যে কোন জমির দাগ,
খতিয়ান ইত্যাদি বের করতে করতে পারবেন এবং প্রিন্ট করতে পারবেন ।আশা করি এর পরে থেকে আপনাদের ভূমি রেজিস্ট্রি অফিস গিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাড়িয়ে থাকতে হবে না । চলুন শুরু করা যাক আজকের আলোচনার মুল বিষয় ।জমির খতিয়ান এবং দাগ নাম্বার বের করার নিয়ম
বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। কৃষি হচ্ছে এ দেশের জাতীয় আয়ের অন্যতম উৎস এবং প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষের জীবিকার অবলম্বন।তাই এ দেশে ভূমি সম্পদের গুরুত্ব অপরিসীম। মৌলিক প্রাকৃতিক সম্পদ সমূহের মধ্যে ভূমি হচ্ছে অন্যতম প্রাকৃতিক সম্পদ যা মানুষের আবাসন,
জমির দাগ নাম্বার বের করার নিয়ম-২০২২
নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য, শিল্পে কাচাঁমাল ইত্যাদি সরবরাহের মূল উৎস, কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং ভূমির অপরিকল্পিত ব্যবহারের কারণে আমাদের এ গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সম্পদ দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে।অর্থনৈতিক অগ্রগতির সাথে সাথে নগরায়নের প্রবণতা, শিল্পায়নের পরিধি, রাস্তাঘাট, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্রমাগত সম্প্রসারণের ফলে মাথাপিছু জমির পরিমাণ ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে।
গুরুত্বপূর্ণ এ সম্পদের ব্যবহার সঠিক পরিকল্পনার উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। তাই একটি যুগোপযোগী পরিকল্পনা ও নীতির মাধ্যমে এ সীমিত প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু সর্বোত্তম ব্যবহার সুনিশ্চিত করা প্রয়োজনে হয়ে পড়েছে। এ লক্ষ্যে ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক ইতোমধ্যে ভূমি ব্যবহার নীতিমালা প্রনয়ণ করা হয়েছে।
জমির খতিয়ান এবং দাগ নাম্বার বের করার নিয়ম : এখন যেকোনো স্থান থেকে মাত্র ৫ মিনিটে অনলাইনে জমির খতিয়ানের কপি সংগ্রহ করা যাবে।
‘হাতের মুঠোয় খতিয়ান’ স্লোগানে বুধবার সচিবালয়ে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ আরএস খতিয়ান অনলাইনে অবমুক্তকরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।land.gov.bd বা rsk.land.gov.bd বা www.minland.gov.bd বা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে খতিয়ানের কপি সংগ্রহ করা যাবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্পের সহায়তায় নতুন এই পদ্ধতি চালু করা হয়েছে।ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে প্রায় ৬১ হাজার ৫০০ (তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া) মৌজা রয়েছে। এর মধ্যে ৪১ হাজার মৌজার জরিপ সম্পন্ন হয়েছে,
এর প্রায় ৩২ হাজার মৌজার জরিপে প্রকাশিত এক কোটি ৪৬ লাখ আরএস (১৯৬৫ সাল থেকে চলমান জরিপে প্রস্তুত করা খতিয়ান) খতিয়ানের তথ্য অনলাইনে পাওয়ার সুযোগ করা হয়েছে।
সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘আমরা এখানেই থেমে থাকব না। বাকি খতিয়ানগুলো ক্রমান্বয়ে যুক্ত হতে থাকবে।’
জরিপ কার্যক্রম একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং জরিপ শেষ হয়েছে এমন খতিয়ানগুলো পর্যায়ক্রমে আপলোড করা হবে।জরিপ কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার পর চূড়ান্তভাবে গেজেট প্রকাশিত খতিয়ানও এসব লিংকে আপলোড করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।‘প্রচলিত পদ্ধতিতে খতিয়ানের কপি পেতে জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রিতা রয়েছে।
নতুন ব্যবস্থায় এটা থাকবে না। খতিয়াতের কপি পেতে ভূমি অফিসে বা ডিসি অফিসে দৌড়ানোর কোন প্রয়োজন নেই।’মন্ত্রী বলেন, ‘জনগণকে দ্রুত সময়ে সেবা দিতে বর্তমানে ৩০২টি উপজেলায় ই-মিউটেশন কার্যক্রম চালু করা হয়েছে।আরএস-কে (রিভিশনাল সার্ভে খতিয়ান) সিস্টেম ও ডিডিআর (ডিজিটাইজেশন অব রেকর্ড রুম) এর মাধ্যমে সিএস,এসএ ও আরএস খতিয়ান অনলাইনে সরবরাহের পরিপত্র জারি করা হয়েছে।’
মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. মাকসুদুর রহমান পাটোয়ারী বলেন,‘প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী জেলা প্রশাসকের অফিসের রেকর্ডরুম থেকে খতিয়ান বা পর্চা দেয়া হয়ে থাকে।খতিয়ানের কপি প্রাপ্তিতে জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতা পরিহার, সময়, খরচ ও যাতায়াত ভোগান্তি হ্রাস,মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম হ্রাস এবং ভূমি সংক্রান্ত সেবা আরও স্বচ্ছ ও জবাবদিহি করার জন্য সরকার অনলাইন ভিত্তিক আরএস-কে পদ্ধতি চালু করা হল।’
যেভাবে অনলাইনে পাওয়া যাবে খতিয়ান:
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, অনলাইনে জমির খতিয়ান সংগ্রহের জন্য সব নাগরিকের জন্য নাগরিক কর্ণার রয়েছে।অনুসন্ধানের জন্য নির্ধারিত বিভাগ, জেলা, উপজেলা ও মৌজা বাছাই করতে হবে।খতিয়ান নম্বর বা দাগ নম্বর বা মালিকানা নাম বা পিতা বা স্বামীর নাম দিয়ে খতিয়ান খোঁজা যাবে।এছাড়া খতিয়ানের সার্টিফাইড কপির জন্য অনলাইনে আবেদন,
আবেদন নিষ্পত্তি বিষয়ে ট্যাকিং ও কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মনিটরিং করার সুবিধা রয়েছে এই অনলাইন ব্যবস্থায়।অনলাইনে খতিয়ানের কপি পেতে অনলাইনে আবেদনের সময় নাগরিকের নাম, পরিচয়পত্র নম্বর (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) ও ফোন নম্বর ইত্যাদি তথ্য দিতে হবে।নির্ধারিত তথ্য দেয়ার পর মোবাইল ব্যাংকিং বা অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে খতিয়ানের জন্য নির্ধারিত ফি দিতে হবে।ফি পরিশোধের পর অনলাইন কপি সংগ্রহ করতে চাইলে সরাসরি অনলাইন কপি প্রিন্ট করে নেয়া যাবে।
সার্টিফাইড কপি পাওয়ার ক্ষেত্রে আবেদনের সময় নাগরিকের নাম, পরিচয় পত্র নম্বর, ফোন নম্বর ইত্যাদি দিতে হবে।তথ্য প্রদানের পর মোবাইল ব্যাংকিং বা অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে খতিয়ানের জন্য ফি দিতে হবে।ফি দেয়ার পর সার্টিফাইড কপির জন্য নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র, ই-মেইল, মোবাইল নম্বর,
ট্রানজেকশন আইডি ও ডাকযোগে যোগাযোগের ঠিকানা দিয়ে অনলাইনে আবেদন করতে হবে।এরপর সংশ্লিষ্ট জেলা অফিস থেকে বা আবেদনকারীর প্রত্যাশিত ঠিকানায় ডাকযোগে নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে আরএস খতিয়ানের সার্টিফাইড কপি সরবরাহ করা হবে।
ধন্যবাদ সবাইকে আশা করি এখন থেকে নিজেই নিজেদের জমির খতিয়ান দাগ ইত্যাদি বের করতে পারবেন । এবং কোন কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্টে বক্সে কমেন্টে করে জানান ।